আপনাদের মতামত
অন্তর্বর্তী সরকারও গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধির অপতৎপরতা শুরু করতে যাচ্ছে।
, ২৮ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ খ্রি:, ১৪ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) আপনাদের মতামত
বি.আই.আর.সি আইনের ২২ ধারা ও ৩৪ ধারা জুলাই আগষ্ট বিপ্লবের চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক।
গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির জন্য তথাকথিত প্রতারণামূলক গণশুনানী করা যাবে না।
বিগত সরকারের আমলে সব ধরনের এনার্জি সরবরাহের বিভিন্ন পর্যায়ে ১৫ বছর ধরে অন্যায় ও অযৌক্তিক তথা লুণ্ঠনমূলক ব্যয় বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় জ্বালানি খাতে আর্থিক ঘাটতি বৃদ্ধি অব্যাহত ছিল। পর্যায়ক্রমে ভর্তুকি ও মূল্যহার বাড়ানোর মাধ্যমে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) কর্তৃক তা সমন্বয়ও অব্যাহত থাকে। ফলে রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিইআরসি স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা হারায়। তাতে ভোক্তা জ্বালানি সুবিচার বঞ্চিত হয় এবং জ্বালানি অধিকার হারায়।
বিদ্যুৎ ও জ্বালানি দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর মাধ্যমে প্রতিযোগিতাবিহীন বিনিয়োগের আওতায় বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত উন্নয়ন অব্যাহত থাকায় লুণ্ঠনমূলক ব্যয় বৃদ্ধি অব্যাহত থাকে। ২০২৩ সালে বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন আইন ২০০৩-এর ৩৪ ধারার সঙ্গে ৩৪ক ধারা সংযোজন করে সব ধরনের এনার্জির মূল্যহার নির্ধারণের ক্ষমতা বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের হাতে তুলে দেয়া হয়। সেই সঙ্গে, ‘...কমিশন কর্তৃক প্রবিধান প্রণয়ন না করা পর্যন্ত, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারিবে। ’-এ বাক্য সংযোজন করা হয়।
এরপর মন্ত্রণালয় ঘন ঘন বেশি বেশি এনার্জির মূল্যহার বাড়িয়ে জনগণের জীবনযাত্রার অসহনীয় ব্যয় বৃদ্ধি ঘটায় এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংকটে জাতীয় জ্বালানি নিরাপত্তা চরম বিপর্যয়ে পড়ে। ফলে জনগণের মৌলিক অধিকার বিপন্ন হয়। এখনো পরিস্থিতির কোনো উল্লেখযোগ্য উন্নতি হয়নি।
গত ১৫ বছরে ট্যারিফ নির্ধারণের ক্ষেত্র যথাযথ হলে এনার্জি খাতে আর্থিক ঘাটতি নিয়ন্ত্রণে থাকত। ভর্তুকি নিয়ন্ত্রণে বছরে বারবার এনার্জির মূল্য বাড়ানোর জন্য আইনের উপধারা ৩৪(৫) বদলাতে হতো না। বছরে বিদ্যমান ঘাটতি গ্যাসে ২০ হাজার কোটি টাকা এবং বিদ্যুতে ৪২ হাজার কোটি টাকা হতো না। গ্যাসের মূল্যহার ৩০ টাকাও হতো না।
গণ-অভ্যুত্থানের মুখে সরকারের পতন হয়েছে। বর্তমান সরকার ওই বিশেষ বিধান আইন এবং বিইআরসি আইনে সংযোজিত ওই ধারা ৩৪ক বাতিল করে। তবে আইনে সংযোজিত, ‘...কমিশন কর্তৃক প্রবিধান প্রণয়ন না করা পর্যন্ত, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, ট্যারিফ নির্ধারণ, পুনর্নির্ধারণ বা সমন্বয় করিতে পারিবে’ বাক্যটি বাতিল করা হয়নি। এরপর মন্ত্রণালয় কর্তৃক তরল জ্বালানির মূল্যহার নির্ধারণ অব্যাহত আছে। আবার অধ্যাদেশের মাধ্যমে বিশেষ বিধান আইন, ২০১০ বাতিল করা হলেও তাতে ২(খ) ও ২(গ) অনুচ্ছেদ সংযোজন করে ওই আইনের আওতায় যেসব অন্যায় ও অপরাধমূলক কার্যক্রম চালানো হয়েছে, সেসব কার্যক্রমকে সুরক্ষা দেয়া হয়েছে। তাতে জনগণ প্রতারিত হয়েছে। ফলে বলা যায়, সরকার ও বিইআরসির চেতনা ও ধারণায় কোনো পরিবর্তন আসেনি। লুণ্ঠন ধারাবাহিকভাবে সুরক্ষা পাচ্ছে।
