পানি, দুধ, মধু, নাবীয শরবত ইত্যাদি পবিত্র পানীয় কাঠের পেয়ালায় পান করা মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক (৩)
, ১৯ জুমাদাল উলা শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ০৫ সাবি’ ১৩৯১ শামসী সন , ০৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ খ্রি:, ১৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) সুন্নত মুবারক তা’লীম
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার ব্যবহৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পেয়ালা মুবারক উনার চতুর্দিকে বৃত্তের ন্যায় লোহার পাত লাগানো ছিল।
অর্থাৎ কাঠের পেয়ালার চতুর্পাশে বৃত্তাকারে লোহার পাত লাগানোও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ ثَابِتٍ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ أَخْرَجَ إِلَيْنَا حَضْرَتْ أَنَسُ بْنُ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ قَدَحَ خَشَبٍ غَلِيْظًا مُضَبَّبًا بِحَدِيْدٍ فَقَالَ يَا حَضْرَتْ ثَابِتُ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ هٰذَا قَدَحُ رَسُوْلِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ.
অর্থ:- হযরত সাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একবার হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি লোহার পাত লাগানো কাঠের মোটা একটি পেয়ালা আমাদের নিকট বের করলেন। তারপর বললেন, হে হযরত সাবিত রহমতুল্লাহি আলাইহি! এ হচ্ছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র পেয়ালা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! (মুসনাদে আহমদ বিন হাম্বল-২০/২৭৭, শামায়েলে তিরমিযী-১৪৪, শরহুস সুন্নাহ- হাদীছ শরীফ নং-৩০৩৩, আল জামিউছ ছহীহু লিস সুনানি ওয়াল মাসানীদ-২৩/৭৪)
উপরোক্ত মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয় কাঠের পেয়ালায় লোহার পাত লাগানোও মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সুন্নত মুবারক।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে আরো ইরশাদ মুবারক হয়েছে-
عَنْ حَضْرَتْ عَاصِمٍ الأَحْوَلِ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ قَالَ رَأَيْتُ قَدَحَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ عِنْدَ حَضْرَتْ اَنَسِ بْنِ مَالِكٍ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ وَكَانَ قَدْ انْصَدَعَ فَسَلْسَلَهٗ بِفِضَّةٍ قَالَ وَهُوَ قَدَحٌ جَيِّدٌ عَرِيْضٌ مِنْ نُضَارٍ قَالَ قَالَ حَضْرَتْ أَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ لَقَدْ سَقَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فِيْ هٰذَا الْقَدَحِ أَكْثَرَ مِنْ كَذَا وَكَذَا
قَالَ وَقَالَ حَضْرَتْ ابْنُ سِيْرِيْنَ رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ إِنَّهٗ كَانَ فِيْهِ حَلْقَةٌ مِنْ حَدِيْدٍ فَاَرَادَ حَضْرَتْ اَنَسٌ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ أَنْ يَجْعَلَ مَكَانَهَا حَلْقَةً مِنْ ذَهَبٍ أَوْ فِضَّةٍ فَقَالَ لَهٗ حَضْرَتْ أَبُوْ طَلْحَةَ رَضِىَ اللهُ تَعَالٰى عَنْهُ لَا تُغَيِّرَنَّ شَيْئًا صَنَعَهٗ رَسُوْلُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَتَرَكَهٗ.
অর্থ:- হযরত আসিম আহওয়াল রহমতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি হযরত আনাস ইবনে মালিক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার কাছে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কর্তৃক ব্যবহৃত একটি পেয়ালা দেখেছি। সেটি ফেটে গিয়েছিল। এরপর তিনি তা রূপা দিয়ে জোড়া দেন। বর্ণনাকারী হযরত আসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, সেটি ছিল উৎকৃষ্ট, চওড়া ও নুযর কাঠের তৈরি। হযরত আসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছেন, আমি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে এ পেয়ালায় বহুবার পানি পান করিয়েছি।
হযরত আসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত ইবনু সীরীন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেছেন- পেয়ালাটিতে বৃত্তাকারে লোহার পাত বসানো ছিল। তাই হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি ইচ্ছা করেছিলেন, লোহার বৃত্তের জায়গায় স্বর্ণের বা রূপার একটি বৃত্ত বসাতে। তখন হযরত আবূ তালহা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনাকে বললেন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি যেভাবে বানিয়েছেন, তাতে কোন পরিবর্তন করবেন না; (বরং যেরূপ ছিল অনুরুপই রাখুন)। ফলে তিনি উনার ইচ্ছা পরিত্যাগ করলেন। (বুখারী শরীফ-৫৬৩৮, সুনানুল কুবরা লিল বাইহাক্বী-১১৬ ইত্যাদি।)
উক্ত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে উল্লেখিত نُضَارٌ শব্দের ব্যাখ্যায় বুখরী শরীফে উল্লেখ রয়েছে-
( نُضَارٌ) خَشَبٌ جَيِّدٌ لِلْاٰنِيَةِ.
অর্থ:- نضار হচ্ছে- পাত্র/পেয়ালা তৈরী করার উৎকৃষ্ট কাঠ/শ্রেষ্ঠ কাঠ। ভাল কাঠের পাত্র।
বুখারী শরীফের অপর এক বর্ণনায় রয়েছে-
اَلنُّضَارُ : اَلْخَالِصُ مِنَ الْعُوْدِ.
অর্থ:- نُضَارٌ হচ্ছে- খাঁটি কাঠ, ভাল কাঠ।
মুসনাদে আহমদ শরীফে উল্লেখ রয়েছে-
نُضَارٌ (وَهُوَ نَوْعُ خَشَبٍ لِلْأَوَانِيْ)
অর্থ:- نُضَارٌ হচ্ছে পাত্র তৈরীর এক প্রকার কাঠ। (অসমাপ্ত)
-মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন মুরাদী
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (৩)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (২)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
ওযূ করার খাছ সুন্নতী তারতীব মুবারক ও মাসয়ালা-মাসায়িল (১)
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (২)
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
ইস্তিঞ্জার আদব ও ঢিলা-কুলুখ ব্যবহার করা সম্পর্কে (১)
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
প্রয়োজনে ছুরি এবং চাকু দিয়ে খাবার কেটে খাওয়াও মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
জুতা-মোজা ঝেড়ে পরিস্কার করে পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
চামড়ার মোজা পরিধান করা খাছ সুন্নত মুবারক
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০৩)
২৯ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
খাছ সুন্নতী না’লাইন বা স্যান্ডেলের বর্ণনা (০২)
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
আন্তর্জাতিক পবিত্র সুন্নত মুবারক প্রচার কেন্দ্র’ থেকে সংগ্রহ করুন সুন্নতী খাবার ‘পনির’
২৮ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার)












