পবিত্র ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারাই শবে বরাত প্রমাণিত (৩)
, ১১ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫ ১২:০০:০০ এএম ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
পবিত্র হাদীছ শরীফ নং (৪)
حَدَّثَنَا عَبْدَةُ بْنُ عَبْدِ اللهِ الْخُزَاعِيُّ ، وَمُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الْمَلِكِ أَبُو بَكْرٍ ، قَالاَ : حَدَّثَنَا يَزِيدُ بْنُ هَارُونَ ، أَخْبَرَنَا حَجَّاجٌ ، عَنْ يَحْيَى بْنِ أَبِي كَثِيرٍ ، عَنْ عُرْوَةَ ، عَنْ ام المؤمنين الثالثة سيدتنا حضرت عَائِشَةَ عليها السلام قَالَتْ فَقَدْتُ النَّبِيَّ صَلَّى الله عَليْهِ وسَلَّمَ ذَاتَ لَيْلَةٍ فَخَرَجْتُ أَطْلُبُهُ فَإِذَا هُوَ بِالْبَقِيعِ , رَافِعٌ رَأْسَهُ إِلَى السَّمَاءِ , فَقَالَ : يَا حضرت عَائِشَةُ عليها السلام أَكُنْتِ تَخَافِينَ أَنْ يَحِيفَ اللَّهُ عَلَيْكِ وَرَسُولُهُ ؟ قَالَتْ ، قَدْ قُلْتُ : وَمَا بِي ذَلِكَ وَلَكِنِّي ظَنَنْتُ أَنَّكَ أَتَيْتَ بَعْضَ نِسَائِكَ فَقَالَ إِنَّ اللَّهَ تَعَالَى يَنْزِلُ لَيْلَةَ النِّصْفِ مِنْ شَعْبَانَ إِلَى السَّمَاءِ الدُّنْيَا فَيَغْفِرُ لأَكْثَرَ مِنْ عَدَدِ شَعَرِ غَنَمِ كَلْبٍ.
অর্থ: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, এক রাতে আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে হুজরা শরীফে না পেয়ে তালাশ করতে বের হলাম। অতঃপর আমি উনাকে সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বীতে আসমানের দিকে মহাসম্মানিত নূরুল হুদা মুবারক (মাথা মুবারক) উত্তোলনরত অবস্থায় পেলাম। অর্থাৎ নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সম্মানিত জান্নাতুল বাক্বীতে দোয়া মুবারক করছিলেন। (আমাকে দেখতে পেয়ে) তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, আপনি কি এই আশংকা করছেন যে, মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাবীব মাহবূব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা আপনার প্রতি ব্যতিক্রম করবেন? উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম তিনি বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! বিষয়টা এমন নয়। তবে আমি ভেবেছিলাম, আপনি হয়তো অন্য কোন হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের হুজরা শরীফে তাশরীফ মুবারক নিয়েছেন। এরপর নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন, মহান আল্লাহ পাক তিনি মধ্য শা’বানের রাতে দুনিয়ার নিকটবর্তী আকাশে অবতরণ করেন এবং কালব গোত্রের মেষপালের পশমের চাইতেও অধিক সংখ্যক লোকের গুনাহ মাফ করে দেন। (তিরমিযী শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ৭৪৪, ইবনে মাজাহ শরীফ : পবিত্র হাদীছ শরীফ নং ১৩৮৯)
হুবহু বা কিছু শব্দের পার্থক্যে এরূপ বর্ণনা নি¤েœাক্ত কিতাবসমূহেও রয়েছে- ১. মুসনাদে আহমদ ৬/২৩৮, ২. আল মুন্তাখাব মিন মুসনাদে আব্দ ইবনে হামীদ ১/৪৩৭, ৩. আল ইবানাহ আন শরীয়াতিল ফিরক্বাতিন নাজিয়াহ ৩/২২৬, ৪. শরহুস সুন্নাহ ৪/১২৬, ৫. শুআবুল ঈমান ৫/৩৫৬, ৬. মুস্তাখরাজুত তূসী ৩/৩৮৭, ৭. শরহু উছূলি ই’তিক্বাদি আহলিস সুন্নাহ ওয়াল জামাআহ্ ৩/৪৯৬, ৮. ফাদ্বায়িলুল আওক্বাত লিল বায়হাক্বী ১/১৩০ ইত্যাদি।