কিন্তু বর্তমান সরকারের ক্ষেত্রেও বিদ্যুৎ ও জ্বালানির মূল্যহার ন্যায্য ও যৌক্তিক পর্যায়ে কমিয়ে আনার লক্ষ্যে ক্যাবের পক্ষ থেকে দেয়া বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সংস্কার প্রস্তাব কোনো কাজে আসেনি। বিইআরসি লুণ্ঠনমূলক ব্যয় ও মূল্যহার কমানোর কোনো উদ্যোগ নেয়নি। সরকারকেও কোনো পরামর্শ দেয়নি। বরং বিইআরসি কর্তৃক গত ৬ ফেব্রুয়ারি প্রকাশিত গণবিজ্ঞপ্তিতে দেখা যায়, পেট্রোবাংলা এবং তিতাস, বাখরাবাদ, জালালাবাদ, পশ্চিমাঞ্চল, সুন্দরবন ও কর্ণফুলী গ্যাস বিতরণ কোম্পানিগুলোর প্রাকৃতিক গ্যাসের শিল্প ও ক্যাপটিভ শ্রেণীতে বিদ্যমান, প্রতিশ্রুত ও সম্ভাব্য ভোক্তার গ্যাসের মূল্যহার বৃদ্ধির প্রস্তাবের গতকাল ২৬ ফেব্রুয়ারি বিইআরসি দিনব্যাপী শুনানির আয়োজন করেছে। অর্থাৎ গ্যাসের মূল্যহার বৃদ্ধির কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। বিদ্যুতেরও শুরু করা হবে।
জানা গেছে, গ্যাসে বিদ্যমান আর্থিক ঘাটতি বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা এবং প্রতিশ্রুত ও সম্ভাব্য শিল্প ও ক্যাপটিভ বিদ্যুতে ব্যবহৃত গ্যাসের বর্তমান মূল্যহার ৩০ থেকে ৭৫ টাকা বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। এ প্রস্তাব বিইআরসি আইনের ধারা ২২ ও ধারা ৩৪ এবং জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এ বিবেচনায় নিম্নে উল্লেখিত তিনটি প্রস্তাব গৃহীত ও বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত উল্লিখিত গ্যাসের মূল্যহার বৃদ্ধির প্রস্তাবের ওপর আয়োজিত শুনানি এবং পরবর্তী কার্যক্রম স্থগিত রাখার জন্য ভোক্তাদের পক্ষ থেকে বিইআরসির চেয়ারম্যানকে বিশেষভাবে আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি।
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ আরিফ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠানকে ‘বড়দিন’ বলা যাবে না
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বাধীন আরাকান চাই!
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশের সার্বভৌমত্বের সংকটে- দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতেই হবে
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পৃথিবীর সবচাইতে কুখ্যাত কিছু নৌদস্যুর অপকীর্তি
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফসলের একটি অংশ যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে! -এদেশে উপজাতি চৌকিদারকে কেন ‘রাজা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে?
২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উলামায়ে ছু’দের বদ আমলই কি এর জন্য দায়ী নয়?
২২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে জিএম ফুড প্রচলনের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জান্নাতী এবং জাহান্নামী ব্যক্তিদের কিছু আলামত
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔ পনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (১)
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিশ ধরায় বাংলাদেশ-ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়ে বড় পার্থক্য নিষেধাজ্ঞার নামে ভিনদেশী জেলেদের জামাই আদরে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় আর দেশীয় জেলেদের জেলে পুরা হয় জেলেদের প্রতি এ নির্মম জুলুম আর কতকাল?
১১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আধুনিকতা নাম দিয়ে হারাম ‘ছবি’ তোলা থেকে বিরত থাকুন
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












