ছহিবু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ, আহলু বাইতি রসূলিল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম, মাওলানা মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
উলামায়ে ‘সূ’দের হাক্বীক্বত
, ০৪ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২১ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২০ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ০৪ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
إِنَّمَا الْفَقِيْهُ اَلزَّاهِدُ فِي الدُّنْيَا اَلرَّاغِبُ فِي الْاَخِرَةِ اَلْبَصِيْرُ بِذَنْبِهِ اَلْمُدَاوِمُ عَلَى عِبَادَةِ رَبِّهِ اَلْوَرِعُ اَلْكَافُّ عَنْ اَعْرَاضِ الْـمُسْلِمِيْنَ اَلْعَفِيْفُ عَنْ اَمْوَالِـهِمْ اَلنَّاصِحُ لِجَمَاعَتِهِمْ.
হযরত ইমাম হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ফক্বীহ আলিম বা আল্লাহওয়ালা কে?
اَلزَّاهِدُ فِي الدُّنْيَا
যিনি দুনিয়া থেকে বিরাগ।
اَلرَّاغِبُ فِي الْاَخِرَةِ
পরকালের দিকে রুজু হয়ে রয়েছেন।
اَلْبَصِيْرُ بِذَنْبِهِ
গুনাহ্র ব্যাপারে তিনি সতর্ক।
اَلْمُدَاوِمُ عَلَى عِبَادَةِ رَبِّهِ
সবসময়ই মহান আল্লাহ পাক উনার ইবাদত বন্দিগীতে মশগুল।
اَلْوَرِعُ
যিনি পরহেযগার, সুন্নত মুবারকের তাবে’।
اَلْكَافُّ عَنْ اَعْرَاضِ الْـمُسْلِمِيْنَ
মুসলমানদের সম্পদের প্রতি যার মোহ নেই।
اَلْعَفِيْفُ عَنْ اَمْوَالِـهِمْ
মুসলমানদের মাল থেকে যিনি নির্লোভ।
اَلنَّاصِحُ لِجَمَاعَتِهِمْ
এবং মুসলমানদেরকে যিনি নছীহত করেন।
এক কথায় এর অর্থ হচ্ছে আলিম বা আল্লাহওয়ালা তিনিই হবেন, যিনি গাইরুল্লাহ থেকে বেঁচে সবসময় মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের মুহব্বতে গরক থাকবেন। উনাদের আদেশ নির্দেশের প্রতি সবসময় তিনি দৃঢ় থাকবেন। কোন অবস্থাতেই মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের আদেশ নির্দেশ মুবারক থেকে তিনি চ্যূত হবেন না। তিনি পবিত্র সুন্নত মুবারকের উপর ইস্তিক্বামত থাকবেন। এবং কখনই মুসলমানদের মাল-সম্পদ, ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা, গাড়ী, বাড়ি ইত্যাদির প্রতি উনার কোন দৃষ্টি থাকবে না, লোভ থাকবে না, মোহ থাকবে না। এবং তিনি সবসময় মুসলমানদেরকে মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের দিকে ধাবিত করার জন্য নছীহতে মশগুল থাকবেন। তিনি হচ্ছেন উলামায়ে হক্ব উনাদের অন্তর্ভুক্ত। এর খিলাফ যারা রয়েছে তারা উলামায়ে ‘সূ’। অর্থাৎ উলামায়ে ‘সূ’দের বৈশিষ্ট হচ্ছে তারা সবসময় দুনিয়াতে মশগুল থাকবে। পরকালের কথা ভুলেও স্মরণ করবে না এবং তারা গুনাহকে কখনও পরওয়া করবে না। ইবাদত বন্দিগীতে তারা গাফিল থাকবে। আর সুন্নত মুবারক পালন করার ব্যাপারে কোন গুরুত্বই দিবে না। আর সবসময় ধন-দৌলত, টাকা-পয়সা, গাড়ী-বাড়ি, পরের সম্পদ আত্মসাতের জন্য প্রতারণা করে যেভাবেই হোক সেটা হাছিলের জন্য কোশেশ করবে এবং মুসলমানদেরকে কখনও সৎ মত সৎ পথে ধাবিত করার জন্য নছীহত করবে না। এটা হচ্ছে উলামায়ে ‘সূ’দের খাছলত বা বৈশিষ্ট। আর সে জন্যই হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাযযালী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন-
ایک زمانہ بدنام علماء سوء بھتر از شصت سال طاعت بےریاء
কিছুক্ষণ সময় দুনিয়াদার আলিম বা উলামায়ে ‘সূ’দের দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা হচ্ছে ষাট বৎসর নফল মকবুল ইবাদত থেকেও উত্তম। সুবহানাল্লাহ!
এখন সেই উলামায়ে ‘সূ’দের কারণে মানুষ বিভ্রান্ত হচ্ছে। প্রথম উলামায়ে ‘সূ’ হলো ইবলীস। যে ইবলীসকে লালন-পালন করলেন, বড় করলেন, শিক্ষা দিলেন, তা’লীম দিলেন, হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মুআল্লিম হিসেবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে দায়িত্ব দিলেন এরপরও দুনিয়ার মোহে মোহগ্রস্ত হয়ে মহান আল্লাহ পাক উনার বিরোধিতা করলো। নাউযুবিল্লাহ! আদেশ নিষেধের সে বিরোধিতা করলো এবং মহান আল্লাহ পাক উনার সাথে সে তর্ক-বিতর্ক করলো। নাউযুবিল্লাহ! সে চরম বেয়াদব এবং গোমরাহ। তার অন্তরে মহান আল্লাহ পাক উনার ভয়-ভীতি, উনার প্রতি আদব-তমিজ ইত্যাদির চিহ্ন মাত্র দেখা যায়নি। সেই ইবলীসই হচ্ছে প্রথম উলামায়ে ‘সূ’। যার কারণে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই তাকে বলেছিলেন-
قَالَ فَاهْبِطْ مِنْهَا فَمَا يَكُونُ لَكَ اَنْ تَتَكَبَّرَ فِيهَا فَاخْرُجْ اِنَّكَ مِنَ الصَّاغِرِينَ
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ইবলীস তুই এখান থেকে নিচে নেমে যা। মহান আল্লাহ পাক উনার দরবারে দাঁড়িয়ে ফখর বা অহঙ্কার করার কোন অধিকার তোর নেই। কাজেই তুই এখান থেকে বের হয়ে যা। অবশ্যই তুই লাঞ্ছিত অপমানিত অবহেলিত এবং জাহান্নামী।
وَاِنَّ عَلَيْكَ لَعْنَتِى اِلٰى يَوْمِ الدِّيْنِ
নিশ্চয়ই অনন্তকাল ধরে তোর উপর লা’নত বর্ষিত হবে এবং তাই হচ্ছে। নাঊযুবিল্লাহ!
-০-
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












