দ্বীনি পরিবেশ ছাড়া দ্বীন ইসলাম পালন করা কঠিন (৩)
, ১৬ শাওওয়াল শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ হাদী আশার, ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ খ্রি:, ১৩ বৈশাখ, ১৪৩১ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) আপনাদের মতামত
আবার মুসলমানদের গরুর গোশত খাওয়ার বিপরীতে যদি হিন্দুদের শুকরের গোশত খাওয়ার প্রসঙ্গ আসে, তবে বলতে হয়- মুসলমানরা শুকরের গোশত খায় না, নাপাক হওয়ার কারণে, ঘৃণা থেকে। অপরদিকে হিন্দুরা গরুর গোশত খায় না, গরুকে দেবতা মনে করে, সম্মানের দিক থেকে। মুসলমানদের শুকর না খাওয়া এবং হিন্দুদের গরু না খাওয়া তাই এক মাপকাঠিতে কখনই মাপা যাবে না। দুটোর তুলনা করা এক ধরনের লজিকাল ফ্যালাসি বা কুযুক্তি। আবার মুসলমানরা যে কারণে শুকরের গোশত খায় না, সে একই কারণে কুকুরের গোশতও খায় না। কারণ উভয়টাই নাপাক। এখন মুসলমানদের বিরোধীতা করতে গিয়ে কি তবে হিন্দুরা কুকুরের গোশত খাওয়া শুরু করবে ? তা তো হয় না।
মূলতঃ গরুর গোশতের মাধ্যমে মুসলমানদের জন্য একটা পৃথক খাবারের সংস্কৃতি বা দ্বীনি পরিবেশ ছড়ায়, তাই সেখানেই বাধা আসে। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ ধরনের বাধা রূখতে তাই প্রচুর পরিমানে গরুর গোশত খাওয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন করা উচিত। বর্তমানে হোটেল রেস্তোরাগুলো গরুর গোশত তৃপ্তি ভরে খাওয়া যায় না। এক্ষেত্রে বিভিন্ন আবাসিক হল, হোস্টেলে গরু জবাই করে ‘গরুর গোশত খাওয়ার অনুষ্ঠানের আয়োজন’ করে গরুর গোশতের নানা প্রকার তরকারী বা কাবাব তৈরী করতে পারলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের ব্যাপক চাহিদার জোগান দেয়া সম্ভব। দেখা যাবে শিক্ষার্থীরা সবাই গরুর নানা ধরনের রেসিপি গ্রহণ করছে। এতে যারা আয়োজন করবে, তারাও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
আবার দেখবেন খাসীর গোশত শব্দটা ধিরে ধিরে বিলুপ্ত হচ্ছে। এর বদলে ‘মাটন বিরিয়ানী’ ‘মাটন রোস্ট’ ‘মাটন রেজালা’ শব্দগুলো ব্যাপক ছড়িয়েছে। আমাদের দেশে আগে প্রচলিত ছিলো খাসীর গোশত, খাসীর বিরিয়ানী, খাসীর রোস্ট, খাসীর রেজালা শব্দগুলো। খাসী বা বকরী শব্দগুলোর পরিবর্তে হঠাৎ মাটন শব্দটা বাংলাদেশে ঢুকেছে কলকাতার সংস্কৃতি থেকে। আমাদের এ অঞ্চলের মুসলমানরা খাসী বা বকরী শব্দ বেশি ব্যবহার করে, কিন্তু সে শব্দগুলোতে ইসলামী সুবাস থাকায় কলকাতায় সেটা ব্যবহার হয় না। কলকাতায় ছাগলের গোশতকে মাটন বলে প্রচার করে। যদিও ফরাসী মাটন শব্দের অর্থ ভেড়ার গোশত। আর শেভন মানে ছাগলের গোশত। কিন্তু কলকাতায় মাটন বলতে ছাগলের গোশত বোঝানোয় এখন সেই সংস্কৃতি বাংলাদেশেও অনুপ্রবেশ করছে।
যাই হোক, মূল কথা হলো, দ্বীনি পরিবেশের বিস্তার হয়, দ্বীনি জজবা তৈরী হয়, এমন কাজ, দিবস, কথা বার্তা, ভাষা, খাবার বর্তমান সমাজে চালু করা খুব জরুরী। অপরপক্ষে বে-দ্বীনি পরিবেশ বিস্তার হয় এমন কাজ, দিবস, কথা-বার্তা, ভাষা, আচরণ ও খাবার প্রচলনে বাধা দেয়া উচিত। কারণ এগুলোর মাধ্যমে ধীরে ধীরে মুসলমানদের স্বকীয়তা নষ্ট হয় এবং মুসলমানরা দ্বীনি সংস্কৃতি বদলে কুফরী সংস্কৃতির দিকে ধাবিত হয়।
-মুহম্মদ গোলাম ছামদানী (লেখক ও গবেষক)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হোটেল, রেস্তোরা, ক্যান্টিনে গরুর গোশত বন্ধ করতে চাওয়া ব্যক্তিদের কিছু প্রশ্নের উত্তর (১)
০৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আত্মহত্যাকে ‘স্বেচ্ছামৃত্যু’ বলে প্রচার এক ধরনের শব্দ সন্ত্রাস
০৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নতুন কাজ শুরু করতে মুবারক নিসবত তালাশ করা মুসলমানদের লক্ষণ
০৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি: রাষ্ট্র পদ্ধতির যৌক্তিকতা (২)
০১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রসঙ্গ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি: রাষ্ট্র পদ্ধতির যৌক্তিকতা (১)
৩০ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
নারীবাদের জন্ম হয়েছে পশ্চিমা ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতায় (২)
২৮ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
নারীবাদের জন্ম হয়েছে পশ্চিমা ব্যবসায়ীদের পৃষ্ঠপোষকতায় (১)
২৭ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
দ্বীনি পরিবেশ ছাড়া দ্বীন ইসলাম পালন করা কঠিন (২)
২৫ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
দ্বীনি পরিবেশ ছাড়া দ্বীন ইসলাম পালন করা কঠিন (১)
২৪ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
রোযায় স্কুল বন্ধ নিয়ে হাইকোর্টে রিট ও কিছু কথা (৩)
২৩ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
রোযায় স্কুল বন্ধ নিয়ে হাইকোর্টে রিট ও কিছু কথা (২)
২২ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
রোযায় স্কুল বন্ধ নিয়ে হাইকোর্টে রিট ও কিছু কথা (১)
২১ এপ্রিল, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)