পবিত্র মসজিদ ও পবিত্র মাদরাসা সম্পর্কে ইলম (৩৩)
, ১৯ই রজবুল হারাম শরীফ, ১৪৪৪ হিজরী সন, ১৩ তাসি, ১৩৯০ শামসী সন , ১১ই ফেব্রুয়ারি, ২০২৩ খ্রি:, ২৮ই মাঘ, ১৪২৯ ফসলী সন, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) পবিত্র দ্বীন শিক্ষা
কিন্তু এই পবিত্র হাদীছ শরীফকে মসজিদ ভাঙ্গা বা স্থানান্তর বৈধ হওয়ার দলীল হিসেবে ব্যবহার করা কোনোভাবেই জায়িয হবে না। বরং হারাম-নাজায়িয ও কাট্টা কুফরী হবে। কেননা নামায পড়ার সাধারণ স্থান ও শরয়ী মসজিদ একই বিষয় নয়। নামায পড়ার সাধারণ স্থানকে প্রয়োজনে সরানো বা স্থানান্তরিত করা যায়, কিন্তু মসজিদের জন্য বরাদ্দকৃত স্থানকে কোনোভাবেই ভাঙ্গা বা স্থানান্তরিত করা জায়িয নেই। এটাই হচ্ছে মহাসম্মানিত হানাফী মাযহাব উনার সর্বস্বীকৃত মত বা ফতওয়া।
সুতরাং মেট্রো রেলের নামে হোক, নদী রক্ষার নামে হোক, রাস্তা সম্প্রসারণের নামে হোক, উন্নয়ন কর্মসূচীর নামে হোক বা যেকোনো অজুহাতেই হোক মসজিদ ভাঙ্গা বা স্থানান্তর করা কস্মিনকালেও শরীয়তসম্মত নয়; বরং তা সুস্পষ্ট হারাম ও কাট্টা কুফরীর অন্তর্ভুক্ত এবং জাহান্নামী হওয়ার কারণ। নাঊযুবিল্লাহ!
{দলীলসমূহঃ (১) তবারানী শরীফ (২) বায়হাক্বী শরীফ (৩) মাজমাউয যাওয়ায়িদ (৪) জামিউল কাবীর (৫) জামিউছ ছগীর (৬) ফতহুল বারী (৭) ইরশাদুল ক্বারী (৮) মুসতাদরাকে হাকিম (৯) ফতহুল কাবীর (১০) ইবনে খুযাইমাহ (১১) মাওসূআতুল ফিকহিহয়্যাহ (১২) মুসনাদে আযহারী (১৩) মিরআতুল মাফাতীহ (১৪) মুসলিম শরীফ (১৫) মিশকাত শরীফ (১৬) মিরকাত শরীফ (১৭) ফতহুল মুলহিম (১৮) কান্যুল উম্মাল (১৯) আল্-ফিরদাউস (২০) জামিউল আহাদীছ (২১) নাইলুল আওতার (২২) তারগীব-তারহীব (২৩) মুসনাদে শিহাব (২৪) আবূ ইয়া’লা (২৫) তাফসীরে আহকামুল কুরআন লিল্ জাসসাস (২৬) তাফসীরে কুরতুবী (২৭) তাফসীরে তাবারী (২৮) তাফসীরে বায়দ্ববী (২৯) তাফসীরে রুহুল মা‘য়ানী (৩০) তাফসীরে রুহুল বায়ান (৩১) তাফসীরে ইবনে কাছীর (৩২) তাফসীরে দুররে মানছূর (৩৩) তাফসীরে জালালাইন (৩৪) তাফসীরে কামালাইন (৩৫) তাফসীরে মাযহারী (৩৬) তাফসীরে কবীর (৩৭) ফতওয়ায়ে শামী (৩৮) দূরারুল হুক্কাম (৩৯) দূররুল মুখতার (৪০) বাহ্রুর রায়িক (৪১) ফতওয়ায়ে আলমগীরী (৪২) মাজমুয়ায়ে ফতওয়া-আব্দুল হাই লখনৌবী (৪৩) ফতওয়ায়ে দারুল ইফতাহ্্ মিছর, (৪৪) ফতওয়ায়ে দেওবন্দ, (৪৫) ইমদাদুল ফতওয়া (৪৬) লুগাতুল কুরআন (৪৭) লুগাতুল আহাদীছ (৪৮) লিসানুল আরব (৪৯) মিছবাহুল লুগাত (৫০) আল-মুনজিদ ইত্যাদি}
বিভিন্ন অজুহাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙলে এর গুনাহের দায় কি এলাকাবাসী ও মুছুল্লীদের উপর বর্তাবে?
