সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার পবিত্রতম জীবনী মুবারক
, ২০ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৮ আউওয়াল, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৭ জুন, ২০২৫ খ্রি:, ০৩ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) সাওয়ানেহ উমরী মুবারক

সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর এটাই উনার সর্বশ্রেষ্ঠ পরিচিতি মুবারক। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা হযরত বানাত আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে তিনি হচ্ছেন ‘আর রবি‘য়াহ তথা চতুর্থ। ’ সুবহানাল্লাহ! উনার মর্যাদা-মর্তবা মুবারক হচ্ছেন, তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী হচ্ছেন তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার সম্মানিত মুহব্বত মুবারকই হচ্ছেন সম্মানিত ঈমান। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের প্রায় ৩ বছর পূর্বে ২০শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ ছুবহে ছাদিক্ব উনার সময় বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৩৭ বছর পার হয়ে ৩৮ বছর চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ! আর উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ৫২ বছর পার হয়ে ৫৩ বছর চলাকালীন। সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, দুনিয়ার কোনো কিতাবে উপরোক্ত বর্ণনাটি উল্লেখ নেই; বরং এটা আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার একখানা অভূতপূর্ব বেমেছাল মহাসম্মানিত ফায়ছালা মুবারক, যা উনার বেমেছাল শ্রেষ্ঠত্ব মুবারক উনার বহিঃপ্রকাশ মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময় বিশেষ ঘটনা মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার সময় উনার এবং উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য স্বয়ং যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ চার জন সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য চারজন সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ-এ প্রবেশ করলেন, উপস্থিত হলেন। উনাদের চেহারা মুবারক অত্যন্ত সুন্দর ও নূরানী। ছূরতান উনাদেরকে পরিচিত মনে হচ্ছিলো না। তখন উনাদের মধ্যে প্রথমজন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে বললেন, আমি আপনার সম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল বাশার সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! দি¦তীয়জন বললেন, আমি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আসিয়াহ বিনতে মুযাহিম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তৃতীয়জন বললেন, আমি জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বোন হযরত কুলছূম আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! চতুর্থজন বললেন, আমি জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত ঈসা রূহুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিতা আম্মাজান হযরত মারইয়াম বিনতে ইমরান আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আমরা এসেছি আপনার খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য। ” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ১/৪৫)
অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি কুদরতীভাবে উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের বিষয়টা ফায়ছালা মুবারক করেন। অর্থাৎ তিনি কুদরতীভাবে বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
স্মরণীয় যে, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ছাহিবু ইলমিল আউওয়ালি ওয়াল ইলমিল আখিরি, মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “শুধু উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সময় নয়; বরং মহাসম্মানিত হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের এবং মহাসম্মানিতা হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রত্যেকের বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময়ই উনাদের খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ বিশেষ সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে প্রেরণ করেছেন এবং উনারা উনাদের যথাযথ খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে নিজেদেরকে ধন্য করেছেন। ” সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র সিজদারত অবস্থায় এবং পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় যমীনে তাশরীফ মুবারক:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেমন, পবিত্র সিজদারত অবস্থায় এবং অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছেন, ঠিক তেমনিভাবে উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিও সিজদারত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রেখেছেন। সুবহানাল্লাহ!
এ সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে,
قَالَتْ فَوَلَدَتْ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ (حَضْرَتْ فَاطِمَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ فَوَقَعَتْ حِيْنَ وَقَعَتْ عَلَى الْاَرْضِ سَاجِدَةً رَّافِعَةً اُصْبُعَهَا.
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর সাইয়্যদাতু নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন তিনি সিজদারত অবস্থায় এবং সম্মানিত ও পবিত্র অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। ” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ ফী মানাক্বিবে যাওইল কুরবা শরীফ ১/৪৫)
জান্নাত থেকে সম্মানিত হুর উনাদের আগমন এবং জান্নাতী পানি মুবারক দ্বারা গোসল মুবারক করানো:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের সময় উনার খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনি সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে বিশেষ চার জন সম্মানিতা মহিলা আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকেই শুধু প্রেরণ করেননি; বরং অসংখ্য-অগণিত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম এবং অসংখ্য-অগণিত সম্মানিত জান্নাতী বিশেষ হুর-গেলমান উনাদেরকেও প্রেরণ করেছিলেন। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিতা জান্নাতী বিশেষ হুর উনাদের হাত মুবারক-এ গোসল মুবারক করানোর জন্য বড় বাটি এবং উজ্জ্বল, চাকচিক্যময় পানির মশক ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! প্রত্যেকটি মশক সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত পবিত্র পানি মুবারক দ্বারা পরিপূর্ণ ছিলেন। এই সকল সম্মানিতা বিশেষ হুর উনারা অত্যন্ত আদবের সাথে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সম্মানিত পানি মুবারক দ্বারা সম্মানিত গোসল মুবারক করান এবং খুশবূ মুবারক মিশ্রিত সম্মানিত জান্নাতী লেবাস মুবারক পরিধান করিয়ে দেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর উনারা অত্যন্ত আদবের সাথে উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কোল মুবারক-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে তুলে দেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেই উম্মতে হাবীবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের জন্য সম্মানিত দু’য়া মুবারক করা:
আল্লামা হাফিয আবুল আব্বাস আহমদ ইবনে আব্দুল্লাহ ইবনে মুহম্মদ মুহিব্বুদ্দীন ত্ববারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন,
قَالَتْ فَوَلَدَتْ اَلنُّوْرُ الرَّابِعَةُ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ اَلزَّهْرَاءُ (حَضْرَتْ فَاطِمَةُ) عَلَيْهَا السَّلَامُ فَوَقَعَتْ حِيْنَ وَقَعَتْ عَلَى الْاَرْضِ سَاجِدَةً رَّافِعَةً اُصْبُعَهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অতঃপর সাইয়্যদাতু নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি যখন দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন, তখন তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারকরত অবস্থায় এবং অঙ্গুলি মুবারক উত্তোলন করা অবস্থায় দুনিয়ার যমীনে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক রাখেন। ” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ শরীফ ১/৪৫)
মূলত, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর পর সিজদারত অবস্থায় যেমন উনার উম্মত উনাদের গুণাহ মাফের জন্য সম্মানিত দু’য়া মুবারক করেছেন, ঠিক তেমনিভাবে সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন, সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনিও বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করার পর পর সিজদারত অবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উম্মত উনাদের গুণাহ মাফের জন্য সম্মানিত দু’য়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ! উপরোক্ত সম্মানিত ওয়াকেয়াহ মুবারক সেই দিকেই ইঙ্গিত বহন করে। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র জিসম মুবারক থেকে বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত ও পবিত্র রেহেম শরীফ-এ থাকা অবস্থায় উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সবসময় সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ!
