একটি বিভ্রান্তিকর প্রচারণার দলিলভিত্তিক জবাব: হিজরী ৭ম শতাব্দীর ভারতের রতন আল হিন্দী কি ছাহাবী ??? (১)
, ০২ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১১ ছানী, ১৩৯২ শামসী সন , ০৯ জুলাই, ২০২৪ খ্রি:, ২৫ আষাঢ়, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কিছু মানুষ ভারতের ‘রতন আল হিন্দী’ নামক একজন ব্যক্তিকে সর্বশেষ ছাহাবী হিসাবে প্রচার করছে। রতন আল হিন্দীর মৃত্যু সন হচ্ছে ১২৩৪ খৃষ্টাব্দে অর্থাৎ হিজরী অনুযায়ী ৭ম হিজরী শতাব্দীতে। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের সাতশ বছর পরবর্তী সময় পর্যন্ত হায়াত প্রাপ্ত ব্যক্তি, সে হিসাবে তাকে বলা হচ্ছে সর্বশেষ ছাহাবী।
বিষয়টার আলোচনা একদম নতুন না। এটা নিয়ে পূর্ববর্তী সময়েও কিতাব লেখা হয়েছে, খন্ডন করা হয়েছে, দাবিটি যে মিথ্যা তা আক্বলী ও নকলী দলীল দ্বারা প্রমাণ করা হয়েছে।
এ বিষয়টি নিয়ে অনেকে বিভ্রান্তির শিকার হচ্ছেন এবং বিষয়টি সম্পর্কে জ্ঞান না থাকায় আবেগপ্রবণভাবে প্রচারও করছে। সে কারণে সংক্ষেপে বিষয়টা নিয়ে কিছু দলীলভিত্তিক আলোচনা পেশ করার চেষ্টা করবো, ইনশাআল্লাহ!
প্রথমে আমাদের জানতে হবে সর্বশেষ ছাহাবী বিষয়ে হাদীছ শরীফে কিছু বলা হয়েছে কিনা এবং এ বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অভিমত কি?
أَنَّ عَبْدُ اللهِ بْنَ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ ، قَالَ صَلَّى بِنَا رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ صَلاَةَ الْعِشَاءِ فِي آخِرِ حَيَاتِهِ فَلَمَّا سَلَّمَ قَامَ فَقَالَ " أَرَأَيْتَكُمْ لَيْلَتَكُمْ هَذِهِ فَإِنَّ عَلَى رَأْسِ مِائَةِ سَنَةٍ مِنْهَا لاَ يَبْقَى مِمَّنْ هُوَ عَلَى ظَهْرِ الأَرْضِ أَحَدٌ" قَالَ اِبْنُ عُمَرَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ فَوَهَلَ النَّاسُ فِيْ مَقَالَةِ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ تِلْكَ فِيْمَا يَتَحَدَّثُوْنَ مِنْ هَذِهِ الأَحَادِيْثِ عَنْ مِائَةِ سَنَةٍ وَإِنَّمَا قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لاَ يَبْقَى مِمَّنْ هُوَ الْيَوْمَ عَلَىْ ظَهْرِ الأَرْضِ. أَحَدٌ يُرِيْدُ بِذَلِكَ أَنْ يَنْخَرِمَ ذَلِكَ الْقَرْنُ.
অর্থ : হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দুনিয়ার যমীনে অবস্থান মুবারক করার শেষের দিকে একরাতে আমাদের সাথে ইশার ছলাত আদায় করলেন। তিনি সালাম ফিরিয়ে দাঁড়িয়ে বললেন, এ রাত্র সম্পর্কে আপনারা কি ধারণা পোষণ করেন? কারণ এর একশ বছরের মাথায় যারা আজ পৃথিবীর পৃষ্ঠে বিদ্যমান রয়েছে তাদের কেউ জীবিত থাকবে না। হযরত ইবনে উমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তখন হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা একশ বছর সংশ্লিষ্ট এসব হাদীছের বর্ণনায় চিন্তিত হলেন। অবশ্য নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেছেন, “আজ যারা পৃথিবী পৃষ্ঠে বর্তমান আছে তাদের কেউ অবশিষ্ট থাকবে না। ” এ কথা দ্বারা বুঝাতে চেয়েছেন যে, যুগের পরিসমাপ্তি হয়ে যাবে। (মুসলিম শরীফ, ৬৩৭৩, তিরমিযী শরীফ, ২২৫১)
سَمِعَ جَابِرَ بْنَ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، يَقُولُ سَمِعْتُ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ قَبْلَ أَنْ يَمُوتَ بِشَهْرٍ "تَسْأَلُونِي عَنِ السَّاعَةِ وَإِنَّمَا عِلْمُهَا عِنْدَ اللهِ وَأُقْسِمُ بِاللهِ مَا عَلَى الأَرْضِ مِنْ نَفْسٍ مَنْفُوسَةٍ تَأْتِي عَلَيْهَا مِائَةُ سَنَةٍ".
অর্থ : হযরত জাবির ইবনে আব্দুল্লাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন যে, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে উনার বিছালী শান মুবারক প্রকাশের এক মাস আগে বলতে শুনেছি যে, আমাকে আপনারা ক্বিয়ামত সম্পর্কে প্রশ্ন করছেন, কিন্তু তার ইলিম তো মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট। আমি মহান আল্লাহ পাক উনার শপথ করে বলছি যে, পৃথিবীতে এমন কোন ব্যক্তি নেই যার উপর একশ বছর পূরণ হবে। অর্থাৎ আজ হতে একশ বছরের মাথায় বর্তমানে জীবিত ব্যক্তিরা বাকি থাকবেন না। (মুসলিম শরীফ, ৬৩৭৫)
عَنْ أَبِي سَعِيدٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ لَمَا رَجَعَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مِنْ تَبُوكَ سَأَلُوهُ عَنِ السَّاعَةِ فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ "لاَ تَأْتِي مِائَةُ سَنَةٍ وَعَلَى الأَرْضِ نَفْسٌ مَنْفُوسَةٌ الْيَوْمَ".
অর্থ : হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তাবুকের জিহাদ হতে প্রত্যাবর্তন শেষে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদেরকে ক্বিয়ামত সম্বন্ধে প্রশ্ন করলেন। তখন নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন, একশ’ বছর পরিসমাপ্তি হলে এখনকার কোন লোক আর অবশিষ্ট থাকবে না। (মুসলিম শরীফ, ৬৩৭৯)
-আল্লামা খাজা মুহম্মদ নূরুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












