সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ উনার সম্মানার্থে অনন্তকালব্যাপী আয়োজিত বিশেষ মাহফিলে আজিমুশ্বান নছীহত মুবারক:
পরীক্ষা সবাইকে কম-বেশী করা হবে, কেউ পরীক্ষা হতে খালি থাকবে না
, ০৯ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ৬ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ৫ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ২১ আষাঢ়, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) মহিলাদের পাতা
আল ইহসান ডেস্ক:
প্রতিদিনের ন্যায় পবিত্র সুন্নতী জামে মসজিদে অনন্তকালব্যাপী জারীকৃত সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আইয়াদ শরীফ উনার সম্মানে বিশেষ মাহফিল মুবারক অনুষ্ঠিত হয়। বিগত ৭ই মুহররমুল হারাম শরীফ ১৪৪৭ হিজরী সাইয়্যিদুনা মামদুহ হযরত মুরশিদ কিবলা আলাইহিস সালাম তিনি বাদ ইশা কুল কায়িনাতের সকলের উদ্দেশ্যে বিশেষ নছীহত মুবারক করেন।
শুরুতে তিনি মাদরাসায় বিভিন্ন বিষয়ে দায়িত্বশীল উনাদের দায়িত্বের তদারকী বিষয়ে নছীহত মুবারক করে বলেন- কাজে গাফলতি করলে তা আমানতের খিয়ানত হবে। একই সাথে এটি মিথ্যা প্রতারণা ধোঁকা যেমন হবে গাফলতির সাথে করা কাজের বিনিময়ে যা গ্রহণ করা হয় সেটাও হারাম হবে। বান্দা বান্দী জিন ইনসানের জন্য সবচাইতে বড় ত্রুটি হলো গাফলতির রোগ। মহান আল্লাহ পাক উনার হক্ব আদায় করা যেমন ফরজ; হুক্কুল ইবাদ আদায় করাও ফরজ। যেকোন প্রতিষ্ঠানেই আমানত রক্ষা করা ফরজ, মাদরাসায়তো আরো বেশী ফরজ।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- যেকোন কাজ মুহব্বতে নিজ দায়িত্বেই করতে হয়। মুহব্বত থাকলে সব জিনিস সহজ হয়। মুহব্বত থাকলে তিতা জিনিস মিষ্টি লাগে। দুনিয়ার চিন্তায় সারাদিন মশগুল থাকলে কাজ করবে কিভাবে। তাকওয়া অবলম্বন করলে যে কুদরতী ফায়সালা হবে সেটা মানুষ বিশ্বাস করে না। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- এমন একটা আয়াত শরীফ আছে, সেটা যদি মানুষ দৃঢ়চিত্তভাবে ধারণ করতো তবে সেটাই তার জন্য যথেষ্ট ছিলো। হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম উনারা জানতে চাইলেন, ইয়া রাসুলল্লাহ, হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সেটি কোন আয়াত শরীফ? তখন তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যে ব্যক্তি হাকীকী মুত্তাকী হবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে দুনিয়া থেকে বের করে দিবেন অর্থাৎ তার অন্তর থেকে দুনিয়ার মুহব্বত বের করে দেয়া হবে, তাকে এমন রিজিক দান করবেন, যা সে কল্পনাও করতে পারবে না। যে মহান আল্লাহ পাক উনার উপর ভরসা করে তার জন্য মহান আল্লাহ পাক তিনিই যথেষ্ট।’ অন্য আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- ‘যদি তুমি মনে করো তোমার রিজিক সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে, তাহলে তোমার যা আছে সেখান থেকেই তুমি মহান আল্লাহ পাক উনার রাস্তায় খরচ করো, মহান আল্লাহ পাক তিনি অতিসত্ত্বর তোমাকে স্বচ্ছল করে দিবেন।’ আরেক আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- ‘যদি জমিনবাসী ঈমান আনতো, খালিছভাবে মুত্তাকী হতো, তাহলে আমি তাদের জন্য আসমান ও জমিনের সব বরকত খুলে দিতাম।’ সুবহানাল্লাহ! খালিস ঈমান আনতে পারলে, মুত্তাকী হতে পারলে মহান আল্লাহ পাক তিনি নিজেই বান্দার সবকিছুর জিম্মা নিবেন।