আক্বীদা বিশুদ্ধ রাখার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
, ২৭ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৮ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ০৭, মে, ২০২৪ খ্রি:, ২৪ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) ইলমে তাছাউফ
![আক্বীদা বিশুদ্ধ রাখার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা](https://www.al-ihsan.net/uploads/1714936553_ নাছীর.jpg)
‘সম্মানিত দ্বীন ইসলাম’ উনার মধ্যে প্রবেশ করার একমাত্র মাধ্যম হচ্ছেন ‘সম্মানিত ঈমান’। সুবহানাল্লাহ! যখন কেউ সম্মানিত ঈমান আনেন, তখন তিনি সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে প্রবেশ করেন। আর সম্মানিত ঈমান সুসংঘঠিত হয়ে থাকেন সম্মানিত আক্বীদা মুবারক উনার মাধ্যমে। সুবহানাল্লাহ!
এ কারণে যিনি খালিক মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
يَاأَيُّهَا الَّذِينَ اٰمَنُوا ادْخُلُوا فِي السِّلْمِ كَافَّةً وَلَا تَتَّبِعُوا خُطُوَاتِ الشَّيْطَانِ إِنَّهُ لَكُمْ عَدُوٌّ مُبِينٌ
অর্থ: “হে ঈমানদারগণ! তোমরা সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণরূপে দাখিল হও। তোমরা কখনও শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই শয়তান তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু। ” সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা বাক্বারাহ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২০৮)
এখানে মহান আল্লাহ পাক তিনি ঈমানদারদেরকে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে পরিপূর্ণরূপে প্রবেশ করার জন্য বলেছেন। অর্থাৎ তিনি ঈমানদারদেরকে তাদের আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করার জন্য বলেছেন। সুবহানাল্লাহ!
পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দুইটি দিক রয়েছে। এক. সম্মানিত আক্বীদাগত দিক এবং দুই. সম্মানিত আমলগত দিক। আর এ উভয়ের মধ্যে আক্বীদার গুরুত্ব অনেক অনেক গুণ বেশি। কেননা, কারো যদি আক্বীদা শুদ্ধ থাকে কিন্তু তার আমলে ত্রুটি থাকে, তারপরও সে ঈমানদার থাকবে। অর্থাৎ সে মু’মীনে ফাসিক্ব থাকবে। সে যদি এ অবস্থায় ইন্তেকাল করে, তাহলে সে কোনো এক সময় চিরস্থায়ী জান্নাতে প্রবেশ করবে। সুবহানাল্লাহ! কিন্তু কারো যদি আক্বীদা অশুদ্ধ হয়, তাহলে তার সম্মানিত ঈমান বিনষ্ট হয়ে যায়, সে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার থেকে খারিজ হয়ে যায়। তার কোনো আমলই মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে কবুল হয় না। তার সর্বশেষ পরিণতি হচ্ছে, সে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী। নাঊযুবিল্লাহ!
ইবলীস ছয় লক্ষ বছর ইবাদত করার পরও তার আক্বীদায় ত্রুটি থাকার কারণে সে কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হয়ে গেছে। বাল‘আম ইবনে বা‘ঊরা ৩০০ বছর ইবাদত-বন্দেগী করার পরও তার আক্বীদায় ত্রুটি থাকার কারনে সে কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হয়ে গেছে। অনুরূপভাবে আবুল হারিছাহ মালানা সেও দীর্ঘ বছর ইবাদত-বন্দেগী, দরস-তাদরীস করেছিলো, তথাপি তার আক্বীদা অশুদ্ধ থাকার কারণে সেও কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী হয়ে গেছে। একই কারণে বাতিল ৭২ ফিরক্বার লোকেরা যদিও পবিত্র কালিমা শরীফ পাঠ করে থাকে এবং নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাতসহ আরো অন্যান্য ইবাদত বন্দেগীও করে থাকে, তারপরও তারা কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী। কেননা তাদের আক্বীদায় ত্রুটি রয়েছে। অন্যদিকে বণী ইসরাঈলের এক ব্যক্তি দুই শত বছর মহান আল্লাহ পাক উনার নাফরমানী করার পরও তার আক্বীদা বিশুদ্ধ থাকার কারণে সে সর্বোচ্চ জান্নাতী হয়ে গেছে। সুবহানাল্লাহ! তাহলে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার মধ্যে আক্বীদার গুরুত্ব কতো বেশি তা এখান থেকেই স্পষ্ট হয়ে যায়। সুবহানাল্লাহ!
এ জন্য যিনি খ্বালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اِنَّ الْاِنْسَانَ لَفِىْ خُسْرٍ.اِلَّا الَّذِيْنَ اٰمَنُوْا وَعَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ وَتَوَاصَوْا بِالْـحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ
অর্থ: “নিশ্চয়ই সমস্ত মানুষ ক্ষতিগ্রস্তের মধ্যে রয়েছে, একমাত্র যারা ঈমান এনেছেন এবং আমলে ছলেহ করেছেন উনারা ব্যতীত। ” (পবিত্র সূরা আছর শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ২-৩)
তাই, প্রত্যেক মুসলমান, পুরুষ-মহিলা, জিন-ইনসান সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে- তাদের সম্মানিত ঈমান, আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করা, হাক্বীক্বী হুসনে যন হাছিল করা। এ জন্য আবশ্যক সম্মানিত ইলমে তাছাউফ অর্জন করা। কেননা, সম্মানিত ইলমে তাছাউফ অর্জন করা ব্যতীত কেউ কস্মিনকালেও তার সম্মানিত ঈমান, আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করতে পারবে না, হাক্বীক্বী হুসনে যন হাছিল করতে পারবে না। তাই সকলের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে, একজন হক্কানী-রব্বানী শায়েখ উনার হাতে বাইয়াত গ্রহণ করে ক্বলবী যিকির ও ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করার মাধ্যমে ইলমে তাছাউফ অর্জন করা, ফায়েজ-তাওয়াজ্জুহ হাছিল করা এবং নিজের সম্মানিত ঈমান, আক্বীদা ও আমল পরিশুদ্ধ করা, হাক্বীক্বী হুসনে যন হাছিল করা। তবেই কামিয়াবী হাছিল করা সম্ভব।
-মুহম্মদ ছালেহ।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
তাছাউফ উনার প্রথম শিক্ষাই হচ্ছে- সর্বাবস্থায় নিজ শায়েখ উনার দিকে রুজু থাকা
০৯ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
প্রত্যেক উম্মতকে শরীয়ত এবং তাছাওউফ দেয়া হয়েছে
০৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নক্শবন্দিয়ায়ে মুজাদ্দিদিয়া তরীক্বার শাজরা শরীফ
০৩ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র ইলমে ফিক্বাহ ও পবিত্র ইলমে তাছাওউফ উনাদের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা
০১ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মুহলিকাত তথা বদ স্বভাব
২৭ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ওলীআল্লাহগণের ছোহবত ব্যতীত নেক খাছলত অর্জন সম্ভব নয়
২৬ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুনজিয়াত বা নেক গুণাবলীর বিবরণ
২৬ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
চীশতিয়া তরীক্বার শাজরা শরীফ
২২ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৪)
০৭ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মুর্শিদ ক্বিবলা ও মুরীদের সম্পর্ক প্রসঙ্গে (২৩)
০৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)