যেমন এই সম্পর্কে ‘নুযহাতুল মাজালিস’-কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, “যখন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত রেহেম শরীফ-এ ধারণ মুবারক করেন, তখন থেকে তিনি দীর্ঘ ৯ মাস (অর্থাৎ পবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ পর্যন্ত) সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক পেতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর যখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন, তখন উক্ত সম্মানিত বেহেশতী সুঘ্রাণ মুবারক উনার মাঝে শোভা পেতে থাকেন। ” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস ২/১৭১)
মূলত, সম্মানিত জান্নাত মুবারকসহ সমস্ত কায়িনাত হযরত আহলু বাইতি শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের কারণে সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক লাভ করেছে। শুধু তাই নয়, সম্মানিত জান্নাত মুবারক যে সুঘ্রাণ মুবারক লাভ করেছে, সেটা হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিস সালাম উনাদের থেকেই লাভ করেছে। সুবহানাল্লাহ! সেই সম্মানিত সুঘ্রাণ মুবারকই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মাঝে শোভা পেয়েছে। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেয়া এবং সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা:
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উনার লখতে জিগার সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশের ৭ম দিন তথা ২৬ শে জুমাদাল উখরা শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত আক্বীক্বাহ মুবারক দেন এবং আনুষ্ঠানিকভাবে উনার সম্মানিত নাম মুবারক রাখেন ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত কুনিয়াত মুবারক হচ্ছেন ‘উম্মুল হাসান আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’ ইসম বা নাম মুবারক রাখার বেমেছাল হিকমত মুবারক:
মূলত, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক মুতাবিক উনার মহাসম্মানিতা আওলাদ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখেন ‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ!
উক্ত সম্মানিত নাম মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন- উদ্ধারকারিণী, পৃথককারিণী, রক্ষাকারিণী। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখার পিছনে লক্ষ কোটি হিকমত মুবারক নিহিত রয়েছে। যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম-কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! নিম্নে এ বিষয়ে সংক্ষিপ্তাকারে কিছু আলোচনা করা হলো-
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম! আপনার কি জানা রয়েছে যে, কেন আপনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’ রাখা হয়েছে? সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! কেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক ‘হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’ রাখা হয়েছে? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, নিশ্চয়ই নিশ্চয়ই যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি সাইয়্যদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে এবং উনার সম্মানিত বংশধর উনাদেরকে ক্বিয়ামতের দিন জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্ত রাখবেন। সুবহানাল্লাহ! এ জন্য উনার সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক রাখা হয়েছে, ‘সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাত্বিমাহ আলাইহাস সালাম’। সুবহানাল্লাহ! (যাখায়িরুল ‘উক্ববাহ শরীফ ১/২৬)
সম্মানিত ছূরত মুবারক:
বিদ্ব‘য়াতুম মির রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুন নিসায়ি ‘আলাল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন বেমেছাল সৌন্দর্য মুবারক উনার অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের মাক্বাম মুবারক-এ অনন্যা। ” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি ছিলেন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হুবহু নকশা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের নিসবত মুবারক ছিলো উভয় দিক থেকে। অর্থাৎ উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের উভয়ের থেকে সমানভাবে সম্মানিত নিসবত মুবারক পেয়েছিলেন। ” সুবহানাল্লাহ!
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন, “হযরত আবনাউ রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত জামালী ত্ববী‘য়ত মুবারক উনার অধিকারী ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! হযরত বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মধ্যে সবচেয়ে সম্মানিত জামালী ত্ববী‘য়ত মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! উনার প্রায় অনুরূপ সম্মানিত জামালী ত্ববী‘য়ত মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদাতুনা আন নূরুর রবি‘য়াহ হযরত যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ত্ববীয়ত মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত জামালী ও সম্মানিত জালালী উভয় প্রকার শান মুবারক মিশ্রিত ছিলেন, তবে সম্মানিত জালালী শান মুবারক উনার কিছুটা প্রাধান্য ছিলেন। সুবহানাল্লাহ! আর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ত্ববীয়ত মুবারক উনার মধ্যে সম্মানিত জামালী ও সম্মানিত জালালী উভয় প্রকার শান মুবারক মিশ্রিত ছিলেন, তবে সম্মানিত জালালী ত্ববীয়ত মুবারক উনার শান মুবারক বেশি প্রকাশ পেতেন। ” সুবহানাল্লাহ!
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ اُمِّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ اَلصِّدِّيْقَةِ (حَضْرَتْ عَائِشَةَ) عَلَيْهَا السَّلَامُ قَالَتْ مَا رَاَيْتُ اَحَدًا اَشْبَهَ سَـمْتًا وَّدَلًّا وَّهَدْيًا بِرَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ حَضْرَتْ فَاطِمَةَ عَلَيْهَا السَّلَامُ بِنْتِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِـىْ قِيَامِهَا وَقُعُوْدِهَا.
অর্থ: “উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত চাল-চলন মুবারক, আচার-ব্যবহার মুবারক, কথা-বার্তা মুবারক, স্বভাব-চরিত্র মুবারক, কাজ-কর্ম মুবারক, উঠা-বসা মুবারক-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার চেয়ে অধিক সাদৃশ্যপূর্ণ আর কাউকে দেখিনি। ” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ইলম মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত তা’লীম মুবারক দিয়েছেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক তিনি, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা। সুবহানাল্লাহ! তাহলে তিনি কত বেমেছাল সম্মানিত ইলম মুবারক উনার অধিকারিণী ছিলেন, সেটা জিন-ইনসান ও তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার বাইরে। সুবহানাল্লাহ!