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- বরকতের রাস্তার শেষ নাই। মানুষ আমানত খিয়ানত করে। হক্কুল ইবাদ নষ্ট করে তাহলে কিভাবে রহমত বরকত হাসিল করবে। প্রত্যেকের অন্তরে যে জিনিসটা রয়েছে সেটাই প্রকাশ হয়। যার মধ্যে যে ত্রুটিটা প্রাধান্য পাবে সেই ছুরতটাই ধারণ করবে। মানুষ চিন্তা করে কোন ফায়সালা করতে পারবে না। সে যদি মুত্তাকি হয় খালিছ ঈমানদার হয় তখন কুদরতি ফায়সালা হবে। যার জন্য যেটা নির্দিষ্ট সেটা তার কাছে পৌঁছবেই। পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে রয়েছে- নিশ্চয় রিজিক বান্দাকে এমনভাবে তালাশ করে যেভাবে মৃত্যু তাকে তালাশ করে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- অনেক জিন ইনসান আছে যারা জাহান্নামে যাবে, এদের অন্তর আছে কিন্তু বুঝবে না, চোখ আছে দেখবে না, কান আছে শুনবে না। এরা শুনে না, দেখে না, অনুভবও করতে পারে না। মানুষের বয়স বাড়ে আয়ুটা কমে। এসব বিষয় সবার ফিকির করা উচিত। পবিত্র কুরআন শরীফ ও হাদীস শরীফ উনাদের মধ্যে সবই বলা হয়েছে, এখন কেউ যদি পালন না করে তাহলে তো করার কিছুই নাই। পবিত্র হাদীস শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে- ‘মৃত্যু আসার আগে তাড়াতাড়ি তওবা করো।’ মালাকুল মউত নাযিল হবার আগেই মুত্যুর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করো। যেকোন জিনিস হাসিল করতে হলে তার যাবতীয় বিষয়গুলো ঠিক করে নিতে হবে। আদব আকিদা হুসনে যনে ত্রুটি থাকার কারনে মানুষ কামিয়াবী হাসিল করতে পারেনা।
সাইয়্যিদুনা হযরত সুলতানুন নাছীর আলাইহিস সালাম তিনি বলেন- মানুষ নেয়ামত চায়, মুহব্বত চায়, মারিফাত চায়, কিন্তু কাজতো করেনা, তাহলে সেগুলো পাবে কিভাবে। মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন- ‘নিশ্চয়ই আমি বান্দাদেরকে পরীক্ষা করবো ভয় দিয়ে, ক্ষুধা দিয়ে, মাল ও জানের ঘাটতি করে, ফল ফসলের ক্ষতি করে।’ এসব পরীক্ষায় যারা উত্তীর্ণ হতে পারবে তাদের জন্যই কামিয়াবী। নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনিও উম্মতকে পরীক্ষা করেন এবং যারা হক্কানী রব্বানী মুরশিদে কামিল উনারাও মুরিদদেরকে পরীক্ষা করেন। হযরত আউলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের জীবনী মুবারকে এমন অনেক ঘটনা রয়েছে। বহু রকম এবং বহু ভাবে উনারা মুরীদকে পরীক্ষা করতে পারেন। একটা লোক যত উপরে উঠতে চায়, তাকে সেই রকম পরীক্ষা দিয়েই উত্তীর্ণ হতে হবে। তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনাকে হাসিল করতে হলে কত রকম পরীক্ষা দিতে হবে সেটা বুঝতে হবে। শুধুমাত্র যিকির ফিকির ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করেই কামালতে পৌঁছা যাবে না। বিশুদ্ধ আকিদা হুসনে যন ও মুহব্বতের সাথে যিকির ফিকির ছোহবত মুবারক ইখতিয়ার করলেই কামিয়াবী হাসিল করা যাবে। এজন্য কামিল শায়িখ উনার মুরীদ হয়ে উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাসিল করে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুজুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সন্তুষ্টি মুবারক হাসিল করতে হবে। তাহলেই মহান আল্লাহ পাক উনার মুহব্বত মারিফাত সন্তুষ্টি মুবারক হাসিল করা যাবে। যেকোন বিষয়ই হাসিল করতে হলে বিনা মধ্যস্থতায় কখনোই হাসিল করা যাবে না। আজকাল মানুষের অন্তরটা কঠিন হয়ে গেছে, অন্তরটা গাইরুল্লাহর মধ্যে মশগুল হবার কারণেই মানুষ কিছু হাসিল করতে পারে না। মনে রাখতে হবে, পরীক্ষা সবাইকে কমবেশী করা হবে। কেউ পরীক্ষা হতে খালি থাকবে না। মুফতে কোন জিনিস হাসিল করা যাবে না। যাকে যে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে সেটা প্রত্যেকের পালন করা উচিত বরং দায়িত্বের চেয়েও বেশী পালন করা উচিত।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












