ইলমে তাছাউফ: পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে পবিত্র যিকির উনার গুরুত্ব ও ফযীলত
, ২১শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৩ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ৩০শে মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার কালাম পাক উনার মধ্যে এবং আখিরী রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, যিকরুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে পবিত্র যিকির উনার বহু গুরুত্ব ও ফযীলত বর্ণনা করেছেন। যেমন, পবিত্র যিকির উনার গুরুত্ব ও ফযীলত সম্পর্কে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
فَاذْكُرُوْنِـىْ اَذْكُرْكُمْ
অর্থাৎ “তোমরা আমার যিকির কর, আমিও তোমাদেরকে স্মরণ করবো।” (পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১৫২)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার ব্যাখ্যায় পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُوْلُ اللهُ تَعَالٰى اَنَا عِنْدَ ظَنِّ عَبْدِىْ بِـىْ وَاَنَا مَعَهٗ اِذَا ذَكَرَنِـىْ فَاِنْ ذَكَرَنِـىْ فِىْ نَفْسِهٖ ذَكَرْتُهٗ فِىْ نَفْسِىْ وَاِنْ ذَكَرَنِـىْ فِىْ مَلَأٍ ذَكَرْتُهٗ فِىْ مَلَأٍ خَيْرٍ مِّنْهُمْ.
অর্থ: “হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, আমি আমার বান্দার নিকটে সেরূপ; যেরূপ সে আমাকে ধারণা করে। যখন সে আমার যিকির করে তখন আমি তার সাথে থাকি। যখন সে একা একা আমার যিকির করে তখন আমিও তাকে একা একা স্মরণ করি। আর যখন সে মজলিসে আমার যিকির করে তখন আমি তাকে উত্তম মজলিসে স্মরণ করি বা তার আলোচনা করি।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ফতহুল মুলহিম, শরহে নববী শরীফ, মিরকাত শরীফ, লুময়াত শরীফ, আশয়াতুল লুময়াত শরীফ, শরহুত ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ)
প্রমাণিত হলো যে, বান্দা যতবেশি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র যিকির করবে ততবেশি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নৈকট্য ও রহমত মুবারক লাভ করবে।
পবিত্র যিকিরকারী উনাদের ফযীলত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِـىْ مُوْسٰى رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَثَلُ الَّذِىْ يَذْكُرُ رَبَّهٗ وَالَّذِىْ لَا يَذْكُرُ مَثَلُ الْـحَىِّ وَالْـمَيِّتِ.
অর্থ: “হযরত আবূ মূসা আশয়ারী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি তার রব উনার পবিত্র যিকির করে আর যে পবিত্র যিকির করেনা, তাদের মেছাল বা উদাহরণ হলো, জীবিত ও মৃত ব্যক্তির ন্যায়।” (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ, মিশকাত শরীফ, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, ফতহুল মুলহিম, শরহে নববী শরীফ, মিরকাত শরীফ, লুময়াত শরীফ, আশয়াতুল লুময়াত শরীফ, শরহুত ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ)
মূলত, বান্দা বেশি বেশি পবিত্র যিকির করলে কামিয়াবী হাছিল করবে। এ প্রসঙ্গে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি উনার কালাম পাক উনার মাঝে ইরশাদ মুবারক করেন-
وَاذْكُرُوا اللهَ كَثِيْرًا لَّعَلَّكُمْ تُفْلِحُوْنَ
অর্থ: “বেশি বেশি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র যিকির কর। অবশ্যই তোমরা কামিয়াবী হাছিল করবে।” (পবিত্র সূরা জুমুয়া শরীফ : পবিত্র আয়াত শরীফ ১০)
পবিত্র যিকির বেশি করলে কতটুকু কামিয়াবী সে প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدِنِ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ اَنَّ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ سُئِلَ اَىُّ الْعِبَادِ اَفْضَلُ وَاَرْفَعُ دَرَجَةً عِنْدَ اللهِ يَوْمَ الْقِيَامَةِ قَالَ اَلذَّاكِرُوْنَ اللهَ كَثِيْرًا وَّالذّٰكِرَاتِ قِيْلَ يَا رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ وَمِنَ الْغَازِىِ فِى سَبِيْلِ اللهِ قَالَ لَوْضَرَبَ بِسَيْفِهٖ فِى الْكُفَّارِ وَالْـمُشْرِكِيْنَ حَتّٰى َينْكَسِرَ وَيَـخْتَضِبَ دَمًا فَاِنَّ الذَّاكِرَ لِلّٰهِ اَفْضَلُ مِنْهُ دَرَجَةً.
অর্থ: “হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘ক্বিয়ামত উনার দিন কোন বান্দা খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট শ্রেষ্ঠত্ব ও মর্যাদার অধিকারী হবে?’ (জবাবে) তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘অধিক পরিমাণে খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার যিকিরকারী পুরুষ ও নারী।’ পুনরায় জিজ্ঞাসা করা হলো, ‘খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় জিহাদকারী অপেক্ষাও কি?’ তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘হ্যাঁ, যদি সে নিজ তরবারি দ্বারা কাফির ও মুশরিকদেরকে কাটে এমনকি তার তরবারি ভেঙে যায় আর সে নিজে রক্তাক্ত হয় তা হতেও খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার যিকিরকারী উনারা শ্রেষ্ঠ ও মর্যাদাবান।” (আহমদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ, মিরকাত শরীফ, লুময়াত শরীফ, আশয়াতুল লুময়াত, শরহুত ত্বীবী, তা’লীকুছ ছবীহ, মুজাহিরে হক্ব)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












