পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দু‘আ বা মুনাজাত (১ম অংশ)
, ২৯ রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৫ রবি’, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রি:, ০৯ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
মুক্বাদ্দিমাহ (ভূমিকা)
اَلْحَمْدُ للهِ رَبِّ الْعَلَمِيْنَ وَالصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ عَلَى سَيِّدِ الْاَنْبِيَاءِ وَالْمُرْسَلِيْنَ وَعَلَى اَهْلِ بَيْتِهِ مُحْىِ سُنَّتِهِ الشَّيْخِ السُّلْطَانِ النَّصِيْرِ اِمَامِ الطَّرِيْقَةِ وَالْاَوْلِيَاءِ الْكَامِلِيْنَ وَاَهْلِ بَيْتِهِ الْكَرِيْمِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ اَجْمَعِيْنَ. اما بعد-
মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
ومَا خَلَقْتُ الْجِنَّ وَالْإِنْسَ إِلَّا لِيَعْبُدُونِ
অর্থ: “আমি জ্বীন ও ইনসান জাতিকে একমাত্র আমার মহাসম্মানিত ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য সৃষ্টি করেছি। ” (পবিত্র সূরা জারিয়াত শরীফ: ৫৬)
কাজেই, মানব জীবনের প্রধানতম একটি উদ্দেশ্য হলো সম্মানিত ইবাদত করা। আর এই ইবাদত উনার গুরূত্বপূর্ণ একটি অংশ হচ্ছে দু‘আ বা মুনাজাত করা।
দু‘আ বা মুনাজাত সকল ইবাদতের মূল মগজ: যেমন পবিত্র হাদীছ শরীফে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِيَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ الدُّعَاءُ مُخُّ الْعِبَادَةِ.
অর্থ: “হযরত আনাস বিন মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, দু‘আ সমস্ত ইবাদতের মূল। (তিরমিযী শরীফ, ত্বরানী শরীফ, মু’জামুল আওসাত্ব)
অথচ সম্মানিত ইবাদত উনার মূল দু‘আ বা মুনাজাত উনার নিয়ম কানুন সম্পর্কে অনেকে জানেন না। অনেকে আবার সম্মানিত মুনাজাত উনার ব্যাপারে ভিন্ন মত পোষণ করে থাকে। কোন কোন জাহিল আবার সম্মিলিত মুনাজাত করাটা বিদয়াত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। আসলে এগুলো সবই তাদের জিহালতীপূর্ণ বক্তব্য বৈ আর কিছুই নয়।
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার অন্যতম একটি নিদর্শন মুবারক হচ্ছেন দু‘আ বা মুনাজাত। আর সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার প্রতিটি বিষয় ইলিম অর্জন করা প্রত্যেক মুসলমান উনাদের জন্য ফরয।
কেননা, পবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করা হয়েছে-
طَلَبُ الْعِلْمِ فَرِيْضَةٌ عَلَى كُلِّ مُسْلِمٍ وَّمُسْلِمَةٍ
অর্থ: “প্রত্যেক মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্য সম্মানিত ইলিম অর্জন করা ফরয। ”
দু‘আ বা মুনাজাত উনার পরিচয়:
الدعاء (দু‘আ) শব্দের শাব্দিক অর্থ: চাওয়া, ডাকা, আহবান করা, আরজি পেশ করা ইত্যাদি।
সম্মানিত শরীয়ত উনার পরিভাষায়- মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট আদব উনার সহিত দু’হাতের উপরের দিকে করে মিলায়ে সীনা বরাবর রেখে বিশেষভাবে কোন কিছু চাওয়া বা মনের আরজু পেশ করাকে দু‘আ বলা হয়।
আর مناجات শব্দের আভিধানিক ও পারিভাষিক অর্থ:
مناجاتশব্দটি আরবী। যা বাবে مفاعلة এর ওযনে ناجى (নাজা) يناجى (ইউনাজী) مناجاة (মুনাজাতুন) থেকে উদ্ভতু। যার শাব্দিক অর্থ হলো- চুপে চুপে কথা বলা, একান্তে কথা বলা, গোপনে আরজী করা ইত্যাদি।
আর মুনাজাত উনার পারিভাষিক অর্থ হলো: মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে অনুনয়-বিনয়ের সাথে কিছু প্রার্থনা করা, আরজি পেশ করা, ফরিয়াদ করা।
উল্লেখ্য, শব্দ দু’টির মধ্যে অর্থগত কিছু পার্থক্য থাকলেও ব্যবহারগত দিক থেকে তেমন বেশী পার্থক্য নেই। তবে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার মধ্যে দু‘আ শব্দ মুবারক ব্যবহৃত হয়েছে।
দু‘আ বা মুনাজাতের ব্যাপারে আদেশ মুবারক:
যিনি খালিক্ব, মালিক, রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
وَقَالَ رَبُّكُمُ ادْعُوْنِىْۤ اَسْتَجِبْ لَـكُمْ.
অর্থ: “তোমাদের যিনি মহান রব তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- তোমরা আমার নিকট দু‘আ করো। (পবিত্র সূরা গাফির শরীফ: ৬০)
মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
وَإِذَا سَأَلَكَ عِبَادِي عَنِّي فَإِنِّي قَرِيبٌ ۖ أُجِيبُ دَعْوَةَ الدَّاعِ إِذَا دَعَانِ ۖ فَلْيَسْتَجِيبُوا لِي وَلْيُؤْمِنُوا بِي لَعَلَّهُمْ يَرْشُدُونَ
অর্থ: “আয় আমার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! যখন আমার বান্দারা আপনার নিকট আমার সম্পর্কে সুওয়াল মুবারক (জিজ্ঞাসা) করে, (আপনি তাদেরকে বলে দিন) আমি (সকলের) অতি নিকটেই রয়েছি, যখন সে আমাকে ডাকে অর্থাৎ আহবান করে, আমি তার ডাকে সাড়া দেই, সুতরাং তারাও যেন আমার ডাকে সাড়া দেয় এবং আমার প্রতি ঈমান আনে (অর্থাৎ বিশ্বাস স্থাপন করে)। তাহলেই তারা সঠিক পথ অর্থাৎ সম্মানিত হিদায়েত লাভ করবে। ” (পবিত্র সূরা বাকারাহ শরীফ: ১৮৬) (চলবে)
-মুহম্মদ হুসাইন নাফে’।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












