ইলমুত তাযকিয়্যাহ:
কুফরী আক্বীদা পরিহার না করলে চির জাহান্নামী হতে হবে
, ২০ জুমাদাল ঊলা শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৪ সাদিস, ১৩৯৩ শামসী সন , ১২ নভেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ২৭ কার্তিক, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
‘কুফর’ শব্দের আভিধানিক বা শাব্দিক অর্থ হচ্ছে অস্বীকার করা। পবিত্র ইসলামী শরীয়ত উনার পরিভাষায় সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যা নিয়ে এসেছেন তা অস্বীকার করাই হচ্ছে কুফর বা কুফরী। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হিদায়েতসহ পবিত্র দ্বীন ইসলাম অর্থাৎ পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র সুন্নাহ শরীফ নিয়ে এসেছেন। যেমন- পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
هُوَ الَّذِيْ اَرْسَلَ رَسُوْلَهُ بِالْـهُدٰى وَدِيْنِ الْـحَقِّ لِيُظْهِرَهُ عَلَى الدِّيْنِ كُلِّهِ ۚ وَكَفٰى بِاللهِ شَهِيْدًا
অর্থ : তিনিই মহান আল্লাহ পাক যিনি উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হিদায়েত এবং সত্য দ্বীন সহকারে পাঠিয়েছেন সকল দ্বীনের উপর প্রাধান্য দিয়ে। এক্ষেত্রে সাক্ষী হিসেবে মহান আল্লাহ পাক তিনিই যথেষ্ট। (পবিত্র সূরা ফাতহ : আয়াত শরীফ ২৯)
পবিত্র এ আয়াত শরীফ নাযিল করে মহান আল্লাহ পাক তিনি অতীতে ওহী দ্বারা নাযিলকৃত দ্বীন এবং অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যতে উদ্ভাবিত বা প্রবর্র্তিত মানবরচিত সকল ধর্ম, মতবাদ, তন্ত্র, নিয়ম-নীতি, আইন-কানুন বাতিল ঘোষণা করেন। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন সর্বশেষ নবী এবং রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। উনার পর ক্বিয়ামত পর্যন্ত আর কোন নবী কিংবা রসূল আগমন করবেন না।
কাজেই, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যে পবিত্র দ্বীন ইসলাম তথা পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র শরীফ শরীফ উনার আহকাম নিয়ে এসেছেন তা মেনে সকলকে সে মুতাবিক চলতে হবে। যারা মেনে সে মুতাবিক চলবে তারা ঈমানদার। আর যারা অস্বীকার করবে তারা কাফির।
খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَمَن يَبْتَغِ غَيْرَ الْاِسْلَامِ دِيْنًا فَلَنْ يُقْبَلَ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْاٰخِرَةِ مِنَ الْـخَاسِرِيْنَ.
অর্থ : যে ব্যক্তি পবিত্র ইসলাম ব্যতীত অন্য দ্বীন-ধর্ম, মতবাদ বা তন্ত্রমন্ত্রের নিয়ম-নীতি চায় বা গ্রহণ করে, তার থেকে সেটা কবুল করা হবে না এবং সে পরকালে ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে অর্থাৎ জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত হবে। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান : আয়াত শরীফ ৮৫)
তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
كَيْفَ يَهْدِي اللهُ قَوْمًا كَفَرُوْا بَعْدَ اِيـْمَانِـهِمْ وَشَهِدُوْا اَنَّ الرَّسُوْلَ حَقٌّ وَجَاءَهُمُ الْبَيِّنَاتُ ۚ وَاللهُ لَا يَهْدِي الْقَوْمَ الظَّالِمِينَ ◌
অর্থ : খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি কী করে ওই সম্প্রদায়কে হিদায়েত দান করবেন, যারা ঈমান আনার পর এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সত্য (নবী-রসূল) হিসেবে সাক্ষ্য দেয়ার পর এবং তাদের নিকট সুস্পষ্ট দলীল (পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ) আসার পর কুফরী করে বা অস্বীকার করে। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যালিম সম্প্রদায়কে হিদায়েত দান করেন না। (পবিত্র সূরা আলে ইমরান : আয়াত শরীফ ৮৬)
এ পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে পরিষ্কারভাবে বলা হয়েছে যে, ঈমান আনার পর অর্থাৎ ঈমানদার বা মুসলমান দাবী করার পরও যারা খালিক্ব, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক উনার হুকুম বা আদেশ-নিষেধ মুবারক মানবে না, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আদেশ-নিষেধ মুবারক মানবে না, উনার আনুগত্য বা অনুসরণ মুবারক করবে না এবং পবিত্র কুরআন শরীফ এবং পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের মধ্যে বর্র্ণিত হুকুম-আহকাম তথা আদেশ-নিষেধসমূহ মেনে চলবে না, তারা যালিমদের অন্তর্ভুক্ত। এরা হিদায়েত থেকে বঞ্চিত পথভ্রষ্ট সম্প্রদায়। এদেরকে মহান আল্লাহ পাক তিনি পছন্দ করেন না। এরা জাহান্নামীদের অন্তর্ভুক্ত।
মোটকথা, খালিক্ব, মালিক, রব, মহান আল্লাহ পাক উনার মত-পথ মুবারক উনার খিলাফ, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পবিত্র সুন্নাহ বা আদর্শ মুবারক উনার খিলাফ এবং পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের সুস্পষ্ট হুকুম-আহকামের খিলাফ আক্বীদা, আমল-আখলাক্ব, নিয়ম-নীতি, তর্জ-তরীক্বা, তন্ত্র-মন্ত্র মতবাদ সবই কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
যেমন- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্রের নিয়ম-নীতি, ভোট, নির্বাচন, হরতাল, লংমার্চ, ছবি, টিভি, বেপর্দা-বেহায়াপনা, খেলাধুলা, গান-বাজনা, নারী নেতৃত্ব ইত্যাদি সবই কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।
অতএব, মুসলমানের জন্য সমস্ত কুফরী আক্বীদা ও আমল থেকে বেঁচে থাকা ফরয। অন্যথায় কেউ যদি কুফরী আক্বীদা ও আমল গ্রহণ করে ইন্তিকাল করে সে জাহান্নামের কঠিন শাস্তির সম্মুখীন হবে।
(সংকলিত)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ মেহমানদারী করার মাধ্যমে উদযাপনে শাফায়াত মুবারক লাভ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












