সম্মানিত মুতার জিহাদ এবং মুসলমানদের বেমেছাল বীরত্ব (২)
, ১৭ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১২ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আইন ও জিহাদ

সম্মানিত সেনাপতি নির্ধারণ এবং মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ওছীয়ত মুবারক:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছেন-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ أَمَّرَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِي غَزْوَةِ مُؤْتَةَ حَضْرَتْ زَيْدَ بْنَ حَارِثَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ إِنْ قُتِلَ حَضْرَتْ زَيْدٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَحَضْرَتْ جَعْفَرٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ وَإِنْ قُتِلَ حَضْرَتْ جَعْفَرٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَحَضْرَتْ عَبْدُ اللَّهِ بْنُ رَوَاحَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ
অর্থ: “হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত মুতার জিহাদ মুবারক-এ হযরত যায়েদ ইবনে হারিছাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে সম্মানিত সেনাপতি মনোনীত করেন। অতঃপর তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, হযরত যায়েদ ইবনে হারিছাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তাহলে হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত সেনাপতি হবেন। আর হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তাহলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত সেনাপতি হবেন।” (বুখারী শরীফ)
অন্য বর্ণনায় রয়েছেন- নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
فَإِن قُتِلَ حَضْرَتْ عبدُ الله رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فليرتض الْمُسلمُونَ مِنْهُم رجلا فليجعلوه عَلَيْهِم
অর্থ: “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তাহলে সম্মানিত মুসলমান উনারা যেন উনাদের মধ্য থেকে একজনের ব্যাপারে একমত হয়ে উনাকে সম্মানিত সেনাপতি হিসেবে নির্ধারণ করে নেন।” সুবহানাল্লাহ! (খ¦ছাইছুল কুবরা ১/৪৩০, শারহুয যারক্বানী)
এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে দুটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে গেছেন। (১) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ইলমে গায়েব মুবারকসহ সমস্ত নিয়ামত মুবারক উনাদের অধিকারী, মালিক। যার কারণে তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ময়দানে যাওয়ার আগেই বলে দিলেন, হযরত যায়েদ ইবনে হারিছাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তাহলে হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত সেনাপতি হবেন। আর হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তাহলে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি সম্মানিত সেনাপতি হবেন। আর হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি যদি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তাহলে সম্মানিত মুসলমান উনারা যেন উনাদের মধ্য থেকে একজনের ব্যাপারে একমত হয়ে উনাকে সম্মানিত সেনাপতি হিসেবে নির্ধারণ করে নেন। সুবহানাল্লাহ! (২) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন এটা ইরশাদ মুবারক করলেন, তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নিশ্চিত হয়ে গেলেন যে, হযরত যায়েদ ইবনে হারিছাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি, হযরত জা’ফর রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি এবং হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি অর্থাৎ উনারা অবশ্যই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ করবেন। সুবহানাল্লাহ! উনারা নিশ্চিত শাহাদাত মুবারক জানার পরেও জান-মাল, পরিবার-পরিজন, আল-আওলাদ এবং দুনিয়ার কথা চিন্তা না করে, সম্মানিত জিহাদ মুবারক উনার ময়দানে গিয়ে হাসি মুখে, সন্তুষ্ট চিত্তে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক গ্রহণ করেন। সুবহানাল্লাহ! তাহলে উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে কতটুকু ফানা-বাক্বা ছিলেন, সেটা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ! উনাদের এই বেমেছাল আত্মত্যাগের কারণেই আমরা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম পেয়েছি। পরবর্তী উম্মত যদি ইহকাল-পরকালে হাক্বীক্বী কামিয়াবী হাছিল করতে চায়, তাহলে সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে- হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে নিজেদের জান-মাল সমস্ত কিছু কুরবান করে দেয়া। সেটাই মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন-
فَإِنْ آمَنُوا بِمِثْلِ مَا آمَنْتُمْ بِهِ فَقَدِ اهْتَدَوْا
অর্থ: “যদি পরবর্তী উম্মত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের অনুসরণে ঈমান আনতে পারে, তবেই তারা হাক্বীক্বী হিদায়াত লাভ করতে পারবে।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারাহ্ শরীফ: সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ১৩৭) (চলবে)
-মুহাদ্দিস মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭৪)
১১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭৩)
০৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭২)
২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭১)
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নাজরান অভিযান
১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭০)
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৩য় হিজরী মুবারকের সম্মানিত গাতফানের জিহাদ (২)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৯)
০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৩য় হিজরী মুবারকের সম্মানিত গাতফানের জিহাদ (১)
০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক
৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযীমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (৭)
৩০ জানুয়ারি, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)