এই হাদীছ শরীফখানা উনার সকল রাবী ছিক্বাহ। তবে সনদে ২টা ইনক্বিতা থাকার কারণে ইমাম বুখারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনিসহ অনেকেই এটাকে দ্বয়ীফ বলেছেন। আলবানীও এটাকে দ্বয়ীফ বলেছে। তবে হাদীছ শরীফখানা একাধিক সনদে বর্ণিত হওয়ার কারণে হাসান বা ছহীহ লিগইরিহির পর্যায় পৌঁছে গেছে। হযরত ইমাম বায়হাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি উনার ‘শুআবুল ঈমান’ কিতাবে উক্ত হাদীছ শরীফ উনার অনুরূপ একখানা হাদীছ শরীফ বর্ণনা করে বলেন-
وَلِهَذَا الْحَدِيثِ شَوَاهِدٌ مِنْ حَدِيثِ حضرت عَائِشَةَ عليها السلام وَحضرت أَبِي بَكْرٍ الصِّدِّيقِ عليه السلام وَحضرت أَبِي مُوسَى الْأَشْعَرِيِّ رضى الله تعالى عنه
অর্থ: উম্মুল মু’মিনীন আছ ছালিছাহ সাইয়্যিদাতুনা হযরত ছিদ্দীক্বাহ আলাইহাস সালাম, সাইয়্যিদুনা হযরত ছিদ্দীক্বে আকবর আলাইহিস সালাম, হযরত আবূ মূসা আশআরী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাদের থেকে বর্ণিত হাদীছ শরীফ এই হাদীছ শরীফ খানার শাহেদ। (শুআবুল ঈমান ৫/৩৫৫)
তাহলে বুঝা গেলো, উক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানা উনার পক্ষে মুতাবে’ ও শাহেদ হাদীছ শরীফ রয়ে গেছে। উছূল হচ্ছে-
والحديث الضعيف اذا تعددت طرقه ولو طريقا واحدا اخر ارتفى مجموع ذالك الى درجة الحسن وكان محتجا به
অর্থ: দ্বঈফ হাদীছ শরীফ যখন বিভিন্ন সনদে বর্ণিত হয়, এমনকি অপর একটি সনদও যদি থাকে। তাহলে ঐ সংক্রান্ত সমস্ত হাদীছ শরীফগুলোই হাসান পর্যায়ে পৌঁছে যায় এবং সেটা দলীলযোগ্য হয়ে যায়। (ক্বাওয়ায়িদ ফী উলূমিল হাদীছ ৮৭ পৃষ্ঠা)
কাজেই, উপরোক্ত পবিত্র হাদীছ শরীফখানাকে জাল বলারতো কোনো সুযোগই নেই, এমনকি দ্বঈফও নয়। বরং এই পবিত্র হাদীছ শরীফখানা হাসান পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।
-হাফিয মুহম্মদ ইমামুল হুদা।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
কাফির মুশরিকদের থেকে দূরে থাকতে এবং তাদেরকেও দূরে রাখার ব্যাপারে নির্দেশ মুবারক
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে- ফুটবল-ক্রিকেটসহ সর্বপ্রকার খেলাধুলা করা, সমর্থন করা হারাম ও নাজায়িয (২)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদের সম্মানিত ৩টি স্তর
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
আসমাউর রিজাল, জারাহ ওয়াত তা’দীল, উছুলে হাদীছ শরীফ উনার অপব্যাখ্যা করে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ উনাকে জাল বলছে ওহাবী সালাফীরা (৩)
২০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
পর্দা করা ফরজ, বেপর্দা হওয়া কবীরা গুনাহ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
হযরত আব্বাস ইবনে মিরদাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (৪)
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
প্রাণীর ছবি তোলা হারাম ও নাফরমানীমূলক কাজ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
১৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার)












