কর্মক্ষম জনশক্তি তথা কর্মক্ষমতার স্বর্ণযুগে বাংলাদেশ অথচ যথাযথ মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে বিদেশে কর্মরত দেশীয় শ্রমিক স্বদেশে তো ফিরবেই পাশাপাশি বিদেশি কর্মশক্তি বাংলাদেশের শ্রমবাজারে প্রবেশ করবে। সরকারের উচিত, এই বোনাসকাল অপচয় না করে এর প্রকৃত সুফল দেশবাসীর হাতে তুলে দেয়া।
, ২০ রমাদ্বান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০১ হাদি আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ৩১ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৭ চৈত্র, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) সম্পাদকীয়
একটি দেশের কর্মক্ষম হিসেবে বিবেচিত জনসংখ্যার মোট পরিমাণ কর্মক্ষম নয়, এমন জনসংখ্যার (শিশু ও বয়স্ক জনগোষ্ঠী) তুলনায় বেশি হলে তখন সেই অবস্থাটাকে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনমিতিক লভ্যাংশ বলে।
অর্থনীতির ভাষায়, দেশের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশ যদি কর্মক্ষম হয় তাহলে দেশটি ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’ বা জনমিতিক বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ পাওয়ার অবস্থায় রয়েছে বলে ধরে নেওয়া হয়। সে হিসেবে বাংলাদেশ এখন ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ট বা জনসংখ্যাতাত্ত্বিক লভ্যাংশ অর্জনের পর্যায়ে রয়েছে।
দেশে কর্মক্ষম মানুষের গুরুত্বের কথা বিবেচনা করছে বিবিএসও। সম্প্রতি সমন্বয় প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে পরিসংখ্যান সচিব বলেন, দেশের মোট জনগোষ্ঠীর মধ্যে ১৫ থেকে ২৯ বয়সী জনগোষ্ঠী ৩২.৮৪ শতাংশ। এরাই আমাদের আগামী দিনের শক্তি। তাদের কাজে লাগাতে হবে। তিনি বলেন, ‘আমাদের দায়িত্ব তথ্য প্রকাশ করা। সরকারের অন্য সংস্থাগুলো এদের নিয়ে কাজ করলে, গবেষণা করলে আগামী দিনে ইতিবাচক ফল পাবে। এদের এখনই কাজে লাগাতে হবে। কারণ এরা প্রোডাক্টিভ। এদের নিয়ে ভাবা উচিত।’
বাজারের চাহিদা অনুযায়ী তাদের বিভিন্ন স্কিল ডেভেলপ করতে হবে। এখন এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন হয়ে গেলে অনেক বাজার সুবিধা থাকবে না। প্রতিযোগিতা সক্ষমতা করতে হবে দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতার ভিত্তিতে। তিনি বলেন, ‘দেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনে দেশি বা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে চাচ্ছি। সেখানে কোন ধরনের চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে, সেটার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ চাহিদা সৃষ্টি করতে হবে। প্রতি বছর ২১ লাখের মতো শ্রমবাজারে আসে, এর বড় একটি অংশ বাইরেও চলে যায়। সেখানেও কোনো ধরনের চাহিদা সৃষ্টি হচ্ছে সেটা লক্ষণীয়। চতুর্থ শিল্পবিপ্লবে অনেক ধরনের নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি হবে। সেবা খাত, কেয়ারিং সার্ভিস, মেডিকেল টেকনিশিয়ানসহ অনেক চাকরি। বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে আমরা যদি স্কিলগুলো দিতে পারি তাহলে কাজে লাগবে; বিশেষ করে বাজারে যত বেশি যুবক, তত বেশি আনইমপ্লয়মেন্ট।’