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। একদিন তিনি (এবং অনেক বিশিষ্ট ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ (সম্মানিত দরবারে নববী শরীফ-এ) বসে ছিলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (সবাইকে উদ্দেশ্য করে) জিজ্ঞাসা মুবারক করলেন- মেয়েদের জন্য কোন আমলটা সবচেয়ে উত্তম? সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সকলেই চুপ থাকলেন। আমি (আস্তে করে পিছন থেকে উঠে) সম্মানিত ও পবিত্র হুজরা শরীফ-এ এসে সাইয়্যিদাতু নিসায়ি আহলিল জান্নাহ, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে জিজ্ঞাসা করলাম- মেয়েদের জন্য কোন আমলটা সবচাইতে উত্তম? তিনি বললেন, মেয়েদের জন্য সবচাইতে উত্তম আমল হচ্ছে, কোন পুরুষ সে মহিলাকে দেখবে না এবং সে মহিলা কোন পুরুষকে দেখবে না। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, আমি সেখান থেকে এটা শুনে সরাসরি যেয়ে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মেয়েদের জন্য শ্রেষ্ঠ আমল হচ্ছে তারা কোন পুরুষকে দেখবে না এবং তাদেরকেও কোন পুরুষ দেখবে না। (এটা শুনে) সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন- আপনি কার কাছ থেকে জেনে এটা বললেন? তিনি বলেন, আমি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে জেনে এটা বলেছি। সুবহানাল্লাহ! সেটা শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি (খুশি মুবারক প্রকাশ করলেন) এবং বললেন- সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি তো আমার সম্মানিত জিস্ম মুবারক উনার সম্মানিত গোশত মুবারক উনার একখানা সম্মানিত টুকরো মুবারক, আমার সম্মানিত লখতে জিগার মুবারক (সেজন্য তিনি হাক্বীক্বী বিষয়টা বলে দিয়েছেন, জানিয়ে দিয়েছেন)। ” সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ:
মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার পর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তা সর্বপ্রথম উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রকাশ করেন। উম্মুল মু’মিনীন আল ঊলা সাইয়্যিদাতুনা হযরত কুবরা আলাইহাস সালাম তিনি পুরুষ-মহিলা সকলের পূর্বে সর্বপ্রথম সম্মানিত দ্বীন ইসলাম গ্রহণ করেন এবং সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনার সাথে সাথে উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিন্নাস সালাম বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাও সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সামান্য সময়ের ব্যবধানে খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনিও সংবাদ মুবারক পাওয়ার সাথে সাথে এসে সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! উনারাই হচ্ছেন পুরুষ-মহিলা সকলের মাঝে সর্বপ্রথম সম্মানিত ঈমান মুবারক প্রকাশকারিণী। সুবহানাল্লাহ!
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে বেমেছাল সম্মানিত খিদমত মুবারকের আনজাম দেয়া:
মহান আল্লাহ পাক তিনি বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য মু‘য়াল্লিমাহ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি নূরে মুজসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকেসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীকে শিক্ষা দিয়েছেন যে, কিভাবে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে হয়। সুবহানাল্লাহ! যখন মুশরিকরা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কষ্ট-তাকলীফ দিতো এবং উনার উপর যুলুম নির্যাতন করতো, তখন একজন মা তার সন্তানকে যেভাবে স্নেহভরে আদর-যতœ করে থাকে, ঠিক সেইভাবে বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাখিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতেন। সুবহানাল্লাহ! এই জন্য উনার একখানা সম্মানিত লক্বব মুবারক হচ্ছেন “উম্মু আবীহা”। সুবহানাল্লাহ! এই সম্মানিত লক্বব মুবারক উনার অর্থ মুবারক হচ্ছেন “তিনি উনার স্বীয় পিতা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহাস সালাম। ” সুবহানাল্লাহ!
তিনি যে কত বেমেছাল খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, এই বিষয়ে হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একবার নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত কা’বা শরীফ উনার পাশে সম্মানিত ছলাত (নামায) মুবারক আদায় করছিলেন। এই সময় কুরাইশদের একদল লোক সেখানে বসা ছিল। তখন তাদের মধ্য থেকে একটা (সর্ব নিকৃষ্ট লোক আবূ জাহল) বললো, তোমাদের মধ্যে এমন কে আছে, যে অমুক গোত্রের উটের নাড়িভুঁড়ি এনে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করবে, অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি ইঙ্গিত করে বললো, ঐ ব্যক্তি তথা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ যাবেন তখন তা উনার সম্মানিত দুই কাঁধ মুবারক উনাদের মাঝখানে রেখে দিবে? নাঊযুবিল্লাহ! তখন তাদের মধ্যে সর্বাপেক্ষা বড় পাপিষ্ঠ লোকটি (উক্ববা) উঠে গেল (এবং তা নিয়ে এসে অপেক্ষা করতে থাকলো)। অতঃপর যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক-এ গেলেন তখন সে তা (উটের নাড়িভুঁড়ি) উনার সম্মানিত দুই কাঁধ মুবারক উনাদের মাঝখানে রেখে দিলো। নাউযুবিল্লাহ! এমতাবস্থায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সিজদা মুবারক অবস্থায় রইলেন। এই অবস্থা দেখে সেই পাপিষ্ঠ লোকগুলো খুব হাসাহাসি করতে লাগলো, এমন কি হাসতে হাসতে একে অন্যের উপর লুটিয়ে পড়তে লাগলো। নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! নাউযুবিল্লাহ! এমন সময় এক ব্যক্তি উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে গিয়ে সংবাদ দিলেন,
فَاَقْبَلَتْ تَسْعٰى وَثَبَتَ النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سَاجِدًا حَتّٰى اَلْقَتْهُ عَنْهُ وَاَقْبَلَتْ عَلَيْهِمْ تَسُبُّهُمْ وَدَعَتْ عَلـٰى مَنْ صَنَعَ ذٰلِكَ.
