ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নছীহত মুবারক (৪৫)
, ২২ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৫ ‘আশির, ১৩৯০ শামসী সন , ১৫ মার্চ, ২০২৩ খ্রি:, ২৯ ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) মহিলাদের পাতা
![ক্বায়িম মাক্বামে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম, সাইয়্যিদাতু নিসায়িল আলামীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল উমাম আলাইহাস সালাম উনার পবিত্র নছীহত মুবারক (৪৫)](https://www.al-ihsan.net/uploads/1678822812_ummul Umam Alaihas Salam.jpg)
হাক্বীক্বী মু’মীনের পরিচয়:
মহান আল্লাহ পাক তিনি সূরা আহযাব শরীফ উনার ৬নং আয়াত শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
النَّبِىُّ أوْلى بِالْمُؤْمِنِينَ مِنْ أَنفُسِهِمْ وَأَزْوَاجُهُ أُمَّهَاتُهُمْ
অর্থ মুবারক: “নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এবং উনার মহাসম্মানিতা আযওয়াজুম মুত্বহহারাহ, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন, মু’মিনগণ উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়। আর উনার মহাসম্মানিতা আযওয়াজুম মুত্বহহারাহ, হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিতা মাতা।”
অর্থাৎ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা শুধুমাত্র মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনারা ব্যতীত সমস্ত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ তামাম কায়িনাতবাসী সকলেরই মহাসম্মানিতা মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। আর হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সম্মানার্থেই সমস্ত হযরত নবী রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা, জ্বীন-ইনসানসহ সকলেই সমস্ত প্রকার নিয়ামত মুবারক লাভ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ تَـعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ النَّبِيُّ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اَلْـجَنَّةُ تَحْتَ أَقْدَامِ الْأُمَّهَاتُ
অর্থ মুবারক: হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “সম্মানিত জান্নাত মুবারক মহাসম্মানিতা মাতা উনাদের পায়ের নিচে।” (জামিউছ ছগীর, মিরকাত শরীফ)।
উপরোক্ত মহাসম্মানিত আয়াত শরীফ ও হাদীছ শরীফ উনাদের দ্বারা প্রতিয়মান হয়- হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের কদম মুবারক উনার নিচে সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জান্নাত মুবারক।
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মহাসম্মানিত জান্নাত মুবারক সম্পর্কে বলা হয়, উনারা স্বয়ং নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে একই মহাসম্মানিত জান্নাত মুবারকে অবস্থান মুবারক করবেন। আর সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত জান্নাত মুবারক থেকে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মহাসম্মানিত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের সেই মহাসম্মানিত জান্নাত মুবারক এত অধিক উপরে দেখা যাবে, যেমন দুনিয়ার যমিন থেকে আকাশের তারকাকে মিটমিট করে জ্বলতে দেখা যায়। সুবহানাল্লাহ!
বলাবাহুল্য, মহাসম্মানিত হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযিলত মুবারক সম্পর্কে মহাসম্মানিত হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَبِي هُرَيْـرَةَ رَضِيَ اللهُ تَـعَالَى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ خَيْـرُكُمْ خَيْـرُكُمْ لِاَهْلِىْ مِنْ بَعْدِىْ
অর্থ মুবারক: হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি সর্বোত্তম, যে ব্যক্তি আমার পর আমার আযওয়াজুম মুত্বহহারাহ বা হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিকট উত্তম। সুবহানা উম্মিল উমাম আলাইহাস সালাম! (মুসনাদে বাযযার, মাজমাউয যাওয়ায়িদ, কাশফুল খফা ইত্যাদি)
এক্ষেত্রে উল্লেখ্য, যে ব্যক্তি হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের নিকট উত্তম হতে চায় তার জন্য করণীয় হল উনাদের সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করা। তবে সে ব্যক্তি অবশ্যই নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকটও উত্তম বলে সাব্যস্ত হবে। সুবহানাল্লাহ!
