সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে অনন্তকালব্যাপী আয়োজিত বিশেষ মাহফিলে আজিমুশ্বান নছীহত মুবারক:
আক্বিদা যদি পুর্ণ শুদ্ধ থাকে তাহলেই মুসলমান হওয়া যাবে
, ০৬ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ৩ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ২ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ১৮ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
আল ইহসান ডেস্ক:
প্রতিদিনের ন্যায় পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদে অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ উনার সম্মানে বিশেষ মাহফিল মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। বিগত ৫ই মুহররমুল হারাম শরীফ ১৪৪৭ হিজরী সাইয়্যিদুনা মামদুহ হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বাদ ইশা কুল কায়িনাতের সকলের উদ্দেশ্যে বিশেষ নছীহত মুবারক করেন।
নছীহত মুবারক উনার মধ্যে তিনি বলেন- সবার যিকির ফিকির করা উচিত বেশী বেশী। শ্বাস প্রশ্বাসে পাছ আনফাছ যিকির জারী করতে হবে। বাদ ইশা ও বাদ ফজর পবিত্র দরুদ শরীফ নিয়মিত আদায় করতে হবে। আমাদের এখান থেকে প্রকাশিত কিতাব পড়তে হবে। মানুষতো এখন পড়াশুনাই করে না। প্রকৃতপক্ষে, ইলমের কদর যারা বুঝে তারা ইলম সংগ্রহ করবে। যারা বুঝেনা তারা সংগ্রহ করবে না। যেমন, পিপাসার্ত ব্যাক্তি পানি পান করতে যাবে, পিপাসা মিটানোর চেষ্টা করবে, ক্ষুধার্ত ব্যাক্তি খাদ্য খেতে চায়, যার ক্ষুধা নাই সেতো খাবে না। এজন্য ইলমেরতো পিপাসা থাকতে হবে তাহলেই সে ইলম তালাশ করবে। মানুষ মনে করে সে অনেক কিছুই জানে, আসলেই কিছুই সে জানে না। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- তারা কিতাবের আসলে কিছুই জানে না, কিছু কল্পনা জল্পনা জানে, কিছু আশা আকাঙ্খা তারা প্রকাশ করে। আফসোস ওইসব ব্যাক্তির জন্য, তারা নিজেরাই কিতাবের অপব্যাখ্যা করে, এগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার কথা বলে কিছু দুনিয়াবী পয়সা হাসিল করার জন্য প্রচার করে। আফসোস তাদের জন্য, তাদের জন্য জাহান্নাম তারা যা রচনা করলো। তারা এগুলো মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম বলে রচনা করে, বিক্রি করে,কামাই করে এর বিনিময়ে তারা যা অর্জন করলো সেটা হলো জাহান্নাম। নাউজুবিল্লাহ!
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- যারা মনগড়া কিতাব রচনা করেছে তারা হযরত উম্মূল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ১৩ জন সেটা মানে না, তারা ৯ জন মানে। কোন কোন ফাসেক কিতাব লেখক ১১ জন মানে। এরপর বলে এটাই পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে রয়েছে। তারা আগে পিছে উনাদের নাম মুবারকে কোন সম্মানসুচক শব্দ ব্যবহার করে না। উনাদের শান মুবারকে কোন আদব বজায় রাখে না। আসলে আক্বিদার বিষয়টি খুবই সুক্ষ্ম বিষয়। সবাইতো আক্বিদা বুঝে না, আর মানুষের শরাফতেরও অভাব আছে। আদব শরাফত থাকলে একরকম আর না থাকলে আরেক রকম প্রকাশ পায়। যারা চরম বেয়াদব মুর্খ তারা উচ্চপদে উঠলে সম্মানিত লোকের মানহানী করে, উনাদের মানসম্মান