আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৮)
, ২১ যিলক্বদ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ৩১ ছানী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ৩০ মে, ২০২৪ খ্রি:, ১৬ জৈষ্ঠ্য, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
ওহাবী সালাফীরা কি জানে বুখারী শরীফেই দ্বয়ীফ সনদের বর্ণনা আছে:
বর্ণনাকারী যদি তার উস্তাদকে বাদ দিয়ে সরাসরি পরবর্তী ব্যাক্তি থেকে পবিত্র হাদীছ শরীফ বর্ণনা করে সেক্ষেত্রে পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উছুল অনুযায়ী মুয়াল্লাক হাদীছ শরীফ হয়। উছূলের কিতাবে মুয়াল্লাক হাদীছ শরীফ উনাকে বর্জনীয় বলা হয়েছে। অথচ মজার বিষয় হলো ছহীহ বুখারী শরীফেও মুয়াল্লাক হাদীছ শরীফ রয়েছে। যেমন-
قَالَ مَالِكٌ : أَخْبَرَنِي زَيْدُ بْنُ أَسْلَمَ أَنَّ عَطَاءَ بْنَ يَسَارٍ أَخْبَرَهٗ اَنَّ أَبَا سَعِيْدٍ الْـخُدْرِىَّ اَخْبَرَهٗ أَنَّهٗ سَمِعَ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيَهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ
উক্ত সনদখানা বুখারী শরীফ উনার “কিতাবুল ঈমান” অধ্যায়ে ৪১ নম্বর পবিত্র হাদীছ শরীফ (যারা বাংলায় দেখতে চান তারা ইসলামী ফাউন্ডেশনের অনুবাদে ৪০ নং পবিত্র হাদীছ শরীফ দেখতে পারেন)। উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি তিনি সরাসরি ইমাম হযরত মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন। অথচ হযরত ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার (৯৩-১৭৯ হিজরী) বিছাল শরীফের প্রায় ১৫ বছর পর ইমাম হযরত বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি (১৯৪-২৫৬ হিজরী) বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ গ্রহন করেন। তার মানে হচ্ছে ইমাম হযরত বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইমাম হযরত মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাক্ষাত পাননি। সাক্ষাত না পাওয়ার পরও মাঝখানে বর্ণনাকারী বাদ দিয়ে সরাসরি ইমাম মালিক রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার নাম মুবারক ব্যবহার করেছেন।
শুধু তাই নয় ছহীহ বুখারী শরীফ উনার মধ্যে এমন মুয়াল্লাক হাদীছ শরীফ উনার সংখ্যা ১৩৪১ টি। তারমধ্যে ১১৭১/১১৮১ টি হাদীছ শরীফ উক্ত বুখারী শরীফেই অন্যস্থানে সনদ সহ বর্ণিত আছে। আর বাকি ১৬০/১৭০ টি হাদীছ শরীফ বুখারী শরীফে কোথাও সনদ সহ বর্ণিত হয়নি। (তাদরীবুর রাবী ১/৭৭)
এ প্রসঙ্গে বুখারী শরীফ উনার ব্যাখ্যাকার ইবনে হাজার আসকালানী রহতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
وَاَمَّا مَا لَـمْ يُوْرِدْهُ فِىْ مَوْضَعٍ اخَرٍ مِمَّا أَوْرَدَهٗ بـِهذِهِ الصِّيْغَةِ فَمِنْهُ مَا هُوَ صَحِيْحٌ اِلَّا أَنَّهٗ لَيْسَ عَلى شَرْطِهٖ وَمِنْهُ مَا هُوَ حَسَنٌ وَمِنْهُ مَا هُوَ ضَعِيْفٌ فَرْدٌ اِلَّا اَنَّ الْعَمَلَ عَلى مُوَافِقَتِه وَمِنْهُ مَا هُوَ ضَعِيْفٍ فَرْدٌ لَا جَابِرَ لَهٗ
আর যে পবিত্র হাদীছ শরীফগুলো সনদ সহ বুখারী শরীফ উনার অন্যস্থানে নেই এবং মজহুল শব্দে উল্লেখ করা হয়েছে সেগুলো কিছু ছহীহ হলেও বুখারী শরীফ উনার শর্ত অনুযায়ী ছহীহ নয়। বাকিগুলো কিছু হাসান কিছু দ্বয়ীফ। যার কোন কোনটার স্বপক্ষে উম্মত উনাদের আমল রয়েছে। অবশিষ্টগুলো এমন দ্বয়ীফ যার সমর্থনে কোন কিছু নেই। (ফতহুল বারী ১ খন্ড ১৮ পৃষ্ঠা, প্রকাশনা : দারুল মা’রিফা, বইরুত, লেবানন)
وَاَمَّا مَا لَـمْ يُخْرِجْهُ فَيَحْتَمِلُ اَنْ يَّكُوْنَ لَهٗ عِلَّةٌ خُفْيَةٌ مِنْ اِنْقِطَاعٍ اَوْ اِضْطِرَابٍ اَوْ ضُعْفٍ رَاوٍ
অর্থ: আর যেই পবিত্র হাদীছ শরীফগুলো অন্যস্থানে সনদসহ নেই সেগুলোর মধ্যে সুক্ষ¥ দুর্বলতা থাকার প্রবল আশঙ্কা রয়েছে। যেমন- ইনকেতা, ইসতিরাব, রাবী দুর্বল ইত্যাদি। (তাগলীকুত তালীক আলা ছহীহ বুখারী ২ খন্ড ১১ পৃষ্ঠা)
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানার জন্য ইবনে হাজার আসকালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার রচিত “তাগলীকুত তালীক আলা ছহীহ বুখারী” দেখা যেতে পারে। সুতরাং বুখারী শরীফ হলেই এক ঢোক পানি বেশি খাওয়ার সুযোগ নাই।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিম অর্জন করার পর সে অনুযায়ী যে আমল করে না, তার তিনটি অবস্থার যে কোনো একটি হবেই-
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৪)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ঢিলা-কুলুখের বিধান
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বেপর্দা হওয়া শয়তানের ওয়াসওয়াসাকে সহজ করার মাধ্যম
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












