রহস্যময় ‘ইনফিনিটি গ্যালাক্সি’ আবিষ্কার
, ০৮ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০৪ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ০৩ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ২০ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) পাঁচ মিশালী
নাসার গবেষকরা তার সংরক্ষিত ডেটার মধ্যে অজানা মহাজাগতিক রহস্যের খোঁজে নেমে একটি অদ্ভুত আকৃতির বস্তু আবিষ্কার করেছে, যাকে তারা নাম (ডাক) দিয়েছে ‘ইনফিনিটি গ্যালাক্সি’।
গত ১৫ জুলাই নাসার এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এই গ্যালাক্সিটির আকৃতি অস্বাভাবিক টাইপের। গ্যালাক্সিটির দুইটি কম্প্যাক্ট লাল নিউক্লিয়াস ও প্রতিটির চারপাশে একটি করে রিং রয়েছে যা একসাথে মিলিয়ে ইংরেজি '∞' বা ইনফিনিটির চিহ্নের মতো দেখায়।
বিজ্ঞানীদের ধারণা, এই দুটি ডিস্ক, গ্যালাক্সির মুখোমুখি সংঘর্ষ থেকেই এর সৃষ্টি হয়েছে। ফলো-আপ অবজারভেশন থেকে বিজ্ঞানীদ্বয় জেনেছে, এই ইনফিনিটি গ্যালাক্সিটির কেন্দ্রে রয়েছে একটি সক্রিয় সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল!
তবে সবচেয়ে চমকপ্রদ বিষয় হলো- এই ব্ল্যাক হোলটি গ্যালাক্সির কোনো একটি নিউক্লিয়াসের মধ্যে নয়, বরং দু’টি নিউক্লিয়াসের মাঝখানে এক বিশাল গ্যাসময় অঞ্চলে অবস্থান করছে। এই গবেষকদের মতে, এটি একটি গ্যাস মেঘ সরাসরি ধসে গিয়ে ব্ল্যাক হোল তৈরি হওয়ার ঘটনা হতে পারে- যা সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল কিভাবে গঠিত হয় সেই প্রশ্নে এক নতুন দিগন্ত খুলে দিতে পারে।
বিজ্ঞানীরা নাসাকে বলেছে, ‘এই গ্যালাক্সি সম্পর্কে সব কিছুই অস্বাভাবিক। এর আকৃতি যেমন, তেমনি এর কেন্দ্রে থাকা সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলটিও খুব সক্রিয়। সবচেয়ে বড় বিস্ময় হলো, ব্ল্যাক হোলটি কোনো নিউক্লিয়াসে নয়, বরং ঠিক মাঝখানে। তখন আমাদের প্রশ্ন জাগে- এটি এখানে এলো কিভাবে?’ তারা ব্যাখ্যা করে আরো বলেছে, ‘ব্ল্যাক হোলটি যদি সত্যিই মাঝখানে গঠিত হয়ে থাকে, তাহলে আমরা হয়তো প্রথমবারের মতো একটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোলের জন্মপ্রক্রিয়া প্রত্যক্ষ করছি। ’
নাসা জানিয়েছে, সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল কিভাবে সৃষ্টি হয়, তা নিয়ে দুটি মূল তত্ত্ব রয়েছে- তার মধ্যে একটি ‘লাইট সিড’ এবং অপরটি ‘হেভি সিড’। লাইট সিড তত্ত্ব অনুসারে, তারার মৃত্যুতে যে ব্ল্যাক হোল তৈরি হয় যা সাধারণত ১ হাজার সূর্যের ওজনের সমান, সেগুলো ধীরে ধীরে একত্রিত হয়ে বিশাল ব্ল্যাক হোল তৈরি করে। তবে এতে সময় লাগে অনেক, অথচ ওয়েব এমন অনেক বিশাল ব্ল্যাক হোল খুঁজে পেয়েছে মহাবিশ্বের একেবারে প্রাথমিক সময়ে-যার ব্যাখ্যায় আবার ‘লাইট সিড’ যথেষ্ট নয়।
এদিকে হেভি সিড তত্ত্ব অনুযায়ী, এক বিশাল গ্যাসীয় মেঘ সরাসরি ধসে গিয়ে এক ধাক্কায় এক মিলিয়ন সূর্যের সমান ওজনের ব্ল্যাক হোল তৈরি করতে পারে। এটা দ্রুত হয়, কিন্তু সমস্যা হলো- গ্যাসিও মেঘ সাধারণত ধসে তারকা তৈরি করলেও ব্ল্যাক হোল তৈরি করে না।
নাসার ওই প্রতিবেদন থেকে আরো জানা গেছে, তবে এই ধরনের ধসকে তারকা উৎপাদন থেকে বিরত রাখা কঠিন।
