কমিশন বাণিজ্যের মহামারি রোগে আক্রান্ত দেশের চিকিৎসকরা। বিশেষজ্ঞ চিকিৎসায় চলছে আরো গভীর নৈরাজ্য।
নীতিহীন ডাক্তারদের কারণে হয়রানির শিকার এবং সর্বস্বান্ত হচ্ছে সাধারণ রোগীরা। সামর্থ্যবান রোগীদের টাকা চলে যাচ্ছে বিদেশে।
, ২২শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৬ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১৪ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ০১ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মন্তব্য কলাম
রাজধানীসহ সারা দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালের ডাক্তাররা এ কমিশন বাণিজ্যে জড়িত। প্রেসক্রিপশনে নির্দিষ্ট কোম্পানির ওষুধের নাম লেখা, বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষা করতে পছন্দের ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নাম বলে দেয়া এবং সরকারি হাসাপাতালের রোগীকে বেসরকারি ক্লিনিকে পাঠিনো যেন অধিকাংশ চিকিৎসকের সংস্কৃতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
রোগীকে চিকিৎসকদের দেয়া প্রেসক্রিপশন নিয়ে মেডিক্যাল রিপ্রেজেনটেটিভদের গলাবাজিতে নিম্নমানের ওষুধও খাঁটি হয়ে যায়। তাদের লোভনীয় কমিশন ও উপহার পেয়ে স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলে অনেক চিকিৎসক। কোম্পানি ও মান ভুলে গিয়ে অনেক চিকিৎসক রোগীদের প্রেসক্রিপশনে তুলে দিচ্ছে নিম্নমানের ওষুধের নাম। রোগীদের অবস্থা নিয়ে ভাবা হয় না। নিম্নমানের ওষুধ খেয়ে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার শিকার হয় অনেক রোগী। এতে প্রলোভিত চিকিৎসকের বাণিজ্যিক মানসিকতার খপ্পরে পড়ে অনেক রোগী করুণভাবে মৃত্যুবরণ করছে। তারপরও প্রতিদিনই কমিশনের নামে মোটা অঙ্কের টাকা পকেটস্থ করছে এক শ্রেণীর চিকিৎসকরা।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠানো রোগীদের বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাবদ মোট বিলের ১৫ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমিশন দেয়া হয় সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে। পাশাপাশি কমিশন হিসেবে ডাক্তাররা পাচ্ছে ইলেক্ট্রিক ও ইলেক্ট্রনিক্স পণ্য, দামি মোবাইলফোন সেট, বাড়ি নির্মাণ সামগ্রী, জুয়েলারি সামগ্রী ও বিভিন্ন তৈজসপত্র। এমনকি চিকিৎসকদের সপরিবারে বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থাও করে কোনো কোনো ওষুধ কোম্পানি। এছাড়া ‘কমিশন’-এর অংশ হিসেবে চিকিৎসকদের সংগঠনের সায়েন্টিফিক সেমিনার, এজিএমসহ (বার্ষিক সাধারণ সভা) বিভিন্ন অনুষ্ঠানের ‘স্পন্সর’ হয় ওষুধ কোম্পানিগুলো।
তাদের এসব লেনদেন ‘কমিশন বাণিজ্য’ হিসেবে সবার কাছে ব্যাপক পরিচিত। যার খেশারত দিতে হচ্ছে সাধারণ রোগীকে। এক্ষেত্রে চিকিৎসকরা যেসব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে কমিশন গ্রহণ করে, তারা প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে ওইসব প্রতিষ্ঠানের সেবা ও পণ্য গ্রহণে রোগীকে বাধ্য করে। ডাক্তাররা এখন প্রেসক্রিপশনে যে ওষুধের নাম লেখে, সে ওষুধ অনুসরণ করাটা আদেশতুল্য হয়ে উঠেছে। একই ওষুধ বিভিন্ন কোম্পানি বিভিন্ন দামে বিক্রি করছে। ডাক্তাররা ওষুধ কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অনৈতিক উৎকোচ নিয়ে অখ্যাত কোম্পানির মানহীন ওষুধও রোগীকে কিনতে বাধ্য করছে।
ডাক্তারদের কমিশন বাণিজ্য শুধুমাত্র ওষুধেই সীমাবদ্ধ নয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষাতেও ছড়িয়ে পড়েছে। ফলে হাজার হাজার রোগী প্রতিদিন এক শ্রেণীর অসৎ দুর্নীতিবাজ চিকিৎসকের খপ্পরে পড়ে অপ্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে বাধ্য হয়। রাজধানীসহ সারাদেশে ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে হাজার হাজার প্যাথলজিক্যাল ল্যাবরেটরি ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার। অভিযোগ রয়েছে, হাতেগোনা কয়েক প্রতিষ্ঠান ছাড়া অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান মোটা অঙ্কের কমিশন (শতকরা ৩০ ভাগ থেকে ৫০ ভাগ) গোপন চুক্তিতে চিকিৎসকদের দিয়ে সুচিকিৎসার নামে বিভিন্ন ক্লিনিক্যাল ও প্যাথলজিক্যাল পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাচ্ছে। ডাক্তারদের কমিশন বাণিজ্যের জন্য প্রাইভেট হাসপাতাল ও ক্লিনিকের নিয়োগকৃত দালাল রয়েছে। আবার অনেক চিকিৎসক নিজেই দালালদের হয়ে কাজ করে যাচ্ছে। দালালরা হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে প্রাইভেট ক্লিনিক, বেসরকারি হাসপাতাল, ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠিয়ে রোগীদের বিড়ম্বনায় ফেলে। তাতে ডাক্তারের কমিশন বাণিজ্য একটু কম হয় বলেই এখন স্বয়ং ডাক্তাররাই সেই দালালদের ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। যেমন কোনো মধ্যস্বত্বভোগী দালালের মাধ্যমে রোগীকে অন্যত্র পরীক্ষা-নিরীক্ষা করালে মূল টাকার বিশ শতাংশ ডাক্তারের পকেটে আসে, সেক্ষেত্রে ডাক্তার নিজেই সরাসরি অন্যত্র নিয়ে গেলে বা পাঠালে মূল টাকার ত্রিশ থেকে চল্লিশ শতাংশই পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, চিকিৎসকদের কমিশন বাণিজ্য বিষয়টি অনৈতিক ও পেশাগত বিধিমালার পরিপন্থী। চিকিৎসা সেবায় সম্পৃক্ত ব্যক্তি প্রতিষ্ঠানের বাণিজ্যিক মনোভাবের কারণে চিকিৎসা ব্যয় বৃদ্ধি পায়। রোগীদের ভোগান্তি বাড়ে। চিকিৎসকদের কমিশন গ্রহণ একটি অন্যায় এবং অনৈতিক কাজ। এটি মোকবেলার জন্য উপযুক্ত আইন প্রণয়নের কাজও চলছে। এছাড়া এ ধরনের ঘটনা প্রতিরোধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের পাশাপাশি পেশাগত নীতিমালা রক্ষায় বিবেক জাগ্রত করে চিকিৎসক সমাজকে এগিয়ে আসতে হবে। এটি বন্ধ করতে সংশ্লিষ্ট সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। তবে সরকারকেই সর্বাগ্রে এগিয়ে আসতে হবে।
