মন্তব্য প্রতিবেদন:
বাজারে উচ্চমূল্য, কৃষকের লাভ কতটুকু
, ১২ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ১৬ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ৩১ আশ্বিন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) তাজা খবর
অথচ সিতারার খেত থেকে আধা কিলোমিটারের কম পথ অতিক্রম করে সেই ফুলকপি বিক্রি হলো ৫ টাকা দরে। অর্থাৎ কোনো রকম বিনিয়োগ ছাড়াই সামান্য পথ ব্যবধানে ২ টাকা লাভ নিয়ে নিলেন মধ্যস্বত্বভোগী একজন। তার কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলাম, ‘খেত থেকে মাত্রই তো ৩ টাকায় কিনে আনলেন। বিক্রি করলেন ৫ টাকায়। প্রতি কপিতে ২ টাকা লাভ পাচ্ছেন। তো কৃষককে আর একটু বেশি লাভ দিতে পারলেন না?’ তিনি উত্তর দিলেন, ‘পথের খরচ আছে না!’ অথচ সামান্য পথ অতিক্রম করতে কপিপ্রতি ১০ পয়সাও খরচ হয়নি।
বিস্ময়ের আরও বাকি ছিল। বাজারে ৫ টাকা দরে যিনি কিনেছিলেন তিনি তা আরেকজনের কাছে বিক্রি করে দিলেন ১০ টাকা দরে। ৫ টাকা দরে ক্রেতা ও ১০ টাকা দরে বিক্রেতার কাছে জানতে চাইলাম, ‘আপনি যে ৫ টাকায় কিনে ফুলকপি ১০ টাকায় বিক্রি করলেন?’ তিনি বিস্মিত হয়ে জবাব দিলেন, ‘খরচ আছে না!’ অথচ স্তূপ করে রাখা ফুলকপি তখনো ঠায় পড়ে ছিল। দেখতে দেখতে সে বাজারেই আরেক হাত বদল হয়ে ফুলকপির দাম গিয়ে দাঁড়াল ১৫ টাকায়। এরপর ফুলকপি ট্রাকে চড়ল। অবশেষে কারওয়ান বাজারে এসে আমি ভোক্তা হিসেবে সেই ফুলকপি কিনলাম ৩০ টাকায়। অর্থাৎ ভোক্তার ৩০ টাকায় কেনা ফুলকপি থেকে কৃষক পাচ্ছেন মাত্র ৩ টাকা। বাকি ২৭ টাকা চলে যাচ্ছে মধ্যস্বত্বভোগীর পকেটে।
যেখানে কৃষক তার শ্রমের মূল্যই পাচ্ছেন না, সেখানে কিছু না করেই শুধু হাত বদলে কেউ কেউ লাভ পাচ্ছেন উৎপাদকের চেয়ে বহুগুণ। কৃষক ফসল উৎপাদন করছেন, কিন্তু তার উৎপাদিত ফসল নিয়ে বাজারে ঢুকতে পারছেন না। অদ্ভুত হলেও সত্য, বাংলাদেশের সবচেয়ে বেশি মানুষের পেশা কৃষি বা কৃষিসংশ্লিষ্ট হলেও কৃষকদের সেই অর্থে কোনো সংগঠন নেই। ফলে কৃষক মূলত একা, শক্তিহীন। তিনি বাজারের সিন্ডিকেটের সঙ্গে পেরে ওঠেন না। প্রতারিত হন।
উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে, গত দুই দশকে চালের দাম বেড়েছে। কিন্তু সে সুফল কৃষকের কাছে পৌঁছায়নি; বরং ভোক্তামূল্যে কৃষকের অংশ ৬৫ থেকে ৪১ শতাংশে নেমে এসেছে। চালের বাড়তি দামের সুফল চলে গেছে ধান ব্যবসায়ী, চাতালমালিক ও চাল ব্যবসায়ীদের মতো মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে।
সরকার ধান-চাল ও গম সংগ্রহ করে নামমাত্র পরিমাণে। উৎপাদন মৌসুমে মোট উৎপাদনের মাত্র ৪-৫ শতাংশ খাদ্যশস্য সংগ্রহ করে। সংগ্রহমূল্য নির্ধারণ করা হয় সাধারণত উৎপাদন খরচের ওপর ৬-১০ শতাংশ মুনাফা দেখিয়ে। তা-ও ক্রয় করা হয় ব্যবসায়ী ও চাতালের মালিকদের কাছ থেকে। ফলে কৃষক সরাসরি লাভবান হন না। এ কারণে আমাদের দেশে প্রচলিত উৎপাদিত পণ্যের সংগ্রহমূল্য স্থানীয় বাজারে তেমন প্রভাব ফেলে না। এতে করে কৃষিপণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি থেকে বঞ্চিত হন কৃষক। কৃষিপণ্যের সংগ্রহমূল্য নির্ধারণের জন্য আগের বছরের পণ্যমূল্য, উৎপাদন খরচ, খোলাবাজারে পণ্যমূল্যের চালচিত্র, আন্তর্জাতিক বাজারদর, সরকারি মজুত ও মূল্যস্ফীতির হার ইত্যাদি প্রধান বিবেচ্য বিষয়। অথচ আমাদের দেশে বর্তমানে ধান-চালের সংগ্রহমূল্য নির্ধারণ করা হয় মূলত উৎপাদন খরচের ওপর ভিত্তি করে।
(লেখক : কৃষিবিদ শাইখ সিরাজ।)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
৩ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক, আজ সাধারণ ছুটি
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
খালেদা জিয়ার জানাজায় যোগ দিতে আসছেন পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ভারতে ধরা পড়লো ভুয়া কোম্পানি কফ সিরাপ, আসতো বাংলাদেশেও!
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ব্যয় সাশ্রয়ের পথে নেই সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিভক্ত হয়ে পড়েছে জুলাই যোদ্ধারা
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আর মাত্র দুইদিন পরেই দলিল থাকলেও বাতিল হচ্ছে যেসব জমির মালিকানা!
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জাতীয় নির্বাচনকে টার্গেট করে সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে অবৈধ অস্ত্র
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘নাহিদরা এভাবে প্রতারণা না করলেও পারতো’
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
অসুস্থ দুই শিশুকে সড়কের পাশে ফেলে গেলো মা-বাবা!
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ভারতীয়দের ওর্য়াক পারমিট বাতিলসহ যেসব দাবি জানালো ইনকিলাব মঞ্চ
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
চাকরির নিরাপত্তা ছাড়াই কাটলো আরও একটি বছর
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
লাইন তুলে ফেলায় ট্রেন লাইনচ্যুত, রেল চলাচল বন্ধ
৩০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












