অর্পিত সম্পত্তি মানেই হিন্দুদের সম্পত্তি নয়। ৬ লাখ একর অর্পিত সম্পত্তির অধিকাংশই মুসলমানদের বিনিময় সম্পত্তি। তা মুসলমানদেরকে বুঝিয়ে দিতে হবে।
পাক-ভারত যুদ্ধের ‘শত্রুসম্পত্তি’ মুসলমানদের এখনো ফিরিয়ে দেয়নি ভারত। একই ‘শত্রুসম্পত্তি’ বাংলাদেশে ‘অর্পিত সম্পত্তি’র নামে বিশেষ মহলের হাতে তুলে দেয়া কিভাবে বৈধ হতে পারে? (১)
, ১০ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ৩০ ছানী, ১৩৯১ শামসী সন , ২৯ জুলাই, ২০২৩ খ্রি:, ১৪ শ্রাবণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) মন্তব্য কলাম
এ ব্যাপারে ‘বিনিময়কারী ঐক্য পরিষদ’ বিভিন্ন সময় সরকারের কাছে দাবি জানিয়ে আসছে। দেশের বিভিন্ন জেলায় আন্দোলন চলছে। তা বাস্তবায়ন না করলেও হিন্দুদের দাবি অনুযায়ী, ‘শত্রু সম্পত্তি’কে ‘অর্পিত সম্পত্তি’ নামে আইন করে তাদেরকে বুঝিয়ে দেয়ার চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন সময়ে পকিস্তান ও ভারতে হিন্দু-মুসলিম জাতিগত সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা অব্যাহত থাকায় এবং উভয় দেশের নাগরিকদের হতাশা ও জনজীবনের নিরাপত্তাহীনতা বিরাজমান থাকায় ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী নেহরু ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ফিরোজ খান নূন মিলিত হয়ে ১৯৫৮ সালে একটা চুক্তি বা প্যাক্ট করে; যা নূন-নেহরু প্যাক্ট নামে খ্যাত। এই প্যাক্টের আওতায় হিন্দু-মুসলমান পরস্পর যারা দেশ পরিবর্তন করতে আগ্রহী তারা তাদের সম্পত্তিও পরস্পর বিনিময় করতে পারবে বলে চুক্তি হয়। ভারতের মুসলিম নাগরিক যারা পাকিস্তান যেতে চান তারা তাদের বাড়িঘর ও বিষয় সম্পত্তি পাকিস্তানের হিন্দু নাগরিকদের কাছে সমমূল্যের বিষয় সম্পত্তির সাথে বিনিময় মূলে হস্তান্তর করতে পারবে। এই নূন-নেহরু প্যাক্টের ফলে পাকিস্তান এবং ভারতের লাখ লাখ হিন্দু-মুসলমান নিজ নিজ স্থাবর মালিকানা রেকর্ডিও সম্পত্তি বিনিময় করে দেশ ছেড়ে চলে যায়।
নূন-নেহরু প্যাক্টের আওতায় বিনিময় হলেও ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান ক্ষমতা সামরিক শাসন জারি করে সামরিক অধ্যাদেশ বলে পাক সরকার পূর্ব-পাকিস্তানে হিন্দু নাগরিকদের ভূমি দান বিক্রি হস্তান্তর দলিল রেজিস্ট্রেশন কার্যক্রম বন্ধ রাখে। কিন্তু একই সময় ভারত সরকার হিন্দুদের প্রতি সহমর্মী হয়ে ভূমি বিনিময় দলিল রেজিস্ট্র্রেশন ভারতে চালু রাখে। ফলে তৎকালীন পূর্ব-পাকিস্তানের হিন্দুরা ভারতে বিনিময় দলিল রেজিস্ট্র্রেরী করে মুসলমানদের সম্পত্তির মালিকানা লাভ করে এবং স্বপরিবারে ভারতের স্থায়ী বাসিন্দা হয়ে যায়। কিন্তু ভারত থেকে আসা লাখ লাখ মুসলমান সামরিক অধ্যাদেশের কারণে পূর্ব-পাকিস্তানে এসে তাদের বিনিময় সম্পত্তি রেজিস্ট্র্রি করতে পারেননি। তা হিন্দুদের মালিকানায়ই থেকে যায়।
পরবর্তীতে বাংলাদেশের সামরিক সরকার ও গণতান্ত্রিক সরকার থাকাবস্থায় কিছু বিনিময় সম্পত্তি নিয়মিতকরণ করলেও অধিকাংশ বিনিময়কারী মুসলিম নাগরিকগণের বিনিময় রেজিস্ট্রি বাকি রয়েছে। তারা অনেক আবেদন নিবেদন করলেও প্রশাসনের আমলাতান্ত্রিক জটিলতায় বিনিময়কারীদের আবেদন কার্যকরী হয়নি আজও। বাংলাদেশের প্রতিটি জেলায় হাজার হাজার বিনিময় সম্পত্তির মামলা অনিষ্পন্ন অবস্থায় রয়েছে।
এদিকে ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে উভয় দেশ হিন্দু ও মুসলমানদের সম্পত্তিকে ‘শত্রুসম্পত্তি’ হিসেবে ঘোষণা করে। ভারতে ‘শত্রুসম্পত্তি’ ঘোষিত মুসলমানদের সম্পত্তি রাষ্ট্রায়ত্ত করে নেয়। মুসলমানদের আর ফেরত দেয়া হয়নি। এসব ‘শত্রুসম্পত্তি’ নিয়ে সারা ভারতে হাজার হাজার মামলা রয়েছে। ‘শত্রুসম্পত্তি’ হিসেবে গণ্য মুসলমানদের সম্পত্তি শুধু মুম্বাইতে রয়েছে ১৬০০০ একর। যা ফেরত পেতে ৫৫০টি মামলা হলেও মুসলমানদেরকে তাদের ভূমি ফেরত দেয়া হয়নি। বরং সরকারিভাবে সেই ভূমি থেকে নিলামে বিক্রি করা হয়।
ভারতে ‘শত্রুসম্পত্তি’ ফিরিয়ে না দিলেও স্বাধীন বাংলাদেশের তাঁবেদার সরকার ‘শত্রুসম্পত্তি’ হিন্দুদেরকে ফিরিয়ে দেয়ার জন্য তোড়জোড় শুরু করেছে। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর তৎকালীন বঙ্গবন্ধুর সরকার ১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির ২৯ নম্বর আদেশ বলে Bangladesh (Vesting of Property and Assets) Order আইনটির নাম বদল করে ‘অর্পিত সম্পত্তি আইন’ রাখে। ১৯৭৪ সালের ২৩ মার্চ Enemy Property (Continuance of Emergency Provisions) (Repeal) Act, 1974 (XLV of 1974) আইনটির মধ্য দিয়ে ১৯৬৯ সালের অধ্যাদেশ বাতিল করা হয়। এরপর Vested and Non-resident Property (Administration) Act, 1974 (XLVI of 1974) আইন প্রণয়নের মাধ্যমে ইতঃপূর্বে সরকারের কাছে থাকা অর্পিত সম্পত্তির ব্যবস্থাপনার দায়িত্ব সরকারের উপর ন্যস্ত করে রাষ্ট্রীয়ভাবে এসব সম্পত্তি সুরক্ষিত করে।
