পবিত্র রমজান শরীফে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে কিছু কথা
, ২১ শাবান শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৪ আশির, ১৩৯১ শামসী সন , ০৩ মার্চ, ২০২৪ খ্রি:, ১৯ ফাল্গুন, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) আপনাদের মতামত
আসলে অন্য পেশার লোক আর শিক্ষার্থী এক নয়। অধিকাংশ পেশাজীবি মানুষকে নতুন কিছু শিখতে হয় না। পুরাতন ফ্রেমে ফেলে তার কাজ চালিয়ে নিতে পারে। কিন্তু একজন শিক্ষার্থীকে প্রতিনিয়ত তার ব্রেনকে নতুন নতুন জিনিসের সাথে পরিচিত করতে হয়, এটা অনেক জটিল কাজ। আপনি শিক্ষার্থী ভিন্ন প্রাপ্ত বয়স্ক কোন লোককে যদি এ কাজটি দেন, তবে দেখবেন প্রায় ৯৯.৯৯% মানুষ অস্বীকৃতি জানাবে, কেউ রাগ করবে, কেউ শুনতে চাবে না, অধিকাংশ মাথায় ঢুকাবে না। পড়ালেখার দিকে তাকাবেই না।
একজন বয়স্ক মানুষ স্বাভাবিক অবস্থায় যেখানে মাথা খাটিয়ে নতুন কিছু শিখতে চায় না, সেখানে একজন শিশু শিক্ষার্থী অনায়াসে প্রতিনিয়ত নতুন নতুন শিখছে ও পড়ছে। এজন্য তার শারীরিক ও মানসিক সাপোর্ট খুব জরুরী।
আমাদের সমস্যা হচ্ছে, আমরা শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমকে এক ফ্রেমে ফেলে দেই, দুইটা বিষয়ের পার্থক্য বুঝতে চাই না। রোযার মাসে একজন শিক্ষার্থীকে জোর করে ক্লাসে বসিয়ে রাখা যাবে, কিন্তু তার মনোযোগ পাওয়াটা আসলে সত্যিই কঠিন। এজন্য দেখবেন- অধিকাংশ শিক্ষক শিক্ষার্থীদের রমজান শরীফে ক্লাস নেয়ার বিপক্ষে। শিক্ষকদের বক্তব্য হচ্ছে, রমজান শরীফ মাসে শিক্ষার্থীদের মনোযোগ কম থাকে। আর যখন কোন শিক্ষার্থীর মনোযোগ থাকে না, তখন তার উপর পড়ালেখা চাপিয়ে দেয়া এক প্রকার মানসিক নির্যাতন এবং সেটা তার মাথাও ঢুকে না।
আসলে বাংলাদেশের নীতি নির্ধারক মহলে শিশুদের মনস্তাত্ত্বিক বিষয় নিয়ে কতটুকু গবেষণা হয়, তা চিন্তার বিষয়। দেখবেন, একবার তারা বাচ্চাদের জেএসসি-পিএসসি পরীক্ষা দিয়ে ভরিয়ে ফেলছে, আবার নীতি ১৮০ ডিগ্রি ঘুরিয়ে সব ক্লাসের পরীক্ষা তুলে দিচ্ছে। তারাই এক মুখে বলছে, বাচ্চাদের কোন চাপ দেয়া যাবে না, আবার রমজান শরীফ আসলে বার্ষিক পঞ্জিকা সংশোধণ করে ১৫ রোযা পর্যন্ত ক্লাস ফেলাচ্ছে। তারা মুখে বলছে, তারা নাকি ইউরোপের শিক্ষা ব্যবস্থা আমদানি করেছে, আবার বলছে, রোযায় ১ মাস ক্লাস বন্ধ থাকলে নাকি শিক্ষার্থীরা পড়ালেখা ভুলে যাবে। অথচ ইউরোপের অনেক রাষ্ট্রে বাচ্চাদের স্কুল একটানা এক থেকে তিন মাস পর্যন্ত বন্ধ থাকে, তখন তাদের পড়ালেখা নষ্ট হয় না?
যেমন- ইতালির শিক্ষার্থীরা শুধু গ্রীষ্মকালীন ছুটি কাটায় ৩ মাসের বেশি, গ্রীস-পর্তুগালে ৩ মাস থাকে গ্রীষ্মকালীন ছুটি, ফিনল্যান্ড, হ্যাঙ্গেরী, স্পেনে থাকে আড়াই মাস, জার্মানি, ডেনমার্ক ও যুক্তরাজ্যের শিক্ষার্থীরা দেড় মাসের গ্রীষ্মকালীন ছুটি পায়। এছাড়া ক্রিসমাসসহ খ্রিষ্টান ধর্মীয় ছুটি তো আছেই। তাই টানা এক মাস পড়ালেখা থেকে দূরে থাকলে বাচ্চাদের পড়ালেখা শেষ হয়ে যাবে, এই কথা আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত না।
-রোকনুজ্জামান।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
স্কুলে ৫ ঘণ্টার পরীক্ষা নিয়ে কিছু কথা
১৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
আবর্জনা যখন সম্পদ
১৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
বাংলাদেশীদের শেকড় : পবিত্র দ্বীন ইসলাম নাকি মুশরিকি? (৩)
১৭ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
বাংলাদেশীদের শেকড় : পবিত্র দ্বীন ইসলাম নাকি মুশরিকি? (২)
১৬ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
বাংলাদেশীদের শেকড় : পবিত্র দ্বীন ইসলাম নাকি মুশরিকি? (১)
১৫ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
গরু গোশতের দাম কমাতে বয়কট কি সমাধান?
১৪ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নিরাপত্তা বাহিনী (৪)
১৩ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নিরাপত্তা বাহিনী (৩)
১২ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নিরাপত্তা বাহিনী (২)
১১ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে নিরাপত্তা বাহিনী (১)
১০ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
সুখী দেশের তালিকার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? (২)
০৯ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
সুখী দেশের তালিকার গ্রহণযোগ্যতা কতটুকু? (১)
০৮ মে, ২০২৪ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার)