সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (২০)
হযরত আমর বিন জামূহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিহাদের ময়দানে শাহাদাত লাভের ঈমানদীপ্ত বাসনা প্রসঙ্গে
, ০৬ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৭ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ১৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ০৩ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
![হযরত আমর বিন জামূহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার জিহাদের ময়দানে শাহাদাত লাভের ঈমানদীপ্ত বাসনা প্রসঙ্গে](https://www.al-ihsan.net/uploads/1713208189_.jpg)
হযরত আমর বিন জামূহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ছিলেন শারীরিকভাবে পঙ্গু। চলাচলের ক্ষেত্রে এক পা ছিলো মাজুর। উনার ছিল চারজন নওজোয়ান পুত্র। উনারা সব সময় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে জিহাদে শরীক হতেন এবং বীর মুজাহিদের ন্যায় কাফির-মুশরিকদের বিনাশে ঈমানদীপ্ত বীরত্ব প্রকাশ করতেন।
ঐতিহাসিক উহুদ জিহাদের জন্য যখন প্রস্তুতি শুরু হলো, তখন হযরত আমর বিন জামূহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি সেই জিহাদে অংশগ্রহণ করার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠলেন। বয়স এবং মাজুরতার কারণে উনার পুত্রগণ উনাকে জিহাদে অংশ নিতে বারণ করলেন। উনারা স্বীয় পিতাকে অনুরোধ করে বললেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে জিহাদের দায়িত্ব হতে অব্যাহতি দিয়েছেন। আপনার না যাওয়াটাই ভাল হবে। এছাড়া এ ব্যাপারে আমরাই আপনার জন্য যথেষ্ট। ” মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে জিহাদের দায়িত্ব থেকে মুক্তি দিয়েছেন, এ কথা শুনে হযরত আমর বিন জামূহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার সাথে জিহাদে যেতে আমার ছেলেরা আমাকে বাধা দিচ্ছে। মহান আল্লাহ পাক উনার কসম করে বলছি, আমি জিহাদ করতে করতে শাহাদাত বরণ করবো এবং এই পঙ্গু পা নিয়েই জান্নাতে প্রবেশ করবো।
তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, “মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাকে জিহাদ হতে মুক্তি দিয়েছেন। এরপর উনার পুত্রদেরকে লক্ষ্য করে ইরশাদ মুবারক করেন, আপনারা উনাকে জিহাদে যেতে দিন। এতে ক্ষতি কি? হতে পারে মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাকেও শাহাদাত নছীব করবেন। ”
অতঃপর হযরত আমর বিন জামূহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি উহুদের জিহাদে অংশ নিলেন এবং সত্যিই তিনি জিহাদে শাহাদাত বরণ করলেন। এই জিহাদে উনার আপন ভ্রাতুষ্পুত্র এবং ভৃত্যও শহীদ হয়েছিলেন।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, ‘উনাদেরকে একই কবরে সমাহিত করো। ’ পরে তিনি সেখান থেকে যাওয়ার সময় বলেছিলেন, ‘আমি দেখতে পাচ্ছি আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু জান্নাতে বিচরণ করছেন এবং উনার কোন ধরনের পঙ্গুত্বও নেই। ’ সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
ঈমানদীপ্ত ইবরত:
জলীলুল ক্বদর রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্প্রদায় এক পর্যায়ে উনার হিদায়েতী আহবানকে উপেক্ষা করে বলেছিল, আপনি এবং আপনার মহান রব তায়ালা গিয়েই জিহাদ করুন। নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ সাইয়্যিদুল আম্বিয়া ওয়াল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার এমন একজন ছাহাবী (হযরত আমর বিন জামূহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) যিনি বয়সের ভারে ন্যুব্জ উপরন্তু পঙ্গু, তারপরও তিনি বসে থাকতে পারলেন না; জিহাদের অদম্য বাসনা উনাকে কিছুতেই দমিয়ে রাখতে পারলো না। অবশেষে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দয়া ইহসানে জিহাদে শরীক হয়ে তিনি শাহাদাত বরণ করেন।
অথচ বড়ই পরিতাপের বিষয়; বর্তমানে সারা বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩০০ কোটি মুসলমান থাকা সত্ত্বেও বিধর্মী বিজাতি কর্তৃক আক্রান্ত মুসলমানদের পাশে গিয়ে দাঁড়ানো কিংবা উনাদের হিফাজতের জন্য জিহাদ করাতো দূরের কথা শারীরিক সামান্য অসুখ-বিসুখের ছুতা-নাতা দিয়েই দৈনন্দিন অনেক ফরয-ওয়াজিব আমল থেকেও গাফিল থাকে।
মূলতঃ দুনিয়াবী বদ তাছিরে অন্তরে মরিচা ধরেছে বলেই ঈমান আমলে মুসলমানদের এই বিপর্যয়। এর থেকে উত্তরণ পেতে হলে সকল মুসলমানদের জন্যই সর্বপ্রথম দায়িত্ব-কর্তব্য হলো- যামানার লক্ষ্যস্থল ওলীআল্লাহ, আহলে বাইতে রসূল, মুজাদ্দিদে আ’যম হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ছোহবত মুবারকে এসে বাইয়াত হয়ে ক্বলবী যিকির-ফিকির করে অন্তরকে পরিশুদ্ধ করা। তাহলে আবারো ফুটে উঠবে মুসলমানদের সেই হারানো ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য।
-মুহম্মদ মুহাজিরুল ইসলাম।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
তরজমাতুল মুজাদ্দিদিল আ’যম আলাইহিস সালাম
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কাফির-মুশরিক, বেদ্বীন-বদদ্বীনদের সঙ্গে কখনই মুহব্বত করা ও সাদৃশ্য রাখা যাবে না
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
অন্যায়কে ঘৃণা না করলে ঈমানদার থাকা যায় না
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
তা’বীয ও ঝাড় ফুঁক সম্পর্কে শরয়ী ফায়সালা (৪)
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)