আপনাদের মতামত
ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস কাদের মানবাধিকার রক্ষা করতে চায়? (৫)
, ২৪ শে রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৬ হিজরী সন, ২৮ ছামিন, ১৩৯২ শামসী সন , ২৫ জানুয়ারী, ২০২৫ খ্রি:, ১১ মাঘ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) আপনাদের মতামত
প্রশ্ন হলো বাংলাদেশে জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস স্থাপনে এতো তোড়জোড় কেন? এতো চাপাচাপি কেন? বাংলাদেশ তো যুদ্ধকবলিত ও যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ নয় যে খুব দ্রুত অফিস খুলতে হবে, নাহলে যুদ্ধাপরাধ সংগঠিত হবে। যুদ্ধ কবলিত দেশগুলোতে যেখানে মানবাধিকার অফিস স্থাপন করতে পারেনি বা পারছে না সেখানে বাংলাদেশে মানবাধিকার অফিস খুলতে এতো তৎপর কেন জাতিসংঘ?
কারণ বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে ইউরোপ-আমেরিকান খ্রিষ্টান মিশনারী ও এনজিওগুলোর রয়েছে বিলিয়ন বিলিয়ন ডলারের প্রজেক্ট। স্বাধীন খ্রিষ্টান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, আরাকান রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা, রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল প্রতিষ্ঠা। এই তিনটি প্রজেক্ট বাস্তবায়নে দীর্ঘদিন ধরে জাতিসংঘের বিভিন্ন মিশন, ইউরোপীয় কমিশন, ইউএসআইডি, পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থা এরা সিএইচটি কমিশন এর মতো দেশী-বিদেশী এনজিও, মিডিয়া, সাংবাদিক, সুশীল সমাজ, রাজনীতিবিদ, সামাজিক সংগঠন তৈরী করেছে। এরা স্বাধীন খ্রিস্টান রাষ্ট্র গঠনে ধর্মান্তরকরণ, জনমত গঠন, পাহাড়ী-বাঙ্গালী বৈষম্য সৃষ্টি, মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ, আদিবাসী ক্যাম্পেইন, আন্তর্জাতিক ক্যাম্পেইন, সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে গুজব রটানো, প্রশাসন ও সরকারে হস্তক্ষেপ, উপজাতিদের পক্ষে আইন প্রণয়ন, উপজাতিদের সামরিক প্রশিক্ষণ, অস্ত্রায়ন, অর্থায়ন ইত্যাদি বিভিন্ন দেশ বিরোধী কাজে জড়িত।
ইতিমধ্যে খ্রিস্টান মিশনারী এনজিওগুলোর বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিরোধী, বিচ্ছিন্নতাবাদী, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী-অভিবাসী উপজাতিদের সন্ত্রাসবাদী সশস্ত্র কার্যক্রমে তারা বিভিন্নভাবে মদদ দিয়ে যাচ্ছে। বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের যেকোন কার্যক্রমে পক্ষাবলম্বন করছে। বাঙ্গালীদের মানবাধিকার হরণ করে বাঙ্গালী উচ্ছেদে সর্বাত্মক কার্যক্রম ও প্রচারণা চালাচ্ছে। অন্যদিকে খ্রিস্টান মিশনারী এনজিওগুলোর মাধ্যমে ব্যাপকভাবে চলছে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীকে খ্রিষ্টান ধর্মান্তরকরণ। উদ্দেশ্য জাতিসংঘের নের্তৃত্বে যেভাবে মুসলিম দেশ সুদান ভেঙ্গে ‘দক্ষিণ সুদান’ এবং ইন্দোনেশিয়া ভেঙ্গে ‘পূর্ব তিমুর’ নামক খ্রিষ্টান রাষ্ট্র তৈরী করা হয়েছে একইভাবে বাংলাদেশ থেকে বিচ্ছিন্ন করে পার্বত্য চট্টগ্রামে একটি স্বাধীন খ্রিষ্টান রাষ্ট্র গঠন করা।
সেই লক্ষ্যে তাদের স্বার্থবাহী প্রথম আলো, ডেইলী স্টারের মতো দেশদ্রোহী মিডিয়া এবং সিএইচটি কমিশন সহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক এনজিও এর মাধ্যমে ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর পক্ষে এবং বাঙ্গালী মুসলমান ও দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে নিয়মিত বিষোদগার করা হচ্ছে। তারা চায় উপজাতি নৃগোষ্ঠীদেরকে আদিবাসী প্রলেপ দিতে। তাহলে ২০০৭ সালের জাতিসংঘ ঘোষণা অনুযায়ী পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনাবাহিনীকে বিতাড়ন করাও সহজ হবে এবং পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করাও হবে সময়ের ব্যাপার মাত্র।