জওয়াব: হ্যাঁ, অবশ্যই বিভিন্ন অজুহাতে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙলে এর গুনাহের দায় যারা ভাঙ্গবে এবং যারা সহযোগীতা ও সমর্থন করবে তারাসহ এলাকাবাসী ও মুছুল্লী সকলের উপর বর্তাবে।
কারণ, এলাকাবাসী ও মুছুল্লী সকলে মিলে যদি সর্বশক্তি দিয়ে জোড়ালো প্রতিবাদ করে, তাহলে কারো পক্ষে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গা কস্মিনকালেও সম্ভব নয়।
স্বাভাবিকভাবে কারো ঘর-বাড়ি যদি কেউ ভাঙতে আসে, তাহলে সে তার সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বাধা প্রদান করে এবং মামলা-মুকাদ্দামা করে। যদি তাই হয়, তাহলে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক হচ্ছেন যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক। এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ঘর মুবারক তথা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক যদি কেউ ভাঙতে আসে, তাহলে সমস্ত এলাকাবাসী ও মুছুল্লীদের জন্য ফরযে আইন হচ্ছে নিজের ঘর-বাড়ি হেফাযতের জন্য যেরূপ সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বাধা প্রদান করে থাকে এবং মামলা-মুকাদ্দামা করে থাকে, তার চেয়ে লক্ষ কোটি গুণ বেশি সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে বাধা প্রদান করা এবং আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা। এটাই ঈমানের দাবি।
কেননা, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالـٰى عَنْهُ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ اَحَبَّ اللهَ عَزَّ وَجَلَّ فَلْيُحِبَّنِـىْ وَمَنْ اَحَبَّنِـىْ فَلْيُحِبَّ اَصْحَابِـىْ وَمَنْ اَحَبَّ اَصْحَابِـىْ فَلْيُحِبَّ الْقُرْاٰنَ وَمَنْ اَحَبَّ الْقُرْاٰنَ فَلْيُحِبَّ الْمَسَاجِدَ فَاِنَّـهَا اَفْنِيَةُ اللهِ اَبْنِيَتُهٗ.
অর্থ: “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, যে ব্যক্তি মহান আল্লাহ পাক উনাকে মুহব্বত করে, সে যেন আমাকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি আমাকে মুহব্বত করে, সে যেন আমার হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তা‘য়ালা আনহুম উনাদেরকে মুহব্বত করে, সে যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে মুহব্বত করে। আর যে ব্যক্তি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র কুরআন শরীফ উনাকে মুহব্বত করে, সে যেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উনাদেরকে মুহব্বত করে। (মুহব্বতের বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারকসমূহ উত্তমভাবে তা’যীম-তাকরীমের সাথে সংরক্ষণের সার্বিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা। অর্থাৎ যাতে কেউ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক ভাঙ্গতে না পারে বা কোনো প্রকার ক্ষতি করতে না পারে এবং মুছুল্লীদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মসজিদ মুবারক কেন্দ্রিক কোনো ইবাদতে বিঘœ সৃষ্টি করতে না পারে। সুবহানাল্লাহ!)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
হযরত আবদুল্লাহ ইবনে সালাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যাকাত সম্পর্কিত আহকাম, মাসায়িল ও ফাযায়িল (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
পর্দা পালন করা পুরুষ-মহিলা সবার জন্য ফরজ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
যিনি খালিক্ব মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মহাসম্মানিত হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে মুহব্বত মুবারক করা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসীর জন্য ফরযে আইন
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ উনাদের আলোকে ছিরাতুল মুস্তাক্বীম উনার ছহীহ তাফসীর- ০১
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যেখানে প্রাণীর ছবি থাকে, সেখানে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেন না
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র ওয়াজ শরীফ
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যা খাওয়া হারাম করা হয়েছে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
ইবলিসের পরে দ্বিতীয় উলামায়ে সূ হলো বালয়াম বিন বাউরা
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
পবিত্র ক্বাবলাল জুমুআহ্, বা’দাল জুমুআহ্ এবং সুন্নাতুল ওয়াক্ত নামায উনার শরঈ আহকাম (৪)
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার)












