পবিত্র কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র দান করা সুন্নত, হালাল হওয়া ফরয (১)
, ২০ রবিউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ১৪ খমীছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ১৩ অক্টোবর, ২০২৫ খ্রি:, ২৯ আশ্বিন, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) মহিলাদের পাতা
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ মুবারক করেন-
فَاتَّقُوا اللَّهَ مَا اسْتَطَعْتُمْ وَاسْمَعُوْا وَأَطِيعُوا وَأَنْفِقُوا خَيْرًا لِأَنْفُسِكُمْ. وَمَنْ يُوْقَ شُحَّ نَفْسِهِ فَأُولَئِكَ هُمُ الْمُفْلِحُوْنَ )سورة تغابن-١٦(
অর্থ: তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করার মতো ভয় করো এবং (মহান আল্লাহ পাক উনার কালাম মুবারক) শ্রবণ করো ও আনুগত্য করো এবং মহান আল্লাহ পাক উনার পথে তোমাদের নিজেদের (কল্যাণের) জন্য সম্পদ ব্যয় করো। আর যারা স্বীয় নফসকে বখিলী থেকে রক্ষা করতে পারল, তারাই কামিয়াবী হাছিল করল। সুবহানাল্লাহ! (পবিত্র সূরা তাগাবুন শরীফ ১৬)
কাজেই, প্রত্যেক মুসলমান নর-নারী সকলের জন্যই এই পবিত্র আয়াত শরীফ থেকে নছীহত আবশ্যক। যতটুকু সম্ভব অর্থাৎ পুরোপুরিভাবে মহান আল্লাহ পাক উনাকে ভয় করে উনার হুকুম-আহকাম মেনে চলতে হবে এবং অকৃপণ হস্তে পরকালে নিজের বালাখানার জন্য মহান আল্লাহ পাক উনার পথে ধন-সম্পদ খরচ করতে হবে।
এছাড়া মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ رَضِيَ اللَّهُ تَعَالَى عَنْهُ أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ قَالَ اللَّهُ أَنْفِقْ يَا ابْنِ آدَمَ أُنْفِقْ عَلَيْكَ. (متفق عليه)
অর্থ: হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। নিশ্চয়ই মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি বলেন, হে আদম সন্তান! তুমি আমার রাস্তায় দান করো, তাহলে আমিও তোমাকে দান করবো। (পবিত্র বুখারী শরীফ, পবিত্র মুসলিম শরীফ)
উপরোক্ত পবিত্র হাদীছে কুদসী শরীফ দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় দান করলে তিনিও বান্দাকে দান করবেন, এতে কোনো সন্দেহ নেই। শুধু তাই নয় এই দান মহান আল্লাহ পাক তিনি দ্বিগুন বহুগুনে বৃদ্ধি করে দিবেন।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি আরো ইরশাদ মুবারক করেন-
مَثَلُ الَّذِينَ يُنْفِقُوْنَ أَمْوَالَهُمْ فِي سَبِيْلِ اللَّهِ كَمَثَلِ حَبَّةٍ أَنْبَتَتْ سَبْعَ سَنَابِلَ فِي كُلِّ سُنْبُلَةٍ مِائَةُ حَبَّةٍ، وَاللَّهُ يُضَاعِفُ لِمَنْ يَشَاءُ، وَاللَّهُ وَاسِعٌ عَلِيمٌ) .سورة البقرة ٢٦١)
অর্থ: যারা মহান আল্লাহ পাক উনার পথে তাদের ধন-সম্পদ ব্যয় করে, তাদের উদাহরণ হলো সেই শস্য দানার মতো যা থেকে গজায় বা উৎপন্ন হয় সাতটি শীষ, প্রত্যেকটি শীষে ১০০টি করে দানা (উৎপন্ন) হয়। আর মহান আল্লাহ পাক তিনি যাকে চান তাকে বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি প্রাচুর্য্যময়, সর্বজ্ঞানী। (সূরা বাকারা শরীফ: ২৬১)
অর্থাৎ বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনার পথে দান করলে মহান আল্লাহ পাক তিনি একে সাতশগুণ পযন্ত ছওয়াব দান করেন এবং বান্দার ইখলাছ অনুযায়ী তিনি আরো বহুগুণে বৃদ্ধি করে দেন। সুবহানাল্লাহ!
মূলত ধন-সম্পদ দুনিয়াবী কাজে যতটুকু খরচ করা হবে তা দুনিয়াতেই শেষ হয়ে যাবে কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার পথে যা কিছু খরচ করা হবে সেটা মহান আল্লাহ পাক উনার কাছে জমা হবে এবং পরোকালে তা হাছিল করা যাবে।
এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
مَنْ ذَا الَّذِي يُقْرِضُ اللَّهَ قَرْضًا حَسَنًا فَيُضَاعِفَهُ لَهُ أَضْعَافًا كَثِيرَةً وَاللَّهُ يَقْبِضُ وَيَبْسُطُ وَإِلَيْهِ تُرْجَعُوْنَ) سورة البقرة ۲۴۵(
অর্থ: তোমাদের মধ্যে কে আছে, যে মহান আল্লাহ পাক উনাকে কর্জে হাসানা দিবে? (যদি কেউ কর্জে হাসানা দেয়) তবে মহান আল্লাহ পাক তিনি তার জন্য সেটা বহুগুণে বৃদ্ধি করে দিবেন। মহান আল্লাহ পাক তিনিই কমিয়ে থাকেন এবং তিনিই বৃদ্ধি করেন। আর উনার নিকটই তোমরা প্রত্যাবর্তন করবে। (সূরা বাকারাহ শরীফ-২৪৫)
উল্লেখ্য, মহান আল্লাহ পাক উনাকে কর্জে হাসানা দেয়ার অর্থ হলো মহান আল্লাহ পাক উনার পথে খরচ করা। এ কথা স্বতঃসিদ্ধ যে, কেউ কারো কাছ থেকে কর্জ বা ধার নিলে সেটা ঋণদাতার মালিকানায়ই থাকে, ফলে ধারকৃত টাকা পুনরায় ঋণদাতাকে ফেরত দিতে হয়। তদ্রুপ বান্দা মহান আল্লাহ পাক উনাকে ধন-সম্পদ কর্জ দিলে অর্থাৎ উনার পথে ধন-সম্পদ খরচ করলে, সেটা দানকারীর জন্যই থাকবে। আর সে মহান আল্লাহ পাক উনার নিকট ফিরে যাওয়ার পর তিনি তার এই ধন-সম্পদ দ্বিগুণ-বহুগুণে বৃদ্ধি করে তাকে ফেরত দিবেন। সুবহানাল্লাহ! (অসমাপ্ত)
-মুহম্মদ হুসাইন নাফে’।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
মেয়েদের জন্য সবচাইতে উত্তম আমল হচ্ছে- ‘কোন পুরুষকে সে দেখবে না, কোন পুরুষও তাকে দেখবে না’
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বেমেছাল দানশীলতা মুবারক (৯)
০৭ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
তিন ধরনের লোক বেহেশতে প্রবেশ করবে না
০৬ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ফুহূশ বা অশ্লীলতার পরিণতি ও তার প্রতিকার
০৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৫ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
বদ নযর বা কুদৃষ্টি এবং তার শরয়ী আহকাম (৩)
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৪ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি কিভাবে এত ফযিলত-মর্যাদা লাভ করেছেন যে সবার থেকে অগ্রগামী হয়েছেন! (২)
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৩ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম তিনি কিভাবে এত ফযিলত-মর্যাদা লাভ করেছেন যে সবার থেকে অগ্রগামী হয়েছেন! (২)
০২ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












