প্রসঙ্গ: কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির জন্যে উলামায়ে সূ’ ও মুনাফিকরাই দায়ী
, ০১ মে, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) আইন ও জিহাদ
ভারতের রাজনীতির ইতিহাসে নেহরুর মতো এত চতুর, শঠ ও বিশ্বাসঘাতক রাজনীতিক আর আসেনি। নিজে কাশ্মীরি হওয়ার পরও কাশ্মীরিদের সঙ্গে শঠতা ও বিশ্বাসঘাতকতা করেছে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশ ও প্রিন্সলি এস্টেট কাশ্মীরের কিছু মুসলমান চেয়েছিলো ভারত কিংবা পাকিস্তানে যোগদান না করে একটি স্বাধীন কাশ্মীরি রাষ্ট্র টিকিয়ে রাখতে। কিন্তু চতুর নেহরু শেখ আব্দুল্লাহকে হাত করে নিয়ে ভারতে যোগ দেয়ার জন্যে উদ্বুদ্ধ করে এবং প্রধানত তার কারণেই নেহরু কাশ্মীরকে ভারতে পায়।
শেখ আব্দুল্লাহ যদি শের-ই-বাংলা ফজলুল হকের মতো শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানে যোগ দেয়ার জন্য মনস্থির করতো, কাশ্মীর কখনো ভারতের ভাগ্যে জুটতো না। শেখ আব্দুল্লাহ ১৯৪৬ সালে ‘কুইট কাশ্মীর’ আন্দোলন শুরু করে কাশ্মীরের ভবিষ্যৎ স্বাধীন সত্তাকে নস্যাৎ করে।
মাথা গরম মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ শেখ আব্দুল্লাহকে চতুর নেহরুর খপ্পরে পড়তে দেখে এবং পাকিস্তানের সঙ্গে শাসক হরি সিংয়ের বাণিজ্য চুক্তি থাকা সত্ত্বেও নেহরু-আব্দুল্লাহর হাতে তার উপায়হীনতা বুঝে শক্তি প্রয়োগ করে কাশ্মীরকে পাকিস্তানে আনতে চেয়েছিলো। কাশ্মীর ভারতের অন্তর্ভুক্ত করা কালে শেখের সঙ্গে নেহরু সহমত হয়ে প্রতিরক্ষা, বিদেশ নীতি ও যোগাযোগ ব্যতীত বাকি সব বিষয়ে কাশ্মীরের স্বায়ত্তশাসন মেনে নিয়ে সংবিধানে ৩৭০ ধারা যুক্ত করে।
কিন্তু শেখ আব্দুল্লাহ যখন শাসকবিহীন কাশ্মীরের সর্বময় কর্তা হিসেবে আবির্ভূত হয় তখন খোদ নেহরুই শেখ আব্দুল্লাহকে ১৯৫৩ সালে কাশ্মীর ষড়যন্ত্র মামলায় গ্রেপ্তারের নির্দেশ দেয়।
শেখ আব্দুল্লাহকে কারাগারে রেখে নেহরু ১৯৫৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতিকে দিয়ে ৩৭০ ধারাকে বাস্তবে অকার্যকর করে একটি সাংবিধানিক অধ্যাদেশ জারি করায়, যার মাধ্যমে বাস্তবে কাশ্মীরের শুধু প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক-সম্পর্ক ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে নয় বরং সব ক্ষেত্রে ভারতের কেন্দ্রীয় শাসনের অধীনস্থ হয়।
কথিত অধ্যাপক বসুর ভাষায়: After Sheikh AbdullahÕs imprisonment in August 1953, a Constitutional Order was promulgated by the President of India in 1954 upon the advice of Nehru's government empowering the central government to legislate on all subjects on the Union list, not only defense, foreign affairs and communication.
The 1954 Order also imposed restrictions on fundamental rights and enabled the suspension of the freedom of speech and association on Ôgrounds of securityÕ. In less than two years Article 370 had been reduced to a shadow and a husk of what it was originally meant to beÕ. অর্থাৎ, ১৯৫৩ সালের আগস্টে শেখ আব্দুল্লাহর কারাদ- হওয়ার পর নেহরু সরকারের পরামর্শে ১৯৫৪ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি একটি সাংবিধানিক অধ্যাদেশ জারি করে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারকে আইন তৈরির ক্ষমতা দিয়ে সমস্ত বিষয়ে, শুধু প্রতিরক্ষা, বৈদেশিক বিষয় ও যোগাযোগ নয়।
এছাড়াও ১৯৫৪ সালের অধ্যাদেশ ‘নিরাপত্তার কারণে’ মৌলিক অধিকারসমূহের উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ এবং সমাবেশ ও বাক-স্বাধীনতা রহিত করে। দু’বছরের কম সময়ের মধ্যে ৩৭০ ধারাকে তার আদি রূপ থেকে একটি শুষ্ক খোলস ও ছায়ায় নামিয়ে আনা হয়। ’ ফলে, কাশ্মীর ও কাশ্মীরীদের সঙ্গে ভারতে আদি বিশ্বাসঘাতক হচ্ছে খোদ কাশ্মীরেরই সন্তান নেহরু এবং তার শঠতা ও বিশ্বাসঘাতকতার ক্ষেত্র তৈরি করে দেয় শেখ আব্দুল্লাহ, যাকে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষ কাশ্মীরের সব মানুষ বিশ্বাস করে তাদের প্রাণ ঢেলে সমর্থন জানিয়েছিলো।
যদিও কাশ্মীরের ‘হযরত বাল’ মসজিদে রক্ষিত নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত কেশগুচ্ছ মুবারক চুরি হওয়ার প্রতিবাদে ও পুনরুদ্ধারের দাবিতে গড়ে ওঠা আন্দোলনের পরিণতি ভেবে চতুর নেহরু ১৯৬৪ সালে কাশ্মীরিদের শান্ত করার জন্য শেখ আব্দুল্লাহর উপর থেকে অভিযোগ ও কারাদ- তুলে নিয়ে মুক্তি দেয়, কিন্তু ততক্ষণে শুধু কেন্দ্রীয়ভাবে নয়, খোদ কাশ্মীরের সংবিধানে পরিবর্তন এনে গণতান্ত্রিক পন্থায় দেশটির কাঙ্খিত স্বাধীনতার সুযোগকে সুদূর পরাহত করে তোলা হয়।
অবশেষে শেখ আব্দুল্লাহর মুনাফিকী খাছলতের কারণে কাশ্মীরের জনগণের হাতে কাশ্মীরের স্বাধীন হওয়ার স্বপ্ন স্বপ্নই থেকে যায়। ফলে ১৯৭৪ সালে ইন্দিরার সঙ্গে সমঝোতা করে ১৯৭৭ সালে কাশ্মীরের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতায় আসে এবং ১৯৮২ সালে ক্ষমতা নিয়েই মৃত্যুবরণ করে, যদিও ক্ষমতায় আসার নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ ছিলো তার বিরুদ্ধে। এতে শেখ আব্দুল্লাহর ব্যক্তি স্বার্থ রক্ষা হলেও সামষ্টিকভাবে কাশ্মীরবাসীর স্বার্থ মোটেও রক্ষা পায়নি। যার ফলে বর্তমানে এহেন পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়েছে।
-মুহম্মদ আবু ইয়াকুব ইসহাক রাসেল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আবয়াদ্ব ইবনে হাম্মাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিকদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (৪)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০০)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিক্বদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (১)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৯)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৮)
৩১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