তিনি শোনামাত্র খুব দ্রুত ছুটে আসেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তখনও সম্মানিত সিজদা মুবারক অবস্থায় ছিলেন। উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার উপর থেকে উটের নাড়িভুঁড়ি সরিয়ে দেন। অতঃপর কাফিরদের দিকে মুখ করে তাদের ধ্বংস কামনা করেন এবং যে ব্যক্তি এই সর্বনিকৃষ্ট কাজটি করেছে তার বিরুদ্ধে বদদু‘য়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নামায মুবারক শেষ করে উচ্চ আওয়ায মুবারক-এ তাদের বিরুদ্ধে বদদু‘য়া মুবারক করেন। তিনি বলেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! আপনি কুরাইশদেরকে ধ্বংস করে দিন। এরূপ তিনবার বলেন। আর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা বিশেষ সম্মানিত সুন্নত মুবারক ছিলেন যে, তিনি যখন কোনো বিষয়ে দু‘য়া মুবারক বা বদদু‘য়া মুবারক করতেন অথবা মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কোনো বিষয়ে আরজি মুবারক পেশ করতেন, তখন বাক্য মুবারকগুলো তিনবার উচ্চারণ করতেন। সুবহানাল্লাহ! এরপর তিনি নাম ধরে ধরে বদদু‘য়া মুবারক করেন, আয় বারে এলাহী মহান আল্লাহ পাক! আপনি আবু জাহিলকে ধ্বংস করে দিন এবং উতবা ইবনে রবী‘য়াহ, শায়বা ইবনে রবী‘য়াহ, ওয়ালীদ ইবনে উতবা, উমাইয়া ইবনে খালফ, উক্ববা ইবনে আবী মুআইত এবং উমারাহ ইবনুল ওয়ালীদকে ধ্বংস করে দিন। হযরত ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যাদের নাম উচ্চারণ করে বদদু‘য়া মুবারক করেছিলেন, আমি তাদের প্রত্যেককে সম্মানিত বদর জিহাদ উনার দিন নিহত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেছি। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তাদেরকে টেনে হিঁচড়ে বদরের একটি অনাবাদ (তথা ময়লা-আবর্জনাযুক্ত) কূপের মধ্যে নিক্ষেপ করা হয়েছে। এরপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এই কূপের অধিবাসীদের উপর অন্ততঃকালের জন্য লা’নত বর্ষিত হোক। ” (আমীন!) (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, আল আহকামুশ শর‘ইয়্যাহ ২/৩০৭, শরহুস সুন্নাহ ১৩/৩৩০)
এই হাদীছ শরীফ থেকে স্পষ্ট হয়ে যায় যে, উম্মু আবীহা সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি কতো বেমেছালভাবে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিয়েছেন, যেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা ও কল্পনার ঊর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ!
শি‘আবে আবী ত্বালিবে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি’য়াহ যাহরা আলাইহাস সালাম:
আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক প্রকাশ পাওয়ার সপ্তম (৭ম) বছর সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি শি‘আবে আবী ত্বালিবে সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। তিনি সেখানে তিন বছর সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। শি‘আবে আবী ত্বালিবে কাফির-মুশরিকরা খাবার পৌঁছাতে বাধা সৃষ্টি করে। তাদের বাধার কারণে সেখানে সাধারণত খাবার পৌঁছতো না বিধায় হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের এরূপ অবস্থা হয়েছিলো যে, উনারা খাদ্য হিসেবে গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল পর্যন্ত খেয়েছিলেন। এমনকি উনারা চামড়ার না’লাঈন শরীফ (জুতা মুবারক) পানিতে সিদ্ধ করে চিবিয়েছেন। গাছের লতা-পাতা, ছাল-বাকল খাবার হিসেবে গ্রহণ করার ফলে উনাদের ইস্তিঞ্জা মুবারক বকরীর লেদের মত হয়ে গিয়েছিলো। ক্ষুধার্ত শিশু উনাদের কান্না মুবারক-এ আশে-পাশের লোকেরা রাতে ঘুমাতে পারতো না। তারপরও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে দূরে সড়ে যাননি। কি অপূর্ব আত্মত্যাগ! সুবহানাল্লাহ! তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উম্মুল মু‘মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন অনেক বেশি। তিনি কখনও কখনও সম্মানিত মারীদ্বী শান মুবারক প্রকাশ করতেন (অসুস্থতা মুবারক গ্রহণ করতেন) আবার কখনও কখনও সম্মানিত ছিহ্হাতী শান মুবারক প্রকাশ করতেন (সুস্থতা মুবারক গ্রহণ করতেন)। সুবহানাল্লাহ! সেই সময় খাইরু বানাতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম তিনি, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! যা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর চিন্তা-কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! মূলত, উনাদের কাছ থেকেই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা শিক্ষা মুবারক গ্রহণ করেছেন কিভাবে সমস্ত কিছু ত্যাগ করে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাঝে ফানা-বাক্বা হতে হয়, উনার খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দিতে হয়। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত হিজরত মুবারক:
মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক পেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যখন সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত হিজরত মুবারক করেন, তখন বানাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা প্রত্যেকেই সম্মানিত মক্কা শরীফ-এ অবস্থান মুবারক করছিলেন। সুবহানাল্লাহ!
মুজাদ্দিদে আ’যম, ক্বইয়ূমুয যামান, আল জাব্বারিউল আউওয়াল, আল ক্বউইউল আউওয়াল, সুলত্বানিন নাছীর, হাবীবুল্লাহ, জামি‘উল আলক্বাব, মুত্বহ্হার, মুত্বহ্হির, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করার প্রায় এক থেকে দেড় মাস পর উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম তিনি, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালামতিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম তিনি, বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা এক সাথে সম্মানিত হিজরত মুবারক করে সম্মানিত ও পবিত্র মদীনা শরীফ-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক গ্রহণ করেন। ” সুবহানাল্লাহ!
