সম্মানিত মুতার জিহাদ মুবারক এবং সম্মানিত মুসলমানদের বেমেছাল বীরত্ব মুবারক (৪)
, ০২ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১১ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২৬ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আইন ও জিহাদ
মা‘আন নামক স্থানে অবতরণ এবং গোয়েন্দা উনাদের মারফত কাফিরদের সংবাদ গ্রহণ:
তারপর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা রওয়ানা হয়ে যান এবং শামের মা‘আন (مَعَانُ) নামক অঞ্চলে অবতরণ করেন। তখন উনারা গোয়েন্দা উনাদের মারফত সংবাদ পান যে, রোমের শাসক হিরাক্লিয়াস এক লাখ সৈন্য নিয়ে বাল্ক্বা (بَلْقَاءٍ) অঞ্চলের মাআব (مَآبُ) নামক স্থানে অবস্থান করছে। সেখানে তার সাথে যোগ হয়েছে লাখাম, জুযাম, ক্বাইন (قَيْنُ), বাহরা ও বালী ইত্যাদি আরব খ্রিষ্টান গোত্রসমূহের আরো এক লাখ সৈন্য। উল্লেখিত শেষোক্ত এক লাখ ছিলো আরব গোত্রসমূহের সমন্বিত সেনাদল। কারো কারো মতে সব মিলিয়ে কাফিরদের সৈন্য সংখ্যা ছিলো ২ লাখের অধিক। আর সম্মানিত মুসলমানদের সৈন্য সংখ্যা মাত্র ৩ হাজার। (সীরাতে হালাবিয়্যাহ্, শারহুয যারক্বানী, ইবনে হিশাম ইত্যাদি)
গোয়েন্দা উনাদের মারফত সংবাদ পেয়ে মজলিসে শূরার বৈঠক:
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা গোয়েন্দা উনাদের মারফত শত্রুবাহিনীর সংবাদ পেয়ে মজলিসে শূরা অর্থাৎ পরামর্শ সভায় বসেন। এটি ছিল সম্মানিত বদর জিহাদ মুবারক উনার ন্যায়। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা এটা চিন্তা করেননি যে, কাফিররা এতো বিশাল বাহিনী নিয়ে পূর্ব থেকেই যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হয়ে রয়েছে। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা দুই রাত পর্যন্ত পরামর্শ করলেন। কেউ কেউ অভিমত প্রকাশ করেন যে, আমরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক-এ শত্রু সংখ্যার খবর দিয়ে পত্র লিখি। অতঃপর তিনি আমাদের জন্য সাহায্যকারী বাহিনী পাঠাবেন অথবা আমাদেরকে যা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নির্দেশ মুবারক দিবেন, আমরা তাই করব। তখন হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি অত্যন্ত দৃঢ়তার সাথে এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে জালাময়ী ভাষায় সকলের উদ্দেশ্যে বলেন-
يَا قَوْمِ وَاللهِ إنَّ الَّتِي تَكْرَهُونَ لَلَّتِي خَرَجْتُمْ تَطْلُبُونَ الشَّهَادَة وَمَا نُقَاتِلُ النَّاسَ بِعَدَد وَلاَ قُوَّةٍ وَلاَ كَثْرَةٍ مَا نُقَاتِلُهُمْ إلاَّ بِهَذَا الدِّينِ الَّذِي أَكْرَمَنَا اللهُ بِهِ فَانْطَلِقُوا فَإِنَّمَا هِيَ إحْدَى الْحُسْنَيَيْنِ إمَّا ظُهُورٌ وَإِمَّا شَهَادَةٌ قَالَ فَقَالَ النَّاسُ قَدْ وَاللهِ صَدَقَ حَضْرَتْ اِبْنُ رَوَاحَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ
অর্থ: “হে আমার ক্বওম! মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! আপনারা যেটাকে অপছন্দ করেন, নিশ্চয়ই আপনারা সেটা অন্বেষণের জন্যই বের হয়েছেন। আর তা হলো সম্মানিত শাহাদাত মুবারক। আমরা মানুষের সঙ্গে সংখ্যা দ্বারা, শক্তি দ্বারা বা আধিক্য দ্বারা সম্মানিত জিহাদ মুবারক করি না। আর আমরা কেবলমাত্র এই মহাসম্মানিত দ্বীন উনার স্বার্থ ব্যতীত তাদের সাথে সম্মানিত জিহাদ মুবারক করি না- যেই মহাসম্মানিত দ্বীন উনার মাধ্যমে মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সম্মানিত করেছেন। অতএব সামনে চলুন। নিশ্চয়ই এর মধ্যে কেবলমাত্র দুটি কল্যাণের একটি রয়েছেন। হয়তো সম্মানিত বিজয় মুবারক; অথবা সম্মানিত শাহাদাত মুবারক। অতঃপর সকলে বললেন-
قَدْ وَاللهِ صَدَقَ حَضْرَتْ اِبْنُ رَوَاحَةَ رَضِيَ اللّٰهُ تَعَالٰى عَنْهُ
‘অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে রওয়াহাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সত্য বলেছেন’। ” (বিদায়া-নিহায়া, ইবনে হিশাম, সীরাতে হালাবিয়্যাহ্) (চলবে)
-মুহাদ্দিস মুহম্মদ আল আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হযরত আবয়াদ্ব ইবনে হাম্মাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিকদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (৪)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২৩০০)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (৩)
২৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিভিন্ন জিহাদে ব্যবহৃত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সমরাস্ত্রসমূহ এবং বাহন মুবারক উনাদের পরিচিতি মুবারক (২)
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
১৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ছাহিবু লাওলাক, ছাহিবু ক্বাবা কাওসাইনি আও আদনা, ছাহিবে কাওছার, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিরুদ্ধে মুনাফিক্বদের গভীর ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের প্রামাণ্য ইতিহাস (১)
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৯৯)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উসওয়াতুন হাসানাহ, খুলুকুন আযীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার গাযওয়া বা অভিযান মুবারক
০১ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