-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষন, যুদ্ধকৌশল, সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন সাফল্যের শীর্ষে। সরকারের উচিত- দেশের মর্যাদা বুলন্দ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর প্রতি সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্যানুযায়ী বেনিয়া বৃটিশগুলো মুসলিম ভারত থেকে লুট করেছে ১২ হাজার লক্ষ কোটি টাকা প্রকৃতপক্ষে তারা লুট করেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ করলে যা লাভ হবে চালু রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হবে ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী অবিলম্বে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হোক কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে পরিবেশ উপদেষ্টা প্রমাণ করছে তার পরিবেশবাদী তৎপরতা অন্য পরিবেশবাদীদের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তার পরিবেশবাদী প্রচারণা কার্যকলাপ আসলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নয় বরং বিশেষ প্রভুর নির্দেশনায় (প্রথম পর্ব)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন এসব খেলা স্বাভাবিক গেমের মতো হওয়ায় প্রকাশ্যে খেলা হলেও আশপাশের মানুষ তা বুঝতে পারেন না কেবলমাত্র ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব ইনশাআল্লাহ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
গার্মেন্টসের চেয়েও বড় অবস্থানে তথা বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে অধিষ্ঠান হতে পারে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে শুধু মাত্র এ খাত থেকেই বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা অর্জন সম্ভব ইনশাআল্লাহ। যা বর্তমান বাজেটের প্রায় দেড়গুণ আর শুধু অনিয়ম এবং সরকারের অবহেলা, অসহযোগীতা দূর করলে বর্তমানেই সম্ভব প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা অর্জন জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সমৃদ্ধি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সরকারের গাফলতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জনগণের জন্যও জরুরী। (২য় পর্ব)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার মুসলিম বিশ্বে অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা বিশেষত মূল্যহীন কাগজী মুদ্রা বাদ দিয়ে সুন্নতী দিনার-দিরহাম মুদ্রা চালু করা আবশ্যক ইনশাআল্লাহ (দ্বিতীয় পর্ব)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিদেশি হাইব্রিড বীজের ফাঁদে দেশের কৃষি। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফসলের জাত, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। ফুলে-ফেঁপে উঠছে বীজ কোম্পানিগুলো।
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুশরিক ভারতের প্রতি লা’নত ওদের জনসংখ্যা দিন দিন নিম্নমুখী পক্ষান্তরে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে খোদায়ী রহমত। (সুবহানাল্লাহ) বাংলাদেশে জনসংখ্যার এখন ৬৫ ভাগই কর্মক্ষম এবং জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার উর্ধ্বগামী বাংলাদেশ ভোগ করছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের নিয়ামত। সুবহানাল্লাহ!
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়াতে সতর্কতা তথা মধ্যম আয়ের স্থবিরতা তাওয়াক্কুল আর তাকওয়া অবলম্বনে সব সমস্যা দূর হয়ে অচিরেই বাংলাদেশ হতে পারবে শীর্ষ সমৃদ্ধশালী দেশ ইনশাআল্লাহ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রিজওয়ানার পরিবেশবাদী প্রচারণার বিপরীতে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে ইতিবাচক বার্তা এবং ইউনুসের পানি ও প্রকৃতি প্রেমের বানীর পরিবর্তে আপত্তি সত্ত্বেও একনেকে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অনুমোদনে জনগণ তথা নেটিজনের মূল্যায়নটা কী?
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যখন কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধবিমান কিনে, তখন তা শুধু একটি বিমান কেনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর সাথে যুক্ত হয় একাধিক শর্ত, নিষেধাজ্ঞা এবং জটিল টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