নষ্ট করে। জাহিল হবার পরও এরা বিরাট আলেম সেজে, উনাদের জীবনী মুবারক রচনা করে। তারা মহান আল্লাহ পাক উনার কালামুল্লাহ শরীফ উনার বরাত না দিয়ে মানুষের কথার দলীল দেয়। অথচ মহান আল্লাহ পাক তিনি কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেছেন- হযরত উম্মাহাতুল মুমিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা অন্য কারো মতো নন। উনাদেরকে পবিত্র করার মতো পবিত্র করেই সৃষ্টি করেছেন। এরপরও উনাদের অমুক তমুক দোষ আছে বলে যেসব জাহিল কিতাব রচনা করে তারা ঈমানদার মুসলমান নয় তারা কাট্টা কাফের।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- অধিকাংশ মানুষ বালহুম আদল, তাদের আকল বুদ্ধি নষ্ট হয়ে গেছে। পশুও যিকির করে কিন্তু এসব লোকতো যিকির হতেও গাফিল সেজন্য এদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পশুর চেয়েও নিকৃষ্ট বলে ঘোষণা দিয়েছেন। এরা ব-কদরে নেছাব পুঁথিগত বিদ্যা পড়ে মনে করে অনেক কিছু শিখে গেছে। এরা মনে করে আমলেই নাজাত। তাহলে ৬ লক্ষ বছর ইবাদত করে আমল করার কারনে ইবলিশ আগেই সবচে বড় বেহেশতে যেতো। আক্বিদা যে আগে শুদ্ধ করতে হবে সেটাই তারা বুঝে না। আকায়েদের যে ইমাম আছেন সেটাও এরা জানে না। অনেক কথিত বড় বড় আলেমকে আমি জিজ্ঞেস করছি- তারা জবাব দিতে পারে নাই। আসলে এরা পড়াশুনাই করেনা। যা কিছু করে তাও তারা বুঝেনা। এরাতো বহু তাফসীর লিখছে, সবগুলোতে তারা লিখেছে- হযরত নবি রাসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা ভুল করেছেন। উনারা নাকি ইজতিহাদে ভুল করছেন। অথচ উনারা ইজতেহাদ করে নয় বরং মহান আল্লাহ পাক উনার ওহীর ভিত্তিতেই চলেন, সবকিছু করেন। এরা ইতিহাসের বরাত দিয়েও অনেক ভুল বিকৃত কথা লিখেছে। সব কিতাবের মধ্যে সব বিষয় থাকে না, আবার সব কিতাবের সবকিছুই গ্রহণযোগ্য না, এটা বুঝতে হবে।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাহিস সালাম তিনি বলেন- আখেরী জামানা ফিতনার যুগ, ষোল আনাই এখন সেটা জাহির হচ্ছে। সমস্ত ফেতনার জন্য ওলামায়ে-ছু তারাই দায়ী। কারন তারাই হালালকে হারাম করছে। বিনা তাহকীকে তারা ফতোয়া দিয়ে দেয়। এরাতো নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আব্বা আম্মা আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্পর্কে কবরে জিজ্ঞেস করা হবে না বলে। এটাও তারা ভুল বলে, কারণ উনাদের সম্পর্কে অবশ্যই জানতে হবে, আদব হুসনে যন পোষণ করতে হবে, আকিদা বিশুদ্ধ রাখতে হবে। আকিদা যদি পূর্ণ শুদ্ধ থাকে তাহলেই মুসলমান হওয়া যাবে। ঈমান আর আকিদার মধ্যে যে একটা পার্থক্য আছে এটাও তারা বুঝেনা। ঈমানটাকে আকিদা দিয়ে যে রক্ষা করতে হবে সেটাই তারা জানে না। সমস্ত কিছুর মূল যে আকিদা শুদ্ধ হওয়া, হুসনে যন পোষণ করা, আদব শরাফত রক্ষা করা, এটাইতো মানুষ বুঝে না। এজন্য সমস্ত মানুষের জন্য প্রথম ফরজে আইন হচ্ছে- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্পর্কে বিশুদ্ধ আকিদা পোষণ করা, উনার শান মুবারকে সর্বোচ্চ হুসনে যন রাখা এবং উনার প্রতি সর্বোচ্চ আদব শরাফত রক্ষা করা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












