১০০ টি চমৎকার ঘটনা
পিতার হক্ব আদায় করে সন্তান কামিয়াব-১
ঘটনা-২০
, ০১ রবীউছ ছানী শরীফ, ১৪৪৫ হিজরী সন, ১৮ খ্বমীছ ১৩৯১ শামসী সন , ১৭ অক্টোবর, ২০২৩ খ্রি:, ০১ কার্তিক, ১৪৩০ ফসলী সন, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) মহিলাদের পাতা
আর দ্বিতীয়ত, যেহেতু তুমি ছাড়া আমার আর কোনো আওলাদ নেই। আমার যে পরিমাণ সম্পত্তি রয়েছে তা তুমি বসে খেলেও খেতে পারবে কিন্তু আমার অনেক ঋণও রয়েছে। আমার ঋণ পরিশোধ করতে গেলে হয়তো এত সম্পদ নাও থাকতে পারে। তুমি আমার পক্ষ থেকে আমার সন্তান হিসেবে আমার ঋণগুলো পরিশোধ করে দিও। হয়তো তোমার অসুবিধা হবে কিন্তু আমি তোমার জন্য দোয়া করছি যেন মহান আল্লাহ পাক তিনি তোমাকে হিফাযত করেন এবং ইহকাল ও পরকালে সুখ-শান্তি দান করেন।’ তখন সে সন্তান রাজী হলো। এদিকে তার পিতা ইন্তেকাল করলেন। সারা এলাকার লোক জেনে গেলো যে, সেই লোক ইন্তেকাল করেছেন। উনার ঋণের জিম্মাদার হয়েছে উনার সন্তান। তখন পর্যায়ক্রমে লোক আসতে লাগলো। সে ঋণ পরিশোধ করতে লাগলো। তার যা সম্পত্তি ছিল ধন-দৌলত টাকা পয়সা সব দেয়া হয়ে গেলো, জায়গা-জমি বিক্রি করে ঋণ পরিশোধ করলো। শেষ পর্যন্ত, যে বাড়িতে সে বসবাস করতো সেটাও বিক্রি করে তার ঋণ পরিশোধ করতে হলো। এ বাড়িটা ছাড়া বসবাস করার মতো তার আর কোনো জায়গা সেখানে অবশিষ্ট ছিল না। কাজকর্ম করে খাওয়ার মতো তার তেমন কোনো যোগ্যতাও ছিল না।
সে মনে মনে চিন্তা করলো তার আহলিয়া এবং দুই ছেলে সন্তান রয়েছে। তাদের নিয়ে সে এখন কি করবে? পরিশ্রম করেনি কোনো সময়, কোনো কাজ সে জানে না, সে কি করে এখন কাজ করবে! সে তখন তার আহলিয়ার সাথে পরামর্শ করলো যে, আমরা এখান থেকে দূরে কোথাও চলে যাই, যেখানে আমাদেরকে কেউ চিনবে না। সেখানে গিয়ে আমরা যেটা ইচ্ছা সেটা করতে পারবো। এখানে কোনো কাজ করতে গেলে মানুষ হয়তো অনেক কিছু মনে করবে, নানান কিছু বলবে । সে তার আহলিয়াকে বললো, আমার পিতাকে মানুষ খারাপ বলবে, সন্তানকে তিনি রাস্তায় বসিয়ে দিয়ে গিয়েছেন ইত্যাদি ইত্যাদি নানান অশ্লীল, অশালীন কথা-বার্তা বলবে। সেটা আমার পক্ষে বরদাশত করা সম্ভব হবে না। কাজেই আমি এখান থেকে চলে যাবো। সে পিতার সম্মানের খাতিরে এ জায়গা ছেড়ে চলে যাওয়ার চিন্তা করলো। তারপর একদিন অনেক দূর চলে যাওয়ার জন্য পরিবারের সবাইকে নিয়ে রওয়ানা হলো। তারা কিছুদূর যাওয়ার পর একটা নদী পড়লো। বড় এক নদী। তারা নৌকায় চড়লো। নৌকায় চড়ে কিছুদূর যাওয়ার পর মধ্য নদীতে হঠাৎ তুফান শুরু হলো। তখন ছিল রাত্রিবেলা, তুফান সমস্ত নৌকা ছিন্নভিন্ন করে দিলো, তছনছ করে দিলো। তারা কোথায় কে চলে গেলো কোনো চিহ্ন রইলো না। প্রত্যেকেই জুদা হয়ে গেলো। কারো খবর কারো কাছে পৌঁছলো না যে, কোথায় কে অবস্থান করছে!