নাসা আরো জানিয়েছে, ইনফিনিটি গ্যালাক্সির ডেটা বিশ্লেষণ করে বিজ্ঞানীরা অনুমান করছে, দু’টি ডিস্ক গ্যালাক্সির সংঘর্ষের ফলে গ্যাস চাপে সংকুচিত হয়ে একটি ঘন গাঁঠ তৈরি হয়, যা পরবর্তীতে ব্ল্যাক হোলে রূপ নেয়।
তারা (বিজ্ঞানীরা) দেখতে পেয়েছে, দু’টি নিউক্লিয়াসের মাঝখানে রয়েছে বিপুল পরিমাণ আয়নিত হাইড্রোজেন গ্যাস, যা ব্ল্যাক হোলের চারপাশে বিস্তৃত। ব্ল্যাক হোলটি সক্রিয়ভাবে পদার্থ শোষণ করছে, যার প্রমাণ মিলেছে নাসার চন্দ্রা এক্স-রে ও ভেরি লার্জ অ্যারে রেডিও টেলিস্কোপ থেকে পাওয়া এক্স-রে ও রেডিও তরঙ্গ থেকে। তাছাড়া ব্ল্যাক হোলটি যদি বাইরে থেকে এসে পড়ে, তাহলে তার গতি (ভেলোসিটি) আশেপাশের গ্যাসের গতির সঙ্গে মিলবে না। কিন্তু দেখা গেছে, ব্ল্যাক হোল এবং আশপাশের গ্যাসের গতি প্রায় অভিন্ন যা সেকেন্ডে প্রায় ৫০ কিমি মধ্যে।
গত ১৫ জুলাইয়ের নাসার প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই পর্যবেক্ষণের জন্য তারা ডিরেক্টর’স ডিসক্রিশনারি টাইম পেয়ে ওয়েব দিয়ে ফলো-আপ স্টাডি করে। সেখানে তারা আরও চমৎকার তথ্য পেয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, আয়নিত গ্যাসের বিস্তৃতি (ব্যাস) নিশ্চিত হয়েছে। ব্ল্যাক হোলটি গ্যাসের গতির ঠিক মাঝখানে অবস্থান করছে, যা প্রমাণ করে এটি ওই গ্যাস থেকেই গঠিত। এবং অবাক করা বিষয় হচ্ছে, উভয় নিউক্লিয়াসেও সক্রিয় ব্ল্যাক হোল রয়েছে! অর্থাৎ, এই একটি গ্যালাক্সি সিস্টেমে রয়েছে তিনটি সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাক হোল!
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বিশ্বের সবচেয়ে বিরল রক্তের গ্রুপ কোনটি ও কেন?
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ইন্দোনেশিয়ার গ্রিন ইসলাম বিপ্লব: প্রেক্ষাপট বাংলাদেশ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ভিভিআইপি ও ভিআইপি কারা, কি ধরনের অগ্রাধিকার পেয়ে থাকেন তারা?
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সিসিইউ আর আইসিইউ উভয়ই জরুরি, কোনটার কাজ কি?
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আফ্রিকা ভেঙে সৃষ্টি হচ্ছে এক নতুন মহাসাগর
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মৌমাছির বিষে এক ঘণ্টায় ধ্বংস স্তন ক্যানসার কোষ
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
১৩ বছরের অপেক্ষার পর দেখা মিললো বিশ্বের সবচেয়ে বিরল ফুলের
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সন্তানের উচ্চতা স্বাভাবিকভাবে বাড়বে যে ৩ ফলের রসে
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
শুক্র গ্রহে একদিন পৃথিবীর এক বছরের চেয়েও দীর্ঘ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
১২ ঘণ্টা না খেয়ে থাকলে নিজেকে পরিষ্কার করতে শুরু করে মস্তিষ্ক -গবেষণা
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
নাম দিয়েই জমির মালিকানা যাচাই করবেন যেভাবে?
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হারিয়ে যাওয়া সুপারনোভার সন্ধান, পথ দেখালো ইসলামের স্বর্ণযুগের আরবি কবিতা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