তাই হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা বিভিন্নভাবে হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের রেযামন্দি-সন্তুষ্টি মুবারক হাছিল করার কোশেশ করেছেন। সেই সম্পর্কে অসংখ্য সম্মানিত হাদীছ শরীফ উনাদের মধ্যে একটি সম্মানিত হাদীছ শরীফ তুলে ধরা হল-
عَنْ حَضْرَتْ الْمِسْوَرِ بْنِ مَخْرَمَةَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ قَالَ بَاعَ حَضْرَتْ عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ عَوْفٍ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ أَرْضًا لَّهُ مِنْ حَضْرَتْ عُثْمَانَ ذِي النُّـوْرَيْنِ عَلَيْهِ السَّلَامُ بِأَرْبَعِينَ أَلْفَ دِيْـنَارٍ فَقَسَمَ ذَلِكَ الْمَالَ فِي قَرَيْشٍ وَبَنِى مَـخْزُوْمٍ وَبَعَثَ مَعِى مِنْ ذَلِكَ الْمَالِ إِلَى سَيِّدَتِنَا حَضْرَتْ أُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ الثَّالِثَةِ الصِّدِّيقَةِ عَلَيْهَا السَّلامُ فَقَالَتْ سَمِعْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَقُولُ لَنْ يَـحْنُوَ عَلَيْكُنَّ بَعْدِىْ إِلَّا الصَّالحُوْنَ سَقَى اللهُ عَزَّ وَجَلَّ حَضْرَتْ اِبْنِ عَوْفٍ رَضِيَ اللهُ تَـعَالَى عَنْهُ مِنْ سَلْسَبِيْلِ الْجَنَّةِ
অর্থ মুবারক: “হযরত মিসওয়ার ইবনে মাখরামাহ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার হযরত আব্দুর রহমান ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি একটি জমি ৪০ হাজার দীনার বিক্রি করে সেই অর্থের কিছু অংশ কুরাঈশ ও বনূ মাখযুম গোত্রের মাঝে বণ্টন করে দেন। (আর বাকী সমস্ত অর্থ হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদেরকে হাদিয়া মুবারক করেন। তখন তিনি সেই অর্থের) একটা অংশ আমার হাতে দিয়ে আমাকে সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনার নিকট প্রেরণ করেন। সুবহানাল্লাহ! অর্থাৎ সেই অর্থের একটা অংশ তিনি সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ আলাইহাস সালাম উনাকে হাদিয়া মুবারক করেন।
তখন সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ ছিদ্দিকা আলাইহাস সালাম তিনি বলেন, আমি শুনেছি- নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেছেন, “আমার পরে একমাত্র ছলিহীন তথা নেককার ব্যক্তিগণ উনারাই আপনাদের সাথে সৎব্যবহার করবেন, আপনাদের সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আঞ্জাম মুবারক দিবেন, আপনাদের সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করবেন, আপনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করবেন, আপনাদের প্রতি সর্বোচ্চ বিশুদ্ধ আক্বিদা এবং সর্বোত্তম হুসনে যন মুবারক পোষণ করবেন।’ সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি যেন হযরত ইবনে আউফ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে সম্মানিত জান্নাত মুবারক উনার সালসাবীল নামক ঝর্ণা থেকে পানি পান করান!” সুবহানাল্লাহ! (আশ শরীয়াহ্ লিল আজরী ৫/২৩০৩, কানযুল উম্মাহ ১২/১৪১) (চলবে ইনশাআল্লাহ)
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দ্বীন ইসলামের ৪র্থ স্তম্ভ পবিত্র হজ্বের বিরুদ্ধে সৌদী ওহাবীদের ষড়যন্ত্র; মুসলমানদের পবিত্র হজ্জকে যেভাবে নষ্ট করে দেয়া হচ্ছে (পর্ব ১)
১৩ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য (৬)
১৩ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-৮)
১৩ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুওয়াল-জাওয়াব
১২ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-৮)
১২ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সন্তানধারণ নারীর জীবনে সেরা চ্যালেঞ্জের মধ্যে একটি (পর্ব-১)
১১ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
দুনিয়ার মুহব্বত ত্যাগ করা খুবই জরুরী
১১ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১১ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-৭)
১১ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নিকাহ বা বিবাহ করা সুন্নত, ক্ষেত্রবিশেষে ফরয
১০ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহিমান্বিত দশ দিন ও দশ রাত্রি (পর্ব-৬)
১০ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সরু চোখে.....নারীর মৌলিক অধিকার ‘পর্দা পালনের অধিকার’ কেড়ে নেয়া হচ্ছে কেন?
০৯ জুন, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)