তাই পার্বত্য চট্টগ্রামের নিয়ন্ত্রণ নিতে তারা অতি তৎপর। গত নির্বাচনের আগেও ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের কাছে নির্বাচন পূর্ব প্রস্তুতিকালীন তিন মাস পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাধ বিচরনের প্রস্তাব করেছিল। পার্বত্য চট্টগ্রামে অবাধ বিচরণে সরকারী অনুমোদন বা সেনাবাহিনীর অবস্থান ও সেনাবাহিনীর নজরদারী তাদের কাছে বিরক্তিকর একটি বিষয়। তারা এসব ঝামেলা থেকে পার্বত্য চট্টগ্রামকে মুক্ত করতে চায়। এসব কাজে যারা বাধা হয়ে দাড়াবে তারা উপজাতিদের মানবাধিকার লংঘনকারী হিসেবে বিবেচিত হবে।
এছাড়া নির্মিতব্য স্বাধীন আরাকান রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রণ, রোহিঙ্গাদের জন্য নিরাপদ অঞ্চল নামের বন্দিশালা নিয়ন্ত্রণ এবং এসব প্রতিষ্ঠায় বাধা সৃষ্টিকারীরাও মানবাধিকার লংঘনকারী হিসেবে বিবেচিত হবে।
তাছাড়া বাংলাদেশে পশ্চিমা আবর্জনা যে সমকামী, সমঅধিকারকামী, নারীবাদী, পরিবেশবাদী শ্রেণী তৈরী করা হয়েছে তাদেরও তো মানবাধিকার রয়েছে। উপজাতিসহ তাদের মানবাধিকার রক্ষা করবে কে?
ইতিমধ্যে লিঙ্গ বৈষম্যকারীদের বিচারের ব্যবস্থা আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে নেয়ার লক্ষ্যে আইন সংশোধন করা হয়েছে। সমকামীদের বিরুদ্ধে বললে এটা এতো বড় অপরাধ হবে যে, প্রচলিত আদালতে এর বিচার করা যাবে না বরং আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে এর বিচার করা হবে! এসব বিচারব্যবস্থা তদারকি করবে কে? জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস থাকলে তারা সরকারী কোন অনুমতি ছাড়াই যেকোন বিচারকার্য দেখাশোনা বা হস্তক্ষেপ করতে পারবে। তারা দেশের যেকোন জায়গায় সরকারী কোন অনুমতি ছাড়াই পরিদর্শন করতে পারবে।
সেজন্যেই ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস লাগবে!
যা হবে আদিবাসী’র মতোই বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের প্রতি আরেকটি ভয়াবহ আগ্রাসন। অফিস খোলার অনুমতি দিয়ে দিলে সরকার তখন তাদের বিরুদ্ধে আর কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না।
-মুহম্মদ জুলফিকার হায়দার
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
খ্রিস্টানদের অনুষ্ঠানকে ‘বড়দিন’ বলা যাবে না
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
স্বাধীন আরাকান চাই!
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দেশের সার্বভৌমত্বের সংকটে- দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীকে এগিয়ে আসতেই হবে
১৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পৃথিবীর সবচাইতে কুখ্যাত কিছু নৌদস্যুর অপকীর্তি
২৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ফসলের একটি অংশ যায় রাজাকার ত্রিদিবের সন্তান দেবাশীষের ঘরে! -এদেশে উপজাতি চৌকিদারকে কেন ‘রাজা’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হচ্ছে?
২৪ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
উলামায়ে ছু’দের বদ আমলই কি এর জন্য দায়ী নয়?
২২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বাংলাদেশে জিএম ফুড প্রচলনের সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে
১৯ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
জান্নাতী এবং জাহান্নামী ব্যক্তিদের কিছু আলামত
১৮ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে ঔ পনিবেশিক-ব্রাক্ষণ্যবাদী আগ্রাসন ও ষড়যন্ত্র পরিভাষা, শব্দ ও বানান আগ্রাসন (১)
১৫ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রকাশ্য অপ্রকাশ্য সমস্ত প্রকার অশ্লীলতাই হারাম
১২ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ইলিশ ধরায় বাংলাদেশ-ভারতের নিষেধাজ্ঞার সময়ে বড় পার্থক্য নিষেধাজ্ঞার নামে ভিনদেশী জেলেদের জামাই আদরে সাগর থেকে ইলিশ নিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয় আর দেশীয় জেলেদের জেলে পুরা হয় জেলেদের প্রতি এ নির্মম জুলুম আর কতকাল?
১১ অক্টোবর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আধুনিকতা নাম দিয়ে হারাম ‘ছবি’ তোলা থেকে বিরত থাকুন
২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