আযীমুশ শান মহাসম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ:
বিভিন্ন কিতাবের বিভিন্ন বর্ণনা থেকে বিষয়টি স্পষ্ট যে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবত মুবারক হাছিল করার লক্ষ্যে এবং উনার খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়ার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি এবং সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম তিনিসহ আরো অনেক ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য আরজী মুবারক পেশ করেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, এই বিষয়ে আমি মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত ওহী মুবারক উনার অপেক্ষায় আছি। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের পরামর্শে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার বিষয়ে প্রস্তাব নিয়ে যান এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে উনাকে সম্মানিত সালাম মুবারক দেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত সালাম মুবারক উনার জবাব দিয়ে বলেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আপনি কিছু বলবেন কী? তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহূ ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বলেন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার সম্মানিত প্রস্তাব মুবারক নিয়ে এসেছি। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি জবাবে বললেন, ‘মারহাবান ওয়া আহলান’। সুবহানাল্লাহ! এর অধিক কিছু বললেন না। সাইয়্যিদুনা হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, সে সময় আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত ছিলাম। দেখলাম যে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত চেহারা মুবারক-এ সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হওয়ার আলামত প্রকাশ পাচ্ছেন। সুবহানাল্লাহ!
সেটাই হাদীছ শরীফ উনার দ্বারা আরো স্পষ্ট হয়ে যায়। হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ বসা ছিলাম। এমতাবস্থায় উনার নিকট সম্মানিত ওহী মুবারক আসলেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি যখন সম্মানিত ওহী মুবারক উনার কারণে আনন্দিত হলেন, তখন আমাকে বলেন, হে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! আপনি কি জানেন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত আরশ উনার মালিক মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কি সংবাদ মুবারক নিয়ে এসেছেন? আমি বললাম, আমার পিতা-মাতা আপনার জন্য কুরবান হোক! হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি সম্মানিত আরশ উনার মালিক মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে কি সংবাদ মুবারক নিয়ে এসেছেন? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাকে বলেছেন আমি যেন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করি। ” সুবহানাল্লাহ! (জামিউল আহাদীছ ২৩/৯৭, কানযুল ‘উম্মাল ১৩/৬৮৩, আল বায়ান ওয়াত তা’রীফ ১/১৭৪)
বিশেষ ফেরেশতা উনাদের উপস্থিতিতে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবিআহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন:
‘নুযহাতুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে যে, হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি একদা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হয়ে বলেন, নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে সালাম জানিয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! আর তিনি আপনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেছেন, আজ সম্মানিত জান্নাত মুবারক-এ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আল ঊলা কুবরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত বালাখানা মুবারক উনার মধ্যে সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত আক্বদ মুবারক সম্পন্ন হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! খতীব হচ্ছেন হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম তিনি। আর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি ও হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারা দু‘জন সাক্ষী, স্বয়ং খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি হচ্ছেন অলী তথা অভিভাবক এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত যাওজুম মুকাররাম। ” সুবহানাল্লাহ! (নুযহাতুল মাজালিস)
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে মাশওয়ারা করা:
এই সম্পর্কে ‘যাখায়েরুল ‘উক্ববা শরীফ’ উনার বর্ণিত রয়েছে যে,
لما خطب حضرت على عليه السلام حضرت فاطمة عليها السلام أتاها رسول الله صلى الله عليه وسلم فقال ان حضرت عليا عليه السلام قد ذكرك فسكتت فخرج فزوجها.
অর্থ: “যখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য আরজী মুবারক পেশ করলেন, তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার নিকট আসলেন। তারপর তিনি বললেন, নিশ্চয়ই সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি আপনার সাথে সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ আবদ্ধ হওয়ার জন্য আরজী মুবারক পেশ করেছেন। তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি চুপ থাকলেন। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বের হয়ে গেলেন। তারপর উনার সম্মানিত আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ সম্পন্ন করলেন। ” সুবহানাল্লাহ! (যাখায়েরুল ‘উক্ববাহ শরীফ)
এখান থেকে একটি মাসয়ালা বের করা হয়েছে যে,
السكوت نصف الرجاء.
অর্থ: “চুপ থাকা হচ্ছে অর্ধ সমর্থন। ”
অর্থাৎ সমর্থনের লক্ষণ। সুতরাং বিবাহ শাদীর বিষয়ে কোনো মেয়েকে যদি প্রস্তাব দেয়া হয়, আর উক্ত মেয়ে যদি প্রস্তাব শুনে চুপ থাকে। তাহলে বুঝতে হবে যে, উক্ত মেয়ে এই প্রস্তাবে রাজি রয়েছে।
আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ উনার প্রস্তুতি মুবারক:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, আপনার কাছে কিছু আছে কি? তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমার নিকট একটি ঘোড়া ও একটি বর্ম রয়েছে। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, ঘোড়াটি আপনার প্রয়োজন রয়েছে। আপনি বর্মটি বিক্রি করে এর হাদিয়া আমার নিকট নিয়ে আসুন। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বর্মটি বিক্রি করার জন্য সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনার নিকট নিয়ে যান। তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি বর্মটি নিয়ে এর হাদিয়াস্বরূপ সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত হাত মুবারক-এ ৫০০ দিরহাম দেন। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি নিজ হাত মুবারক-এ উক্ত বর্মটি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার শির (মাথা) মুবারক-এ পরিয়ে দিয়ে বললেন, এই বর্ম মুবারক একমাত্র ‘আসাদুল্লাহ তথা শে’রে খোদ’ উনার মাথা মুবারকেই শোভা পায়। সুবহানাল্লাহ! এটা বলে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি উক্ত বর্মটিও সাইয়্যিদুনা হযরত কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ৫০০ দিরহাম নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন। আর সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম তিনি যে বর্মটির বিনিময়ে ৫০০ দিরহাম দেয়ার সাথে সাথে বর্মটিও উনাকে হাদিয়া মুবারক করেন সে বিষয়টি সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ পেশ করেন। বিষয়টি শুনে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অত্যন্ত খুশী হন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনার জন্য অনেক দু‘য়া মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি উক্ত অর্থ থেকে কয়েকটি মুদ্রা হযরত বেলাল রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার হাত মুবারক-এ দিয়ে আতর ও খুশবু কিনে আনতে বললেন। অবশিষ্ট মুদ্রাগুলো উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার হাত মুবারক দিয়ে উনাকে বললেন সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার সাজসজ্জা, সংসারের কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী কিনে আনতে। ‘মাদারেজুন নুবুওওয়াহ শরীফ’ উনার বর্ণনা অনুযায়ী হযরত উম্মু সুলাইম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি দুটি চাদর, কাতানের দুটি নেহালী, চার বিঘত কাপড়, পরিধেয় বস্ত্র, রৌপ্যের দুটি বাযুবন্দ, গদী, বালিশ, একটি পেয়ালা, একটি চৌকি, একটি মশক এবং কিছু পানপাত্র ক্রয় করেন। অতঃপর সেগুলো এনে স্তরে স্তরে সাজিয়ে রাখেন। সুবহানাল্লাহ! কেনাকাটা করার পর অবশিষ্ট যেই মুদ্রা থাকে, সেগুলো আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে সম্মানিত হাদিয়া মুবারক করা হয়। সুবহানাল্লাহ!
