হামাসের গোপন টানেলে যা আছে
, ১২ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৯ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২৮ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ১২ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) তাজা খবর
তিন সপ্তাহ ধরে চলছে ফিলিস্তিনির স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে ইসরায়েলের যুদ্ধ। এ সংঘাত শুরু হওয়ার পর ইসরায়েল বার বার স্থল অভিযানের কথা বললেও এখনও শুরু করেনি। বিশ্লেষকরা বলছে, এই অভিযান শুরু না করার অন্যতম কারণ হলো হামাসের টানেল ফাঁদ। আর এটি ব্যবহার করে পশ্চিম তীরের চেয়ে গাজায় হামাস শক্ত অবস্থান নিতে পেরেছে। যুক্তরাষ্ট্রও বলছে, গাজায় স্থল অভিযান চালালে টানলের কারণে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হবে ইসরায়েলের সেনাবাহিনীকে।
সম্প্রতি হামাসের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া ইসরায়েলি ৮৫ বছর বয়সী নারী ইউচেভড লিফশিচজ বলে, টানেলগুলো মাকড়শা জালের মতো। আমরা মাটির নিচে অনেক কিলোমিটার হেঁটেছি।
হামাসের টানেলের বিষয়ে অবগত কয়েকটি সূত্র বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানায়, গাজায় বিভিন্ন ধরণের সুড়ঙ্গ রয়েছে। এগুলো হামলা, অস্ত্র মজুত ও চোরাচালানের জন্য ব্যবহার করা হয়।
ইসরায়েল হামাসের এসব টানেল শনাক্ত করতে প্রচুর অর্থ ব্যয় করেছে। ইসরায়েল ডিফেন্স ফোর্সের (আইডিএফ) একজন মুখপাত্র গত ১২ অক্টোবর বলেছে, গাজা উপত্যকার একটি স্তর বেসামরিক নাগরিকদের এবং আরেকটি স্তর আছে হামাসের জন্য। আমরা হামাসের তৈরি করা সেই দ্বিতীয় স্তরটিতে পৌঁছানোর চেষ্টা করছি।
ইসরায়েলের দাবি, এসব বাংকার গাজার বেসামরিক নাগরিকদের জন্য নয়। এটা শুধু হামাসের জন্য, যাতে করে তারা ইসরায়েলের ভূখ- লক্ষ্য করে রকেট হামলা কিংবা এ ধরনের অপারেশনের পরিকল্পনার জন্য ব্যবহার করতে পারে।
২০২১ সালে ইসরায়েলের সঙ্গে সংঘাতের পর হামাস নেতা ইয়েহিয়া আল-সিনওয়ার বলেন, ইসরায়েল বলতে শুরু করেছে যে তারা হামাসের ১০০ কিলোমিটার সুড়ঙ্গ ধ্বংস করেছে। আমি আপনাকে বলছি, গাজা উপত্যকায় আমাদের যে সুড়ঙ্গ রয়েছে তা ৫০০ কিলোমিটার ছাড়িয়ে গেছে। তাদের কথা সত্যি হলেও তারা মাত্র ২০ শতাংশ টানেল ধ্বংস করেছে।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি জানায়, হামাসের টানেল নেটওয়ার্কের আকার সম্পর্কে ধারণা করা কঠিন, যাকে ইসরায়েল বলছে ‘গাজা মেট্রো’। কারণ মনে করা হয় এটা এমন একটা এলাকার নীচে বিস্তৃত, যা লম্বায় প্রায় ৪১ কিলোমিটার আর প্রস্থে ১০ কিলোমিটার।
গাজায় টানেল নির্মাণ শুরু হয় ২০০৫ সালে ইসরায়েল সৈন্য ও বসতি স্থাপনকারীদের প্রত্যাহারের আগে থেকেই।
তবে এর গতি বাড়ে দু বছর পর হামাস গাজার নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার পর। ফলে নিরাপত্তাজনিত কারণে ইসরায়েল ও মিশর পণ্য পরিবহন ও মানুষের আসা-যাওয়ার ওপরে কড়াকড়ি আরোপ শুরু করে। এক পর্যায়ে মিশর সীমান্তে প্রায় আড়াই হাজার টানেল হামাস ও অন্য সশস্ত্র গোষ্ঠী ব্যবহার করেছে বাণিজ্যিক পণ্য, তেল ও অস্ত্র পরিবহণের জন্য।
২০১০ সালের পর গাজায় পণ্য পরিবহণের গুরুত্ব কমে যায় কারণ ইসরায়েল তাদের ক্রসিং ব্যবহার করে বেশি পণ্য আমদানির সুযোগ দেয়া শুরু করে। পরে মিসর কিছু টানেল ধ্বংস করে বা বন্যার পানিতে ভাসিয়ে দেয়। হামাস ও অন্য গ্রুপগুলোও তখন ইসরায়েলি বাহিনীর ওপর হামলার জন্য নতুন করে টানেল খনন শুরু করে।
২০০৬ সালে ইসরায়েল সীমান্তে এমন টানেল ব্যবহার করে দুজন ইসরায়েলি সেনাকে হত্যা করে এবং আরেকজনকে তুলে নেয়া হয়, যাকে পরে পাঁচ বছর জিম্মি রাখা হয়েছিল। সম্প্রতি ইসরায়েলের সেনাবাহিনীর এক মুখপাত্র বলেছে, আমি সুড়ঙ্গের সংখ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত বলব না, তবে এটির সংখ্যা অনেক। আর এগুলো স্কুল এবং আবাসিক এলাকার মধ্য দিয়ে নির্মিত।
