‘লাভ হবে না জেনেও হাসিনা হাজার কোটি টাকা নষ্ট করলেন’
, ২০ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৩ তাসি’, ১৩৯২ শামসী সন , ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ০৬ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) দেশের খবর
নিজস্ব প্রতিবেদক:
অনলাইনে দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বাসভবন গণভবনে এক বৈঠকের তিক্ত অভিজ্ঞতা জানালেন নদী গবেষক ড. রুকনুল ফেরদৌস।
পাঠকদের জন্য তার পোস্টটি সংক্ষেপিত আকারে তুলে দেয়া হল-
(১) অনেক বছর আগের কথা। তৎকালীন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশের নদী নিয়ে একটা প্রোজেক্টর সূচনা করেছিলেন। প্রোজেক্টের নাম ছিল “ক্যাপিটাল ড্রেজিং”। প্রোজেক্ট শুরুর আগে দুইটা পাইলট প্রোজেক্ট নেয়া হল যমুনা নদীতে। একটা সিরাজগঞ্জ এবং আরেকটা কুড়িগ্রাম জেলাতে। ঐ উচ্চ পর্যায়ের কমিটি, ডঃ মমিনুল হক সরকারকে (একজন নদী বিশেষজ্ঞ) দায়িত্ব দিয়েছিল সিরাজগঞ্জে যমুনা নদীতে (একটা নির্দিষ্ট জায়গায়) ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে কি না তা গবেষণা করে রিপোর্ট আকারে জানানোর জন্য।
(২) ডঃ মমিনুল হক সরকারের তত্ত¦াবধানে আমরা দুইজনে মিলে গবেষণা করে রিপোর্টের কাজ শেষ করলাম। আমাদের গবেষণার ফলাফল ছিল “যমুনা নদীর ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে না”।
এখানে কোটি কোটি টাকার ব্যাপার এবং ড্রেজিং করলে সম্পূর্ণ টাকাই নষ্ট হবে, তাই আমরা খুবই সতর্ক ছিলাম। আমরা পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে রওয়ানা দিলেন। একটা গুরুত্বপূর্ণ মিটিং ছিল। যেখানে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রী, সচিব, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক সহ আরও অনেকে।
ডঃ মমিনুল হক গবেষণার রিপোর্ট উপস্থাপন করে পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশান করে বুঝিয়ে দিলেন যে, কেনো যমুনা নদীর ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে না। কিন্তু পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব বললেন “যেভাবেই হোক ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে এভাবে রিপোর্ট তৈরি করতে। এটা উপরের নির্দেশ। রিপোর্ট আজকের মধ্যেই দিতে হবে কেননা আগামীকাল রিপোর্ট যাবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে”। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালককে দায়িত্ব দিলেন বিষয়টা তদারকি করতে।
(৩) আমরা চলে গেলাম বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালকের কার্যালয়ে। সেখানে বসে আমাদের বাধ্য করা হল রিপোর্টটা পরিবর্তন করতে। আমি নিজ হাতে ঐ রিপোর্টটা পরিবর্তন করলাম। হিসাব নিকাশ থেকে শুরু করে সব কিছু পরিবর্তন করা হল।
(৪) আমি স্যারকে বললাম, আমরা এটা হতে দিতে পারি না। এইভাবে দেশের কোটি কোটি টাকা ক্ষতি হবে এবং তা আবার আমাদের হাত দিয়েই? এটা কোনভাবেই মানা যায় না। স্যার তখন আমাকে বললেন, কোনভাবে যদি পরিকল্পনা মন্ত্রীকে বিষয়টা জানানো যায় তবে কাজ হতে পারে।
(৫) পরিকল্পনা মন্ত্রীকে স্যার বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন যে, “যমুনা নদীর ঐ নির্দিষ্ট জায়গায় ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে না”। কিন্তু “ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে” এই রিপোর্ট তো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চলে গেছে। এখন উপায় কি? মন্ত্রী বললেন, আপনারা আবার নতুন করে রিপোর্ট ও প্রেজেন্টেশান তৈরি করুন এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে মিটিং এর দিন ১০/১২ কপি নতুন রিপোর্টটা নিয়ে আসবেন। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছে অনুমতি নিয়ে আপনাকে রিপোর্টটা দিতে বলব। আশা করি প্রধানমন্ত্রী মানা করবেন না।
