পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
(রাজারবাগ শরীফ উনার সম্মানিত মুর্শিদ ক্বিবলা সাইয়্যিদুনা হযরত সুলত্বানুন নাছীর আলাইহিস সালাম উনার ওয়াজ শরীফ থেকে সংকলিত)
, ৩রা রবীউল আউওয়াল শরীফ, ১৪৪৭ হিজরী সন, ২৯ ছালিছ, ১৩৯৩ শামসী সন , ২৮ আগস্ট, ২০২৫ খ্রি:, ১৩ ভাদ্র, ১৪৩২ ফসলী সন, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) মহিলাদের পাতা
(ধারাবাহিক)
এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বর্ণনা করেন-
جَاءَ رَجُلٌ إِلَى رَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَقَالَ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ مَنْ أَحَقُّ النَّاسِ بِحُسْنِ صَحَابَتِي فَقَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ أُمُّكَ قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ أُمُّكَ قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ أُمُّكَ قَالَ ثُمَّ مَنْ قَالَ أَبُوكَ
হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তিনি বলেন, এক ব্যক্তি নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার নিকট এসে জিজ্ঞাসা করলেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মানুষের মধ্যে সবচাইতে উত্তম ব্যবহার পাওয়ার অধিকারী কে?
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করলেন যে, সবচেয়ে বেশী উত্তম ব্যবহার পাওয়ার হক্বদার হচ্ছে প্রথমে আপনার মাতা। আবার সেই ব্যক্তি জিজ্ঞাসা করলেন-
ثُمَّ مَنْ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এরপর কে? ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
আবারও নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বললেন যে- أُمُّكَ “আপনার মাতা”।
সে ব্যক্তি পুনরায় জিজ্ঞাসা করলেন-
ثُمَّ مَنْ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! এরপর কে?
পুনরায় নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তৃতীয়বারের মতো বললেন-
أُمُّكَ “আপনার মাতা”।
সেই ব্যক্তি আবার প্রশ্ন করলেন-
ثُمَّ مَنْ يَا رَسُولَ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ
এরপর কে? ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!
চতুর্থবার বললেন- أَبُوكَ “আপনার পিতা”।
এজন্য বলা হয়েছে- মুহাদ্দিছীনে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন যে, সন্তানের প্রতি মাতার তিনটা হক্ব রয়েছে, আর পিতার একটা হক্ব রয়েছে।
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি স্পষ্ট বলে দিলেন যে, “প্রথম হচ্ছে আপনার মাতা, তারপর মাতা, তারপরও মাতা, চতুর্থবার হচ্ছে আপনার পিতা।
এজন্য অন্য হাদীছ শরীফে উল্লেখ করা হয়েছে-
طَاعَةُ اللهِ طَاعَةُ الْوَالِدِ، وَمَعْصِيَةُ اللهِ مَعْصِيَةُ الْوَالِدِ
অর্থাৎ পিতা-মাতার আনুগত্য হচ্ছে, মহান আল্লাহ পাক উনার আনুগত্য। আর যে ব্যক্তি পিতা-মাতার সহিত নাফরমানী করলো, সে যেন মহান আল্লাহ পাক উনার সহিত নাফরমানী করলো।
কাজেই যে তার পিতা-মাতার সহিত যতটুকু সৎ ব্যবহার করবে, মহান আল্লাহ পাক তিনি ঠিক তাকে ততটুকু বদলা দান করবেন। ঠিক ততটুকুই।
এ প্রসঙ্গে বলা হয়- এক বুযুর্গ ব্যক্তি উনার এক কিতাবে উল্লেখ করেছেন- এক এলাকায় একজন লোক ছিলো, সে লোকের তিনজন সন্তান ছিলো, তিনজন ছেলে ছিলো তাদের। মাতা পূর্বেই ইন্তেকাল করেছেন, শুধু পিতা ছিলো। পিতার অবস্থা খুবই কঠিন অর্থাৎ অসুস্থ। যখন অসুস্থ হলো, তাদের আর কোন লোকজন ছিলো না যে, পিতার খিদমত করে। তখন যে ছেলেটা বড় ছিলো, সে তার অন্য দু’ভাইকে বললো- তোমরা এক কাজ করো, বিষয় সম্পত্তি যা রয়েছে, তোমরা সেটা ভাগ করে নিয়ে যাও, আমার বিষয় সম্পত্তির কোন দরকার নেই। আমাকে আমার পিতার খেদমত করার সুযোগ দাও।
কিতাবে উল্লেখ করা হয়েছে যে, দু’সন্তান যা বিষয় সম্পত্তি ছিলো, সেটা নিয়ে গেলো। তেমন উল্লেখযোগ্য কোন সম্পদ ছিলো না। জরুরত আন্দাজ তাদের ছিলো, যেটা দিয়ে তাদের জরুরত মিটতে পারে। যে বড় সন্তান সে তার পিতার খেদমতকে বেছে নিলো। সে খেদমত করতে লাগলো। তার নিজের যা ছিলো, সেটা দিয়ে অর্থাৎ সে স্বীয় টাকা-পয়সা ব্যয় করে পিতার খেদমত করতে লাগলো। একদিন তার পিতা ইন্তেকাল করলো। ইন্তেকাল করার পর দেখা গেলো তার যা ব্যক্তিগত সম্পদ ছিলো, তার প্রায় সবশেষ হয়ে গিয়েছে। এখন খুব কষ্টে সে তার দিনাতিপাত করতে লাগলো। অর্থাৎ দিনযাপন করতে লাগলো।
এ সম্পর্কিত আরো সংবাদ
-
দোযখে বেপর্দা হওয়া নারীদের শাস্তির বর্ণনা (৯)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
জামায়াতের জন্য মহিলাদের মসজিদে ও ঈদগাহে যাওয়া হারাম ও কুফরী (৩)
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে সম্বোধন মুবারক করার ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ আদব-শরাফত বজায় রাখতে হবে
০৬ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ সাবত (শনিবার) -
নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথেই হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের বিষয় উল্লেখ থাকা উচিত
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
মহাসম্মানিত সুন্নত মুবারক ছেড়ে দেয়া মানেই পথভ্রষ্ট হওয়া। নাউযুবিল্লাহ!
০৫ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল জুমুয়াহ (শুক্রবার) -
পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের দায়িত্ব-কর্তব্য
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল খমীছ (বৃহস্পতিবার) -
খছম বা ঝগড়া কু-স্বভাবটি পরিহার করা অপরিহার্য কর্তব্য
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
যে ৪ শ্রেণীর লোকদের জন্য ক্বিয়ামতের দিন সুপারিশ ওয়াজিব হবে
০৩ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল আরবিয়া (বুধবার) -
মুসলমান পুরুষ ও মহিলা সকলের জন্যই ফরযে আইন হচ্ছে- যথাযথভাবে ৫ ওয়াক্ত নামায তারতীব অনুযায়ী যথাসময়ে আদায় করে নেয়া
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
মহাসম্মানিত মহাপবিত্র হযরত আহলু বাইত শরীফ আলাইহিমুস সালাম উনারা বেমেছাল ফযীলত মুবারকের অধিকারী
০২ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুছ ছুলাছা (মঙ্গলবার) -
হুব্বে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার) -
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কুরআন শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক করেন-
০১ ডিসেম্বর, ২০২৫ ১২:০০ এএম, ইয়াওমুল ইছনাইনিল আযীম (সোমবার)












