পারিবারিক বিষয় সম্পর্কিত সুওয়াল-জাওয়াব:
, ২৪ মুহররমুল হারাম শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২১ ছানী, ১৩৯৩ শামসী সন , ২০ জুলাই, ২০২৫ খ্রি:, ০৫ শ্রাবণ, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) মহিলাদের পাতা
এক ছেলে এক মেয়ের সাথে অনেক দিন যাবত কথা-বার্তা বলে, দেখা সাক্ষাৎ করে, পরস্পর পরস্পরকে বিবাহ করতে চাচ্ছে। গত বছর দরবার শরীফে পারিবারিক তা’লীমে বিবাহ দোহরানোর অনুষ্ঠানে তারা উভয়ে “ক্বাবিলতু” বলেছে। পূর্বেই তারা উভয়ে এটা আলোচনা করে নিয়েছিল। ছেলের বাবা-মা এবং মেয়ের মাও বিষয়টি জানেন। তাদের বিবাহ শুদ্ধ হয়েছে কি না? জানতে বাসনা রাখি।
জাওয়াব:
বিবাহের পূর্বে পরস্পর দেখা সাক্ষাত করা জায়িয নেই। সম্মানিত শরীয়ত উনার খিলাফ। দেখা সাক্ষাত করলে তো কবীরা গুনাহ হয়েছে। এখন শুধু ক্বাবিলতু তো বললে হবে না, সাক্ষী থাকতে হবে, দুই জন সাক্ষী রেখে, তারা ক্বাবিলতু বলে থাকে তাহলে বিবাহ শুদ্ধ হবে। আর বিবাহের জন্যে যে শর্ত আছে ইজাব-কবুল, ইজাব-কবুল হতে হবে, সাক্ষী থাকতে হবে, দুইটাই থাকতে হবে। সাক্ষী না থাকলে একা একা ক্বাবিলতু বললে, জায়িয হবে না। সাক্ষী থাকতে হবে। সে যেখান থেকে ক্বাবিলতু বলেছে, সেখানে দুইজন পুরুষ অথবা একজন পুরুষ, দুইজন মহিলা সাক্ষী থাকতে হবে, তাহলে বিবাহ শুদ্ধ হবে। তবে এটা বিবাহে মাওকুফা হবে। এর জন্য শর্ত বিবাহের পর যদি আহাল ছেলে তার আহলিয়া মেয়েকে নিতে আসলে মেয়ে যদি তার সাথে যায় তখন বিবাহটা পূর্ণ হবে। অন্যথায় বিবাহ শুদ্ধ হবে না। কারণ মেয়ের অনুমতি নেয়া হয়নি।
(তাফসীরে কুরতুবী, রহুল মায়ানী, মাযহারী, বুখারী, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, মেশকাত, মেরকাত, শামী, আলমগীরী, ফতহুল ক্বাদীর, আইনুল হেদায়া ইত্যাদি)
সুওয়াল:
সুওয়ালকারী বিবাহের জন্য পাত্রী দেখতে গিয়ে পছন্দ হয়েছে বলে জানিয়েছে, কিন্তু পাত্রীর দুই পায়ের একটা করে আঙুল অস্বাভাবিক আকারে ছোট দেখায়, হঠাৎ দেখে মনে হয় অন্য আঙুলের সাথে জোড়া লাগানো, আর সেই জন্য সুওয়ালকারীর পরিবার বিবাহে অসম্মতি জানায়। কেননা তারা মনে করে, সন্তানের মাঝেও এসব বৈশিষ্ট্য পড়তে পারে। সুওয়ালকারীর পরিবারের এমন ধারণায় সম্মানিত শরীয়ত উনার ফায়সালা কি?
