শুকনা আমের বড় বাজার, শুরুতেই সাফল্য দেশের দুই উদ্যোক্তার
, ১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) তাজা খবর
দেশে প্রতিবছর আমের উৎপাদন ২৫ থেকে ২৬ লাখ টন। যার প্রায় ৪০ শতাংশ নষ্ট হয়ে যায়। এই নষ্ট হওয়া আম থেকে মজাদার শুকনা আম তৈরি করছেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের কৃষি উদ্যোক্তা মুনজের আলম ও ইসমাইল খান শামীম। এ বছর এটি শুরু করেছেন দুই কৃষি উদ্যোক্তা। কারণ, শুকনা আমের ব্যবসায় লাভ অনেক বেশি। দুই উদ্যোক্তা বলছেন, শুকনা আমের কয়েক হাজার কোটি টাকার ব্যবসা এখন বাংলাদেশের সামনে।
বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বাজার গবেষণা ও পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের হিসাবে, প্রতিবছর আমের প্রক্রিয়াজাত খাদ্যের বৈশ্বিক বাজার ২৫ বিলিয়ন ডলার বা তিন লাখ কোটি টাকার সমান। শুকনা আম, আমের পাউডার, কসমেটিক পণ্যসহ নানা পণ্য তৈরি হচ্ছে আম থেকে। বিশ্বের শীর্ষ আম উৎপাদনকারী ১০টি দেশের মধ্যে ষষ্ঠ থেকে সপ্তম অবস্থান বাংলাদেশের; কিন্তু আমজাত পণ্যের উৎপাদন নেই বললেই চলে। দুটি শিল্পপ্রতিষ্ঠান আমসত্ত¦, বার বা কেচাপ তৈরি করে; কিন্তু শুকনা আম উৎপাদনে বড় কোনো শিল্প নেই।
করপোরেট সংস্থার চাকরি ছেড়ে কৃষি উদ্যোক্তা হন মুনজের আলম। বছর পাঁচেক আগে শুরু করেছেন আম দিয়ে নানা পণ্য বানানো। আমের পাউডার দিয়ে শুরু। এ বছর শুকনা আম বানিয়েছেন ‘বরেন্দ্র কৃষি উদ্যোগ’ ও ‘শুদ্ধ’ নামের প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী মুনজের। জাপানের একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কারিগরি সহায়তা পেয়েছেন। এ বছর ৭০০ কেজি শুকনা আম বানিয়েছেন। প্রতি কেজির দাম অনলাইনে ২ হাজার ৪০০ টাকা। আর প্রতি কেজি আমের পাউডারের দাম ১ হাজার ২০০ টাকা।
মুনজের আলম বলেন, এ বছর যত শুকনা আম বানানো হয়েছিল, তার প্রায় পুরোটাই শেষ হয়ে গেছে। এই শুকনা আম দেড় বছর পর্যন্ত ব্যবহারোপযোগী থাকবে। আগামী বছর অন্তত ২০ মেট্রিক টন শুকনা আম তৈরি করতে চাই। যার বেশির ভাগ যাবে দেশের বাইরে। আম ছাড়াও বরেন্দ্র কৃষি উদ্যোগ শুকনা কাঁঠাল ও পেয়ারা বানিয়েছে। এসব পণ্যের ব্যবসাও ভালো চলছে। আগামী বছর কলা ও আনারস দিয়ে একই ধরনের পণ্য বানানো হবে।
শুকনা আম বানানো শিখতে থাইল্যান্ডে গিয়েছিলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জের আরেক কৃষি উদ্যোক্তা ইসমাইল খান শামীম। সুইজারল্যান্ডের একটি সংস্থার সহায়তায় ছিল এ যাত্রা; কিন্তু থাইল্যান্ডের প্রতিষ্ঠানটি তাদের প্রযুক্তি ধার দিতে চায়নি। অগত্যা দেশে ফিরে নিজ উদ্যোগে এ বছর শুকনা আম বানিয়েছেন তিনি। প্রতিদিন চার ঘণ্টা এই আম বানানোর কাজে ব্যয় করেছেন তিনি। গত বছরের ডিসেম্বরে প্রথম কাটিমন আম দিয়ে শুকনা আম বানানোর চেষ্টা করেছিলেন; কিন্তু রং ভালো হয়নি। অতঃপর সাতক্ষীরার গোবিন্দভোগ আম দিয়ে চেষ্টা শুরু। সেটিও খুব ভালো হয়নি। অবশেষে চাঁপাইনবাবগঞ্জের আশ্বিনা দিয়ে সফলতা পেয়েছেন এ বছর।
নওয়াবি ম্যাঙ্গো নামের প্রতিষ্ঠানের প্রধান ইসমাইল খান বলছিলেন, ‘৪০ বার ৪০ মণ আম দিয়ে শুকনা আম বানানোর চেষ্টা করেছি। অবশেষে সফল হয়েছি। স্বাদ ও রং অপূর্ব। এটা অনেক বিক্রিও হয়েছে। এক মণ কাঁচা–পাকা আমে চার কেজির মতো শুকনা আম হয়। কেজিপ্রতি শুকনা আম দুই হাজার টাকায় বিক্রি করেছেন। এবার ৩০০ কেজি শুকনা আম তৈরি করেছেন, তার পুরোটাই বিক্রি হয়ে গেছে। আগামী বছর ১৩ টন শুকনা আম করতে চান এই উদ্যোক্তা।
