ফতওয়া
খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯)
গবেষণা কেন্দ্র : মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ
, ২৪ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১০ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৯ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ২৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
تطاول تمدد قائما لينظر الى بعيد
অর্থ: “(বুরনুস টুপি হলো) খাড়াভাবে লম্বা বা উপরের দিকে লম্বা, যা দূর থেকেও দেখা যায়।” তাছাড়া মিশকাত শরীফের শরাহ্ মিরকাত শরীফে উল্লেখ আছে-
كان رمما نزع قلنسوته فجعلها سترة بين يديه وهو يصلى
অর্থ: “সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি কখনো কখনো নিজ টুপি মুবারক সম্মুখে সুত্রা হিসেবে রেখে নামায আদায় করতেন।” (ইহা প্রথম যুগের আমল)।
উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফে যে টুপির কথা বলা হয়েছে, সে টুপিটিও বুরনুস টুপি ছিল, যা কমপক্ষে এক হাত পরিমাণ খাড়াভাবে লম্বা বা উপরের দিকে লম্বা ছিল। নচেৎ তা দ্বারা সুত্রা হওয়া কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। এখন আমাদের জিজ্ঞাস্য হলো- তারা যে কিস্তি টুপিকে ‘বুরনুস’ টুপির উপর ভিত্তি করে সুন্নত বলছে, সেই কিস্তি টুপি কি উপরের দিকে কমপক্ষে এক হাত পরিমাণ লম্বা? সেই কিস্তি টুপি নামায আদায় করার সময় সুত্রা হিসেবে ব্যবহার করা যাবে কি? নিশ্চয়ই জবাব আসবে- না। যদি তাই হয়ে থাকে, তবে “বুরনুস” টুপির উপর ভিত্তি করে কিস্তি টুপিকে সুন্নত বলা কি করে শরীয়তসম্মত বা দলীলসম্মত হতে পারে? যেখানে “বুরনুস” টুপি এবং কিস্তি টুপির মধ্যে রয়েছে আসমান-যমীন পার্থক্য। যেমন- “বুরনুস” টুপি আকৃতির দিক দিয়ে গোল ও উপরের দিকে কমপক্ষে এক হাত পরিমাণ লম্বা। আর কিস্তি টুপি আকৃতির দিক দিয়ে দোপাট্টা ও আড়াআড়িভাবে লম্বা। অতএব প্রমাণিত হলো যে, যারা “বুরনুস” টুপির উপর ভিত্তি করে বলে থাকে যে, হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও বিশেষজ্ঞ আলিমগণ কিস্তি টুপি পরিধান করেছেন, তাদের উক্ত বক্তব্য ডাহা মিথ্যা, মনগড়া ও প্রতারণামূলক এবং সর্বোপরি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম ও হযরত উলামায়ে কিরামগণের প্রতি মিথ্যা তোহমত দেয়ার নামান্তর। সাথে সাথে হিন্দু মারওয়ারী বা বেদ্বীন-বদদীনদের খাছ টুপি কিস্তি টুপিকে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের সুন্নত বলে আখ্যায়িত করার কারণে সুস্পষ্ট কুফরী হয়েছে। দ্বিতীয়তঃ বলতে হয় যে, সুস্পষ্টভাবেই প্রমাণিত হয়েছে যে, কিস্তি টুপি “বুরনুস” টুপির অনুরূপ নয়। তারপরও যদি ধরে নেই যে, কিস্তি টুপি বুরনুস টুপি, তথাপিও কিস্তি টুপি পরিধান করা সুন্নত প্রমাণিত হয়না। কারণ বুরনুস টুপির উক্ত আমল প্রথম যামানার সাথে সম্পৃক্ত। অর্থাৎ দ্বীন ইসলামের প্রথম যুগেই এ ধরনের “বুরনুস” টুপি পরিধান করা হতো। আর তাই পবিত্র হাদীছ শরীফের কিতাবে “বুরনুস” শব্দের হাশিয়ায় ও বিখ্যাত লোগাতসমূহে “বুরনুস” শব্দের অর্থে বলা হয়েছে, “বুরনুস লম্বা টুপি, যা দ্বীন ইসলামের প্রাথমিক যুগে পরিধান করা হতো। আর প্রকৃতপক্ষে “বুরনুস” টুপি হচ্ছে- বেদ্বীন-বদ্দীন তথা খৃষ্টানদের খাছ টুপি। নিম্নে এর কতিপয় প্রমাণ পেশ করা হলো- যেমন বুখারী শরীফের ২য় খ- ৮৬২ ও ৮৬৩ পৃষ্ঠায় ৫ ও ৬নং হাশিয়াতে উল্লেখ আছে-
البرنس ..... قال الجوهرى هو قلنسوة طويلة كان النساك يلبسونها فى صدر الاسلام كذا فى المجمع.
অর্থ: ““বুরনুস” ...... জাওহারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, বুরনুস হচ্ছে- লম্বা টুপি, যা আবিদ ও যাহিদ লোকেরা ইসলামের প্রাথমিক যুগে পরিধান করতেন। অনুরূপ “মাজমা” কিতাবেও উল্লেখ আছে।” ছহীহ্ আবূ দাউদ শরীফের ১ম খ- ১৫৩ ও ২৬৯ পৃষ্ঠায় যথাক্রমে ৮ ও ৪নং হাশিয়াতে উল্লেখ আছে
البرنس ..... وقال الجوهرى قلنسوة طويلة كان النساك يلبسونها فى صدر الاسلام.
অর্থ: “বুরনুস” ...... ইমাম জাওহারী বলেন, বুরনুস শব্দের অর্থ হলো- লম্বা টুপি, যে টুপি আবিদ-যাহিদ লোকেরা ইসলামের প্রাথমিক যুগে পরিধান করতেন।” ছহীহ্ নাসাঈ শরীফের ২য় খ- ৮-৯ পৃষ্ঠায় ৫নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে-
البرنس ........ وقال الجوهرى قلنسوة طويلة كان النساك يلبسونها فى صدر الاسلام.
অর্থ: “বুরনুস ..... জাওহারী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘বুরনুস’ লম্বা টুপিকে বলে, যা আবিদ-যাহিদ লোকেরা ইসলামের প্রাথমিক যুগে পরিধান করতেন।” অনুরূপ বিখ্যাত আরবী লোগাত “লিসানুল আরব” ১ম খ- ২৭০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
البرنس، وه لمبي ٹوپی جو أغاز اسلام مير ..هنى جاتى تهى.
অর্থ: “বুরনুস” লম্বা টুপিকে বলে, যা ইসলামের প্রাথমিক যুগে আবিদ-যাহিদ লোকেরা পরিধান করতেন।” মশহূর লোগাত “আল মুগ্রিব্” ১ম খ- ৬৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে-
البرنس قلنسوة طويلة كان النساك يلبسونها فى صدر الاسلام.
অর্থ: “বুরনুস অর্থ লম্বা টুপি, যা আবিদ ও যাহিদ লোকেরা ইসলামের শুরু যুগে পরিধান করতেন।”
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