‘বাজারের চাহিদা আগামীতে কী হবে, সেটার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ এবং সঙ্গে সার্টিফিকেশন, রিকগনিশন বা যেসব জায়গায় আমাদের ছেলেমেয়েরা যাবে তাদের সঙ্গে মেমোরেন্ডাম অব আন্ডারস্ট্যান্ডিং করা। এসব জায়গায় নজর দেওয়ার সময় এখন। বৈদেশিক বাজার, অভ্যন্তরীণ বাজার দুটোরই চাহিদা রয়েছে। দেশের স্পেশাল ইকোনমিক জোনসহ অনেক জায়গায় বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এমওইউ স্বাক্ষরও করেছে, তারা সেখানে কী ধরনের ইনভেস্ট করছে, সেটার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ যোগাযোগ বাড়াতে হবে। যেমন আমাদের এখন নিউক্লিয়ার প্ল্যান্ট হচ্ছে, সেখানে এক্সপার্টদের লাগবে আগামী ৫০ বছর। এখানকার সুযোগগুলো বের করে আমাদের প্রস্তুতি নিতে হবে। স্বাধীনতার পর আমাদের দেশে কর্মক্ষম লোকের পরিমাণ ছিল মাত্র ২০-২২ শতাংশ। স্বাধীনতার প্রায় ৩৬ বছর পরে ২০০৭ সালে আমাদের মোট জনসংখ্যার প্রায় ৬১ শতাংশের বয়স এই সীমার মধ্যে উপনীত হয়, বর্তমানে যা প্রায় ৬৫ শতাংশ। কর্মক্ষম মানুষের এই আধিক্য ২০২৯ সালের পর থেকে কমতে থাকবে। এমন সম্ভাবনা যা কোনো জাতির জীবনে একবার কিংবা কয়েক শ বছরে একবার আসে। চীন, জাপান, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া এসব দেশ এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে উন্নত দেশের তালিকায় নাম লিখিয়েছে। শূন্য থেকে ১৪ ও ৬৪ বছরের ঊর্ধ্বে জনগোষ্ঠীকে নির্ভরশীল বলে ধরা হয়। সে হিসাবে দেশে বর্তমানে নির্ভরশীল জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৩৭.৭৭ শতাংশ। এরা সবাই দেশের কর্মক্ষম জনগোষ্ঠীর ওপর নির্ভরশীল।’
অভিজ্ঞমহল আরো মনে করেন, ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড কাজে লাগাতে হলে ওয়ার্কিং ফোর্স কাজে লাগাতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজের পরিধি বাড়াতে হবে। অ্যাগ্রিকালচার থেকে ম্যানুফ্যাকচারিং বা ইন্ডাস্ট্রি বা ফরমাল সার্ভিস সেক্টরে আসতে হবে। তাহলেই ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড পাওয়া যাবে। আমি যদি গ্রামে থাকি তাহলে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড আসবে না। অথবা যদি রিকশাও চালাই তাহলেও এই ডিভিডেন্ড আসবে না। তবে আইটি খাত হলে ঠিক আছে, এটি অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখে, ভ্যালু এডিশনেও ভূমিকা রাখে। এ ধরনের ট্রান্সফরমেশন দরকার, শুধু জনসংখ্যা বাড়ালেই তো হবে না। তাদের এমপ্লয় করতে হবে। প্রোডাক্টিভলি এমপ্লয় করতে হবে। গত এক দশকে দেশে শিল্পে কোনো কর্মসংস্থান হয়নি।’
‘তরুণ জনগোষ্ঠীর মধ্যে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড সবচেয়ে বেশি। এদের যদি কাজে লাগানো না যায় তাহলে তো ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড পাব না। সমস্যা হলো, এদের মধ্যে আনএমপ্লয়মেন্ট কতখানি। যেটা আমরা ধারণা করি, শিক্ষিতদের মধ্যে আনইমপ্লয়মেন্ট কত। এখন প্রশ্ন হলো তাদের কর্মসংস্থান কোথায় হবে। তারা যদি অ্যাগ্রিকালচারে হয় তাহলে লাভ হবে না। ইন্ডাস্ট্রিতে তাদের আসার কথা, কিন্তু এ চ্যালেঞ্জটা রয়ে গেছে এখনো।’
বলার অপেক্ষা রাখে না, এইসকল মহাসম্ভাবনা বিকাশের জন্য প্রয়োজন উন্নত ও দক্ষ মানবসম্পদ গঠন। এজন্য চাহিদা অনুযায়ী প্রতিটি জেলা শহরে কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও মেরিন টেকনোলজি ইন্সটিটিউট গড়ে তোলা প্রয়োজন। যদিও দেশে দেশে সরকারি-বেসরকারি মিলে কারিগরি ও ভোকেশনাল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সংখ্যা মাত্র ৩ হাজার ১১৬টি। বর্তমানে সমগ্র শিক্ষাব্যবস্থায় কারিগরি শিক্ষার অধীনে শিক্ষা গ্রহণরত শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৭ শতাংশের কাছাকাছি। অথচ জাপানে এ ধরনের শিক্ষায় শিক্ষিত জনবল ৬০ শতাংশ, দক্ষিণ কোরিয়ায় ৪০ শতাংশ এবং মালয়েশিয়ায় ৪২ শতাংশ। তাই বাংলাদেশে সর্বপ্রথম কর্মক্ষম জনশক্তিকে দক্ষ জনশক্তিতে রূপান্তরিত করতে হবে।
