ছোঁয়াচে রোগ সম্পর্কে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম কি বলে?
, ৩০ ছফর শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৬ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৫ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ১০ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
. ঈমানদারদের জন্য আক্বীদা হলো ছোঁয়াচে বলতে কোন রোগ নেই
. ছোঁয়াচে রোগে বিশ্বাস করা জাহেলী যুগের বৈশিষ্ট্য
পবিত্র ছফর মাস আসলেই ছোঁয়াচে রোগে বিশ্বাসী কিছু বদ আক্বীদাধারী নানা চূ-চেরা করে থাকে। এ বিষয়ে মুসলমানদের কি আক্বীদা থাকা দরকার; ছোঁয়াচে রোগ বিষয়ে পবিত্র শরীয়ত কি বলে সে বিষয়ে আমরা সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা করবো।
পবিত্র হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে-
وَقَالَ عَفَّانُ حَدَّثَنَا سَلِيمُ بْنُ حَيَّانَ حَدَّثَنَا سَعِيدُ بْنُ مِينَاءَ قَالَ سَمِعْتُ أَبَا هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ يَقُوْلُ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صلى الله عليه وسلم لاَ عَدْوى وَلاَ طِيَرَةَ وَلاَ هَامَةَ وَلاَ صَفَرَ.
হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, ছোঁয়াচে বলে কোন রোগ নেই, কুলক্ষণ বলে কিছু নেই, পেঁচা অশুভের লক্ষণ নয়, ছফর মাসে কোন অশুভ নেই। (বুখারী শরীফ ৫৭০৭, বুখারী শরীফ ৫৭১৭, মুসলিম শরীফ ৫৯২০, ইবনে মাজাহ ৮৬, মুসনাদে আহমদ ১৫৫৪, সহীহ ইবনে হিব্বান ৫৮২৬, মুসনাদে বাযযার ৭১৪৭, মুসনাদে তয়লাসী ২০৭৩, সুনানে কুবরা নাসাঈ ৯২৩২, মুসনাদে আবু ইয়ালা ৭৯৮, সুনানে কুবরা বায়হাকী ১৪৬১৯)
হযরত সা’দ ইবনু মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত-
أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم كَانَ يَقُولُ "لاَ هَامَةَ وَلاَ عَدْوَى وَلاَ طِيَرَةَ
সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, পেঁচা অশুভ নয়, ছোঁয়াচে রোগ নেই এবং কোন জিনিস অশুভ হওয়া ভিত্তিহীন। (আবু দাউদ শরীফ ৩৯২১, ৩৯১৬, ৩৯১২)
উপরোক্ত ছহীহ হাদীছ শরীফ থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে যে, দ্বীন ইসলামে ছোঁয়াচে রোগের কোন অস্তিত্ব নেই। কারন স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ছোঁয়াচে রোগ বলে কোন রোগ না থাকার বিষয়কে স্পষ্ট করে দিয়েছেন। সংক্রামক বা ছোঁয়াচে রোগে বিশ্বাস করা মানে এটা বিশ্বাস করা রোগের নিজস্ব ক্ষমতা আছে, নিজ ক্ষমতায় রোগ কারো উপর সংক্রমন করতে পারে। যা স্পষ্ট শিরক। রোগ দেয়ার মালিক মহান আল্লাহ পাক। এরপরও কেউ যদি ছোঁয়াচে রোগের কথা বিশ্বাস করে সে তাহলে এ বিষয়ে মৌলিক আক্বীদা থেকে বিচ্যুৎ হয়ে পথভ্রষ্ট হিসাবে চিহিৃত হবে।
ছোঁয়াচে রোগে বিশ্বাস করা জাহেলী যুগের বৈশিষ্ট:
এ বিষয়ে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বলা হয়েছে-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ، قَالَ قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صلى الله عليه وسلم "أَرْبَعٌ فِي أُمَّتِي مِنْ أَمْرِ الْجَاهِلِيَّةِ لَنْ يَدَعَهُنَّ النَّاسُ النِّيَاحَةُ وَالطَّعْنُ فِي الأَحْسَابِ وَالْعَدْوَى أَجْرَبَ بَعِيرٌ فَأَجْرَبَ مِائَةَ بَعِيرٍ مَنْ أَجْرَبَ الْبَعِيرَ الأَوَّلَ وَالأَنْوَاءُ مُطِرْنَا بِنَوْءِ كَذَا وَكَذَا". قَالَ أَبُو عِيسَى هَذَا حَدِيثٌ حَسَنٌ.
হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ মুবারক করেন, আমার উম্মতের মাঝে জাহিলী যুগের চারটি বিষয় আছে। তারা কখনও এগুলো (পুরোপুরি) ছাড়তে পারে না: মৃত ব্যক্তির জন্য বিলাপ সহকারে ক্রন্দন করা, বংশ তুলে গালি দেওয়া, ছোঁয়াচে রোগ সংক্রমিত হওয়ার ধারণা করা, যেমন একটি উট সংক্রমিত হলে একশ’টি উটে তা সংক্রমিত হওয়া। কিন্তু প্রশ্ন হলো, প্রথমটি কিভাবে সংক্রমিত হলো? আর নক্ষত্রের প্রভাব মান্য করা অর্থাৎ অমুক অমুক নক্ষত্রের প্রভাবে আমাদের উপর বৃষ্টি হলো। নাউযুবিল্লাহ! (তিরমিযী শরীফ ১০০১)
জাহিলী যুগের বৈশিষ্টসমূহের একটা বৈশিষ্ট হচ্ছে ছোঁয়াচে রোগের প্রতি বিশ্বাস রাখা। সূতরাং পবিত্র হাদীছ শরীফ থেকে প্রমাণ হলো, ছোঁয়াচে রোগের প্রতি বিশ্বাস রাখা মু’মিনদের আক্বীদা না বরং জাহেলী যুগের আক্বীদা। তাই যারা ছোঁয়াচে রোগের কথা বিশ্বাস করে এবং এ আক্বীদা প্রচার করে তারা সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ভবিষ্যৎবানী অনুযায়ী জাহেলী যুগের বৈশিষ্ট বহন করছে।
-খাজা মুহম্মদ নুরুদ্দীন।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