(৬) প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে মিটিং এর দুই দিন আগে ডঃ মমিনুল হক সরকার হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন। স্যার আমাকে তার রুমে ডেকে বললেন, আমি যেন যাই। বললেন, তুমি প্রধানমন্ত্রীকে বুঝাতে পারবা।
(৭) পরবর্তী মিটিং-এ প্রধানমন্ত্রী পরিকল্পনা মন্ত্রীকে ঐ দিনের মিটিং এর বিষয় উত্থাপন করতে বললেন। মন্ত্রী জানালেন যে, আমাদের পানি বিশেষজ্ঞদের গবেষণায় কিছু পরিবর্তন হয়েছে, যা আগের রিপোর্টের থেকে ভিন্ন এবং সময় স্বল্পতার জন্য আমরা তা আগে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠাতে পারি নাই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অনুমতি দিলে উপস্থিত একজন পানি বিশেষজ্ঞ তা আপনার সামনে উপস্থাপন করবেন।
অনুমতির পর আমি আমার সামনের রাখা রিপোর্টগুলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর দিকে এগিয়ে গেলাম। তার ডান পাশে দাঁড়িয়ে সালাম দিয়ে এক কপি তার হাতে দিলাম। উনি হাতে নিয়ে এক এক করে রিপোর্টের পাতা উল্টাতে লাগলেন এবং পুরা রিপোর্টটা একটু বোঝার চেষ্টা করলেন। ঐ সময় সবাই চুপ করে ছিল। যেন পিন পতন নীরবতা। প্রধানমন্ত্রী রিপোর্টটা তার টেবিলে রেখে আমাকে বসতে বললেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম বাকি রিপোর্টগুলো অন্য মন্ত্রীদের দিব কি না? উনি অনুমতি দিলেন এবং আমি বাকি রিপোর্টগুলো মন্ত্রীদের বিতরণ করে, আমার জন্য নির্ধারিত আসনে গিয়ে বসলাম।
মিটিংয়ের এক পর্যায়ে গিয়ে আমাকে অনুমতি দেয়া হল প্রেজেন্টেশন দেবার জন্য। আমি দিলাম এবং পরিস্কারভাবেই সব বুঝিয়ে দিলাম যে, ড্রেজিং ফলপ্রসূ হবে না। উপস্থিত সবাই দেখল এবং শুনল। এটা নিয়ে অনেক আলোচনা হল। আমার স্পষ্ট মনে আছে, কৃষিমন্ত্রী এবং পরিকল্পনা মন্ত্রী ছাড়া আর কেউ আমাকে সাপোর্ট করে নাই।
প্রধানমন্ত্রী অনেক কথা বললেন এবং শেষে বললেন, ড্রেজিং হবে এবং এটাই আমার সাফ কথা। আমি আর কিছু শুনতে চাই না।
আমি প্রচ- অবাক হয়েছিলাম সেদিন। আমি প্রধানমন্ত্রীকে খুব ভাল মানুষ এবং একজন দেশপ্রেমী জানতাম। আমার অনেক দিনের ধারণা মুহূর্তের মধ্যেই ভেঙ্গে শেষ হয়ে গেল।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
স্বাভাবিকভাবেই পড়ছে শীত মাসের শেষে শৈত্যপ্রবাহ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সুপ্রিম কোর্টের এজলাসে প্রবেশ সীমিত
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হাসিনা-কামালের আমৃত্যু কারাদ- বাড়িয়ে মৃত্যুদ- চেয়ে আপিল
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
আইজিপির বিরুদ্ধে রিট আবেদন খারিজ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
বিজয় দিবস ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে নৌবাহিনীতে অনারারী কমিশন প্রদান
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘দেড় বছরে দেড় কোটি মানুষের কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা’
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘বাংলার মাটিতে আ’লীগের রাজনীতি আর চলবে না’
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নির্বাচনী পরিবেশ বজায় রাখতে বিভাগীয় কমিশনার-জেলা প্রশাসকদের ইসির চিঠি
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘২০২৪-কে ১৯৭১-এর মুখোমুখি দাঁড় করানোর প্রচেষ্টাকে প্রত্যাখ্যান করি’
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে বাংলাদেশের অবদান আন্তর্জাতিকভাবে প্রশংসিত’
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘দেশের সামষ্টিক অর্থনীতি সন্তোষজনক’
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
‘নির্বাচন নিয়ে কোনো শঙ্কা নেই, দুশ্চিন্তা ঝেড়ে প্রস্তুতি নিন’
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












