নতুন নতুন উন্নয়ন প্রকল্পের অজুহাতে বাড়ছে সবকিছুর দাম
আসলে কি এগুলো উন্নয়ন প্রকল্প, নাকি শোষণ প্রকল্প? জানুন, যেভাবে একটি দেশ ভুয়া উন্নয়নের ফাঁদে জড়িয়ে যায়..(৩)
, ০৬ শা’বান শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ২৯ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ১৩ই ফাল্গুন, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মন্তব্য কলাম
ভুয়া উন্নয়ন পরিসংখ্যান তৈরি ও ঋণের লোভনীয় ফাঁদ এগুলোর পুরোটাই একটি বিশেষ আর্ন্তজাতিক অমুসলিম-বিধর্মী চক্রের কাজ। এসব কাজের বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পর্কে ‘জন পার্কিন্স’ নামে তাদেরই এক এজেন্ট ‘গর্ব’ করে কয়েকটি বিষয় প্রকাশ করে বই লিখেছে। এই অর্থনৈতিক ঘাতকের বই থেকে কিছু অংশ তুলে ধরা হলো। যে অংশগুলো পড়লে বুঝা সহজ হবে- কিভাবে ভুয়া উন্নয়নের হিসাব-নিকাশের ফেরে একটি দেশকে জড়ানো হয় ও ঋণের জালে আবদ্ধ করা হয়। বইটির নাম- ঈড়হভবংংরড়হং ড়ভ ঊপড়হড়সরপ ঐরঃসধহ।
(৩য় অংশ)
“...আমিও আমার মত অর্থনৈতিক ঘাতকদের কর্মকা-ের কারণে এককালের স্বর্গপুরী (ইকুয়েডর) আজ জীবন্ত নরকে পরিণত হয়েছে। আধুনিক অর্থনীতি, ব্যাংকিং ও প্রযুক্তি ইকুয়েডরকে সর্বস্বান্ত করে ছেড়েছে। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকে জ্বালানী তেলে ব্যবসায় বিস্ফোরণ ঘটার পর ইকুয়েডরের দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ৫০% থেকে ৭০%-এ বৃদ্ধি পেয়েছে। বেকারের সংখ্যা ১৫% থেকে বেড়ে ৭০%-এ দাঁড়িয়েছে। রাষ্ট্রীয় ঋণের পরিমাণ ২৪ কোটি ডলার থেকে উন্নীত হয়েছে ১ হাজার ৬শ কোটি ডলারে। অন্যদিকে প্রাকৃতিক সম্পদের উপরে দরিদ্রতম জনগোষ্ঠীর মালিকানার পরিমাণ ২০% থেকে নেমেছে ৬%-এ। দুর্ভাগ্যজনকভাবে এক্ষেত্রে ইকুয়েডর একক কোন উদাহরণ নয়। আমরা অর্থনৈতিক ঘাতকরা যে ক’টি দেশকে বিশ্ব সাম্রাজ্যের অন্তর্ভূক্ত করেছি সে ক’টি দেশই এহেন দুর্দশার শিকার হয়েছে। তৃতীয় বিশ্বের মোট ঋণের পরিমাণ হচ্ছে ২ লাখ ৫০ হাজার কোটি ডলার। এর বার্ষিক সুদের পরিমাণ হচ্ছে ৩০ হাজার ৫শ কোটি ডলার। তৃতীয় বিশ্বের সকল দেশ সম্মিলিতভাবে স্বাস্থ্য ও শিক্ষাখাতে প্রতি বছর যে অর্থ ব্যয় করে তার চেয়ে এই অংক অনেক বেশী।
এমনকি প্রতি বছর তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো মোট যে পরিমাণ অর্থ বৈদেশিক সাহায্য রূপে পেয়ে থাকে তার চেয়ে এই অংক ২০ গুণ বেশী। বিশ্বের অর্ধেক লোক প্রতিদিন মাথাপিছু ২ ডলারের চেয়ে কম অর্থ আয় করত। গত শতাব্দীর সত্তরের দশকেও এই জনগোষ্ঠীর আয় একই রকম ছিল। অন্যদিকে তৃতীয় ধনাঢ্যতম ১% ব্যক্তিবর্গ অর্থ ও জমির ৭০%-৯০% এর মালিকে পরিণত হয়েছে। অবশ্য একেক দেশে এই পরিসংখ্যান একেক রকম।
ইকুয়েডরের বাঁধটি পাস্তাজা নদীর স্রোতগুলোকে ঘুরিয়ে নিয়ে গেছে পর্বত খুঁড়ে তৈরি করা বিশাল সব সুড়ঙ্গের ভেতর দিয়ে। আর এ থেকে তৈরি হচ্ছে পানিবিদ্যুৎ। বাঁধটির আনুষ্ঠানিক নাম হচ্ছে ১৫৬ মেগাওয়াট আগোয়ান পানিবিদ্যুৎ প্রকল্প। এর তৈরি বিদ্যুতে যে সব শিল্প পরিচালিত হয় সেসব শিল্পের মালিক পরিবারগুলো প্রতিনিয়তই ধনী হচ্ছে। কিন্তু পাস্তাজা নদীর দু’তীরে বসবাসকারী গোত্রগুলোর জন্য বাঁধটি অভিশাপে পরিণত হয়েছে। ইকুয়েডরে আমি ও আমার সতীর্থ অর্থনৈতিক ঘাতকদের কর্মকা-ের সুবাদে এ ধরনের বহু প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্পের কারণেই দেশটি বিশ্ব সাম্রাজ্যের সদস্যে পরিণত হয়েছে।
