ইফতার ও সাহরীতে খেজুর খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক (১)
, ১১ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১৩ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১২ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ২৫ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
পবিত্র রমাদ্বান শরীফ মাস সমস্ত প্রকার রহমত, বরকত, মাগফিরাত হাছিল করার মাস। এই পবিত্র মাসে আমরা রোযা রেখে থাকি। রোযা রাখার হুকুম পূর্ববর্তী সকল হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের উম্মতদের উপর ফরয ছিল। কিন্তু উনাদের সাথে আমাদের রোযার কিছু পার্থক্য রয়েছে। যেমন আমাদের রোযা আর আহলে কিতাবদের রোযার পার্থক্য হচ্ছে সাহরী গ্রহণ করা। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে সাহরী খাওয়া ছেড়ে দেয়া যাবে না।
সাহরী খাওয়া প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَمْرِو بْنِ الْعَاصِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فَصْلُ مَا بَيْنَ صِيَامِنَا وَصِيَامِ اَهْلِ الْكِتَابِ اَكْلَةُ السَّحَرِ.
অর্থ : হযরত আমর ইবনে আছ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আমাদের রোযা এবং আহলে কিতাবদের রোযার মধ্যে পার্থক্য হলো সাহরী খাওয়া। ” (মুসলিম শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১০৯৬)
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সাহরী খেতে উৎসাহিত করেছেন। এ প্রসঙ্গে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ ম্বুারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تَسَحَّرُوْا فَاِنَّ فِى السَّحُوْرِ بَرَكَةً.
অর্থ : “হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমরা সাহরী খাও, কারণ সাহরীতে বরকত রয়েছে। ” (বুখারী শরীফ,পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৯২৩ ও মুসলিম শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১০৯৫)
সাহরী যেহেতু বরকতময় খাদ্য তাই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
“সাহরী হল একটি বরকতময় খাবার। তাই কখনো সাহরী খাওয়া বাদ দিবেন না। এক ঢোক পানি পান করে হলেও সাহরী খেয়ে নিন। কেননা সাহরী গ্রহণকারীকে মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা স্মরণ করে থাকেন। ” (মুসনাদে আহমদ শরীফ-১০৭০২)
সাহরীতে কোন খাদ্য উত্তম সে বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ نِعْمَ سَحُورُ الْمُؤْمِنِ التَّمْرُ.
অর্থ : “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার হতে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মু’মিনদের সর্বোত্তম সাহরী হচ্ছে খেজুর। ” (আবূ দাঊদ শরীফ, কিতাবুছ ছিয়াম : বাবু মান সাম্মাসাখুরাল গদা)
আমরা সাধারণত ভাত-মাছ বা ভাত-গোশত খেয়ে থাকি,যদিও উক্ত খাবার সমূহ খাছ সুন্নতী খাদ্য। কিন্তু সাহরীতে সর্বশেষ খাবার হিসেবে খেজুর খাওয়া খাছ সুন্নত মুবারক। তাই সাহরীতে সর্বশেষ খাবার হিসেবে খেজুর খেলে সেই বরকতময় পবিত্র সুন্নত মুবারক আদায় হবে। এখন কারো আর্থিক অসচ্ছলতা বা অন্য কোন কারণে সর্বশেষ খাবার হিসেবে পরিবারের সবাই মিলে ১টি খেজুরও যদি খায়, তাহলেও উক্ত মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক আদায় হয়ে যাবে।
-আহমদ হুসাইন
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৪)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