জাওয়াব:
এই ধারণা ঠিক না। আঙুল দুইটা ছোট আছে এজন্য সন্তানের আঙুল ছোট হবে। এরূপ ধারণা শুদ্ধ নয়। এখন যদি বলে, যে পাত্রী বা মেয়ের দুই পায়ের দুইটা আঙুল ছোট এজন্য সন্তানের উপর এর তাছির পড়বে। তাহলে এই যে মেয়েটা এর মায়ের কি আঙুল ছোট ছিল, সেটা দেখতে হবে। এগুলি হলো কাল্পনিক কথা। এটা কোন সমস্যা না। যদি মেয়ে দ্বীনদার পরহেযগার হয় তাহলে তো ঠিকই আছে। তার আঙুল ছোট হয়েছে তাতে কি আছে? সম্মানিত শরীয়ত উনার মধ্যে এটা কোন সমস্যা নয়।
(তাফসীরে কুরতুবী, রহুল মায়ানী, মাযহারী, বুখারী, ফতহুল বারী, উমদাতুল ক্বারী, মেশকাত, মেরকাত, শামী, আলমগীরী ইত্যাদি)
সুওয়াল:
ভুলবশতঃ ইয়ার্কি বা রাগ করে আহলিয়াকে তিন তালাক দিয়েছে। এখন ঐ আহলিয়াকে নিয়ে ঘর-সংসার করে খাওয়ার জন্য সহজ মাধ্যম কি? উক্ত আহলিয়াকে নেয়ার জন্য নতুন আহালের কাছ থেকে কয়দিন পর তালাক নেয়া যাবে? বিষয়টি দয়া করে জানাবেন।
জাওয়াব:
সহজ মাধ্যম হচ্ছে সম্মানিত শরীয়ত উনার ফায়সালা। ঐ আহলিয়াকে নেয়ার জন্য নতুন আহালের কাছ থেকে কয়দিন পর তালাক নেয়া যাবে, এখন চুক্তি করে, শর্ত করে তালাক বা বিবাহ শরীয়ত সম্মত না। তার ইদ্দত পালন হতে হবে, অর্থাৎ তালাক দেয়ার পরে ইদ্দত পালন করতে হবে, ইদ্দত পালন করার পরে অন্য কোথাও বিবাহ দিতে হবে, বিবাহের পরে তার সাথে সংসার করতে হবে, অবস্থান করতে হবে, তারপর সে যদি তাকে তালাক দেয় তারপর ইদ্দত পালন করতে হবে, এরপর সে প্রথম আহাল বা স্বামীর কাছে আসতে পারবে। কয়েক দিন পর না। এটা হচ্ছে, তিন তালাক দিয়ে দিলে এরপর ইদ্দত পালন করতে হবে। এখন ইদ্দত পালন কম-বেশি হতে পারে। তিন মাস, কম-বেশি। তিন তালাকের পর আহলিয়া ইদ্দত পালন করার পর অন্য জায়গায় বিবাহ দিতে হবে, বিবাহ দিলে তার সাথে নিরিবিলি অবস্থান করতে হবে, অবস্থান করার পরে আবার সে যদি তালাক দেয় তাহলে তালাক এর পর আবার ইদ্দত পালন করতে হবে। ইদ্দত পালনের পর প্রথম আহাল বা স্বামীর কাছে আসতে পারবে। কয়দিন পর প্রথম আহাল গ্রহন করতে পারবে এর কোন শর্ত শারায়েত নেই। তবে শর্ত হলো দ্বিতীয় আহাল তালাক দেয়ার পর ইদ্দত পালন করার পর গ্রহন করতে পারবে। এটা হলো আহলিয়া বা স্ত্রীর অবস্থা অনুযায়ী।
(তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ ৯৫তম সংখ্যা, আলমগীরী, শামী, আইনী, বাহ্রুর রায়েক, কুদুরী, হেদায়া, আইনুল হেদায়া, নেহায়া, এনায়া, গায়াতুল আওতার, শরহে বেকায়া, কানযুদ্ দাক্বায়েক্ব, ফতওয়ায়ে আমীনিয়া ইত্যাদি)
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (১)
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
৩০ নভেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার)












