সম্মানিত জিহাদের ময়দানে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বীরত্ব মুবারক (২)
, ১৩ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ সাবি’, ১৩৯২ শামসী সন , ১৬ ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রি:, ৩১ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) আইন ও জিহাদ

(গত সপ্তাহের পর)
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে অনুমতি মুবারক দান করেন এবং উনার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট বরকতময় দোয়া মুবারক করেন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে সামনের দিকে অগ্রসর হতে লাগলেন আর আবৃত্তি করতে লাগলেন-
لا تعجلن فقد اتاك ... مجيب صوتك غير عاجز
فى نية وبصيرة ... والصدق منجى كل فائز
من ضربة نجلا ... يبقى ذكرها عند الهزاهز
অর্থ: “তুমি তাড়াহুড়া করো না। তোমার ডাকে সাড়াদানকারী আসছেন- যিনি অত্যন্ত বীর বাহাদুর।
যিনি বিশুদ্ধ নিয়ত ও স্ক্ষ্মূদৃষ্টির অধিকারী এবং সত্যের উপর অটল, তিনি সব মুক্তিকামীকে রক্ষা করেন।
এক বড় আঘাতের স্মরণ মৃত্যুর পূর্বে গলার গড়গড় শব্দ চলার সময়েও থাকবে। ” সুবহানাল্লাহ!
এই সম্মানিত কবিতা পাঠ করতে করতে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বীরদর্পে আমর ইবনে আব্দ-এর দিকে ছুটে গেলেন। তিনি যখন তার কাছে পৌঁছলেন, তখন সে অবাক চোখে তাকিয়ে বললো, ‘হে যুবক আপনি কে?’
তিনি বললেন, ‘আমি হচ্ছি- আবূ ত্বালিব উনার মহাসম্মানিত আওলাদ (ছেলে) সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম। ’
সে বললো, ‘ভাতিজা! আপনার থেকে বড় কেউ নেই কি? আমি আপনার রক্ত প্রবাহিত করতে অপছন্দ করছি। ’
তিনি বললেন, ‘তুমি না মহান আল্লাহ পাক উনাকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছো যে, যদি সম্মানিত কুরাইশ উনাদের কোনো ব্যক্তি তোমাকে বন্ধুত্বের দিকে আহ্বান করে তবে তুমি তা গ্রহণ করবে। ’
সে বললো, ‘হ্যাঁ; আমি তা বলেছি। ’
তিনি বললেন, ‘তাহলে শুনো- আমি তোমাকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দিকে আহ্বান করছি। ’
তখন সে হেসে বললো, ‘এসব আমার কোনো প্রয়োজন নেই। ’ নাঊযুবিল্লাহ!
তিনি বললেন, ‘তাহলে আমি তোমাকে লড়াই করতে আহ্বান করছি। ’
সে বললো, ‘ভাতিজা! আপনি কেন? লাতের ক্বসম! আমি আপনার রক্ত মুবারক প্রবাহিত করতে পছন্দ করি না। ’
তিনি বললেন, ‘মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ! আমি কিন্তু তোমার রক্ত প্রবাহিত করতে অত্যন্ত পছন্দ করি। ’ সুবহানাল্লাহ!
উনার এমন দৃঢ়তামূলক কথা মুবারক শুনে আমর ইবনে আব্দ-এর খুব গোসসা পয়দা হলো। সে তরবারির এক আঘাতে তার ঘোড়ার ৪টি পা কেটে দিয়ে নিজের বীরত্ব প্রকাশ করলো এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার দিকে তার তরবারী হাঁকাতে লাগলো। আমর ইবনে আব্দ-এর একটি যুদ্ধ কৌশল ছিল এই যে, সে তরবারির এক আঘাতেই তার প্রতিপক্ষকে ধরশায়ী করে ফেলত।
উভয়ের মাঝে মল্লযুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনার ঢাল মুবারক নিয়ে আমর ইবনে আব্দ-এর দিকে এগিয়ে যান। আমর ইবনে আব্দ তরবারী দ্বারা এমন এক আঘাত করলো যে, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার ঢাল মুবারক চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে উনার সম্মানিত কপাল মুবারক-এ আঘাত লাগলো এবং তিনি বসে গেলেন। বসা অবস্থা থেকেই সাথে সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উনার সম্মানিত তরবারী মুবারক দিয়ে এমন এক আঘাত করলেন যে, এক আঘাতে আমর ইবনে আব্দ-এর উভয় পা কেটে দেন। যেমন সে তার ঘোড়ার পা কেটে দিয়েছিলো। অতঃপর পুনরায় আরেক আঘাত দ্বারা তার ঘাড়ের শাহ রগে আঘাত করলেন। এতে আমর ইবনে আব্দ মাটিতে পড়ে গড়াগড়ি খেতে লাগলো। তার রক্তে মাটি লাল হয়ে গেল। আর সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুল আউওয়াল কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি অত্যন্ত উচ্চ আওয়াজ মুবারক-এ সম্মানিত তাকবীর মুবারক দিলেন। সুবহানাল্লাহ! কাট্টা কাফির আমর ইবনে আব্দ নিহত হওয়ার সংবাদ শুনে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারাও অত্যন্ত উচ্চ আওয়াজ মুবারক-এ সম্মানিত তাকবীর মুবারক দিতে থাকেন। ’ সুবহানাল্লাহ!
-মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীক্ব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭০)
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৩য় হিজরী মুবারকের সম্মানিত গাতফানের জিহাদ (২)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৯)
০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৩য় হিজরী মুবারকের সম্মানিত গাতফানের জিহাদ (১)
০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযীমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (৭)
৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৮)
২৮ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৭)
২১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সীমালঙ্ঘনকারী কাফির-মুশরিকদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশ মুবারক
১৭ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঐতিহাসিক ইয়ারমুকের সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ মাত্র ৩৫ হাজার সম্মানিত বীর মুজাহিদ উনারা পরাজিত করলেন ২ লাখ কাফির সৈন্যকে (২)
১২ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ঐতিহাসিক ইয়ারমুকের সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ মাত্র ৩৫ হাজার সম্মানিত বীর মুজাহিদ উনারা পরাজিত করলেন ২ লাখ কাফির সৈন্যকে (১)
১১ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)