ছাহিবে কা’বা কাওসাইনে আও আদনা, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আযিমুশ শান মি’রাজ শরীফ উনার বর্ণনা মুবারক (২)
, ৭ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ১১ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ০৮ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ২৩ পৌষ , ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা

আনুষ্ঠানিক মি’রাজ শরীফ শুরু যেভাবে:
দালায়িলুন নুবুওওয়াহ লিল বাইহাক্বী, ইবনু আবী হাতিম, তাফসীরুত ত্ববারী, তাফসীরু ইবনি কাছীরের বর্ণনা মতে, বিশিষ্ট ছাহাবী হযরত আবু সাঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি খালিক্ব, মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার থেকে বর্ণনা করেন, একবার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা নবী আলাইহিমুস সালাম উনাদের নবী, রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদের রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট মি’রাজ শরীফ সম্বন্ধে জানতে চাইলেন। তখন খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব সাইয়্যিদুল, মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ‘সূরা বণী ইসরাইল’-এর ১ নম্বর আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করেন।
سُبْحَانَ الَّذِي أَسْرَى بِعَبْدِهِ لَيْلاً مِّنَ الْمَسْجِدِ الْحَرَامِ إِلَى الْمَسْجِدِ الأَقْصَى الَّذِي بَارَكْنَا حَوْلَهُ لِنُرِيَهُ مِنْ آيَاتِنَا إِنَّهُ هُوَ السَّمِيعُ البَصِيرُ
অর্থ: ‘পূত-পবিত্র ও মহিমাময় মহান আল্লাহ পাক যিনি উনার বান্দা (হাবীব) ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে কোনো এক রাতের সামান্য সময়ে (প্রথমে) বাইতুল্লাহ শরীফ থেকে বাইতুল মুকাদ্দাস শরীফ পর্যন্ত, যার আশপাশ বরকতময়; অতঃপর উনার নিদর্শনসমূহ দেখানোর জন্য অর্থাৎ দীদার মুবারক আরশে আযীমে দেয়ার জন্য ভ্রমণ করিয়েছেন। নিশ্চয়ই তিনি সর্বশ্রোতা ও সর্বদ্রষ্টা। ’
বোরাকে আরোহন ও পথিমধ্যে যা ঘটলো:
খালিক্ব, মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, আখিরী নবী, নূরে মুজাসসাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আয়াত শরীফ তিলাওয়াত করলেন এবং ইরশাদ করলেন। (রজব মাসের ২৭ তারিখ) ইশার নামাযের পর আমার কাছে আগমন করেন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম। তখন আমি মক্কা (কা’বা) শরীফ-এ অবস্থান করছিলাম। কা’বা শরীফ থেকে বের হয়ে দেখতে পেলাম একটি বিস্ময়কর, খুবই সুন্দর, দীর্ঘ কান বিশিষ্ট বাহন দাঁড়িয়ে রয়েছে; যা সাদা রঙ বিশিষ্ট গাধার চেয়ে একটু বড়, খচ্চরের চেয়ে একটু ছোট। যার নাম ছিলো বোরাক।
খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, অতঃপর উহাতে আরোহণ করি। আমি যখন বোরাকের উপর সাওয়ার হয়ে চলছিলাম এমন সময় আমার ডান দিক থেকে একজন লোক ডাক দিয়ে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার দিকে একটু তাকান এবং আমার কিছু সুওয়াল রয়েছে। কিন্তু এখানে আমি দাঁড়াইনি এবং জাওয়াবও দেইনি। এরপর কিছুদূর গেলে আবার বামদিক থেকেও কে যেন আহবান করলেন কিন্তু এখানেও আমি থামিনি ও জাওয়াবও দেইনি। আবার কিছুদূর গিয়ে দেখতে পাই একটি স্ত্রীলোক তার সৌন্দর্য জাহির করে দাঁড়িয়ে আছে। সেও আমাকে লক্ষ্য করে বললো, আমার কিছু সুওয়াল রয়েছে কিন্তু আমি তার দিকে লক্ষ্য করিনি ও থামিওনি। খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বলেন, যখন আমরা বাইতুল মুকাদ্দাসে পৌঁছলাম এবং আমি আমার বাহনকে সেই হালকার সাথে বাঁধলাম; যাতে অন্যান্য হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারা উনাদের বাহন বেঁধে রাখতেন। অতঃপর হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি আমার নিকট দুটি পেয়ালা আনলেন। একটি ছিল শরাব অপরটিতে দুধ। আমি দুধের পেয়ালা পান করলাম। কিন্তু শরাব পান করিনি। তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, আপনি ফিৎরাত তথা সুন্নতকে গ্রহণ করেছেন। তখন আমি খুশি হয়ে ‘আল্লাহু আকবার’ তাকবীর দিলাম এবং হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি দু’বার তাকবীর পাঠ করেন।
খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিইয়ীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে তা’যীম-তাকরীম-এর সাথে অভ্যর্থনা করে হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি উনার সাথে বাইতুল মুকাদ্দাসে পৌঁছে পথের ঘটনার কথা বলছিলেন। তখন হযরত জিবরীল আলাইহিস সালাম তিনি বললেন, পথিমধ্যে প্রথম যে ব্যক্তি আপনাকে ডান দিক থেকে ডেকেছিল সে হলো একটা ইহুদী লোক। যদি আপনি তার কথার উত্তর দিতেন এবং সেখানে দাঁড়াতেন তাহলে আপনার উম্মত ইহুদী হয়ে যেতো। আর দ্বিতীয়বার বাম দিক থেকে যে ব্যক্তি আপনাকে আহবান করেছিল সে হচ্ছে একজন খ্রিস্টান। যদি আপনি সেখানে দাঁড়াতেন তবে আপনার উম্মত খ্রিস্টান হয়ে যেতো। আর ওই স্ত্রী লোকটি ছিলো দুনিয়া। যদি আপনি সেখানে থেকে তার সাথে কথা বলতেন তবে আপনার উম্মত আখিরাতের উপর দুনিয়াকে প্রাধান্য দিয়ে পথভ্রষ্ট হয়ে যেতো
-আল্লামা সাইয়্যিদ আহমদ শাবীব।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া হারাম
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একটা আদেশ মুবারক অমান্য করে আরেকটা মান্য করা জায়িয নেই
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
একটা আদেশ মুবারক অমান্য করে আরেকটা মান্য করা জায়িয নেই
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত বড়পীর ছাহিব রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার সাওয়ানেহ উমরী মুবারক (৭)
১৪ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পবিত্র শবে বরাত উনার রোযা নিয়ে বিভ্রান্তি নিরসন
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ছবি তোলা শক্ত হারাম, রয়েছে কঠিন শাস্তি
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১১)
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে লেবাস বা পোশাকের হুকুম-আহকাম (১১)
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র ঈমান বা আক্বায়িদ সম্পর্কিত পবিত্র কালিমা শরীফসমূহ
১৩ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (৪)
১২ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)