গণতন্ত্রে পাঁচ বৎসরের জন্য ক্ষমতা চিরস্থায়ী নয়। ইসলামী শব্দ ব্যবহারকারীরা সত্যিকারে ইসলামী আইন জারী করলে পাঁচ বৎসর পর ক্ষমতায় আসা অসম্ভব। সুতরাং গণতন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় গিয়ে কুরআন শরীফের আইন বা ইসলাম প্রতিষ্ঠার কথা বলা একটা চরম মিথ্যা, ধোঁকা ও প্রতারণা (পর্ব ৩)
(গত ০৯ শা’বান শরীফের পর)
, ২৯ শা’বান শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২ আশির, ১৩৯২ শামসী সন , ১ মার্চ, ২০২৫ খ্রি:, ১৫ ফালগুন, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
তাই পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
لَا تَسْأَلِ الْإِمَارَةَ
তোমরা ক্ষমতা চেয়ে নিবে না। (মুখতাছারী ছহীহিল ইমামিল বুখারী-৪/১৭৭)
ইহুদী আব্রাহাম লিংকনের গণতন্ত্রের নিয়ম হলো ক্ষমতা চাওয়া। আর দ্বীন ইসলামের নির্দেশ হলো ক্ষমতা চাওয়া হারাম, যে ক্ষমতা চায়, তার উপর মহান আল্লাহ পাক উনার জিম্মাদারী থাকেনা ও রহমত মোটেও থাকেনা। আর রহমত মুবারক না থাকলে, ইসলাম প্রতিষ্ঠা তো দূরের কথা, ক্ষমতাশীলরা নিজেই দ্বীন ইসলাম উনার উপর প্রতিষ্ঠিত থাকতে পারে না। যার কারণে, খুলাফায়ে রাশেদীন উনারা কেউ ক্ষমতা চান নাই, বরং উনাদেরকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। উনারা মনোনয়ন চান নাই, বরং উনাদেরকে মনোনীত করা হয়েছে।
মূলত: নফস ছাড়া কোন মানুষ নাই। যে নফস শয়তানের চেয়ে কোন অংশে কম নয়। আবার অভিশপ্ত নাপাক ইবলিশ সর্বদা অন্তরে বসে কু-পরামর্শই দেয়। এবং অন্তরের লুকায়িত হিংসা, লোভ, পরনিন্দা, ইত্যাদি শত পাপ শক্তিগুলো স্বাভাবিকভাবেই শয়তানের কু-পরামর্শ মেনে পাপ কাজে প্ররোচনা দেয় ও পাপের দিকে ধাবিত করে একটা মানুষকে হালাকী বা ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়। এই সকল কিছুর দ্বারা যাদের অন্তর পরিপূর্ণ, তারা ক্ষমতায় গিয়ে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার প্রতিষ্ঠা করার কথা বলাটা সত্যিই মধু খাওয়ানোর কথা বলে বিষ খাওয়ানোর মতই।
মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে একমাত্র খিলাফত প্রতিষ্ঠা ব্যতিত কোন তন্ত্র-মন্ত্র দিয়ে দ্বীন ইসলাম বা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আইন কেউ কোন দিন জারী করতে পারে নাই, কোন দিন সম্ভবও নয়। সুতরাং ইসলামী আইন, বা পবিত্র কুরআন শরীফ উনার আইন কায়িমের চমকদার কথা শুনিয়ে অভিশপ্ত ইহুদী আব্রাহাম লিংকনের তৈরী করা গণতন্ত্রের অনুসরন করে যারা মুসলমানদেরকে ধোঁকা দেয়, এবং অসংখ্য হারাম ও কুফরী কাজে লিপ্ত করে, তারা পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালে কাযযাব। যাদের সম্পর্কে মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالىٰ عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَكُونُ فِي آخِرِ الزَّمَانِ دَجَّالُونَ كَذَّابُونَ يَأْتُونَكُمْ مِنَ الأَحَادِيثِ بِمَا لَمْ تَسْمَعُوا أَنْتُمْ وَلاَ آبَاؤُكُمْ فَإِيَّاكُمْ وَإِيَّاهُمْ لاَ يُضِلُّونَكُمْ وَلاَ يَفْتِنُونَكُمْ
অর্থ: “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুনোনি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ্ করতে পারবে না এবং ফিৎনায় ফেলতে পারবেনা। ” (মুসলিম শরীফ, শরহুন নববী, ফতহুল মুলহিম)
দাজ্জালে কাযযাবের অর্থ-
خلاطون بين الحق والباطل مموهون
অর্থ: যারা ইসলামের সাথে হারাম ও কুফরীকে মিশ্রিত করে মানুষের সাথে প্রতারণা করে ও ধোঁকা দেয়।
মূলত: তারা মূল দাজ্জালের ক্ষেত্র তৈরীকারী খানে দাজ্জাল, যাতে মূল দাজ্জাল এসে সহজে মানুষকে কাফির বানাতে পারে।
ফলে, তারা হারাম ও কুফরী কাজগুলির পূর্বে ইসলাম শব্দ, পবিত্র কুরআন শব্দ ব্যবহার করে ঐ হারাম ও কুফরী কাজগুলিকে ইসলাম ও কুরআন বলে চালিয়ে মানুষের ঈমান ধ্বংস করে দেয়। তারা মূল দাজ্জালের চেয়েও বেশী ভয়ংকর। কেননা, মূল কানা দাজ্জালের কপালে কাফির লিখা থাকবে। মুসলমান মাত্রই বুঝতে পারবে এটা মিথ্যাবাদী ও কাফির। আর বর্তমান আলেম ওলামা সূরতে মুনাফিকরা পবিত্র কুরআন ও ইসলামের কথা বলে মানুষের ঈমান ও আমল দু’টাই ধ্বংস করছে। সমাপ্ত.....
-মুহম্মদ মুফীদ্বুর রহমান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