ধারণা করা হয় যে, গাজায় যে টানেল নির্মাণ করা হয়েছে সেগুলো ভূপৃষ্ঠ থেকে অন্তত একশ ফুট গভীরে এবং এর প্রবেশপথগুলো সাধারণ ঘরবাড়ি, মসজিদ, স্কুল কিংবা এমন ভবনে যেখানে সাধারণ মানুষের সমাগম হয়। মূলত সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলোর সদস্যদের যেন চিহ্নিত করা না যায় সেজন্য এগুলো ব্যবহার করে তারা।
স্থানীয় মানুষজনকেও এমন নেটওয়ার্ক স্থাপনের জন্য মূল্য দিতে হয়। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী অভিযোগ, গাজার মানুষের জন্য ত্রাণ হিসেবে দেয়া মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার টানেল তৈরি ও আগের যুদ্ধগুলোতে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরবাড়ি নির্মাণে ব্যয় করা হয়েছে।
পশ্চিমা নিরাপত্তার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র রয়টার্সকে বলে, হামাসের টানেলগুলো কংক্রিটের তৈরি। এগুলো অনেক বছর ধরে তৈরি করা হয়েছে। এগুলোর পেছনে অনেক অর্থও ব্যয় করা হয়েছে।
আরেকটি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছে, মিসরে হামাসের টানেল এখনও সক্রিয়। তবে এটি মিসরের সেনাবাহিনী জানে কি না সে বিষয়ে ওই সূত্র বিস্তারিত কিছু জানাতে পারেনি।
বলা হচ্ছে, ২০০৭ সালে মিসর থেকে হামাসের কমান্ডার মোহাম্মাদ দেইফ টানেল দিয়ে গাজায় এসেছিলেন। এই দেইফই গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের বিরুদ্ধে হামলার মাস্টারমাইন্ড ছিলেন।
গাজার রাফাহ টানেল অপারেটর আবু কুসায় বলেন, একটি অর্ধ মাইল টানেল খনন করতে তিন থেকে ছয় মাস সময় লাগে। এরমাধ্যমে দিনে ১০ হাজার ডলার পর্যন্ত আয় হতে পারে।
এই অপারেটর জানান, সবচেয়ে বেশি আয় হয় বুলেট দিয়ে। মিসর থেকে এক ডলার একটি বুলেট এনে গাজায় তা বিক্রি হয় ৬ ডলারে।
ইসরায়েলের বার-ইলান ইউনিভার্সিটির ভূতত্ত্ববিদ অধ্যক্ষ জোয়েল রসকিন বলে, ভূপৃষ্ঠ থেকে এই টানেলের ম্যাপ করা কঠিন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
চিকিৎসা পর্যটন বাড়াতে বাংলাদেশীদের জন্য বিশেষ উদ্যোগ পাকিস্তানের
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
যে কারণে ট্রাভেল পাসেই ফিরতে হবে তারেক রহমানকে
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ঢাকায় কয়েক মিনিটে তিনটি ককটেল বিস্ফোরণ, নারী আহত
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
নির্বাচন নিয়ে ভারতের ‘নসিহতে’ বাংলাদেশের তীব্র প্রতিক্রিয়া কেন?
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সিন্ডিকেটের কবলে সারের বাজার, জিম্মি কৃষক
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আরও ৩৫ বাংলাদেশি জেলেকে আটক করেছে ভারত
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
৫ বছরে ফিরে না এলে ‘গুম’ ঘোষণা করতে পারবে ট্রাইব্যুনাল
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দ্রুত কমছে অতিরিক্ত সচিবের পদ, সংকট তীব্র হলেও পদোন্নতি নেই
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রাজধানীর প্রতিটি প্রবেশমুখে তল্লাশি ও নিরাপত্তা বাড়িয়েছে পুলিশ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বন্ধ খাগড়াছড়ির সব ইটভাটা, চালুর দাবিতে আল্টিমেটাম
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
‘বিদেশে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনতে ৪ থেকে ৫ বছর লাগে’
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মাদ্রাসার সুপার নিয়োগে ‘সুপার’ ঘুষ বাণিজ্য
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












