মশা মারতে বন্ধ হবে ‘কামান দাগা’, প্রয়োগ হবে ‘লার্ভিসাইডিং’ পদ্ধতি
, ২৫শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৯ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৭ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০৩ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) তাজা খবর
ঢাকা শহরের মশা নিধনে সারা বছরই ‘ক্রাশ প্রোগ্রাম’, ‘চিরুনি অভিযান’, ‘ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা’, ‘জেল-জরিমানা’ করছে সিটি করপোরেশন। প্রতিদিনই দেওয়া হচ্ছে ধোঁয়া, ছিটানো হচ্ছে ওষুধ। এরপরও কাজের কাজ হচ্ছে না তেমন। মশা নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ সিটি করপোরেশনে দু-এক বছর পরপরই বড় আকারে দেখা দিচ্ছে ডেঙ্গু।
এভাবে মশকনিধন কার্যক্রম নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই প্রশ্ন তুলছিলেন বিশেষজ্ঞরা। ক্ষুব্ধ সাধারণ নাগরিকরাও। তাদের অভিযোগ ছিল, অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা, কর্মপরিকল্পনা না থাকাসহ নানান কারণে মশা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারছে না সিটি করপোরেশন। বিশেষ করে প্রতিদিন বিকেলে ধোঁয়া দিয়ে বা ফগিং করে মশা তাড়ানোর পদ্ধতি ছিল ভুল। এতদিন এ অভিযোগে তেমন পাত্তা না দিলেও এবার ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) স্বীকার করেছে, এ পদ্ধতি ভুল ছিল। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের মিয়ামি সফর করে এসে সে বোধ জন্মেছে ডিএনসিসি মেয়রের।
তিনি বলেছেন, আমরা এতদিন ভুল পদ্ধতি (ফগিং) ব্যবহার করেছি। তাতে মশা ধ্বংস হয়নি বরং অর্থের অপচয় হয়েছে।
মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা এতদিন ভুল পদ্ধতি ব্যবহার করেছি। তাতে মশা ধ্বংস হয়নি। বরং অর্থের অপচয় হয়েছে। এখন আমরা মশার প্রজাতি চিহ্নিত করতে একটি ল্যাব স্থাপন করতে চাই। এর মাধ্যমে মশার জাত বুঝে কীটনাশক প্রয়োগ করা হবে। এখন ফগিংয়ে অর্থ অপচয় না করে লার্ভিসাইডিংয়ে বেশি গুরুত্ব দেবো।
মেয়র আরও বলেছেন, ধীরে ধীরে ফগিংয়ের পরিমাণ কমিয়ে আনা হবে। যেমন সপ্তাহে প্রতিদিনের বদলে এক দিন বা দুই দিন করা হবে। আর লার্ভিসাইডিংয়ে পুরোপুরি সক্ষমতা এলে ফগিং একেবারে বন্ধ করে দেওয়া হবে।
মেয়রের এমন স্বীকারোক্তির পর নানান মহলে আলোচনা-সমালোচনা চলছে। কীট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অবশেষে মেয়র মশক নিধন কার্যক্রমের ব্যর্থতার কারণ বুঝতে পেরেছেন। এখন আধুনিক পদ্ধতিতে মশক নিধনে গুরুত্ব দিতে হবে।
অন্যদিকে নাগরিকদের অভিযোগ, মশা নিধনের নামে প্রতি বছর শত শত কোটি টাকা ব্যয় করেছে সিটি করপোরেশন। এছাড়া ডেঙ্গুজ্বরে মারা গেছেন নগরের কয়েকশ মানুষ। সিটি করপোরেশনকে এর দায়ও নিতে হবে।
সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের কমার্শিয়াল ল’ ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রামের (সিএলডিপি) আমন্ত্রণ ও অর্থায়নে ডিএনসিসির একটি প্রতিনিধি দল ফ্লোরিডা সফর করে। ওই সফরে দেশটির অভিজ্ঞতা হাতে-কলমে শিখিয়ে দেন মিয়ামি ডেড কাউন্টির বিশেষজ্ঞরা। তখন মশা নিয়ন্ত্রণে যুক্তরাষ্ট্রের এই সফল কার্যক্রম দেখে নিজেদের ভুল বুঝতে পারে ডিএনসিসি। যদিও এ কথা বিশেষজ্ঞরা আগে থেকেই বলছিলেন।
আগে কেন ভুল পদ্ধতিতে মশা নিধনে শত শত কোটি টাকা ব্যয় করেছেন, এমন প্রশ্নের জবাবে ডিএনসিসি মেয়র বলেন, দেশের কীট বিশেষজ্ঞদের মতামত নিয়েই আগে মশা নিয়ন্ত্রণের কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়েছিল। কিন্তু এখন দেখি তা ভুল ছিল। মশার জীবন প্রকৃতি অনুযায়ী ওষুধ প্রয়োগ করলে তার সুফল পেতাম। এখন আমরা যে উদ্যোগ নিচ্ছি, নগরবাসী তার সুফল পাবে। আমাদের ইতিবাচক ধারণা দক্ষিণ সিটিও (ডিএসসিসি) কাজে লাগাবে বলে মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস জানিয়েছেন।
