যে কারণে গুরুত্বপূর্ণ গাজার রাফাহ শহর ও রাফাহ সীমান্ত
, ০৪ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৪ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৩, মে, ২০২৪ খ্রি:, ৩০ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) তাজা খবর
ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকার সবচেয়ে দক্ষিণে রাফাহ শহরে দখলদার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী হামলা শুরু করার পর থেকে রাফাহ শহর এবং রাফাহ ক্রসিং আবারও বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
রাফাহ হল গাজা উপত্যকার সবচেয়ে দক্ষিণে ৫৫ বর্গকিলোমিটার আয়তনের একটি শহর এবং রাফাহ ক্রসিং হল মিশর আর গাজা ভূখ-ের মধ্যে একমাত্র সীমান্ত পারাপারের পথ। যেটা মিসরের সিনাই মরুভূমি ঘেঁষে অবস্থিত।
গত ৫ মে রাফাহ ক্রসিং থেকে কিছুটা পূর্বে দখলদার ইসরায়েলের সীমান্তঘেঁষা এবং দখলদার ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রিত কেরেম শালোম ক্রসিং-এর দিকে রকেট ও মর্টার শেল নিক্ষেপ করে হামাসের সামরিক বাহিনী আল-কাসাম ব্রিগেড। এরপরই রাফাহকে ঘিরে দখলদার ইসরায়েল তার কার্যক্রম শুরু করে।
নিরাপদ অঞ্চলের দিকে যাচ্ছে মানুষ:
গত বছরের ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনের সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাস দখলদার ইসরায়েলে হামলা চালানোর পর গাজায় বিমান হামলা ও স্থল অভিযান শুরু করেছিল দখলদার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী। সে সময় রাফাহকে দখলদার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী ‘নিরাপদ অঞ্চল’ হিসেবে ঘোষণা দিলে গাজার উত্তরাঞ্চল থেকে হিজরত করে প্রায় ১৫ লাখ ফিলিস্তিনি শহরটিতে আশ্রয় নেয়।
এখন দখলদার ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী লিফলেটের মাধ্যমে রাফাহতে বড় ধরনের আক্রমণ শুরুর ঘোষণা দিয়ে সেখান থেকে ফিলিস্তিনিদের সরে যাওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। এরপর রাফাহতে আশ্রয় নেওয়া ফিলিস্তিনিরা শহরটি ছেড়ে যেতে মরিয়া প্রচেষ্টা চালাচ্ছেন। বেশির ভাগই মধ্য গাজার দেইর এল-বালাহ শহরের দিকে পা বাড়িয়েছেন।
দখলদার ইসরায়েলি সেনাবাহিনীর সম্প্রচারিত এক ফুটেজে দেখা যায় রাফাহর ফিলিস্তিনি অংশে দখলদার ইসরায়েলি ট্যাঙ্ক প্রবেশ করছে। এছাড়া আকাশ থেকেও বোমাবর্ষণ চলছে। সেই সাথে রাফাহ ক্রসিং এবং এর দুই পাশে বিস্তৃত সাড়ে তিন কিলোমিটার এলাকা, যা ফিলাডেলফি করিডোর নামে পরিচিত, সেটার সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী।
উদ্দেশ্য হল, যুদ্ধে জর্জরিত গাজাবাসী যাতে এই সীমান্ত দিয়ে চলাচল করতে না পারে এবং রাফাহ সীমান্ত দিয়ে কোনো সাহায্যও প্রবেশ করতে না পারে। রাফাহতে অভিযানের কারণ হিসেবে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনী এই অঞ্চল থেকে হামাসের ঘাঁটি উপড়ে ফেলার কথা বলছে।
গাজা থেকে বের হওয়া পথ:
গাজা উপত্যকাটির দৈর্ঘ্য ৪১ কিলোমিটার। প্রস্থে কোথাও ছয় আবার কোথাও ১২ কিলোমিটার। এখানে প্রায় ২৩ লাখ মানুষ বসবাস করেন। উপত্যকার উত্তর ও পূর্ব দিকে দখলদার ইসরায়েল, পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর আর দক্ষিণে মিশর। গাজার আকাশসীমা এবং এর সমুদ্র উপকূল নিয়ন্ত্রণ করে দখলদার ইসরায়েল, অন্যদিকে মিশরীয় কর্তৃপক্ষ রাফাহ ক্রসিং দিয়ে গাজাবাসীর চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে।
রাফাহ ক্রসিং ছাড়াও স্থলপথে গাজার আরও দু’টি ক্রসিং রয়েছে। একটি রাফাহ ক্রসিং থেকে কিছুটা পূর্বে এগিয়ে গেলে দখলদার ইসরায়েলের সাথে সীমান্ত পথ কেরেম শালম ক্রসিং। আরেকটি ক্রসিং হল একদম উত্তরের বেইত হানুন বা ইরেজ ক্রসিং। এর বাইরে গাজার সাথে দখলদার ইসরায়েলের আরও চারটি ক্রসিং থাকলেও গত ১০/১৫ বছর ধরেই সেগুলো বন্ধ রয়েছে।
