৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সম্মানিত জিহাদ করলেন ৬০ হাজার কাফিরের বিরুদ্ধে (৩)
, ২৩ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৯ খ্বমিস , ১৩৯২ শামসী সন , ২৭ অক্টোবর , ২০২৪ খ্রি:, ১১ কার্তিক, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আইন ও জিহাদ

হযরত মুহাজির ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদের পরিবর্তে হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে বেশী ত্বলব করার কারণ সম্পর্কে তিনি নিজেই বলেন, ‘হে হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম! আমি আপনাদেরকে ত্বলব করার কারণ হলো- আপনাদের প্রতি আমার সম্মানিত মুহব্বত এবং আপনাদের সম্মানিত ঈমান উনার প্রতি আমার হুসনে যন, সুধারণা মুবারক। আপনারা তো এমন ব্যক্তিত্ব মুবারক, আপনাদের সম্মানিত অন্তর মুবারক-এ সম্মানিত ঈমান মুবারক মজবুতভাবে আসীন হয়েছেন।’ সুবহানাল্লাহ! এই কথা মুবারক শুনে হযরত আনছার ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনারা বললেন, ‘হে হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! আপনি সত্যিই বলছেন। অবশ্যই আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত দীদার মুবারক এবং সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক লাভের প্রত্যাশায় অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় সম্মানিত জিহাদ মুবারক করার জন্য আমাদের সম্মানিত প্রাণ মুবারক কুুরবান করবো।’ সুবহানাল্লাহ!
তারপর হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি মনোনীত এই ৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনাদেরকে উদ্দেশ্য করে বললেন, ‘ইয়া আনছারাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! (মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দানকারীগণ!) এই আরব খ্রিষ্টান বাহিনীকে নিশ্চিহ্ন করে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেয়ার ব্যাপারে আপনারা ধৈর্য্যশীল হোন, অবশ্যই মহান আল্লাহ পাক তিনি আপনাদেরকে তাদের বিরুদ্ধে সম্মানিত গায়িবী মদদ মুবারক করবেন। অবশ্যই আপনারা রোমান খ্রিষ্টানদের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক-এ সম্মানিত বিজয় উনার সুসংবাদ মুবারক লাভ করবেন। আর এই আরব খ্রিষ্টানরা পরাজিত হলে মুসলমান উনাদের রো’ব মুবারক উনার কারণে রোমান সৈন্যরা ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে যাবে এবং আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধের সাহস হারিয়ে ফেলবে। উনারা সবাই বললেন, ‘হে হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু! আপনি যেখানে ইচ্ছা আমাদেরকে নিয়ে যান। আপনি আমাদেরকে যা আদেশ মুবারক করবেন আমরা তাই করবো। মহান আল্লাহ পাক উনার ক্বসম! অবশ্যই আমরা মহান আল্লাহ পাক উনার উপর সম্মানিত তাওয়াক্কুল (ভরসা) মুবারক করে উনার এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অর্থাৎ উনাদের সম্মানিত রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক পাওয়ার আশায় আমাদের জান-প্রাণ দিয়ে সম্মানিত জিহাদ মুবারক করবো।’ সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত খালিদ ইবনে ওয়ালীদ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দু‘আ মুবারক করলেন। সম্মানিত আমীরুল মুজাহিদীন হযরত আবূ উবাইদাহ্ ইবনে জাররাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিও উনাদের জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট সম্মানিত দু‘আ মুবারক করলেন এবং উনাদেরকে সম্মানিত ওসীয়ত করলেন, ‘আপনারা দৃঢ়তার সাথে আপনাদের প্রস্তুতি গ্রহণ করুন। আর আপনারা তীর-বর্শার পরিবর্তে ঢাল-তরবারী দ্বারাই কাফিরদের বিরুদ্ধে সম্মানিত জিহাদ মুবারক করবেন এবং সর্বোত্তম ও ধৈর্যশীল ঘোড়ার উপর চড়েই সম্মানিত জিহাদ মুবারক করবেন।’
