দ্বীন ইসলাম উনার ঈমানদীপ্ত ঐতিহ্য (৯)
দুনিয়াতে থাকতেই প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুঘ্রাণ পেলেন হযরত আনাস বিন নদ্বর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
, ২০ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৬ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
হযরত আনাস বিন নদ্বর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন একজন সুবিখ্যাত ছাহাবী। তিনি কোন কারণবশতঃ ঐতিহাসিক বদরের জিহাদে অংশ নিতে পারেননি। এতে উনার ঈমানদীপ্ত হৃদয়ে প্রতিনিয়ত প্রচ- অনুতাপ নাড়া দিত। সম্মানিত দ্বীন ইসলামের প্রথম জিহাদে অংশগ্রহণের সৌভাগ্য অর্জন না হওয়ার মর্মপীড়ায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলেন, আবার যদি জিহাদের কোন ডাক আসে তবে তিনি তাতে জান-মাল কুরবান করে উনার অতৃপ্ত বাসনা পূর্ণ করবেন। অবশেষে ঐতিহাসিক উহুদ প্রান্তরের জিহাদে তিনি শরীক হওয়ার মহা সৌভাগ্য অর্জন করলেন। সুবহানাল্লাহ! উল্লেখ্য, উক্ত জিহাদ চলাকালীন বীর মুজাহিদ হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের এক মুহূর্তের সামান্য নিরবতার সুযোগে কাফির মুশরিক বাহিনী চতুর্দিক হতে অতর্কিতে হামলা চালানো শুরু করে। এ অবস্থায় হযরত আনাস বিন নদ্বর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বিন্দুমাত্র বিচলিত না হয়ে অসীম বীরত্বের সাথে কাফির মুশরিকদের মুকাবেলায় সম্মুখে অগ্রসর হলেন। পথিমধ্যে হযরত সা’দ বিন মাআয রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে দেখতে পেয়ে বললেন, “হে হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু! কা’বা শরীফের রব সেই মহান আল্লাহ পাক উনার কসম, আমি উহুদ পাহাড়ের পাদদেশ থেকে জান্নাতের সুঘ্রাণ পাচ্ছি।” এ কথা বলতে বলতেই তিনি তরবারী নিয়ে কাফির মুশরিকদের ভীড়ের মধ্যে ঢুকে পড়লেন এবং শাহাদাতের অমীয় সুধা পান না করা পর্যন্ত জিহাদ চালিয়ে গেলেন। সুবহানাল্লাহ!
এ প্রসঙ্গে পরবর্তীতে হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন- “হযরত আনাস বিন নদ্বর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার শাহাদাতের পর দেখা গেল, উনার শরীর মুবারকে কাফির মুশরিকরা তলোয়ার এবং বল্লমের দ্বারা আশিটির বেশি আঘাত করে এমন ক্ষতবিক্ষত করেছিল যে উনাকে চিনার কোন উপায় ছিল না। উনার আঙ্গুলের একটি গিরার চিহ্ন থেকেই উনার সহোদরা বোন উনাকে শনাক্ত করতে পেরেছিলেন।
মহান আল্লাহ পাক উনার পবিত্র কালাম এবং নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইশকের জোশেই পাওয়া গেল প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুঘ্রাণ
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামে পাক উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন, “যারা মহান আল্লাহ পাক উনার পথে শহীদ হন, মহান আল্লাহ পাক তিনি উনাদেরকে সেই জান্নাতে দাখিল করবেন যাঁর সম্পর্কে পূর্বেই উনাদেরকে অবহিত করা হয়েছে।” এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, “জান্নাতে প্রবেশের পর একমাত্র শহীদ ব্যতীত আর কেউ দুনিয়াতে ফিরে আসার আকাঙ্খা ব্যক্ত করবে না। দুনিয়ার সবকিছু শহীদের জন্য নিয়ামত হিসেবে থাকার পরও দুনিয়ায় ফিরে আসলে শহীদ আরো দশবার হলেও মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার মহাসম্মানিত হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের পথে জান কুরবানীর আকাঙ্খা ব্যক্ত করবেন। কারণ শাহাদাতের মর্যাদা শহীদ বাস্তবেই দেখতে পান।” সুবহানাল্লাহ! মূলতঃ হযরত আনাস বিন নদ্বর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি শাহাদাতের পূর্বে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ইশ্ক্, মুহব্বতের ঈমানদীপ্ত জোশে এত বেশি মশগুল ছিলেন যার ফলশ্রুতিতে প্রতিশ্রুত জান্নাতের সুঘ্রাণ শাহাদাতের পূর্বেই প্রত্যক্ষ করেন। সুবহানাল্লাহ!
এখনও পাওয়া যেতে পারে প্রতিশ্রুত জান্নাতের আগাম সুঘ্রাণ
মহান আল্লাহ পাক উনার ও উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মত ও পথে দৃঢ় ইস্তেকামত থেকে যারা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত লড়াই করে যাবেন উনাদের প্রত্যেকেই দুনিয়াতে থাকতেই জান্নাতের সুঘ্রাণ লাভ করবেন; যেমনটি লাভ করতে পেরেছেন হযরত আনাস বিন নদ্বর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু।
বর্তমান যামানায় উম্মতের যে কেউ মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার নির্দেশিত পথে সাড়া দিতে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের ন্যায় ঈমানদীপ্ত জোশে এগিয়ে আসবে; সম্মানিত দ্বীন ইসলামের ঐতিহ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠায় শাহাদাতের তামান্নায় লড়তে উদ্যত হবে তিনিও হযরত আনাস বিন নদ্বর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার ন্যায় প্রতিশ্রুত জান্নাতের আগাম সুঘ্রাণ লাভ করবেন নিঃসন্দেহে। সুবহানাল্লাহি ওয়া রসূলিহী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
-মুহম্মদ মুহাজিরুল ইসলাম
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