হামাস দখলদার ইসরায়েলে হামলা চালানোর সময় থেকেই দখলদার ইসরায়েলের সাথে গাজার দুটি ক্রসিং বন্ধ করে দেয়া হয়। খোলা থাকে শুধুমাত্র রাফাহ ক্রসিং।
উপকূলও দখলদার ইসরায়েলের নিয়ন্ত্রণে থাকায় সমুদ্রপথে এই অঞ্চল ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়া সম্ভব না। গাজার বিমানবন্দরও ২০০১ সালে ধ্বংস করে দেয় দখলদার ইসরায়েল। এমন অবস্থায় রাফাহ ক্রসিং হয়ে উঠেছিল যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষদের গাজা ছেড়ে যাওয়া এবং মানবিক সহায়তা পৌঁছানোর একমাত্র স্থলপথ, একে তখন গাজার লাইফলাইনও বলা হয়েছিল। এখন সেই পথেরও নিয়ন্ত্রণ হাতে তুলে নিয়েছে ইসরায়েল।
পারাপারের কঠোরতা:
রাফাহ ক্রসিং মিশরের সীমান্ত ঘেঁষা হলেও ফিলিস্তিনিরা চাইলেই এই পথ দিয়ে গাজা ছাড়তে পারেন না। এর প্রক্রিয়া বেশ লম্বা এবং জটিল। রাফাহ ক্রসিং পার হতে হলে একজন ফিলিস্তিনিকে অবশ্যই তার ভ্রমণের অন্তত দুই থেকে চার সপ্তাহ আগে স্থানীয় ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সাথে নিবন্ধন করাতে হয়।
এই নিবন্ধন করালেই যে তারা পার হতে পারবেন তারও কোনও গ্যারেন্টি নেই। কারণ তাদের আবেদন ফিলিস্তিনি বা মিশরীয় কর্তৃপক্ষ কোনও নোটিশ বা ব্যাখ্যা ছাড়াই প্রত্যাখ্যান করতে পারে।
এমনকি গাজাবাসীর জন্য যুদ্ধের আগেও এই রাফাহ ক্রসিং দিয়ে ওপারে যাওয়া সহজ ছিল না। এজন্য তাদেরকে গাজার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে আবেদনপত্র জমা দিতে হতো।
এই তালিকা তৈরির কাজ করে মিশরীয় কর্তৃপক্ষ। তালিকায় জায়গা পেতে মধ্যস্থতাকারীকে অর্থও দিতে হতো। এরপরও গাজাবাসীর সীমান্ত পার হওয়া ছিল অনিশ্চিত। যুদ্ধের সময়ে রাফাহ ক্রসিং পারাপারের খরচ কয়েকগুণ বেড়েছে।
হিউম্যান রাইটস ওয়াচের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে যেখানে জনপ্রতি ৭০০ ডলার লাগত, সেটা ২০২৪ সালের এপ্রিলে বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য কমপক্ষে পাঁচ হাজার ডলার এবং শিশুদের জন্য কমপক্ষে আড়াই হাজার ডলার।
আবার কেউ কেউ এটাও বলেছেন যে জনপ্রতি সীমান্ত পাড়ি দেওয়ার খরচ ১৫ হাজার ডলার পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দখলদারদের অবিস্ফোরিত মিসাইল দিয়েই তাদের সামরিক যান ধ্বংস
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
রাজধানীতে ৭৩ রাউন্ড গুলিসহ তিনটি বিদেশি পিস্তল উদ্ধার
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দীর্ঘ ২২ ঘণ্টা অবরোধের পর শাহবাগে গাড়ি চলাচল শুরু
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দীর্ঘ ২২ ঘণ্টা অবরোধের পর শাহবাগে গাড়ি চলাচল শুরু
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পেঁয়াজ আমদানিতেও চক্রের দ্বিগুণ মুনাফা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
লিবিয়া থেকে দেশে ফিরলেন ৩৪৫ বাংলাদেশি
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হিমাগারের আলু এখন ‘গলার কাঁটা’
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মব সন্ত্রাস পুরো জাতিকে বিভক্ত করেছে -ফখরুল
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
‘কয়েকজন বিচ্ছিন্ন উগ্র গোষ্ঠীর সহিংসতার বিরুদ্ধে সতর্ক থাকুন’
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
৩৮ লাখ টাকার মেশিন তিন বছরেও চালু হয়নি, আইসিইউতে ঝুলছে তালা
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
চিকিৎসা পর্যটন বাড়াতে বাংলাদেশীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ পাকিস্তানের
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে কারণে ট্রাভেল পাসেই ফিরতে হবে তারেক রহমানকে
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