সেই লোকটার যখন হুঁশ ফিরে আসলো ; সে নিজেকে নিরিবিলি এক নদীর পাড়ে জঙ্গলের পাশে আবিষ্কার করলো। তারপর তার মনে একটা চিন্তা আসলো, এখন সে কি করবে? নির্জন জায়গা, লোকজন নেই, ভয়ও করছে! স্মরণ হলো তার আহলিয়ার কথা, তার ছেলেদের কথা। কিন্তু স্মরণ হলেও তো করার কিছু নেই। কেউই নেই সেখানে। সে রওয়ানা হলো যাওয়ার জন্য। কিন্তু কোথায় যাবে? রাস্তা নেই, ঘাট নেই, ঝোপ-ঝাড়, জঙ্গল। হঠাৎ একটা গায়েবী আওয়াজ হলো, “হে নেক সন্তান! পিতা-মাতার অনুগত সন্তান, তুমি সামনে অগ্রসর হও। তোমার জন্য মহান আল্লাহ পাক এখানে কিছু ধন ভান্ডার রেখেছেন। তুমি সেটা গ্রহণ করো।” মহান আল্লাহ পাক উনার নির্দেশে সে সামনে অগ্রসর হলো। এরপর সত্যিই একটা ধন ভান্ডার পেলো। পাওয়ার পর ভাবতে লাগলো, এটা দিয়ে সে এখন কি করবে? মহান আল্লাহ পাক উনার ইচ্ছা, কিছু লোক কোথা থেকে যেন সেখানে এসে পৌঁছলো। সে তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করলো এবং এই লোকদের মাধ্যমে আরো কিছু লোক যোগাড় করলো। যেহেতু তার টাকা-পয়সা ছিল, তাই সে কিছু লোক দিয়ে ঘর-বাড়ী তৈরী করালো এবং অনেক দান-খয়রাতও করলো। আস্তে আস্তে তার সুনাম ছড়িয়ে পড়লো সারা এলাকাতে। নদীর এপার-ওপার সবখানে এ সংবাদ পৌঁছে গেলো। দানশীলতার কারণে তার সাথে সাক্ষাতের জন্য লোকজন দলে দলে আসতে থাকলো। কাউকে সে ফিরিয়ে দিত না। কম বেশী দান করতো, মেহমানদারী করতো, অবস্থা বিশেষে লোকদেরকে থাকার ব্যবস্থাও করে দিত। এভাবে তার দিন কাটতে লাগলো। কয়েক বছর অতিবাহিত হয়ে গেলো।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
সর্বাবস্থায় আজল বা তাড়াহুড়া না করে সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
১০ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
হাশরের ময়দানে যে ৫টি প্রশ্নের উত্তর প্রত্যেককেই দিতে হবে
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০৯ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
সর্বক্ষেত্রে নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে প্রাধান্য দিতে হবে
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি সৃষ্টির শুরুতেই মহান আল্লাহ পাক উনার কুদরত মুবারক উনার মধ্যে ছিলেন, আছেন এবং অনন্তকাল থাকবেন
০৮ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি তওবাকারীকে পছন্দ করেন (২)
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
ক্বলবী যিকির জারী না থাকলে শয়তানের ওয়াসওয়াসা থেকে বেঁচে থাকা সম্ভব নয়
০৭ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আহাদ (রোববার) -
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার)