এ বছর যত শুকনা আম বানানো হয়েছিল, তার প্রায় পুরোটাই শেষ হয়ে গেছে। এই শুকনা আম দেড় বছর পর্যন্ত ব্যবহারোপযোগী থাকবে। আগামী বছর অন্তত ২০ মেট্রিক টন শুকনা আম তৈরি করতে চাই।
এক্সপার্ট মার্কেট রিসার্চ, কগনিটিভ মার্কেট রিসার্চ ও গ্র্যান্ডভিউ রিসার্চ নামের তিনটি বৈশ্বিক বাজার গবেষণা ও পরামর্শক সংস্থার হিসাবে, সারা বিশ্বে গত বছর আমজাত পণ্যের বাজার ছিল বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় তিন লাখ কোটি টাকার। এই বাজারের মধ্যে রয়েছে আমের জুস, শুকনা আম, আমের তৈরি পাউডার ইত্যাদি পণ্য। এর মধ্যে ২৬ হাজার ৮০০ কোটি টাকার ব্যবসা শুকনা আমের। শুকনা আমের বৈশ্বিক এই বাজারে বাংলাদেশের কোনো অংশগ্রহণ নেই। অথচ প্রতিবছর ৭ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে এসব পণ্যের বৈশ্বিক বাজার।
কৃষি উদ্যোক্তা মুনজের আলম বলেন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের আমের বাজার প্রায় সাত হাজার কোটি টাকার। আশপাশের অন্য জেলার আমও যদি প্রক্রিয়াজাত করা হয়, তবে এই বাজারের পরিমাণ দাঁড়াবে ২২ হাজার কোটি টাকা। পাশাপাশি কয়েক হাজার লোকের কর্মসংস্থানের সুযোগ রয়েছে।
দেশের একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রতিবছর প্রায় শতকোটি টাকার আমের পাউডার আমদানি করে। এ কারণে মুনজের ও ইসমাইল দুজনই আমের পাউডার তৈরি শুরু করেছেন।
৪০ বার ৪০ মণ আম দিয়ে শুকনা আম বানানোর চেষ্টা করেছি। অবশেষে সফল হয়েছি। স্বাদ ও রং অপূর্ব। এটা অনেক বিক্রিও হয়েছে। এক মণ কাঁচা-পাকা আমে চার কেজির মতো শুকনা আম হয়।
এদিকে কৃষি অধিদপ্তরের রপ্তানিযোগ্য আম উৎপাদন প্রকল্পের মাধ্যমে কয়েক বছর ধরে দেশের আমের বিদেশ যাত্রা শুরু হয়েছে। এ বছর এখন পর্যন্ত ২ হাজার মেট্রিক টনের বেশি আম রপ্তানি হয়েছে। এ প্রকল্পের পরিচালক আরিফুর রহমান বলেন, ‘আম প্রক্রিয়াজাত শিল্পের বিশাল সম্ভাবনা আছে। আমরা ইতিমধ্যে দুটি প্ল্যান্ট তৈরির পরিকল্পনা করেছি চাঁপাইনবাবগঞ্জে। প্রক্রিয়াজাত আমের দু-একটি আইটেম নিয়ে গবেষণার কাজ চলছে। সেগুলো সফলতা পেলে উৎপাদনে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে।’
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ইসরাইলী গুপ্তচর গ্যাং নেতাসহ নিহত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঘোষিত আসনে প্রার্থী পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুবই কম -ফখরুল
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ভারতীয় গোয়েন্দা নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা তাপসের অফিসে
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চট্টগ্রাম বন্দর বিদেশিদের দেয়া যাবে না -স্টুডেন্টস ফর সভরেন্টি
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
‘১৫ বছরের মধ্যে সেনাবাহিনী যেন দাঁড়াতে না পারে’
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সীমান্তপথে ঢোকে, ছড়ায় ট্রেনে
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
চট্টগ্রাম বন্দর পরিচালনা প্রশ্নে হাইকোর্টের ‘দ্বিধাবিভক্ত’ রায়
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশ অনুমোদন
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’দাদ ১২ই শরীফ উনার সম্মানার্থে অনন্য আয়োজন
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘রাজাকার-আল বদরদের জন্য আ.লীগই ঠিক ছিল’
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এই বিচার নয় -চিফ প্রসিকিউটর
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