ধোঁয়া দেওয়া ছিল ভুল, মত বিশেষজ্ঞদের:
দীর্ঘদিন ধরে মশা নিধন কার্যক্রমে ঢাকা উত্তর সিটিকে পরামর্শ দেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক কবিরুল বাশার। গত নভেম্বরে তাকে আনুষ্ঠানিকভাবে ঢাকা উত্তর সিটির মেয়রের একজন উপদেষ্টা হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
কবিরুল বাশার বলেন, সিটি করপোরেশন ডোবা, নালায় যে অ্যাডাল্টিসাইড ব্যবহার করে তা অনেকটাই কার্যকর। কিন্তু বিকেলে ধোঁয়া বা ফগিং করে মশা মারার যে চেষ্টা করা হয়, সেটিতে পূর্ণাঙ্গ বা উড়ন্ত মশা মরে না। এটি ডিএনসিসির ভুল পদ্ধতি ছিল। এখন মিয়ামি থেকে ডিএনসিসি যে অভিজ্ঞতা নিয়েছে, তার যথাযথ প্রয়োগ হলে মশা নিধন অনেকটাই কার্যকর হবে।
ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা:
নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে মশকনিধন পদ্ধতিকে ঢেলে সাজানোর পরিকল্পনা চলছে বলে জানিয়েছেন মেয়র আতিকুল ইসলাম।
মশার প্রজাতি নির্ণয়ে পরীক্ষাগার না থাকার পাশাপাশি জনবলের সংকট আছে জানিয়ে মেয়র বলেন, পরীক্ষাগার নেই, পর্যাপ্ত কীটতত্ত্ববিদও নেই। তাই উপদেষ্টা ও স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তাদের নিয়ে স্ট্যান্ডার্ড অপারেশন প্রসিডিউর (এসওপি) প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে এটি প্রস্তুত হবে।
মিয়ামি ডেড কাউন্টি যেভাবে মশা নিয়ন্ত্রণ করে:
ডিএনসিসির জনসংযোগ বিভাগ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায়, মিয়ামিতে মশার প্রজননস্থল খুঁজে বের করা হয়। সেখান থেকে পূর্ণাঙ্গ মশা ও মশার ডিম সংগ্রহ করে পাঠানো হয় ল্যাবে। সেখানে বিশেষজ্ঞরা মশা পরীক্ষা নিরীক্ষা করে প্রজাতি পৃথক করেন।
পরে মশার ধরন বুঝে পরিমিত ওষুধ স্প্রে করার মাধ্যমে স্ব স্ব প্রজাতির মশা ধ্বংস করা হয়। তারা ফগিংকে গুরুত্ব না দিয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন লার্ভিসাইডিংকে। তাদের মশক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার মোট বাজেটের ৮০ শতাংশই খরচ হয় লার্ভিসাইডিং কার্যক্রমে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইসরাইলী গুপ্তচর গ্যাং নেতাসহ নিহত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঘোষিত আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম -ফখরুল
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতীয় গোয়েন্দা নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা তাপসের অফিসে
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেয়া যাবে না -স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘১৫ বছরের মধ্যে সেনাবাহিনী যেন দাঁড়াতে না পারে’
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সীমান্তপথে ঢোকে, ছড়ায় ট্রেনে
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা প্রশ্নে হাইকোর্টের ‘দ্বিধাবিভক্ত’ রায়
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ ১২ই শরীফ উনার সম্মানার্থে অনন্য আয়োজন
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘রাজাকার-আল বদরদের জন্য আ.লীগই ঠিক ছিল’
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এই বিচার নয় -চিফ প্রসিকিউটর
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












