পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র হাদীছ শরীফ উনাদের আলোকে সম্মানিত যাকাত উনার আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল
, ১০ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ২৭ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ২৬ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ১০ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
১. নিছাব পরিমাণ হওয়া : গৃহপালিত পশুর যাকাত ফরয হওয়ার জন্যে নিছাব পরিমাণ পশুর মালিক হতে হবে। সাধারণভাবে উট ৫টি, গরু/মহিষ ৩০টি এবং ছাগল/ভেড়া/দুম্বা ৪০টি হলে যাকাত ফরয হয়। এ সংখ্যার কম হলে যাকাত ফরয হয় না।
২. পূর্ণ এক চন্দ্র বছর মালিকানায় থাকা : বছরে একবার গৃহপালিত পশুর যাকাত আদায় করতে হবে। আর আদায়ের সময় বাচ্চা মায়ের হিসাবের অন্তর্র্ভুক্ত হবে।
৩. ‘সায়েমা’ তথা বিচরণশীল হতে হবে : যে পশু বছরের অধিকাংশ সময় নিজেই বিচরণ করে খাদ্য গ্রহণ করে তাকে সায়েমা বলা হয়। অতএব বছরের অধিকাংশ সময় মালিক নিজে খাদ্য সংগ্রহ করে পশুকে খাওয়ালে সে পশুর উপর যাকাত ফরয নয়।
গৃহপালিত পশুর যাকাত উনার নিছাব
যে পরিমাণ পশু থাকলে সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার বিধান মুতাবিক পশুর যাকাত ফরয তাই পশুর যাকাত উনার নিছাব। সাধারণভাবে উট ৫, গরু, মহিষ ৩০ এবং দুম্বা, ছাগল, ভেড়া ৪০ সংখ্যায় পৌঁছলে উহাতে সম্মানিত যাকাত ফরয হয়। এ সংখ্যার কম হলে যাকাত ফরয হয় না।
এ প্রসঙ্গে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَبِىْ سَعِيْدٍ الْـخُدْرِىِّ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ لَيْسَ فِيْمَا دُوْنَ خَـمْسِ ذَوْدٍ صَدَقَةٌ مِّنَ الْاِبِلِ.
অর্থ : “হযরত আবূ সা’ঈদ খুদরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, পাঁচের কম সংখ্যক উটের উপর যাকাত নেই।” (বুখারী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু যাকাতিল ওয়ারক্ব : হাদীছ শরীফ নং ১৪৪৭)
সুতরাং উপরের বর্ণনা থেকে দেখা যাচ্ছে যে, উটের সংখ্যা ৫টি বা ততোর্ধ্ব হলে উটের যাকাত হবে। এর কম হলে উটের যাকাত হবে না।
আর গরুর যাকাত সম্পর্কে পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَبْدِ اللهِ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ عَنِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ فِىْ ثَلَاثِيْنَ مِنَ الْبَقَرِ تَبِيْعٌ اَوْ تَبِيْعَةٌ وَفِىْ اَرْبَعِيْنَ مُسِنَّةٌ.
অর্থ : “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসঊদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, প্রতি ৩০টি গরুর ক্ষেত্রে একটি তাবী’ (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বর্ষে পদার্পনকারী এঁড়ে বাছুর) অথবা তাবীয়া’ (১ বছর পূর্ণ হয়ে ২য় বর্ষে পদার্পনকারী বকনা বাছুর) এবং প্রতি ৪০টি গরুর জন্যে একটি মুসিন্নাহ (২ বছর পূর্ণ হয়ে ৩য় বর্ষে পদার্পনকারী বাছুর) যাকাত হিসেবে দিতে হবে।” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু মা-জা-আ ফী যাকাতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ৬২২; ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ছদাক্বতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ১৮০৪)
অন্য বর্ণনায় বর্ণিত রয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ مُعَاذِ بْنِ جَبَلٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَالَ بَعَثَنِي النَّبِىُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ اِلَى الْيَمَنِ فَاَمَرَنِـىْ اَنْ اٰخُذَ مِنْ كُلِّ ثَلَاثِيْنَ بَقَرَةً تَبِيْعًا اَوْ تَبِيْعَةً وَمِنْ كُلِّ اَرْبَعِيْنَ مُسِنَّةً وَمِنْ كُلِّ حَالِـمٍ دِيْنَارًا اَوْ عِدْلَهٗ مَعَافِرَ.
অর্থ : “হযরত মুয়ায ইবনে জাবাল রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি আমাকে ইয়েমেনে (গভর্ণর করে) প্রেরণ করলেন এবং আদেশ মুবারক দিলেন, আমি যেন প্রতি ৩০টি গরুর জন্যে একটি ২ বছরের এঁড়ে বাছুর অথবা বকনা বাছুর; প্রতি ৪০টি গরুর জন্যে একটি ৩ বছরের বাছুর (যাকাত হিসেবে) এবং প্রত্যেক প্রাপ্ত বয়সের (জিম্মী) লোকের নিকট হতে এক দীনার (স্বর্ণ মুদ্রা) অথবা একই মূল্যের মাআফির নামক কাপড় (জিয্য়া হিসাবে) আদায় করি।” (তিরমিযী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু মা-জা-আ ফী যাকাতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ৬২৩; নাসায়ী শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু যাকাতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ২৪৫০; ইবনে মাজাহ শরীফ : কিতাবুয যাকাত : বাবু ছদাক্বতিল বাক্বারি : হাদীছ শরীফ নং ১৮০৩)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনাদের প্রতি বিশুদ্ধ আক্বীদা-হুসনে যন পোষণ করা ঈমান
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৬)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার দুনিয়ার যমীনে অবস্থানকালীন সময়ে ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ যে রোযা মুবারক রাখতেন সে রোযা মুবারক মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১২ই শরীফ উনার দিনে হওয়াটা ছিলো একটি বিরল ঘটনা (১)
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহিলাদের প্রতি মহান আল্লাহ পাক উনার বিশেষ নির্দেশনা মুবারক- পর্দা পালন করা
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
খরচ করার ব্যাপারে মহান আল্লাহ পাক উনার ফায়সালা
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (৫)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু কাফির-মুশরিকরা (১)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ছবি তোলা হারাম, যা জাহান্নামী হওয়ার কারণ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
বিজাতীয় বিধর্মী তথা ইহুদী-নাছারাদেরকে অনুসরণ করা ইসলামী শরীয়তে হারাম-নাজায়িয
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
পবিত্র ‘ছলাতুল জুমুয়াহ’ উনার পূর্বে ৪ রাকায়াত সুন্নত নামায অর্থাৎ পবিত্র ‘ক্বাবলাল জুমুয়াহ’ নামায নিয়ে বাতিলপন্থিদের বিভ্রান্ত্রিকর ও মিথ্যা বক্তব্যের দলীলভিত্তিক জাওয়াব (৬)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












