হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
, ০৯ জুমাদাল ঊখরা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ০২ সাবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ১৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন-
فَاِنْ اٰمَنُوْا بِـمِثْلِ مَا اٰمَنْتُمْ بِهِ فَقَدِ اهْتَدَوْا.
অর্থাৎ আপনারা অর্থাৎ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা যেরূপ ঈমান মুবারক এনেছেন তদ্রƒপ যদি তারা (অন্য লোকেরা) ঈমান মুবারক গ্রহণ করতে পারে তাহলে তারা হিদায়েত মুবারক লাভ করতে পারবে। (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ : আয়াত শরীফ ১৩৭)
এ লিখনীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের বেমেছাল মহব্বত মুবারক প্রকাশের কতিপয় দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা হবে। ইনশাআল্লাহ!
(২০)
মানুষের ভালো মন্দ মনে করাকে পরওয়া করি না
৬ষ্ঠ হিজরীতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি চৌদ্দশত হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে নিয়ে উমরা করার জন্য মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন। পথিমধ্যে উনারা হুদায়বিয়া নামক স্থানে অবস্থান মুবারক গ্রহণ করেন।
এরপর সন্ধির বিষয়টি চূড়ান্ত করার জন্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাইয়্যিদুনা হযরত উছমান যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনাকে দূত হিসেবে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ পঠালেন। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মক্কা শরীফ-এ পৌঁছলেন। সেখানে গিয়ে উনার চাচাতো ভাইয়ের ঘরে অবস্থান গ্রহণ করেন। সকালবেলা মহাসম্মানিত মহাপবিত্র মক্কা শরীফ উনার তৎকালীন সরদারদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনার জন্য ঘর থেকে তিনি বের হতে চললেন।
তখন সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ইযার (লুঙ্গি) মুবারক টাখনুর উপরে পায়ের গোছা পর্যন্ত উঠানো ছিলো। (টাখনুর নিচে কাপড় পড়া সম্পূর্ণ নাজায়েয, হারাম) নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক ছিলেন, মহাসম্মানিত মহাপবিত্র নূরুদ দারাজাত মুবারক (মহাসম্মানিত পা মুবারক) উনার গোছা পর্যন্ত মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ইযার মুবারক (লুঙ্গি মুবারক) পরিধান করা। এর নিচে পরিধান করতেন না। সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম উনার চাচাতো ভাই এদৃশ্য দেখে বললো, হে সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম! আরবদের নিয়ম হলো যার লুঙ্গি যত নিচে থাকবে তাকে ততো বড় মর্যাদাবান মনে করা হয়। আর নেতা পর্যায়ের লোকেরা তো তাদের লুঙ্গি নিচেই পরিধান করে থাকে। তাই আপনি যদি আপনার পবিত্র লুঙ্গি মুবারক পায়ের গোছা পর্যন্ত উপরে উঠিয়ে তাদের সম্মুখে যান, তা হলে তাদের দৃষ্টিতে আপনার কোনো গুরুত্ব থাকবে না। যার ফলে আলোচনাও তেমন ফলপ্রসূ হবে না। নাউযুবিল্লাহ! সাইয়্যিদুনা হযরত যুন নূরাইন আলাইহিস সালাম তিনি উনার চাচাতো ভাইয়ের কথা শ্রবণ করে জাওয়াব মুবারক দিলেন-
অর্থ: না, আমার ইযার (লুঙ্গি) মুবারক আমি এর থেকে নিচে নামাতে পারি না। কারণ আমাদের মহাসম্মানিত হাবীব ও মাহবূব, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ইযার মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র লুঙ্গি মুবারক) এ পর্যন্তই দেখেছি। সুবহানাল্লাহ!
সুতরাং লোকেরা আমাকে ভালো মনে করুক বা খারাপ মনে করুক। আমার সম্মান করুক বা অসম্মান করুক। তাতে আমার কোনো পরওয়া নেই। আমি আমার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাবীব ও মাহবূব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ইযার মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র লুঙ্গি মুবারক) দেখেছি। উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র ইযার মুবারক (মহাসম্মানিত মহাপবিত্র লুঙ্গি মুবারক) যে রকম ছিলো আমারও সে রকম থাকবে। এর মধ্যে বিন্দু পরিমাণ পরিবর্তন করতে পারবো না। সুবহানাল্লাহ!
খুব চিন্তা ও ফিকিরের বিষয়, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা কেমন ছিলেন, উনাদের সম্মানিত ঈমান মুবারক কেমন ছিলো, উনাদের ছহীহ সমঝ মুবারক কেমন ছিলো! উনারা নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এত বেশী মুহব্বত মুবারক করেছেন যে, উনাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক উনার অনুসরণ-অনুকরণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এক্ষেত্রে উনারা দুনিয়ার কোনো কিছুকেই পরওয়া করতেন না। সুবহানাল্লাহ!
যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সকলকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ন্যায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সমস্ত কিছুর চেয়ে সবচেয়ে বেশি মুহব্বত করার এবং উনাদের ন্যায় পরিপূর্ণ ঈমানদার হওয়ার তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
-মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন মুরাদী।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
আমাল বা অবৈধ আকঙ্খা পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)