এসব প্রকল্পের কারণেই ইকুয়েডর পুরোপুরিভাবে ডুবে গেছে বৈদেশিক ঋণে। দেশটির বার্ষিক বাজেটের সিংহভাগ এখন ব্যয় হয় ঋণ পরিশোধ খাতে। অথচ এই অর্থ দিয়ে দেশটি দারিদ্রসীমার নিচে অবস্থানকারী নিজ জনগোষ্ঠীর সার্বিক উন্নয়নমূলক কর্মকা- পরিচালনা করতে পারত। বৈদেশিক ঋণভার কমানোর লক্ষ্যে ইকুয়েডর নিজ বনাঞ্চল আন্তর্জাতিক জ্বালানী প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে বিক্রি করছে। দেশটির আমাজান অঞ্চলের পেট্রোলিয়াম সম্পদ মধ্যপ্রাচ্যের পেট্রোলিয়াম সম্পদের সাথে পাল্লা দেয়ার ক্ষমতা রাখে। তাই দীর্ঘদিন আগেই অর্থনৈতিক ঘাতকগণ ইকুয়েডরের উপরে তাদের শ্যেন দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছিল। ঋণভারে জর্জরিত ইকুয়েডর এখন বাধ্য হচ্ছে বিশ্ব সাম্রাজ্যকে একের পর এক তেলক্ষেত্র ইজারা দিতে।...”
পাঠক! লেখাটির এই অংশে পার্কিন্স তুলে ধরেছে ইকুয়েডর নামক দেশটি কিভাবে সাম্রাজ্যবাদীদের শিকলে আবদ্ধ হয়ে ঋণের মধ্যে ডুবে গেছে তার একটি খন্ডচিত্র।
আমাদের এই বাংলাদেশও যে তাদের থাবা থেকে মুক্ত নয় সেটা দেখার জন্য শুধু কেবল সাম্প্রতিককালে চলমান কয়েকটি প্রকল্প দেখলেই বুঝা সহজ। যেমন- রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প, রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র, মেট্রোরেল, ফ্লাইওভার ইত্যাদি।
এসব প্রকল্পের সাথে যারা জড়িত অর্থ্যাৎ সাম্রাজ্যবাদীরা যে সকল এদেশী দালালদের মাধ্যমে এগুলো করাচ্ছে তারা দিনের পর দিন ফুলেফেঁপে উঠছে, বিপরীতে এসব প্রকল্পের ঋণ ও সুদ পরিশোধ করতে গিয়ে বাড়ানো হচ্ছে দ্রব্যমূল্যের দাম, বাড়ানো হচ্ছে ট্যাক্স।
-মুহম্মদ আল জাবির।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সম্মানিত দ্বীন ইসলামে কী প্রকৃতির মুহব্বত ও ঋতু প্রিয়তার কথা নেই? নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে শীতকাল যে কত প্রিয় তা অনেকেরই অজানা। শীতে আছে গণীমত (পর্ব -১)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সন্ত্রাসবাদ নয়; জিহাদী যোগ্যতা অর্জন করা পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ অনুযায়ী ফরয। ৯৮ ভাগ মুসলমান অধ্যুষিত দেশে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় সব নাগরিকের জন্য সামরিক প্রশিক্ষণ বাধ্যতামূলক করতে হবে। উন্নত প্রশিক্ষন, যুদ্ধকৌশল, সামরিক সক্ষমতা এবং আন্তর্জাতিক র্যাঙ্কিংয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী এখন সাফল্যের শীর্ষে। সরকারের উচিত- দেশের মর্যাদা বুলন্দ ও দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ত্বকে সমুন্নত রাখতে সেনাবাহিনীর প্রতি সকল প্রকার পৃষ্ঠপোষকতা নিশ্চিত করা।
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম এর তথ্যানুযায়ী বেনিয়া বৃটিশগুলো মুসলিম ভারত থেকে লুট করেছে ১২ হাজার লক্ষ কোটি টাকা প্রকৃতপক্ষে তারা লুট করেছে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রামপাল তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র এখনও বন্ধ করলে যা লাভ হবে চালু রাখলে তার চেয়ে অনেক বেশী ক্ষতি হবে ৫৩টি পরিবেশবাদী সংগঠনের দাবী অবিলম্বে রামপাল তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র বন্ধ করে সৌর বিদ্যুৎ কেন্দ্র করা হোক কিন্তু তাদের উপেক্ষা করে পরিবেশ উপদেষ্টা প্রমাণ করছে তার পরিবেশবাদী তৎপরতা অন্য পরিবেশবাদীদের সাথে সাংঘর্ষিক এবং তার পরিবেশবাদী প্রচারণা কার্যকলাপ আসলে দেশ ও দেশের মানুষের জন্য নয় বরং বিশেষ প্রভুর নির্দেশনায় (প্রথম পর্ব)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