এজন্য সরকারিভাবে উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও মানবসম্পদ উন্নয়নের কাজে পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো মানবসম্পদ উন্নয়নে সরকার, শিল্পপতি, সব রাজনৈতিক দল এবং পেশাজীবীদের এগিয়ে আসতে হবে এবং বিশেষ করে স্বয়ংসম্পূর্ণ মানবসম্পদ মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করতে হবে। এবং এই মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে মানবসম্পদ উন্নয়ন কতটুকু অর্জিত হয়েছে এবং এর পথে কী কী অন্তরায়, সেই বিষয়ে বিশদ পর্যালোচনা করতে হবে এবং সার্বিকভাবে প্রয়োজনীয় কর্মসূচি গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করতে হবে। আর এর নিয়মিত মূল্যায়ন করতে হবে। দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়নে যথাযথভাবে এগিয়ে যেতে হবে। ইনশাআল্লাহ!
ছহিবে সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, রাজারবাগ শরীফ উনার মামদূহ মুর্র্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবত মুবারক-এ কেবলমাত্র তা লাভ করা সম্ভব। খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে তা নছীব করুন। আমীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পাঁচ হাজার পৃষ্ঠার বিশাল নথিতে ২ লাখ ৫৭ হাজার একর বনভূমি দখলদার ১ লাখ ৬০ হাজার নাম এসেছে শুধু নাম সর্বস্ব না করে বনভূমি উদ্ধারের বাস্তব নজীর চাই
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে আরো সোনালী সমৃদ্ধি সম্ভব ইনশাআল্লাহ
২৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ : পারিবারিক বন্ধন ধ্বংস, পর্নোগ্রাফির রাজত্ব এবং ইসলামী মূল্যবোধের গুরুত্ব।
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
কারফিউতে দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে আরো আগুন। ধারদেনায় চলছে শ্রমজীবী মানুষ। তাদের প্রতি দায়িত্ব পালন করবে কে? সরকারকেই সবকিছু নিশ্চিত করতে হবে ইনশাআল্লাহ
২৬ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
দেশের উদ্যোক্তারা ব্যাংক ঋণসহ বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত সরকারের উচিত- উদ্যোক্তাদের উন্নয়নে সার্বিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
অপুষ্টির কারণে প্রতিবছর বাংলাদেশের আর্থিক ক্ষতি প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা; দেশের ৫০ ভাগ শিশুমৃত্যুর কারণ অপুষ্টি; অপুষ্টিতে শিশুদের মধ্যে ব্যাপকভাবে বাড়ছে স্থুলতা। দেশের জনগণের প্রতি রাষ্ট্রযন্ত্রের কি কোনই দায়বদ্ধতা নেই?
২৫ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সিবতু রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল খমিস, সাইয়্যিদুশ শুহাদা, শহীদে কারবালা, সাইয়্যিদুনা হযরত ইমামুছ ছালিছ মিন আহলি বাইতি রসূলিল্লাহি ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র শাহাদাতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস। ঐতিহাসিক পবিত্র আশূরা মিনাল মুহররমুল হারাম শরীফ।
১৭ জুলাই, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)