বায়তুল মামুর শরীফে আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ:
কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত আদেশ মুবারক দিলেন, উনারা যেনো সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত হন। তারপর জান্নাতের হুরদেরকেও সুন্দরভাবে সুসজ্জিত হওয়ার জন্য সম্মানিত নির্দেশ মুবারক দিলেন। তুবা বৃক্ষকে হুকুম দিলেন সুন্দরভাবে সুসজ্জিত হওয়ার জন্য। অতঃপর সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে চতুর্থ আসমানে অবস্থিতসম্মানিত বাইতুল মামুর-এ শরীফ-এ উপস্থিত হওয়ার সম্মানিত নির্দেশ মুবরক দিলেন। সেই বাইতুল মামুর শরীফ উনার মেম্বর শরীফ-এ আবুল বাশার সাইয়্যিদুনা হযরত আদম ছফিউল্লাহ আলাইহিস সালাম তিনি বসে খুতবাহ মুবারক দিলেন। তারপর মহান আল্লাহ পাক উনার ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে মিষ্টভাষী ‘রাহিল’ ফেরেশতা আলাইহিস সালাম উনাকে মিম্বরে এসে মহান আল্লাহ পাক উনার প্রশংসা মুবারক করার নির্দেশ মুবারক দিলেন। ‘রাহিল’ ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি যখন খুৎবাহ পাঠ করলেন উনার অতি সুমিষ্ট কণ্ঠের সুমধুর আওয়াযে আসমানের সমস্ত হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা তন্দ্রাচ্ছন্ন হলেন। অতঃপর মহান আল্লাহ পাক তিনি হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম উনাকে বললেন, আমি আমার খাছ মাহবুবাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমাতুয যাহরা আলাইহাস সালাম উনার সাথে আমার আখাচ্ছুল খাছ প্রিয় বা মাহবূব ব্যক্তিত্ব মুবারক সাইয়্যিদুনা হযরত আলী ইবনে আবি ত্বলিব আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ সুসম্পন্ন করলাম। সুবহানাল্লাহ! হে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম! আপনি এই সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালামগণ উনাদের মজলিসে সম্পাদন করে দিন। মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম মুতাবিক সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার ও সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ উনার অর্থাৎ উনাদের আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ উনার আক্বদ মুবারক হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সাক্ষী বানিয়ে সম্পন্ন করা হলো। এই সম্মানিত আক্বদ মুবারক উনার অনুষ্ঠানের সমস্ত কার্যক্রম সম্মানিত জান্নাতী রেশমী কাপড় মুবারক উনার মধ্যে লিখে রাখা হলো। হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে সম্মানিত ওহী মুবারক নিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খিদমত মুবারক-এ উপস্থিত হন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত ওহী মুবারক অনুযায়ী উনাদের আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ বাস্তবায়ন করেন। সুবহানাল্লাহ!
যমীনে আযীমুশ শান মহাসম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠান:
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের উপস্থিতিতে ‘সম্মানিত মসজিদে নববী শরীফ’-এ সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ পড়ান। এই সম্পর্কে কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু! আপনি যান, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূক্বে আ’যম আলাইহিস সালাম উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাঈন আলাইহিস সালাম উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত ত্বলহা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনাকে, সাইয়্যিদুনা হযরত যুবাইর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে এবং হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে ডেকে আনুন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নির্দেশ মুবারক-এ সকল ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা উপস্থিত হন। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ পড়ান। সুবহানাল্লাহ!
আযীমুশ শান নিসবতে আযীম শরীফ অনুষ্ঠানে স্বয়ং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিজ হাত মুবারকে সকলের উদ্দেশ্যে খেজুর মুবারক ছিটানো:
শায়েখ আব্দুল হক্ব মুহাদ্দিছ দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘মাদারেজুন নুবুওওয়াহ শরীফ’ উনার মধ্যে উল্লেখ করেছেন, যখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, হে সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আপনি কবূল করলেন এবং রাজি হলেন? সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আমি কবুল করলাম এবং রাজী হলাম। তারপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি একপাত্র খেজুর মুবারক নিয়ে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের মাঝে ছিটিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ!
এই হাদীছ শরীফ দ্বারাবিবাহ অনুষ্ঠানে যে, খেজুর ছিটানো খাছ সুন্নত উনার অন্তর্ভুক্ত সেই বিষয়টিও প্রমাণিত হয়। সুবহানাল্লাহ!
আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফে হাদিয়া মুবারক:
বিভিন্ন কিতাবের বর্ণনা অনুযায়ী নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে আযীমুশ শান সম্মানিত নিসবতে আযীম শরীফ-এ উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যেই সকল সম্মানিত বিষয় মুবারকগুলো হাদিয়া মুবারক করেছিলেন, তার কিছু নিম্নে উল্লেখ করা হলো,
১. একটি মাদুর মুবারক। যা মিশরীয় কাপড় মুবারক দ্বারা তৈরি ছিলো এবং যার ভিতরে দেয়া হয়েছিলো পশম।
২. একটি বিছানা মুবারক,
৩. একটি চকি মুবারক,
৪. চামড়ার তৈরি বালিশ মুবারক যা খেজুরের ছালে পূর্ণ ছিলো,
৫. একটি অথবা দুইট মাটির তৈরি পাত্র,
৬. একটি পানির মশক- যা চামড়ার তৈরি ছিলো,
৭. একটি বাটি মুবারক,
৮. একটি শস্য ভাঙ্গানোর জাঁতা, কোনো বর্ণনায় দুটি জাঁতা,
৯. একটি নামাযের মাদুর,
১০. একটি খেজুর পাতার তৈরি চাটাই,
১১. ১টি তামার বদনা,
১২. একটি কম্বল মুবারক,
১৩. দুই টুকরো কাপড় মুবারক,
১৪. রুপার তৈরি দুটি বাহুবন্ধনী,
১৫. ২টি ঘোড়া,
১৬. হাতির দাতের তৈরী চিরুনী মুবারক।
১৭. এগুলো ছাড়া আরেকটি চামড়ার পাট্টা দেয়া হয়েছিলো। যেটাতে কোরআন শরীফ উনার কয়েকটি সম্মানিত সূরা শরীফ লিখা ছিলো। ইত্যাদি
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ থেকে বিশেষ দো‘আ মুবারক
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত বুরায়দাহ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার অর্থাৎ উনাদের ‘সম্মানিত লাইলাতুল বিনা’ শরীফ’ (অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত নিসবতে আ’যীম শরীফ অনুষ্ঠিত হওয়ার পর সম্মানিত প্রথম রাত্রি মুবারক-এ) সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনাকে উদ্দেশ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, হে হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম! আপনি আমার সম্মানিত আদেশ মুবারক ব্যতীত কোনো কাজ করবেন না। অতঃপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পানি মুবারক তলব করেন। তারপর তা দিয়ে সম্মানিত ওযু মুবারক করেন। অতঃপর সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম উনার উপর পানি ঢেলে দেন। তারপর সম্মানিত দু’য়া মুবারক করেন,
اللَّهُمَّ بَارِكْ فِيهِمَا وَبَارِكْ عَلَيْهِمَا وَبَارِكْ لَهُمَا فِي شِبْلِهِمَا
আয় বারে ইলাহী! আপনি উনাদের মধ্যে বরকত দান করুন এবং উনাদের উভয়ের জন্য উনাদের মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বরকত দান করুন।
অন্য আরেকটি বর্ণনায় রয়েছে,
وَبَارِكْ فِي نَسْلِهِمَا
উনাদের উভয়ের জন্য উনাদের বংশধর আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে বরকত দান করুন।
উহুদের জিহাদে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল খিদমত মুবারকের আনজাম দান:
তৃতীয় হিজরী সনে সম্মানিত উহুদ জিহাদ মুবারক সংঘটিত হয়। এই সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা সম্মানিত দান্দান মুবারক শহীদ হন। ‘মুসনাদে আহমদ শরীফ’ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে,
عَنْ أَنَسٍ أَنَّ رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ كسرت رباعيته وشجّ في وجهه حَتَّى سَالَ الدَّمُ عَلَى وَجْهِه.
অর্থ: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, সম্মানিত উহুদ যুদ্ধ মুবারক-এ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার একখানা সম্মানিত দান্দান মুবারক শহীদ হন, উনার সম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক (মুখম-ল মুবারক) জখম হন এবং উনার সম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক (মুখম-ল মুবারক) হতে সম্মানিত নূরুন নাজাত মুবারক (রক্ত মুবারক) প্রবাহিত হন। (মুসনাদে আহমদ শরীফ)
তখন উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বেমেছাল খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ! এই সম্পর্কে হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত সাহল ইবনে সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। উনাকে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত ‘জুরহী শান মুবারক’ প্রকাশ (আহত হওয়া) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিলো। জবাবে তিনি বলেন, মহান আল্লাহ পাক উনার কসম! (সম্মানিত উহুদ প্রান্তরে) কে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত জখম মুবারক ধুয়েছিলেন এবং কে পানি ঢেলে ছিলেন উনাদেরকে আমি অবশ্যই অবশ্যই চিনি। আর কি দ্বারা উনাকে চিকিৎসা মুবারক করা হয়েছিলো, সে সম্পর্কেও আমি ভালোভাবে অবগত রয়েছি। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার লখতে জিগার, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি সম্মানিত জখম মুবারক ধুয়ে দিচ্ছিলেন এবং সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি ঢালে করে পানি এনে ঢালছিলেন। সুবহানাল্লাহ! উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি যখন দেখলেন যে, সম্মানিত নূরুন নাজাত মুবারক (রক্ত মুবারক) ঝরা বন্ধ হচ্ছেন না; বরং তা বেড়েই চলছেন, তখন তিনি এক টুকরা চাটাই নিয়ে তা পুড়িয়ে তার ছাই সম্মানিত জখম মুবারক-এ লাগিয়ে দিলেন। সুবহানাল্লাহ! তারপর সম্মানিত নূরুন নাজাত মুবারক (রক্ত মুবারক) ঝরা বন্ধ হয়ে যান। সুবহানাল্লাহ! সেদিন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মুখের ডান দিকের একখানা সম্মানিত দান্দান মুবারক শহীদ হয়েছিলেন, সম্মানিত নূরুর রহমত মুবারক (মুখম-ল মুবারক) জখম হয়েছিলেন। সম্মানিত শিরস্ত্রাণ মুবারক ভেঙ্গে সম্মানিত সির বা মাথা মুবারক-এ ঢুকে গিয়েছিলো। ” (বুখারী শরীফ, সুননানে সা‘ঈদ ইবনে মানছূর, মুস্তাখরজে আবী আওয়ানাহ, বিদয়াহ-নিহায়াহ ইত্যাদি)
বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের প্রায় ৬ মাস পর অর্থাৎ ১১ হিজরী সনের ৩রা রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ বা’দ আছর বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত গোসল মুবারক:
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম তিনি উনার বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করার পূর্বে গোসল মুবারক সম্পন্ন করেন এবং নতুন পোশাক মুবারক পরিধান করে ক্বিবলামুখী হয়ে শুয়ে বরকতময় বিছালী শান প্রকাশ করার কথা বলতে থাকেন। সুবহানাল্লাহ! তখন ওছীয়ত মুবারক করেন যে, উনার বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশের পর উনাকে যেন কেউ আর সম্মানিত গোসল মুবারক না করান। সুবহানাল্লাহ! অতঃপর তিনি বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তাই সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ওছীয়ত মুবারক অনুযায়ী পূণরায় মহাসম্মানিত গোসল মুবারক না করিয়েই উনাকে রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন। সুবহানাল্লাহ! (ত্ববাক্বাতে ইবনে সা’দ শরীফ)
মহাসম্মানিত ছলাতুল জানাযা মুবারক:
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ছলাতুল জানাযা মুবারক কে পড়িয়েছেন, এই সম্পর্কে কিতাবে কয়েকটি মত রয়েছে। কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত খ্বাতিমুল মুহাজিরীন আলাইহিস সালাম (সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস আলাইহিস সালাম) তিনি পড়িয়েছেন। আবার কেউ কেউ বলেছেন, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি পড়িয়েছে। আবার কেউ কেউ বলেছেন, ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররমাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি পড়িয়েছেন।
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, বিশুদ্ধ অভিমত হচ্ছে- সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ছলাতুল জানাযা মুবারক পড়িয়েছেন সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রওযা শরীফ:
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছেন, উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আছ ছালিছাহ্ ছিদ্দীক্বাহ্ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি রাতে রওযা শরীফ উনার মধ্যে রাখেন। ” সুবহানাল্লাহ! (ত্ববাক্বাতে ইবনে সা’দ ৮/২৯)
আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হাবীবুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, রহমাতুল্লিল আলামীন মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনাকে যখন ইমামুল আউওয়াল সাইয়্যিদুনা হযরত কাররামাল্লাহু ওয়াজহাহূ আলাইহিস সালাম তিনি রওযা শরীফ উনর মধ্যে রাখেন, তখন উনার সাথে উনার দুই আওলাদ সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আর রবি’ সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছানী আলাইহিস সালাম তিনি এবং সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল খ্বামিস সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ আলাইহিস সালাম তিনি অর্থাৎ উনারাও ছিলেন। ” সুবহানাল্লাহ!