অতঃপর সবাই নিজ নিজ পরিবার-পরিজন উনাদের নিকট থেকে বিদায় নিলেন। হযরত দিরার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার সম্মানিতা বোন হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার নিকট থেকে যখন বিদায় নেন, তখন তিনি বললেন- হে আমার সম্মানিত ভাই! আপনি এমন বিদায় গ্রহণ করছেন কেন, যেন আপনি আর ফিরে আসবেন না? দয়া করে বলুন আপনি কি সিদ্ধান্ত মুবারক নিয়েছেন? হযরত দিরার ইবনে আযওয়ার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনি উনার সিদ্ধান্ত মুবারক উনার কথা জানালেন।
فبكت حضرت خولة رضى الله تعالى عنها وقالت يا أخي افعل ما تريد أن تفعل والق عدوك وانت موقن بالله تبارك وتعالى فإنه لكم ناصر وأن عدوك لا يقرب إليك أجلا بعيدا ولا يبعد عنك أجلا قريبا فإن حدث عليك حدث أو لحقك من عدوك نائبة فوالله العظيم شأنه لا هدأت حضرت خولة رضى الله تعالى عنها على الأرض أو تأخذ بثأرك فبكى حضرت ضرار بن الأزور رضى الله تعالى عنه لبكائها
“তখন হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি কেঁদে কেঁদে বললেন, ‘হে আমার সম্মানিত ভাই! কাফিরদের বিরুদ্ধে যা করতে চান করুন এবং মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি দৃঢ় বিশ্বাস মুবারক রেখে কাফিরদের প্রতি (তীর, বর্শা) নিক্ষেপ করুন। কারণ, মহান আল্লাহ পাক তিনিই আপনাদের জন্য একমাত্র সাহায্যকারী। আপনার সম্মানিত বিছাল শরীফ উনার সময় এগিয়ে আনা বা পিছিয়ে নেয়ার ক্ষমতা কাফিরদের নেই। যদি আপনার কোনো বিপদ ঘটে অথবা কাফিরদের পক্ষ থেকে আপনার প্রতি কোনো কিছু আপতিত হয়, তবে জেনে রাখুন- মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র শান মুবারক উনার ক্বসম! (তার প্রতিশোধ না নেয়া পর্যন্ত) হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা তিনি যমীনের উপর বিশ্রাম গ্রহণ করবেন না অথবা (অবশ্যই) তিনি আপনার প্রতিশোধ গ্রহণ করবেন।’ সুবহানাল্লাহ! তখন হযরত খাওলা রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহা উনার কান্না মুবারক উনার কারণে হযরত দিরার ইবনে আযওয়ার রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু তিনিও কান্না মুবারক করলেন।”
পরিবার-পরিজন উনাদের নিকট থেকে বিদায় গ্রহণ করার পর ৬০ জন সম্মানিত মুসলিম বীর মুজাহিদ উনারা সবাই মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট কাফিরদের বিরুদ্ধে সম্মানিত গায়িবী মদদ মুবারক কামনা করেন এবং রোনাজারী-আহযারী করে বিনিদ্র রাত পার করলেন। অতঃপর সম্মানিত আমীরুল মুজাহিদীন হযরত আবূ উবাইদাহ্ ইবনে জাররাহ্ রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার সম্মানিত ইমামতি মুবারক-এ সম্মানিত ছলাতুল ফজর আদায় করলেন। (পরবর্তী পর্বের অপেক্ষায় থাকুন)
-মুহাদ্দিস মুহম্মদ ইবনে ছিদ্দীক্ব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
বদরের জিহাদে সংঘটিত বিশেষ কয়েকটি ঘটনা
১৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭৫)
১৮ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭৪)
১১ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭৩)
০৪ মার্চ, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭২)
২৫ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭১)
১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নাজরান অভিযান
১৭ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৭০)
১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত জিহাদ মুসলমানদের একটি বিশেষ ফরয ইবাদত
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
৩য় হিজরী মুবারকের সম্মানিত গাতফানের জিহাদ (২)
১০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, রহমাতুল্লিল আলামীন, ক্বয়িদুল মুরসালীন, রউফুর রহীম, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র জীবনী মুবারক (২২৬৯)
০৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
৩য় হিজরী মুবারকের সম্মানিত গাতফানের জিহাদ (১)
০৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)