জুয়ার নেশায় বুদ হচ্ছে শিশু-কিশোররা-শিক্ষার্থীরা অধিকাংশ সাইটই পরিচালিত হয় দেশের বাইরে থেকে অনলাইনে জুয়ায় ছোট ছোট বাজির টাকা দিন শেষে একটি বড় অঙ্কের অর্থ হয়ে দেশ থেকে ডলারের মাধ্যমে পাচার হচ্ছে প্রতিদিন এসব খেলা স্বাভাবিক গেমের মতো হওয়ায় প্রকাশ্যে খেলা হলেও আশপাশের মানুষ তা বুঝতে পারেন না কেবলমাত্র ইসলামী মূল্যবোধের উজ্জীবনেই জুয়া বন্ধ সম্ভব ইনশাআল্লাহ
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
গার্মেন্টসের চেয়েও বড় অবস্থানে তথা বিশ্বের শীর্ষ অবস্থানে অধিষ্ঠান হতে পারে বাংলাদেশের জাহাজ নির্মাণ শিল্প। যথাযথ পৃষ্ঠপোষকতা করলে শুধু মাত্র এ খাত থেকেই বছরে ১১ লাখ কোটি টাকা অর্জন সম্ভব ইনশাআল্লাহ। যা বর্তমান বাজেটের প্রায় দেড়গুণ আর শুধু অনিয়ম এবং সরকারের অবহেলা, অসহযোগীতা দূর করলে বর্তমানেই সম্ভব প্রায় ২ লাখ কোটি টাকা অর্জন জাহাজ নির্মাণ শিল্পের সমৃদ্ধি সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং সরকারের গাফলতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করা জনগণের জন্যও জরুরী। (২য় পর্ব)
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার রোবে, দোয়ার বরকতে- কুদরতীভাবে কমে যাচ্ছে ডলারের আধিপত্য বাংলাদেশের রিজার্ভ ডলারে রাখা উচিৎ নয়- এতে লাভ আমেরিকার মুসলিম বিশ্বে অভিন্ন মুদ্রা ব্যবস্থা বিশেষত মূল্যহীন কাগজী মুদ্রা বাদ দিয়ে সুন্নতী দিনার-দিরহাম মুদ্রা চালু করা আবশ্যক ইনশাআল্লাহ (দ্বিতীয় পর্ব)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিদেশি হাইব্রিড বীজের ফাঁদে দেশের কৃষি। হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় ফসলের জাত, ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। ফুলে-ফেঁপে উঠছে বীজ কোম্পানিগুলো।
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
মুশরিক ভারতের প্রতি লা’নত ওদের জনসংখ্যা দিন দিন নিম্নমুখী পক্ষান্তরে ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দেশ বাংলাদেশে খোদায়ী রহমত। (সুবহানাল্লাহ) বাংলাদেশে জনসংখ্যার এখন ৬৫ ভাগই কর্মক্ষম এবং জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার উর্ধ্বগামী বাংলাদেশ ভোগ করছে ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডের নিয়ামত। সুবহানাল্লাহ!
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
প্রসঙ্গ: মধ্যম আয়ের ফাঁদ এড়াতে সতর্কতা তথা মধ্যম আয়ের স্থবিরতা তাওয়াক্কুল আর তাকওয়া অবলম্বনে সব সমস্যা দূর হয়ে অচিরেই বাংলাদেশ হতে পারবে শীর্ষ সমৃদ্ধশালী দেশ ইনশাআল্লাহ
২৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
রিজওয়ানার পরিবেশবাদী প্রচারণার বিপরীতে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস স্থাপনে ইতিবাচক বার্তা এবং ইউনুসের পানি ও প্রকৃতি প্রেমের বানীর পরিবর্তে আপত্তি সত্ত্বেও একনেকে রবি ঠগ বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্প অনুমোদনে জনগণ তথা নেটিজনের মূল্যায়নটা কী?
২৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যখন কোনো দেশ যুক্তরাষ্ট্র থেকে যুদ্ধবিমান কিনে, তখন তা শুধু একটি বিমান কেনার মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে না। এর সাথে যুক্ত হয় একাধিক শর্ত, নিষেধাজ্ঞা এবং জটিল টার্মস অ্যান্ড কন্ডিশনস
২৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