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার রওযা শরীফ ‘জান্নাতুল বাকী’ শরীফ’-এ অবস্থিত। সুবহানাল্লাহ!
সম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ও আলাইহিন্নাস সালাম:
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমুস সালাম ছিলেন মোট ৬ জন। ৩ জন মহাসম্মানিত আবনা’ (ছেলে) আলাইহিমুস সালাম এবং ৩ জন মহাসম্মানিতা বানাত (মেয়ে) আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনারা হচ্ছেন-
১. ইমামুছ ছানী মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হাসান আলাইহিস সালাম। তিনি ৩য় হিজরী সনের ১৫ই রমাদ্বান শরীফ ইয়াওমুল আরবিয়া শরীফ বা’দ আছর বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
২. ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম হুসাইন আলাইহিস সালাম। তিনি ৪র্থ হিজরী সনের ৫ই শা’বান শরীফ ইয়াওমুল জুমুয়াহ শরীফ বা’দ আছর বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৩. সাইয়্যিদাতুনা হযরত যাইনাব আলাইহাস সালাম। তিনি ৫ম হিজরী সনের ৫ই জুমাদাল ঊলা শরীফে বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৪. সাইয়্যিদাতুনা হযরত রুক্বইয়্যাহ আলাইহাস সালাম। তিনি ৬ষ্ঠ হিজরী সনের ২০শে জুমাদাল ঊখরা শরীফে বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৫. সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু কুলছূম আলাইহাস সালাম। তিনি ৭ম হিজরী সনের ১০ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফে বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৬. সাইয়্যিদুনা হযরত ইমাম মুহসিন আলাইহিস সালাম। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৯ম হিজরী সনে ৯ই সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফে বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
উনার মাধ্যম দিয়েই আহলু বাইতি নসব মুবারক জারি রয়েছে:
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালম উনাদের মাধ্যম দিয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত নসবনামা মুবারক (সম্মানিত বংশ মুবারক) জারি থাকবে। সুবহানাল্লাহ!
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রত্যেক মায়ের সন্তান স্বীয় পিতার দিকে সম্পর্কিত হয় কিন্তু উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা ব্যতীত। আমিই উনাদের সম্মানিত অবিভাবক এবং আমিই উনাদের সম্মানিত পিতৃপুরুষ। ” সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর লিত ত্ববারনী ৩/৭৪, মুসনাদে আবী ইয়া’লা ১২/১০৯, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৯/৯৯, আল ফাতহুল কাবীর ৩/২২ ইত্যাদী)
হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে, সাইয়্যিদুনা হযরত ফারুকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ কথা মুবারক ইরশাদ মুুবারক করতে শুনেছি যে,প্রত্যেক মহিলার সন্তানদের সম্পর্ক স্বীয় পিতার দিকে হয়ে থাকে; কিন্তু উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুর রবি‘আহ্ যাহরা আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত আওলাদ আলাইহিমাস সালাম উনারা ব্যতীত। আমিই উনাদের সম্মানিত পিতৃপুরুষ এবং আমিই উনাদের সম্মানিত অভিভাবক। সুবহানাল্লাহ! (আল মু’জামুল কাবীর ৩/৭৩, মাজমাউয যাওয়ায়িদ ৪/২৬০, আল জামি‘উছ ছগীর ২/১৫৯, আল ফাতহুল কাবীর ২/৩০৪, জামি‘উল আহাদীছ ১৫/৩২৫, কানযুল ‘উম্মাল ১২/১৬ ইত্যাদি)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খাদিমাতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মী বা’দা উম্মী আল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার জীবনী মুবারক
০২ জুলাই, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
লাহমুন মুছলাহুন অর্থাৎ শুকনা গোশ্ত খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক
১২ জুন, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক
২৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত সাওয়ানেহ ‘উমরী মুবারক
২৬ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক
১৫ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বিনতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুছ ছানিয়াহ আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক
১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
উম্মু আবীহা, সাইয়্যিদাতুনা হযরত আন নূরুল ঊলা আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত জীবনী মুবারক
১৯ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ক্বমীছ বা জামা নিছফে সাক্ব পর্যন্ত প্রলম্বিত হওয়া সম্মানিত সুন্নত মুবারক
১৩ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
১২ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছানিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
০৪ এপ্রিল, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আল হাদিয়াহ আশার আলাইহাস সালাম উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক
২৩ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)