আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাদেরকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (১১)
, ২৭ যিলহজ্জ শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৪ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২০ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
দ্বয়ীফ সনদে বর্ণিত হাদীছ শরীফ সম্পর্কে উছুলে হাদীছ শরীফ উনার হুকুম
বিশ্ববিখ্যাত ফক্বীহ্ ইমাম হযরত ইবনে হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি লিখেছেন, দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ দ্বারা মুস্তাহাব প্রমাণিত হয় এবং দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ ফযীলত অর্জন করার জন্য আমল করাও জায়িয।
এ সম্পর্কে হযরত ইমাম হযরত ইবনে হুমাম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
اَلضَّعِيْفُ غَيْرُ الْـمَوْضُوْعِ يَعْمَلُ بِهٖ فِـىْ فَضَائِلِ الْاَعْمَالِ.
অর্থ : “দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ যা মওদ্বু নয়, তা ফযীলত অর্জনের জন্য আমল করা জায়িয। ” (ফতহুল ক্বাদীর ১/৩৪৯)
বিশ্ববিখ্যাত মুহাদ্দিছ ও ফক্বীহ্ হযরত ইমাম হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
اَلضَّعِيْفُ يَعْمَلُ بِهٖ فِـىْ فَضَائِلِ الْاَعْمَالِ اِتِّفَاقًا
অর্থ : “সকলেই একমত যে, দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ ফযীলত হাছিল করার জন্য আমল করা জায়িয আছে। ” (আল মওদ্বুয়াতুল কাবীর পৃষ্ঠা ১০৮)
শুধু তাই নয়, দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ যদি বিভিন্ন রেওয়ায়েতে বর্ণনা করা হয়, তাহলে তা হাসান লি গায়রিহির দরজায় পৌঁছে যায় এবং এটা তখন আহ্কাম ও আক্বাইদের দলীল হিসেবে গ্রহণযোগ্য হবে।
এ প্রসঙ্গে আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ূতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উল্লেখ করেন-
ويعمل با لضعيف ايضافى الاحكام اذا كان فيه احتياط.
অর্থ : “দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ আহকামের জন্য গ্রহণযোগ্য, যখন তাতে সাবধানতা অবলম্বন করা হবে অর্থাৎ যখন হাসান লি গায়রিহি হবে। ” (তাদরীবুর রাবী ২৯৯ পৃষ্ঠা)
এমনকি যেক্ষেত্রে দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ পাওয়া যাবে, সেক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই ক্বিয়াস হালাল নয়। আর তাই ইমাম রহতুল্লাহি আলাইহিম উনারা প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত রায়ের উপর দ্বয়ীফ হাদীছ শরীকে প্রাধান্য দিয়েছেন। যেমন হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
قَالَ أَبُوْ حَنِيْفَةَ الْـخَبْـرُ الضَّعِيْفُ عَنْ رَّسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَوْلٰـى مِنَ الْقِيَاسِ، وَلَا يَـحِلُّ الْقِيَاسُ مَعَ مَوْجُوْدِهٖ.
অর্থ : “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণিত পবিত্র হাদীছ শরীফ, যদিও তা রাবীদের কারণে দ্বয়ীফ হয়, তা ক্বিয়াস হতে উত্তম। যেক্ষেত্রে দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ পাওয়া যাবে, সেক্ষেত্রে কোন অবস্থাতেই ক্বিয়াস হালাল নয়। ” (মুকাদ্দিমায়ে ইলাউস সুনান, পৃষ্ঠা ৫৯)
ইমাম হযরত সাখাভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
وَكَذَا اِذَا تَلَقَّتِ الْأُمَّةُ الضَّعِيْفَ بِالْقُبُوْلِ يَعْمَلُ بِهٖ عَلَى الصَّحِيْحِ حَتّٰـى أَنَّه يَنْزِلُ مَنْزِلَهُ الْـمُتَوَاتِرَ فـِيْ أَنَّه يَنْسَخُ الْـمَقْطُوْعَ بِهٖ
অর্থ : “অনুরূপ, উম্মত যখন কোন হাদীছ শরীফকে কবুল করে নেয় তখন, ছহীহ কথা হলো, সেই দ্বয়ীফ হাদীছ অনুযায়ী আমল করা যায়। এমনকি হাদীছ শরীফখানা মুতাওয়াতির পর্যায়ে পৌঁছে যায় এবং তা দ্বারা অকাট্য বিষয়ও রহিত হয়ে যায়। ” (ফাতহুল মুগিছ ১/২৮৮)
এছাড়া ফতওয়ায়ে শামী, মিযানুল আখবার, উমদাতুল ক্বারী, মিরকাত শরীফ সহ অনেক কিতাবে এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে।
এখানেই শেষ নয়, দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ একাধিক সনদে বর্ণিত হলে তা “হাসান” স্তরে উন্নিত হয়। বিখ্যাত মুহাদ্দিছ হযরত মোল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
وَتَعَدَّدُ الطُّرُقُ وَلَوْ ضَعُفَتْ يَرْقِي الْـحَدِيْثُ اِلٰى الْـحَسَنِ
অর্থ : “একাধিক সনদে যদি দ্বয়ীফ হাদীছ শরীফ বর্ণিত হয় তাহলে পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হাসান হাদীছ শরীফ হিসাবে সাব্যস্ত হবে। ” (আসরারুল মারফুয়া ১/৪৮১)
এ ব্যাপারে পৃথিবীর সব মুহাদ্দিছ ও হাদীছ শরীফ বিশারদ উনারা একমত এবং এ বিষয়টি স্ব স্ব কিতাবে দলীলসহ আলোচনাও করেছেন। সুতরাং দ্বয়ীফ সনদ দেখিয়েই মানুষকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ নেই।
-মুহম্মদ নূরুদ্দীন (পলাশ)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
অ্যান্টার্কটিকা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় বিজ্ঞানীরা
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৪)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা অবশ্যই সত্যের মাপকাঠি; অস্বীকারকারীরা কাট্টা কাফির (১)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১১তম অংশ)
১৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত আব্বাস ইবনে আবদুল মুত্তালিব আলাইহিস সালাম (৩)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (২)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত হাযির-নাযির শান মুবারক (১)
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাজায়িজ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
আল্লাহওয়ালী মহিলা উনাদের তিনটি বৈশিষ্ট্য-
১৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












