নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মানব শরীরে এক টুকরা গোশত রয়েছে, তা পরিশুদ্ধ হলে গোটা শরীর পরিশুদ্ধ হবে এবং তা বিনষ্ট বা ধ্বংস হলে গোটা শরীর ধ্বংস হবে। সাবধান! উক্ত গোশতের টুকরাটি হলো ক্বলব বা অন্তর।”
অন্তর থেকে বদ খাছলতসমূহ দূর করে দিয়ে পবিত্র নেক খাছলতসমূহ পয়দা করার মাধ্যমেই হাক্বীক্বী ইছলাহ বা পরিশুদ্ধতা লাভ সম্ভব। মুহলিকাতের (বদ খাছলত) কারণে ক্বলব বিনষ্ট হয়। আর মুনজিয়াতের (নেক খাছলত) কারণে ক্বলব পরিশুদ্ধ হয়।
অতএব, মুহলিকাত ও মুনজিয়াত সম্পর্কিত ফরয পরিমাণ পবিত্র ইলম অর্জন করাও প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলাদের জন্য ফরয।
, ২৬ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ আউওয়াল, ১৩৯২ শামসী সন , ০৪ জুন, ২০২৪ খ্রি:, ২১ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহাপবিত্র ক্বওল শরীফ-২
ছাহিবাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’দাদ শরীফ, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন, হাবীবাতুল্লাহ, ছাহিবায়ে নেয়ামত, রহমাতুল্লিল আলামীন, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হযরত আমির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, আমি হযরত নু’মান বিন বশীর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বলতে শুনেছি। তিনি বলেন, আমি শুনেছি যে, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “মানব শরীরে এক টুকরা গোশত রয়েছে, তা পরিশুদ্ধ হলে গোটা শরীর পরিশুদ্ধ হবে এবং তা বিনষ্ট বা ধ্বংস হলে গোটা শরীর ধ্বংস হবে। সাবধান! উক্ত গোশতের টুকরাটি হলো ক্বলব বা অন্তর।”
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, অনুসরণীয় ইমাম-মুজতাহিদ ও ওলীআল্লাহ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা পবিত্র ইলমে তাছাওউফ উনাকে দু’ভাগে বিভক্ত করেছেন। (১) মুহলিকাত ও (২) মুনজিয়াত। এ প্রসঙ্গে “মুছাল্লামুছ ছুবূত” নামক কিতাবের মুক্বাদ্দিমায় উল্লেখ আছে যে, “মুহলিকাত” অর্থাৎ ক্বলব বা আত্মার ধ্বংস সাধনকারী বদ খাছলত এবং “মুনজিয়াত” অর্থাৎ অন্তরকে মুক্তিদানকারী নেক খাছলত সম্পর্কিত পবিত্র ইলম উনাকেই পবিত্র ইলমে তরীক্বত বা পবিত্র ইলমে তাছাওউফ বলে।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মূলত, অন্তর থেকে বদ খাছলতসমূহ দূর করে দিয়ে পবিত্র নেক খাছলতসমূহ পয়দা করার মাধ্যমেই হাক্বীক্বী ইছলাহ বা পরিশুদ্ধতা লাভ সম্ভব। মুহলিকাতের (বদ খাছলত) কারণে ক্বলব বিনষ্ট হয়। আর মুনজিয়াতের (নেক খাছলত) কারণে ক্বলব পরিশুদ্ধ হয়। অতএব, মুহলিকাত ও মুনজিয়াত সম্পর্কিত ফরয পরিমাণ পবিত্র ইলম অর্জন করাও প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ-মহিলা উনাদের জন্য ফরয।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মুহলিকাত مهلكات ওই সকল বদ খাছলত বা কুস্বভাবকে বলে, যে সকল বদ খাছলত মানুষকে বা মানুষের অন্তরকে ধ্বংস বা হালাক করে দেয়। এ প্রসঙ্গে জনৈক বুযুর্গ কবি তিনি বলেন, “তুমি যদি চাও, তোমার অন্তর আয়নার মতো পরিষ্কার হোক, তবে তুমি তোমার অন্তর থেকে বদ স্বভাবসমূহ বের করে দাও।”
