দেশের ৩৮৩ নদীর অনেকগুলোই সংকটে
এডমিন, ০৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ রবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১০ আশ্বিন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) তাজা খবর
জানা গেছে, গত ৫০ বছরে দেশের নদনদীর সংখ্যা অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকায় থাকা মোট ৩৮৩টি নদীর অনেকগুলোর অবস্থাও সংকটাপন্ন। দূষণ ও অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ণ, আবাসনের ফলে ছোট-বড় আরও অনেক নদী অস্তিত্ব হারাতে বসেছে। নদনদী ও প্রাকৃতিক খাল রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে সরকার জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গঠন করেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আমাদের নগরায়ণের ফলে নদীগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। আমরা ধীরে ধীরে নদী দূষণ করছি ও দখল করছি। এখন যদি এসব বন্ধ করতে না পারি, তবে সামনে আমাদের দুর্দিন আসছে।
কালীগঞ্জ সংবাদদাতা জানান, একটা সময় শীতলক্ষ্যা ও বালু নদী ছিল দুই পাড়ের মানুষের জীবন-জীবিকার উৎস। একসময়ে শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর পানি পান করত মানুষ। এ নদীতে মাছ ধরে অনেকেই জীবিকা নির্বাহ করত। তবে সময়ের পরিক্রমায় সব কিছুই পালটে গেছে। নদীর পানি পান তো দূরের কথা, এখন শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীতে মাছ পাওয়াও দুষ্কর হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ দূষণের কবলে পড়ে যেমন জৌলুস হারাচ্ছে ১১০ কিলোমিটারের শীতলক্ষ্যা, তেমনি প্রায় মৃত হয়ে পড়েছে ৪৪ কিলোমিটারের বালু নদীটিও। নদী পাড়ের মানুষ একসময় রান্নাবান্নাসহ ঘরের কাজে এ নদী দুটির পানিই ব্যবহার করত।
নদীসংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত ৫০ বছরে দেশের নদনদীর সংখ্যা অর্ধেকের নিচে নেমে এসেছে। বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ডের তালিকায় থাকা মোট ৩৮৩টি নদীর অনেকগুলোর অবস্থাও সংকটাপন্ন। দূষণ ও ভূমিদস্যুদের আগ্রাসনের পাশাপাশি অপরিকল্পিত শিল্পায়ন, নগরায়ণ, আবাসন, সেতু, কালভার্ট ও স্লুইসগেট নির্মাণের ফলে ছোটবড় আরও অনেক নদীর অস্তিত্ব বিপন্ন হচ্ছে। নদনদী ও প্রাকৃতিক খাল রক্ষায় উচ্চ আদালতের নির্দেশে সরকার জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন গঠন করেছে। তবে প্রয়োজনীয় জনবল ও অন্যান্য সুবিধা না থাকায় সংস্থাটি যথাযথ দায়িত্ব পালন করতে পারছেন না।
নদী বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিবেশ ধ্বংস করে কোনো কর্মকা- পরিচালনা করলে তার ফলাফল শূন্যই থেকে যায়। এখন যদি এসব বন্ধ করতে না পারি, তবে সামনে আমাদের দুর্দিন আসছে।
বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, প্রশাসনের সমন্বিত উদ্যোগের অভাবে আজো শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর দখল ও দূষণ বন্ধ করা যায়নি।
গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আবুল ফাতে মোহাম্মদ সফিকুল ইসলাম বলেন, ইতিমধ্যে জেলার শ্রীপুর উপজেলার লবণদহ নদীর দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। একইভাবে বিআইডব্লিউটিএ, নদী কমিশন এবং জেলা প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে শীতলক্ষ্যা ও বালু নদীর দখল ও দূষণের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।