কিন্তু এরপরও বর্তমান সরকার এদেশের সম্পদ এদেশের মানুষের সম্পদ হিন্দুদের হতে তুলে দিতে বড়ই জেদী।
-আল্লামা মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষন, যুদ্ধকৌশল, সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন সাফল্যের শীর্ষে। সরকারের উচিত- দেশের মর্যাদা বুলন্দ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর প্রতি সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্যানুযায়ী বেনিয়া বৃটিশগুলো মুসলিম ভারত থেকে লুট করেছে ১২ হাজার লক্ষ কোটি টাকা প্রকৃতপক্ষে তারা লুট করেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ করলে যা লাভ হবে চালু রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হবে ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী অবিলম্বে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হোক কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে পরিবেশ উপদেষ্টা প্রমাণ করছে তার পরিবেশবাদী তৎপরতা অন্য পরিবেশবাদীদের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তার পরিবেশবাদী প্রচারণা কার্যকলাপ আসলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নয় বরং বিশেষ প্রভুর নির্দেশনায় (প্রথম পর্ব)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন এসব খেলা স্বাভাবিক গেমের মতো হওয়ায় প্রকাশ্যে খেলা হলেও আশপাশের মানুষ তা বুঝতে পারেন না কেবলমাত্র ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব ইনশাআল্লাহ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
গার্মেন্টসের চেয়েও বড় অবস্থানে তথা বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে অধিষ্ঠান হতে পারে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে শুধু মাত্র এ খাত থেকেই বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা অর্জন সম্ভব ইনশাআল্লাহ। যা বর্তমান বাজেটের প্রায় দেড়গুণ আর শুধু অনিয়ম এবং সরকারের অবহেলা, অসহযোগীতা দূর করলে বর্তমানেই সম্ভব প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা অর্জন জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সমৃদ্ধি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সরকারের গাফলতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জনগণের জন্যও জরুরী। (২য় পর্ব)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার মুসলিম বিশ্বে অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা বিশেষত মূল্যহীন কাগজী মুদ্রা বাদ দিয়ে সুন্নতী দিনার-দিরহাম মুদ্রা চালু করা আবশ্যক ইনশাআল্লাহ (দ্বিতীয় পর্ব)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিদেশি হাইব্রিড বীজের ফাঁদে দেশের কৃষি। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফসলের জাত, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। ফুলে-ফেঁপে উঠছে বীজ কোম্পানিগুলো।
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুশরিক ভারতের প্রতি লা’নত ওদের জনসংখ্যা দিন দিন নিম্নমুখী পক্ষান্তরে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে খোদায়ী রহমত। (সুবহানাল্লাহ) বাংলাদেশে জনসংখ্যার এখন ৬৫ ভাগই কর্মক্ষম এবং জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার উর্ধ্বগামী বাংলাদেশ ভোগ করছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের নিয়ামত। সুবহানাল্লাহ!
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়াতে সতর্কতা তথা মধ্যম আয়ের স্থবিরতা তাওয়াক্কুল আর তাকওয়া অবলম্বনে সব সমস্যা দূর হয়ে অচিরেই বাংলাদেশ হতে পারবে শীর্ষ সমৃদ্ধশালী দেশ ইনশাআল্লাহ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রিজওয়ানার পরিবেশবাদী প্রচারণার বিপরীতে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে ইতিবাচক বার্তা এবং ইউনুসের পানি ও প্রকৃতি প্রেমের বানীর পরিবর্তে আপত্তি সত্ত্বেও একনেকে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অনুমোদনে জনগণ তথা নেটিজনের মূল্যায়নটা কী?
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যখন কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধবিমান কিনে, তখন তা শুধু একটি বিমান কেনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর সাথে যুক্ত হয় একাধিক শর্ত, নিষেধাজ্ঞা এবং জটিল টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