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, মুহলিকাত বা বদ খাছলত হচ্ছে- ১। কিবর (অহঙ্কার), ২। হাসাদ (হিংসা), ৩। বোগয (শত্রুতা), ৪। গদ্বব (রাগ), ৫। গীবত (পরনিন্দা), ৬। হিরছ (লোভ),৭। কিযব (মিথ্যা), ৮। বোখল (কৃপণতা), ৯। রিয়া (লোক দেখানো), ১০। গুরুর (ধোঁকাবাজী), ১১। কিনা (দুশমনী), ১২। ত্বমা (হালাল-হারাম না দেখে ভবিষ্যতে পাওয়ার আশা করা), ১৩। কাছীরুল কালাম (অতিরিক্ত কথা বলা), ১৪। শরফ (সম্মান কামনা করা), ১৫। হুব্বেজাহ (প্রভুত্ব প্রিয়তা), ১৬। হুব্বুদ দুনিয়া (দুনিয়ার মুহব্বত), ১৭। খোদপছন্দী (আত্মগৌরব), ১৮। কুওওয়াতে শাহওয়াত (কামশক্তি), ১৯। খতা (ভুল, মোহ বা ভ্রম), ২০। হুব্বুল মাল (মালের মুহব্বত), ২১। নিফাক্ব (কপটতা), ২২। গাফলত (অলসতা), ২৩। শাবয়ান (অধিক আহার করা), ২৪। খছম (ঝগড়া), ২৫। নাম্মাম (চোগলখোরী), ২৬। ফুহুশ (অশ্লীলতা), ২৭। মুনাজিরা (তর্ক), ২৮। বদ দোয়া (অভিশাপ), ২৯। তোহমত (অপবাদ), ৩০। মকর (প্রতারণা), ৩১। শেকায়েত (খারাপ বলা, দোষ বর্ণনা করা), ৩২। বদ গুমান (কুধারণা), ৩৩। আফাতুল লিসান (জবানের খারাবী), ৩৪। জুব্ন্ (ভীরুতা), ৩৫। আযল (তাড়াহুড়া করা), ৩৬। কুফর (অস্বীকার করা), ৩৭। আমাল (অবৈধ আকাক্সক্ষা), ৩৮। জিহালত (অজ্ঞতা) ৩৯। মুখতাল (দাম্ভিকতা) ৪০। ইহানত (অবজ্ঞা, ঘৃণা, অপমান, তিরস্কার) ৪১। শিরক ৪২। বিদয়াত ৪৩। নাফরমানী ৪৪। অধৈর্য্যতা ৪৫। অসহিষ্ণুতা ৪৬। নাশোকরী ৪৭। কাছিরুল মানাম ৪৮। কাছরাতুল ইখতেলাত মায়াল আনাম ৪৯। বেপরওয়া ৫০। নির্লজ্জতা বা বেহায়া ৫১। বেআকেল ৫২। অজ্ঞতা বা মূর্খতা ৫৩। বেআদব ৫৪। নাফছানিয়ত ৫৫। কুফরী ইত্যাদি।
সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, উদাহরণস্বরূপ “রিয়া” নামক বদ খাছলতের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত অন্য কোনো উদ্দেশ্যে পবিত্র ইবাদত বা আমল করাই হচ্ছে রিয়া। রিয়াকারীর কোনো আমল খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার মুবারক মাঝে কবুলযোগ্য নয়। তাই রিয়া সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় পবিত্র ইলম অর্জন করা সকলের জন্য ফরয। এ প্রসঙ্গে “ফতওয়ায়ে শামী”তে উল্লেখ আছে যে, “রিয়া সম্পর্কিত পবিত্র ইলম অর্জন করা ফরয। কারণ ইবাদতকারী রিয়ার কারণে পবিত্র ইবাদত উনার ছওয়াব থেকে বঞ্চিত হয়।” খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “ওইসব মুছল্লী বা নামাযীর জন্য জাহান্নাম, যেসব মুছল্লী অলসতার সাথে এবং লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে নামায আদায় করে।” আর পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, রিয়া হলো গোপন শিরক।” মূলত, রিয়াকারী ব্যক্তির কোনো ইবাদত-বন্দিগী খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র দরবার মুবারক মাঝে কবুলযোগ্য নয়।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি পবিত্র ছলাত শরীফ-পবিত্র সালাম শরীফ পাঠ করা, পবিত্র মীলাদ শরীফ পাঠ করা, পবিত্র না’ত শরীফ পাঠ করা এবং উনার আলোচনা মুবারক করা ফযীলত, বরকত ও মর্যাদা হাছিলের কারণ।
২০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নত মুবারক পালনের অফুরন্ত ফযীলত মুবারক।
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পক্ষ হতে কুরবানী দেয়া প্রত্যেক উম্মতের জন্যই দায়িত্ব কর্তব্য।
১৮ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহাসম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার ফতওয়া হলো- মুসলমানদের জন্য কোনো অবস্থাতেই বিধর্মীদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করা, তাদের সাথে মিল-মুহব্বত রাখা, বন্ধুত্ব করা জায়িয নেই। বরং কাট্টা হারাম ও কুফরী।
১৭ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নেককারদের জন্য দুনিয়া ও আখিরাতে সুসংবাদ আর বদকারদের জন্য দুনিয়াতে লাঞ্চনা-গঞ্চনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি।
১৫ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পুলসিরাত পার হওয়ার জন্য কুরবানী দাতাকে কুরবানীর পশু দেয়া হবে এবং কুরবানীর পশু দ্বারা কুরবানীদাতা বিদ্যুৎ গতিতে পুলসিরাত পার হতে পারবে। প্রত্যেক মুসলমানের দায়িত্ব-কর্তব্য হলো- মহান আল্লাহ পাক উনার এবং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার জন্য অত্যন্ত হৃষ্ট-পুষ্ট ও মোটা-তাজা পশু দেখে কুরবানী করা।
১৫ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রাস্তা-ঘাট দূর্গন্ধ হওয়ার মিথ্যা অযুহাতে দূরে গিয়ে কুরবানী করতে বলা, দূরে সরানোর পরিকল্পনা করা বা দূরে গিয়ে কুরবানী করতে বাধ্য করা সবই হারাম ও কুফরী।
১৪ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- হামদ্ শরীফ, না’ত শরীফ, ক্বাছীদাহ শরীফ ইত্যাদি লেখা বা রচনা করা, পাঠ বা আবৃত্তি করা এবং শ্রবণ করা সবই খাছ সুন্নত মুবারক উনার অন্তর্ভুক্ত।
১৩ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
যে ঘরে পবিত্র ছলাত শরীফ অর্থাৎ পবিত্র মীলাদ শরীফ-পবিত্র ক্বিয়াম শরীফ পাঠ করা হবেনা সেই ঘর অন্ধকার কবরের মত হয়ে যাবে অর্থাৎ বিরান হয়ে যাবে।
১২ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সর্বোচ্চ রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘ফালইয়াফরহূ শরীফ’ সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারাই হিদায়েতের মূল এবং ভিত্তি। উনাদের মুহব্বত ঈমান আর উনাদের প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করা কুফরী। প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ, মহিলা, জ্বিন, ইনসান, ছোট, বড় সকলের জন্য দায়িত্ব-কর্তব্য ফরয হচ্ছে- হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সর্বাধিক মুহব্বত করা এবং সর্বক্ষেত্রে উনাদেরকে অনুসরণ-অনুকরণ করা।
১০ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “অন্যান্য ফরযের পর হালাল কামাই করা ফরয।” সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- প্রত্যেকের জন্য হালাল কামাই করা, হালাল কাপড় ও দ্রব্য সামগ্রী ব্যবহার করা এবং হালাল ও পবিত্র খাদ্য খাওয়া ফরয।
০৯ মে, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)